৬১ বর্ষ ১৩ সংখ্যা / ১০ নভেম্বর, ২০২৩ / ২৩ কার্তিক, ১৪৩০
হাব অব লার্নিং - সরকারপোষিত শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্জলি যাত্রা
নিলয়কুমার সাহা
শারদোৎসবের আবহে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর গত ৬ অক্টোবর, ২০২৩ এক সরকারি আদেশনামায় রাজ্য সরকার ঘোষিত শিক্ষানীতির অংশ হিসেবে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত ‘ক্লাস্টার’ বা ‘প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘হাব অব লার্নিং’ সংক্রান্ত এক নির্দেশিকা জারি করেছে। রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন পুজো অবকাশের প্রস্তুতি তুঙ্গে তখন রাজ্য শিক্ষানীতির অংশ হিসেবে ‘হাব অব লার্নিং’ কার্যকর করার সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের সুযোগ সন্ধানী, স্বৈরাচারী দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকট হয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার এমন একটি সময়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে যখন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সার্বিকভাবে বিপন্ন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসীন হয়েই সারা রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক পরিচালন ব্যবস্থার পরিবর্তে কায়েম করেছে মনোনীত পরিচালন ব্যবস্থা, দীর্ঘ সময় রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ ছাত্র নির্বাচন, কোভিড অতিমারীতে সারা পৃথিবীর মতো রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাও চরমভাবে বিপর্যস্ত, বিদ্যালয় ছুটের হার ক্রমঊর্ধ্বমান, বিগত এক বছরে রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস সর্বকালীন নজির সৃষ্টি করেছে, রাজ্যের আট হাজার বিদ্যালয় চিহ্নিত হয়েছে যেখানে ছাত্র সংখ্যা পঞ্চাশের কম, বর্তমান শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভরতির হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের ‘কুস্তির আড়ালে দোস্তি’ শালীনতার শেষ সীমা অতিক্রম করেছে, কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে যোগ্য মেধাবী হবু শিক্ষকদের চাকরি বিক্রির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ একাধিক শিক্ষা প্রশাসক বিচারাধীন, দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে হকের চাকরি আদায়ের দাবিতে মহানগরীর রাজপথে আন্দোলনরত রাজ্যের সম্পদ মেধাবী হবু শিক্ষকেরা। এমন এক অস্থির সময়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসৃত এই নয়া ফরমান রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজ্যের অগণিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবক সমাজকে কোন অমৃতকুম্ভের সন্ধান দেবে সেই আলোচনা আজ অত্যন্ত জরুরি।
‘হাব’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো কার্যক্রমের কেন্দ্র বিন্দু। সারা বিশ্বের সাথে ভারতেও এতদিন শিল্প এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রেই এই হাব শব্দটি ব্যবহৃত হতো। ভারতে মানুফ্যাকচারিং হাবের তালিকায় আজও ভারুচ, লুধিয়ানা, মোরাদাবাদ, ফিরোজাবাদ, কানপুর ইত্যাদি অঞ্চলের নাম যেমন বর্তমান, তেমনি ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবের তালিকায় মুম্বাই-পুনে ক্লাস্টার, ব্যাঙ্গালর-তামিলনাড়ু রিজিয়ন, হুগলী রিজিয়ন, আহমেদাবাদ-বরোদা রিজিয়ন ইত্যাদি নামও বর্তমান। মজার কথা, বাজার অর্থনীতির কল্যাণে আজ আমাদের রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রেও যুক্ত হয়েছে ‘হাব’ শব্দটি। রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তেলে ভাঁজা শিল্প, মিষ্টি হাব ইত্যাদি অভিনব উদ্যোগের কথা বললেও শিক্ষা হাব নিয়ে সম্প্রতি কোথাও কিছু ঘোষণা করেছেন বলে মনে হয় না। যদিও রাজ্য সরকারের সমস্ত উদ্যোগই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা প্রসূত, কাজেই ধরে নেওয়া যায় রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ‘হাব অব লার্নিং’ সংক্রান্ত নির্দেশিকা তাঁর অনুমতিক্রমেই প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত জেলা শাসকের উদ্দেশে প্রকাশিত এই আদেশনামায় উল্লিখিত ‘হাব অব লার্নিং’ সংক্রান্ত নির্দেশিকার সূচনায় বলা হয়েছে, সময়ের নিরিখে পরীক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত