E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ২৬ সংখ্যা / ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ২৬ মাঘ, ১৪২৯

দেশহিতৈষী’তে স্মরণ কমরেড প্রদীপ মুখার্জিকে


স্মরণসভায় বলছেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব। মঞ্চে পত্রিকা সম্পাদক পলাশ দাশ এবং প্রাক্তন সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়।

দেশহিতৈষী পত্রিকার কর্মাধ্যক্ষ এবং দেশহিতৈষী ২নং শাখার পার্টি সদস্য কমরেড প্রদীপ মুখার্জির স্মরণসভা গত ৪ ফেব্রুয়ারি পার্টির রাজ্য দপ্তর মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ফুল-মালা-বক্তৃতায় তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৪ জানুয়ারি বেলঘরিয়া নিমতার কলাবাগানে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

স্মরণসভার শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।

কমরেড প্রদীপ মুখার্জির স্মরণসভার সূচনায় প্রয়াত কমরেডের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন দেশহিতৈষী পত্রিকার সম্পাদক পলাশ দাশ। এরপর নীরবতা পালন করা হয়।

স্মরণসভায় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব কমরেড প্রদীপ মুখার্জিকে একজন নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে পরিচয়। তিনি নিষ্ঠাভরে তাঁর দায়িত্ব পালন করে গেছেন। একজন কমিউনিস্ট কর্মীর যে সমস্ত গুণাবলি থাকা উচিত তার প্রায় সবগুলিই ছিল কমরেড প্রদীপ মুখার্জির মধ্যে।

পার্টির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও পত্রিকা সম্পাদক পলাশ দাশ কমরেড প্রদীপ মুখার্জির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, একজন কর্তব্যনিষ্ঠ, অনাড়ম্বর, সাধারণ মানুষের ছবি ছিল তাঁর মধ্যে। শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও যতদিন পেরেছেন পত্রিকা দপ্তরে এসেছেন এবং শেষদিন পর্যন্ত নিজের কাজ করে গেছেন। আমাদের পার্টির অনেক কর্মী যাঁরা নীরবে-নিভৃতে নিজের কাজ করে গেছেন প্রদীপদা ছিলেন তাঁদেরই এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

দেশহিতৈষী’র সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ঈশিতা মুখার্জি বলেছেন, কমরেড প্রদীপ মুখার্জির মতো কমরেডরা জীবন দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন, কীভাবে নীরবে নিঃশব্দে পার্টির সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হয়। এই শিক্ষা আমাদের গ্রহণ করতে হবে।

স্মরণসভায় নন্দন পত্রিকার সম্পাদক অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী কমরেড প্রদীপ মুখার্জির স্মৃতিচারণা করে বলেন, ১৯৮২ সাল থেকে একটানা এতগুলো বছর রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা করে কমরেড প্রদীপদা দেশহিতৈষী দপ্তরে এসেছেন। কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও নিষ্ঠা থাকলেই এভাবে কাজ করে যাওয়া সম্ভব।

পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য সর্বাণী সাঁতরা বলেন, দীর্ঘদিন আমি এবং কমরেড প্রদীপদা বেলঘরিয়া থেকে ট্রেনে এসে আমি যুব অফিসে ঢুকতাম এবং প্রদীপদা পার্টির রাজ্য দপ্তরে আসতেন। পরে পার্টির রাজ্য দপ্তরের কাজে যুক্ত হবার পর প্রদীপদার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে।

পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাধব ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে সহকর্মী হিসেবে কমরেড প্রদীপ মুখার্জির স্মৃতিচারণা করে বলেন, কাজের ক্ষেত্রে আপসহীন মনোভাব এবং তাৎক্ষণিক তৎপরতার সাথে ন্যস্ত দায়িত্ব পালনে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তিনি।

এদিনের স্মরণসভার সভাপতির ভাষণে পার্টির রাজ্য কমিটির প্রাক্তন সদস্য, পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক এবং বর্তমান সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিজের কাজ ও দায়িত্ব পালনে কমরেড প্রদীপ মুখার্জির নিষ্ঠা ছিল প্রশ্নাতীত। সমস্ত কমরেডের সঙ্গে তাঁর কমরেডসুলভ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে কোনোদিন চিড় ধরেনি। দেশহিতৈষী অন্তঃপ্রাণ এমন একজন কমরেডকে হারানো বিরাট ক্ষতি। ১৯৮২ সালে কমরেড প্রদীপ মুখার্জি দেশহিতৈষীতে যোগ দিতে এলে তিনিই তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, সেই কথা স্মরণ করে তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

এদিনের স্মরণসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সন্দীপ দে এবং শংকর মুখার্জি।