৫৮ বর্ষ ৪৩ সংখ্যা / ১১ জুন, ২০২১ / ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৮
উদারনীতির ‘ট্রেন্ডিং’ কৌশল
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইদানীং বড়ো সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলে যা হয় আর কি। ন যযৌ ন তস্থৌ অবস্থান নিয়েই সমস্যাটা বেশি। পুরোপুরি শাঁখের করাত। কাটবে দু’দিকেই। মধ্যপন্থার অন্তিম পরিণতি অন্ধ গলিতে ঘুরপাক খেয়ে দম হারানোর চেয়ে বেশি কিছু নয়। পথের শেষ নেই এটা যেমন ঠিক, তেমনই কোন পথে যে চলি সেটা ঠিক করাও একটা কঠিনতম, না না কঠিনতর কাজ। অতএব?
ওপরের কথাগুলোকে রাজনীতির কথা ভেবে বসবেন না যেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করার জন্য যে যোগ্যতা লাগে তা এখনও বিন্দুমাত্র অর্জন করে ওঠা হয়নি। তাই সবসময়ই হাঁটু কাঁপে। মানে আমার কথা বলতে চাইলাম। আগেকার সব কথাই করোনা নিয়ে দু’চারটে প্রলাপকথন। করোনার ঢেউ এর সঙ্গে সঙ্গে আসা লকডাউন-এর ঢেউ (থুড়ি। লকডাউন বলা যাবেনা। এগুলোকে ‘বিধিনিষেধ’ বলে। লকডাউন বললে তার অন্য মানে হয়। কী মানে হয় তা জানতে ডহর বাবুকে ফোন করে নেবেন একবার)। যাতে বাইরে বেরোনো যাবে না। ডবল মাস্ক পরতে হবে। দাঁত বের করে হাসার পরিবর্তে এখন মাথা নেড়ে হাসতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। এত বিধিনিষেধের ঠেলায় মাঝে মাঝে নিজেকে শোলে সিনেমার কালিয়া মনে হয়। কানের কাছে গব্বর বন্দুক ধরে আছে। আর বলছে ‘এ ভি বাঁচ গয়া’। প্রথম ঢেউ, দ্বিতীয় ঢেউ পেরিয়ে এবার আমাদের অপেক্ষা তৃতীয় ঢেউ-এর। কে জানে গুলিটা চালিয়ে দেবে কিনা করোনাব্বর। তখন প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরা বেওয়ারিশ মাল ছাড়া আর সবই অস্তিত্বহীন। দারা পুত্র পরিবার...। ভরসা অন্ধের যষ্ঠি ‘রেড ভলান্টিয়ার’। কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা তা নিয়েই। এর সঙ্গে রাজনীতি, ভোট শতাংশ ভুলেও গোলাবেন না। রাজনীতি করার জন্য, রাজনীতির কথা বলার জন্য তো খোলা আছে ঘুঁটে দেবার দেয়াল। মনের খেয়ালে ট্রেন্ডিং মেনে সেখানে ঘুঁটে দিয়ে লাইক, কমেন্ট খুঁটে খেতে পারলেই সিদ্ধিলাভ।
কথায় কথায় ট্রেন্ডিং শব্দটা যখন এসেই গেল, তখন এই বিষয়ে দু’চার কথা বলা যেতেই পারে। এক প্রখ্যাত সংবাদমাধ্যমের বিজ্ঞাপনে দেখা যায় এক ব্যক্তি দাবার কিছু ঘুটি নিয়ে বসে আছেন এবং বলছেন দিনের সেরা খবর ‘তিনি’ বেছে নেন এবং সেগুলো পরিবেশিত হয়। আমরা যেহেতু এখন খবর পড়া বা শোনার চেয়ে দেখি এবং খাই বেশি তাই তিনি আমাদের খবর খাওয়ান। এক্ষেত্রে পুরোটাই কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম। কোনটা খবর এবং কোনটা খবর নয় সেই বিষয়ে তাঁর মূল্যায়ন, তাঁর হাউসের পলিসিই শেষ কথা। সেখানে কৃষক আন্দোলনের থেকে শোভন-বৈশাখী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে যদি তাঁর মনে হয় সেটাকেই আপনাকে মেনে নিতে হবে।
বাজারে এরকম আরও অনেক ট্রেন্ডিং চলে। গুগল ট্রেন্ডিং, ট্যুইটার ট্রেন্ডিং, ফেসবুক ট্রেন্ডিং ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রত্যেক প্ল্যাটফর্ম-এর ট্রেন্ডিং আলাদা আলাদা। যেমন যদি আজ সকালের কথা ধরি, গুগল ইন্ডিয়ার নিউজ ট্রেন্ডিং-এর প্রথম দশে আছে - জুনের সূর্যগ্রহণ, সুন্দর পিচাই, ঝাড়খণ্ড লকডাউন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি রাঙ্কিং, শনি জয়ন্তী, ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ভার্সেস লাহোর, এম সি কোড, মারিয়া সাক্কারি, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, কমলা হ্যারিস, পাবজি মোবাইল ব্যাটলগ্রাউন্ট ইত্যাদি। ট্যুইটার ইন্ডিয়ায় এই মুহূর্তের ট্রেন্ডিং অনুসারে পলিটিক্স ডিলেইং এস এস আর জাস্টিস, আননোন মিরাকেলস অফ গড কবীর ইত্যাদি। এখানেও দশ নম্বরে আছে শনি জয়ন্তী।
