E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ১৭শ সংখ্যা / ১১ ডিসেম্বর ২০২০ / ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৭

‘আজকে তোমার ভিতর-বাইরে বিষম যুদ্ধ পুবের হাওয়া’

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


রাওসাহেব দানভে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো মন্ত্রী আছেন তা আমরা অনেকেই এই সপ্তাহের বুধবার (৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত জানতাম না। কিন্তু গতকাল থেকে জেনে গেছি যে তিনি আছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন জানি। গত ৮ ডিসেম্বর দেশজুড়ে কৃষকদের ডাকা ভারত বন্‌ধে অভাবনীয় সাড়া পাবার ঠিক পরের দিন তাঁর আবিষ্কৃত নতুন সূত্রের কারণে আপাতত তাঁর নাম অনেকেই জেনে গেছেন। যিনি গত ৯ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের বাদনাপুর তালুকার কোলটে টাকলি এলাকায় এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধনে গিয়ে জানিয়েছেন - দেশে এখন কৃষকদের যে আন্দোলন হচ্ছে তা আদৌ কৃষক আন্দোলন নয়। এর পেছনে চীন এবং পাকিস্তানের হাত আছে। এর আগে মুসলিমরা এই জিনিস প্রথম শুরু করেছিল। তারা বলেছিল, এনআরসি আসছে, সিএএ আসছে, মুসলিমদের ছয় মাসের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে। একজনও মুসলিমকে দেশ ছাড়তে হয়েছে কী? এখন কৃষকরা একই সুরে কথা বলছে। এটা আসলে অন্য দেশের চক্রান্ত।

তবে রাওসাহেব দানভেই প্রথম নন। কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে তৈরি করা ন্যারেটিভ মেনেই একশ্রেণির মিডিয়া যেমন এর পেছনে খালিস্তানের মদত খুঁজে পেয়েছেন, তেমনই গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছিলেন - ‘নয়া কৃষি বিল দেশের কৃষকদের স্বার্থের জন্য করা হয়েছে। কৃষকদের স্বাধীনতা দিয়েছে এই বিল। দেশের যে কোনো জায়গায় যেখানে বেশি দাম পাবেন, সেখানেই ফসল বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু সিএএ-র মতোই ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।’ ইদানীং ‘বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই’দের দৌলতে মাঝে মাঝে বিস্ময়ের ঘোর আর কাটতে চায়না। ‘চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?’র কারণ শুনে ‘ফ্যালফ্যালিয়ে’ হাসতে হাসতে মনে হয় ‘জানার কি কোনো শেষ আছে গা?’

‘অঙ্কা, বঙ্কা, শঙ্কা’কে আপনারা চেনেন তো? না চিনলে নিশ্চই ‘রক্ষক, ভক্ষক, তক্ষক’কে চেনেন। ‘খড়ের ধান’। তাও চেনেন না। না এটা ঠিক নয়। সবকিছু নিয়ে ‘চ্যাংড়ামো’ করা ঠিক নয়। এগুলো না চিনলে জানলে আমার আপনার জীবনের বারো আনাই বৃথা। ‘নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে?’ সেটা তো জানতে হবে নাকি। তবে সবকিছু জানতে চাইবেন না বা হিসেবও চাইবেন না। ‘দুয়ারে সরকার’ এসে দাঁড়ালেও ভুলেও জানতে চাইবেন না আমফানের হিসেব। কোভিডে কত ‘মাস’ কেনা হয়েছে সে হিসেব চাইবেন না। অনধিকার চর্চা ভালো নয়। ‘তুই টাকা দিয়েছিস তোকে হিসেব দেব?’ ‘তুই টাকা দিয়েছিস হিসেব চাইবি?’ টাকা দেবে জমিদার, আর হিসেব চাইবেন আপনি - এটা ঠিক নয়। চোদ্দটা ভাষায় উত্তর এলে সামলাতে পারবেন না।