সাফল্যের দুটি কৌশল হলো - সহকর্মীর শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ পরামর্শদাতার উপস্থিতি। এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন সম্ভব। ভৌগোলিকভাবে নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপনের সাহায্যে সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঠনপাঠনের পরিবেশে সমতা এবং একতা বিধানই এই ‘হাব অব লার্নিং’-এর উদ্দেশ। ‘প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ ধারণা’র উপর ভিত্তি করেই ‘হাব অব লার্নিং’এর উদ্দেশ বাস্তবায়িত হবে। এই মডেল অনুসারে একটি জেলার বিভিন্ন মহকুমায় অবস্থিত পরিকাঠামোগত এবং মানব সম্পদে অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘হাব’ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং একই ভৌগোলিক স্থানে অবস্থিত অবশিষ্ট বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি চিহ্নিত হবে ‘স্পোক’ হিসাবে। শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষার্থে ‘হাব’ এবং ‘স্পোক’গুলির মধ্যে পরিকাঠামোগত সুবিধা এবং মানব সম্পদের আদান প্রদানে কার্যকর হবে আনুভূমিক সহযোগিতা। অন্যদিকে একই লক্ষ্যে উল্লম্বিক সহযোগিতা কার্যকর হবে প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে। ‘স্পোক’ অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পঠনপাঠন এবং পরিচালনগত মানোন্নয়নে যথার্থ নেতৃত্ব দানের পাশাপাশি আদর্শ পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করবে ‘হাব’। এই প্রক্রিয়া ‘স্পোক’ অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি পরিকাঠামো, সম্পদ, পাঠাগার, গবেষণাগার এবং নিজের নিজের সেরা অনুশীলনও আদান প্রদান করবে। সর্বজনীন গবেষণাগার ও গ্রন্থাগার, ক্রীড়াঙ্গন ও শরীর চর্চাকেন্দ্র, আবাসন ইত্যাদি ব্যবহারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে পরিচালনা করবে বিভিন্ন ‘অ্যাডঅন কোর্স’, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আলোচনা সভা ও কর্মশালা। যৌথ গবেষণা সহযোগিতা এবং যৌথ প্রকাশনার কাজও প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের ধারণাকে সমৃদ্ধ করবে। এই নির্দেশিকায় দাবি করা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অংশ হিসেবে উচ্চশিক্ষা বিষয়ক নানাবিধ কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে, যা এককভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বল্প বিনিয়োগ এবং নিজস্ব সীমিত সম্পদে কখনোই সম্পাদন করা সম্ভব নয়।
অভিনব এই প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ প্রকল্প সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলায় অন্তত পক্ষে একটি প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ স্থাপন করতে হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়, বহু সংখ্যক সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয়, বহু সংখ্যক কারিগরি স্নাতক মহাবিদ্যালয় এবং অসংখ্য বিদ্যালয় নিয়ে গঠিত হবে এক একটি ‘ক্লাস্টার’ বা প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ। প্রয়োজনানুসারে জেলা প্রশাসন একটি জেলায় একাধিক প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ স্থাপন করতে পারবেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অধীনে তিনটি হাব থাকবে। হাব তিনটি হলো - জেলার সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয়ের জন্য একটি সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয় হাব, জেলার কারিগরি স্নাতক মহাবিদ্যালয়ের জন্য একটি কারিগরি স্নাতক মহাবিদ্যালয় হাব এবং জেলার সমস্ত বিদ্যালয়ের জন্য একটি বিদ্যালয় হাব। সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয় হাবের অধীনে জেলার সমস্ত সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয় পর্যায়ক্রমে স্পোক সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয় ১, ২, ৩ ইত্যাদি সাঙ্কেতিক নামে নথিভুক্ত হবে। কারিগরি স্নাতক মহাবিদ্যালয় হাব এবং বিদ্যালয় হাবের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি কার্যকর হবে। উন্নত পরিকাঠামো বিশিষ্ট মানব সম্পদে সমৃদ্ধ জেলার সরকারি অথবা সরকার পোষিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি অথবা সরকার পোষিত সুপ্রতিষ্ঠিত