এখানে দুটো বিষয় আছে। এক যারা খবর করেন এবং যারা খবর পড়েন বা শোনেন বা দেখেন। আমাদের বর্তমান গুগল নির্ভর সভ্যতা এবং অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ক্ষেত্রে এই ট্রেন্ডিং-এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে দৌড়োনোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সাফল্যের একটা অলিখিত আঁতাত আছে। সেখানে ট্রেন্ডিং মেনে না চললে দৌড়ের স্টারটিং পয়েন্টে আপনার উপস্থিতি থাকলেও ফিনিশিং লাইনে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই এটা স্পষ্ট যে অন্যে কারোর ঠিক করে দেওয়া ট্রেন্ডিং অনুসারে আমরা নিজেদের অজ্ঞাতেই চালিত হচ্ছি। পুতুলনাচের পুতুলের হাত পা নাড়ানো দেখে তুমুল উত্তেজিত বা উল্লসিত হয়ে পড়লেও তার সুতো কালো পর্দার আড়ালে কার হাতে ধরা তা আমাদের অজানা। আর সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই আচ্ছে দিন, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই দুয়ারে সরকার, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই ‘পাপ্পু’, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই উত্তর সম্পাদকীয়, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই ২০০০ টাকার নোটে মাইক্রোচিপ, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই করোনার জন্য দায়ী তবলিগি জামাত, সেই ট্রেন্ডিং অনুসারেই করোনার ওষুধ রামদেবের করোনিল। উদাহরণ আরও দেওয়া যায়। কিন্তু বোঝার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। আর তথাকথিত এই ট্রেন্ডিং এর বাইরেই থেকে যায় ভ্যাকসিনের আকাল, করোনায় মৃত্যুমিছিল, নোটবাতিলের ভয়ঙ্কর পরিণতি, পেট্রোপণ্যের লাগাতার দাম বেড়ে চলা, একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ, ত্রাণের টাকা লোপাটের মতো তুচ্ছ তুচ্ছ কিছু ঘটনা।
চলুন। এক তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনার কথা বলি। গত ৭ জুন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে জানিয়েছিলেন - “২১ জুন সোমবার থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন। কেন্দ্র ভ্যাকসিন কিনে রাজ্যগুলিকে দেবে। দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেছেন - “সদিচ্ছা সঠিক ছিল, তাই এক বছরের মধ্যে ভারতে দুটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে।” এবং তিনি আরও বলেছিলেন - “ভ্যাকসিনের ২৫ শতাংশ যাতে বেসরকারি হাসপাতাল পেতে পারে, ‘সেই ব্যবস্থাও জারি থাকবে। এক ডোজের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বহু কথার মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া এই তিনটে কথা আলোচনায় আসতে পারে। প্রথম কথাছিল সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন। যে দাবি দীর্ঘদিন থেকে জানিয়ে আসছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি থেকে সমস্ত বিরোধী নেতৃত্ব। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও এই বিষয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হয়। এরপরেই তড়িঘড়ি জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ থেকে আমরা জানতে পারি সকলের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবার কথা। যদিও এরপরেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিন বেসরকারি হাসপাতালে দেবার কথা এবং ১৫০ টাকা ‘সার্ভিস চার্জ’ বাবদ নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতাল। ঠিক এর পরের দিন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণায় কিছু সংশোধনী আনা হয় এবং দেশে যে তিন ভ্যাকসিন চলছে তার দাম জানিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার অর্থাৎ ৮ জুন কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালে কোভিশিল্ডের দাম ৭৮০ টাকা, কোভ্যাক্সিনের দাম ১,৪১০ টাকা এবং স্পুটনিকের দাম ১,১৪৫ টাকা। এই টাকার মধ্যে ট্যাক্স এবং ১৫০ টাকা বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ বিনামূল্যের ভ্যাকসিনের দাম ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ সহ পড়বে ১,৪১০ অথবা ১,১৪৫ কিংবা ৭৮০ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ‘দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন’ দেওয়া হলো কিনা সে প্রশ্ন আমাকে কোরো না।
এই আলোচনার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশ। যেখানে তিনি বলেছেন, ভারতে দুটো ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে এই অল্প সময়ে। এক্ষেত্রে সমস্যা হলো সেরাম ইন্সটিটিউট কোভ্যাকসিন নামক যে ভ্যাকসিন পুনরুৎপাদন করছে তা আসলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন - যার কোডনেম AZD1222 এবং যে ভ্যাকসিন বিক্রি হচ্ছে কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সজাভ্রিয়া - এই দুই নামে। এখানে ভারত শুধুমাত্র ওই ফর্মুলার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে।
ট্রেন্ডিং-এ না থাকা ঘটনার অন্যতম হতে পারে অবশ্যই বৃহস্পতিবার ১০ জুন সকালে প্রকাশিত কোভিড পরিসংখ্যান। যা দেখে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। কারণ মৃত্যু সংখ্যা। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬,১৪৮ জনের। যদিও ঘটনাটা একটু অন্যরকম। দীর্ঘদিন ধরে করোনা সংক্রমিত, মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছিল বিরোধীরা। একাধিক বিদেশী সংবাদমাধ্যমেও ‘আন্ডার রিপোর্টিং’ বিষয়ে লেখা হয়েছিল। যদিও সেই সময় সবই অস্বীকার করে দেশের সরকার, বিহার সরকার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। সম্প্রতি পাটনা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বিহারে করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানতে অডিট করার নির্দেশ দেওয়া হয়। যে অডিটের পর গতকাল ৯জুন প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, বিহারে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা হিসেবে যা দেখানো হচ্ছিল বাস্তবে তার থেকে অনেক বেশি। যেখানে শুধুমাত্র এপ্রিল ২০২১ থেকে জুনের ৭ তারিখ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭,৭৭৫ জনের। যার ফলে বিহারে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ। দেশের শুধুমাত্র এক রাজ্যে অডিটের ফল যদি এই দাঁড়ায় তাহলে অন্য রাজ্যে এইধরনের অডিট হলে তার ফলাফল কী হতে পারে সহজেই অনুমান করা যায়। এখনও তো আমাদের চোখের সামনে ভাসছে গঙ্গায় ভেসে চলা লাশের ছবি, সারি সারি দেহ গঙ্গার চরে পোঁতা। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই সব দেহের ওপর থেকে রামনাম লেখা চাদর তুলে এলাকা স্বচ্ছ করার অভিযান তো এই কদিন আগের ঘটনা।