চোদ্দরকম ভাষা জানা সরকার চোদ্দ তলা থেকে নেমে সটান আপনার বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে জানতে চাইছে - ‘অবনী বাড়ি আছো’। তোমার দুয়ারে সরকার এসেছে গো। গপ্প চলে এখানে বারোমাস, গোরুর পাল ঘাসের খোঁজে ঘোরে, কাটমানির অবাধ চাষবাস, উঠোনে ঢুকে পড়ে- তোমরা বাড়ি আছো? তবে এটা যেহেতু ১৯৭৩ নয়, বিষ বিষ - তাই শক্তি চাটুজ্যের কবিতার একটা রিমেক এইসময় এরকম হতেই পারে। বিষক্ষয় হবার এটাই উপযুক্ত সময়। এখন যদিও বাড়িতে থাকারই কথা। তার কিছুটা প্যান্ডেমিকের কারণে, আর কিছুটা দুয়ারে সরকার এসে দাঁড়িয়েছে সেই কারণে। দিদিকে বলো, বাঙলার গর্ব-র পর নতুন আইটেম - দুয়ারে সরকার। আগের দুটো যাত্রাপালা সুপার ডুপার ফ্লপ হবার পর আরও একবার বক্স অফিসে তুফান তোলার চেষ্টা। গরজ বড় বালাই। দেয়ালে পিঠ না ঠেকলে কে আর দুয়ারে এসে কড়া নাড়ানাড়ি করে বলে ‘বিকায়ে বিকায়ে দীন আপনারে পারিনা ফিরিতে দুয়ারে দুয়ারে, তোমারই করিয়া নিয়ো গো আমারে…’। অভ্যর্থনা নাকি অর্ধচন্দ্র - কোন্‌টা জুটবে, না জেনেই মেন্টরের ভোক্যাল টনিকে ভরসা রেখে আরও একটা ঝুঁকির বিনিয়োগ।

মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেন ‘আমরা কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধী’, ‘দিল্লির কৃষকদের আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন আছে’ এবং তারপরেই কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘটে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বিরোধিতা করেন - তখন সব গুলিয়ে যায়। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানাতে যাওয়া প্রতিনিধিদল থেকে তৃণমূল যখন নিজেদের সরিয়ে নেয় তখন সব গুলিয়ে যায়। ‘কৃষকদের সবথেকে বড়ো বন্ধু’ তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে যখন ২০০ জনেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেন তখন সব গুলিয়ে যায়। ২০১৪ সালে রাজ্য সরকারের পাশ করানো আইনের কথা যখন মনে পড়ে তখন সব গুলিয়ে যায়।

কথাটা বিপদজনক নাকি বিপজ্জনক - বারবার গুলিয়ে যায়। ফলে কোন্‌টা বড়ো বিপদ সেটাও গুলিয়ে যায়। করোনা নাকি কঙ্গনা অথবা পাকিস্তান নাকি চীন! কৃষক আন্দোলন নাকি দুয়ারে সরকার। হাতে ঝাঁটার মতো একছড়া ধানগাছ নিয়ে ‘তুই হিসেব চাওয়ার কে’ হুমকি নাকি সাংবাদিক সম্মেলনে ‘কৃষক আন্দোলনের পেছনে চীন পাকিস্তানের ইন্ধন’ মন্তব্য! কে জানে! ইদানীং বড়ো গুলিয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেন ‘আমরা কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধী’, ‘দিল্লির কৃষকদের আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন আছে’ এবং তারপরেই কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘটে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বিরোধিতা করেন - তখন সব গুলিয়ে যায়। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানাতে যাওয়া প্রতিনিধিদল থেকে তৃণমূল যখন নিজেদের সরিয়ে নেয় তখন সব গুলিয়ে যায়। ‘কৃষকদের সবথেকে বড়ো বন্ধু’ তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে যখন ২০০ জনেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেন তখন সব গুলিয়ে যায়। ২০১৪ সালে রাজ্য সরকারের পাশ করানো আইনের কথা যখন মনে পড়ে তখন সব গুলিয়ে যায়।

আজ কেন্দ্রীয় সরকার যে কৃষি আইন এনেছে তার প্রতিবাদ হচ্ছে দেশজুড়ে। যে আইন প্রসঙ্গে বিমান বসু জানিয়েছেন - ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন হিসেবে যা ছিল, তা রদ করায় দাম নির্ধারণের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হবেন বড়ো বড়ো কর্পোরেট ও ব্যবসায়ী মহল। কৃষকদের কর্পোরেটের ধার্য করা দামের উপরে নির্ভর করতে হবে এবং তার ফলে অভাবী বিক্রি আরও বাড়বে।’ আর ২০১৪ সালে তৃণমূল সরকারের আইনে কী বলা হয়েছিল?