কোনো একটি বিদ্যালয় বা উচ্চ বিদ্যালয় হাব হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই প্রকল্প রূপায়ণ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য এই নির্দেশিকা রাজ্য, জেলা, ক্লাস্টার এবং হাব - এই চারটি স্তরে চারটি ভিন্ন ভিন্ন কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে। রাজ্য স্তরে প্রস্তাবিত কমিটির কাজ হলো কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা কমিটিগুলিকে পরিচালনা করা এবং সামগ্রিক কাজের অগ্রগতি তদারকি করা। রাজ্য স্তরের কমিটি হলো এই প্রকল্পের সর্ব্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। জেলা স্তরের প্রস্তাবিত কমিটির উপর অর্পিত হয়েছে জেলার অভ্যন্তরে গৃহীত কর্মসূচি সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণ সহ ক্লাস্টার অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুচ্ছ এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটিকে পরিচালনার দায়িত্ব। ক্লাস্টার কার্যনির্বাহী কমিটির কাজ হলো ক্লাস্টার অন্তর্ভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানে গৃহীত কর্মসূচি রূপায়ণে কার্যকর ভূমিকা পালন করা। হাব পর্যায়ে দুটি পৃথক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের সুপারিশ এই নির্দেশিকায় বর্তমান, একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এবং অপরটি বিদ্যালয়ের জন্য। এই দুটি কার্যনির্বাহী কমিটি হাবের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক প্রাত্যহিক কাজও তদারকি করবে। বিদ্যালয় শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষাকে এক ছাতার নিচে এনে এই চমকপ্রদ প্রকল্প কার্যকর করতে চার চারটি কমিটি গঠনের সুপারিশ এই নির্দেশিকায় সবিস্তারে আলোচিত হলেও প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের বিষয়টি যেভাবে উল্লিখিত হয়েছে তা ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত নীতিরই প্রতিলিপি। এই নির্দেশিকায় প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয় হাবের নানান কার্যাবলি পরিচালনার জন্য ‘পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন’ থেকে বাৎসরিক পর্যবেক্ষণ তহবিল ব্যবহারের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্যের উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক বিদ্যালয় শিক্ষার ন্যায় কোনো খাত থেকে সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প সম্পর্কিত ব্যয় বরাদ্দের অস্পষ্টতার পাশাপাশি এই প্রকল্প পরিচালনায় ছাত্র, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষক, অভিভাবক - কোনো অংশের প্রতিনিধিত্বের অবকাশ নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠানের এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধিকারিক নির্ভর প্রস্তাবিত এই প্রকল্প অচিরেই সরকার বন্দনার মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত হবে, এই বিষয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।
প্রস্তাবিত এই নয়া মডেল সম্পদের সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিতিকরণ, রুগ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুনরুজ্জীবন, নমনীয় বহু বিকল্প পদ্ধতি প্রবর্তন, ইন্ডাস্ট্রি এবং অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপন, মহাবিদ্যালয়ের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদ্যালয় শিক্ষাক্রমে সংযুক্তিকরণ ইত্যাদি চটকদারি ভাবনা উপস্থাপন করলেও এই মডেলের আসল উদ্দেশ্য হলো সরকার পোষিত শিক্ষা ব্যবস্থার দ্বার রুদ্ধ করে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের হাতে অর্পণ করা। আমাদের আশঙ্কা ব্যয়-বরাদ্দহীন এই মডেল রাজ্যে কার্যকর করতে এগিয়ে আসবে অপেক্ষারত শিক্ষা ব্যবসায়ীরা, আর প্রতিদানে তাঁদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গন। এমতাবস্থায় পিতৃপক্ষে প্রকাশিত সরকারি নির্দেশিকায় রাজ্যের সরকার পোষিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিসর্জনের বার্তা আমাদের রোধ করতেই হবে, সরকারকে বাধ্য করতে হবে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে বিকল্পের অনুসন্ধান সুনিশ্চিত করা, অন্যথায় বিপন্ন হবে রাজ্যের সংস্কৃতি এবং অগণিত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।