ঘটনা আরও আছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহারের গঙ্গায় ভেসে আসা সন্দেহভাজন করোনার দেহ নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন গুজরাতি কবি পারুল খাখর। কবিতার নাম ‘শব বাহিনী গঙ্গা’। গুজরাত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রকাশনা 'শব্দশ্রুতি'-র জুন সংস্করণের সম্পাদকীয়তে এই কবিতা নিয়ে জোরদার সমালোচনা করেছে। কবি এই কবিতার মাধ্যমে নৈরাজ্য ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। যে বা যাঁরা এই কবিতাটি নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁদের 'লিটারারি নকশাল' বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। আরও বলা হয়েছে, কবিতাটিতে কেন্দ্র বিরোধী মতাদর্শ প্রদর্শন করা হয়েছে। যে শব্দ কবিতাতে ব্যবহার করা হয়েছে, তা কেন্দ্র বিরোধীদের দ্বারা অপব্যবহার করে ব্যবহৃত হয়েছে। এই কবিতার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত হতে পারে। যাদের উদ্দেশ্য ভারতের জন্য কিছু করা নয়, বরং অন্যকিছু তারাই এমনটা করতে পারে। মূলত বামপন্থী, যাদের কেউ তেমন গুরুত্ব দিতে চায় না, তারাই এমনটা করে থাকেন। এই ধরনের মানুষরাই দেশে চট করে হইচই তৈরি করে নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি করে। নিজেদের খারাপ উদ্দেশ্য নিয়েই এইসব মানুষ সাহিত্যকে হাতিয়ার করে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করে। বিহারে অডিটের পর মৃত্যু সংখ্যা এক লাফে বেড়ে যাওয়া নিয়ে আগামী সংখ্যায় কোনো সম্পাদকীয় লেখা হবে কিনা কে জানে?
এরকমেরই আরও একটা খবর হলো - ডোনেশন সংক্রান্ত। গত ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি টাকা ডোনেশন পেয়েছে বিজেপি। ৭৫০ কোটি টাকা। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে বিজেপি বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৭৫০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৯ কোটি টাকা। যদিও এই টাকা আরও বেশি হবার সম্ভাবনা। কারণ ২০ হাজার টাকার ওপরে অনুদান এলে একমাত্র তারই হিসেব দিতে হয় কমিশনকে। এটা ২০ হাজার টাকার ওপরের অঙ্কে পাওয়া ডোনেশনের হিসেব।
বিজেপি সবথেকে বেশি অনুদান পেয়েছে প্রুডেন্ট ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের থেকে, ২৭৫ কোটি টাকা। আইটিসি এবং আইটিসি সহযোগী বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ৭৬ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে। জে এস ডব্লিউ গ্রুপের জনকল্যাণ ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট ৪৫.৯৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। বিজেপি সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখরের জুপিটার ক্যাপিটাল সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১৫ কোটি টাকা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো - কমপক্ষে ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছর বিজেপি'কে আর্থিক অনুদান দিয়েছে। এর মধ্যে দিল্লির মেওয়ার বিশ্ববিদ্যালয় সবথেকে বেশি অনুদান দিয়েছে, ২ কোটি টাকা। সুরাতের কৃষ্ণ ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কোটার অ্যালেন ক্যারিয়ার যথাক্রমে ১০ লক্ষ ও ২৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে বিজেপি'কে।
এতক্ষণ যেগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে গেছি সেগুলোর কোনোটাই কিন্তু গত ক’দিনে খবরের তথাকথিত ট্রেন্ডিং-এ আসেনি। ফলে যে অল্প কয়েকটা জায়গায় এই ধরণের খবর প্রকাশিত হয়েছে তা খুব কম জনের কাছেই পৌঁছেছে। চক্রান্তটা বোধহয় অনেক গভীরে। আমার আপনার শোভন-বৈশাখী, রাজীব, দলবদল, উন্নয়ন, সম্পাদক নির্বাচন আর উত্তর সম্পাদকীয়তে সিপিএম-এর দোষ খোঁজার মাঝখানে ঘটে যাচ্ছে অনেক কিছু। আপনি নেচে মরবেন নাকি খুঁজে দেখবেন সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখন বোধহয় অনেক বেশি সজাগ থাকার সময়।