২০২০-র কেন্দ্রীয় কৃষি আইন, তৃণমূল বিজেপি’র গোপন আঁতাত বুঝতে গেলে ৬ বছর পেছনে যেতে হবে। দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেটিং (রেগুলেশান) (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০১৪। বিরোধীদের প্রবল আপত্তিতে ২০ নভেম্বর ২০১৪ যে বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে হয়েছিল। যে বিল বিরোধীদের বাধা উপেক্ষা করে রাজ্য বিধানসভায় পাস হয় ৯ ডিসেম্বর ২০১৪তে। বর্তমান ‘কৃষক আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন’ জানানো তৃণমূল সরকারের আনা সেই আইনে কী ছিল? ২০১৪ সালেই তো রাজ্যের তৃণমূল সরকার এই আইনের মাধ্যমে মাঠের ফসল কিনবার অধিকার বেসরকারি সংস্থাগুলোকে দিয়েছিল। কমিশন এজেন্ট নিয়োগের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। যে কোনো ব্যক্তি, কোম্পানি, সংস্থা, কো-অপারেটিভ সোসাইটি, সরকারি সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অথবা এজেন্সি-কে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পণ্য কেনার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এই আইন অনুসারে যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা নিজে বাজার তৈরি করার লাইসেন্স পেতে পারেন। এই আইনের কোথাও বলা নেই যে, কোনো সংস্থা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে পারবে না। ‘কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধী’ রাজ্যের তৃণমূল সরকারই তো ২০১৭ সালে ১৯৭২ সালের এএমপিসি আইনে পরিবর্তন এনে রাজ্যের কৃষিবাজারকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করেছিল। আর আজ কৃষকদের বিক্ষোভ, আন্দোলন, ভারত বন্‌ধ কেন্দ্রের কোন্‌ আইনের, কোন্‌ নীতির বিরুদ্ধে? ‘দুয়ারে সরকার’ এসে দাঁড়ালে মানুষ যদি সেই প্রশ্ন করে তার উত্তর তো মানুষ চাইতেই পারে। তখন বললে হবে নাকি ‘তুই হিসেব চাওয়ার কে?’

আবারও কৃষক বিক্ষোভে ফিরি। এই প্রসঙ্গে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার একটা ভুল সংশোধন করে দেওয়া খুব জরুরি। যারা প্রাণপণে দেখাতে চাইছেন যে আন্দোলন করছেন মূলত পাঞ্জাবের কৃষকরা। কথাটাকে আংশিক সত্য, অর্ধসত্য - কোনো বিশেষণই দেওয়া যাবে না। কারণ বিতর্কিত কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের পেছনে সারাদেশের কৃষকরা আছেন। যার প্রমাণ হয়ে গেছে গত ৮ ডিসেম্বর কৃষকদের ডাকা ভারত বন্‌ধের দিন। ওইদিন প্রায় সব মিডিয়াকেই ঢোঁক গিলে বলতে হয়েছে ‘দেশজুড়ে বন্‌ধের ভালোরকম প্রভাব পড়েছে’। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভারত বন্‌ধের দিন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু - প্রায় সব রাজ্যেই বেশি সংখ্যায় গ্রেপ্তার করতে হয়েছে বামকর্মীদের। উত্তরপ্রদেশে সুভাষিণী আলি সহ গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল একাধিক সিপিআই(এম) নেতৃত্বকে। এই সময়েই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে প্রাক্তন সিপিআই(এম) সাংসদ হান্নান মোল্লার বিরুদ্ধে।

৮ ডিসেম্বর ‘সফল’ ভারত বন্‌ধের পর তড়িঘড়ি প্রতিবাদী কৃষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বৈঠকও ফলপ্রসূ হয়নি। এদিন কৃষকদের সঙ্গে দেখা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া কৃষি আইন কোনভাবেই বাতিল করা হবে না। সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু কৃষকরা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় এদিনের বৈঠক ব্যর্থ হয়। এরপর ৯ ডিসেম্বর কেন্দ্র ও কৃষকদের ষষ্ঠ দফায় বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু কৃষক প্রতিনিধিদল ও সরকারের সেই বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়। যদিও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এদিন কৃষকদের কাছে লিখিত সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। বিক্ষোভরত কৃষকরা কেন্দ্রের লিখিত কৃষি আইন সংশোধনী প্রস্তাবও সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখান করেছেন। তাঁরা আরও জানিয়েছেন - এই আইন পুরোপুরি বাতিল না করলে তাঁরা নিজেদের আন্দোলন আরও জোরদার করবেন। এর জন্য ৯ ডিসেম্বর, বুধবার বেশ কয়েকটি পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছেন কৃষকরা।

অবশ্য কৃষক আন্দোলনের সুনামি দিল্লির উপকণ্ঠে আছড়ে পড়লেও তাতে বিশেষ হেলদোল নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। জরুরি ভিত্তিতে কৃষক সমস্যা সমাধানের চেয়েও বারাণসীতে লেসার শো, ডিজে, প্রধানমন্ত্রীর শরীরী দুলুনির সঙ্গেই তাল মিলিয়ে চলছে সংসদ ভবন নতুন করে তৈরির প্রস্তুতি। সুপ্রিম কোর্ট যদিও একটু বাদ সেধেছে। গত ৭ ডিসেম্বর দেশে আর্থিক সঙ্কটের মাঝে এই প্রকল্প নিয়ে সরকার ‘অতিরিক্ত উৎসাহী’ কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কোনোরকম নতুন নির্মাণ এই মুহূর্তে করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত। তবুও ১০ ডিসেম্বর হচ্ছে সেই সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের শিলান্যাস। তিথি নক্ষত্র মেনে দুপুর ১২.৫৫ তে। যে প্রকল্পের খরচ নাকি ২০ হাজার কোটি টাকা। দেশে করোনা আবহেই গত মার্চ মাসে এই প্রকল্পের জন্য ৮৬ একর জমিতে নোটিফিকেশন জারি হয়েছে। সেন্ট্রাল ভিস্টা রিডেভলপমেন্ট প্রোজেক্ট নামের এই প্রকল্পে লুটিয়েন্স দিল্লি অঞ্চলে ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এই প্রকল্পে সাড়ে ৯ একর জায়গা জুড়ে হবে বিনোদনমূলক পার্ক। এখানেই রাষ্ট্রপতি ভবনের দক্ষিণ দিকে ১৫ একর জমিতে হবে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন। যদিও এই প্রকল্পের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দ এখনও নেই। যে প্রকল্প প্রসঙ্গে গত ২৩ মার্চ প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার এক ট্যুইটে জানিয়েছিলেন - “জাতীয় স্তরে করোনার মহামারী রূপ এবং জরুরি অবস্থার মধ্যে মোদী সরকার রাষ্ট্রপতি ভবন এলাকায় বিনোদনমূলক, প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের নোটিফিকেশন জারি করল। ইতিহাস এঁকে সৃষ্টিশীল শাহজাহান বলে মনে রাখবে না বরং মুহম্মদ বিন তুঘলক হিসেবেই মনে রাখবে।” এই প্রসঙ্গেই গত ৭ ডিসেম্বর এক ট্যুইট বার্তায় সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন - ‘‘দারিদ্র্য ও দুর্দশায় ডুবে থাকা কোটি কোটি লোককে প্রয়োজনীয় নগদ স্থানান্তর এবং বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের জন্য সরকারের কাছে অর্থ নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অফুরন্ত খামখেয়ালিপনার জন্য যথেষ্ট অর্থ আছে।”

‘অবনী’রা বাড়িতে নেই। রাস্তায় রাস্তায় আছে। পাড়ায় পাড়ায় আছে। প্রশ্ন করবে বলে আছে। উত্তর চাইবে বলে আছে। আমরা তো ‘যে-কোনো দিকেই’ ইচ্ছে হলে চলে যেতে পারিনা। ‘কেন যাবো?’। তাই ‘ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো’। ‘আজকে তোমার ভিতর-বাইরে বিষম যুদ্ধ পুবের হাওয়া’। শহর থেকে গ্রাম, সাগর থেকে পাহাড় - প্রস্তুতি আজ ঘরে ঘরে।