E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩০ সংখ্যা / ১১ মার্চ, ২০২২ / ২৬ ফাল্গুন, ১৪২৮

আনিস খানের খুনের মামলায় সিটের তদন্ত নিয়ে উঠছে প্রচুর প্রশ্ন


ছাত্রনেতা আনিস খানের খুনীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কলেজ স্ট্রিটে ছাত্র-যুবদের মিছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ছাত্রনেতা আনিস খানের খুনের ঘটনার ১৫ দিন কেটে গেলেও অগ্রগতি হয়নি। জানা যায়নি খুনের মাথা কে? মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেছিলেন ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু তা হয়নি, উল্টে দোষীদের আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপ করার অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট সম্পর্কে অনাস্থা প্রকাশ করে অভিযোগ করেছেন আনিসের বাবা সালেম খান। ক্ষুব্ধ পিতার বক্তব্য, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে সিবিআই তদন্ত করাতে হবে।

১০ মার্চ হাইকোর্টে আনিস মৃত্যুর তদন্ত সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তাই পরিস্থিতির অগ্রগতি না হওয়ায় সাধারণ মানুষ থেকে আনিসের পরিবার - ক্ষুব্ধ এরাজ্যের বড়ো অংশের মানুষ।

এর পাশাপাশি আরও যে অভিযোগগুলো বিভিন্নমহল থেকে তোলা হচ্ছে তা সিট এবং পুলিশ প্রশাসনকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে। যেমন, ধৃত দুই জনকে এখনও শনাক্ত করতে পারেননি আনিসের বাবা। তাই তদন্তে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা উঠছে সেই প্রশ্নও। আনিস খানের বাড়িতে যাবার প্রশ্নেও দিন বদল করেছেন সিট তদন্তকারীরা, যা সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা যাচ্ছে না বলেই অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য।

প্রকাশিত বিভিন্ন খবর থেকে জানা যাচ্ছে থানা কর্মীরা ১৮ ফেব্রুয়ারি নাকি রাতে মুচলেকা আদায় করতে গিয়েছিলেন আনিসের থেকে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া মানা হয়নি। আনিস দাগী অপরাধী বা জঙ্গি ছিলেন না। তাহলে তাকে বেপরোয়াভাবে তাড়া করা হলো কেন? যদি তাকে তাড়া করা হয় তাহলে কোনো দুরভিসন্ধি থেকেই কি তাকে তাড়া করা হয়েছিল? এক্ষেত্রে পুলিশের দিকে সরাসরি খুনের অভিযোগ আরও জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।

সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী আনিস খান-এর খুনের ঘটনায় বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সিট গঠনের নামে ১৫ দিন সময় নিলেন। ১৫ দিন চলে গেল। পুলিশের যারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত হলো না। যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো তারা বলছে ওসি’র নির্দেশে করেছে। কিন্তু থানার ওসি’কে গ্রেপ্তার করা হলো না, এসপি সবটা জানলেও তাঁকে খারিজ করা হলো না। তিনি বলেন, ১৫ দিন সময় নিয়েছে তথ্য প্রমাণ লোপাট করবার জন্য। এরপর ধামাচাপা দেবার জন্য কিছু একটা বের করবে, তা ধরা পড়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রীয় খুনের এই অপরাধ মানুষ মানবেন না।

প্রসঙ্গত, সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে আগেই বিচারবিভাগীয় নজরদারিতে তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।

সিটের তদন্ত নিয়ে জনমানসেও রয়েছে প্রচুর প্রশ্ন। তদন্ত শুরুর দু’সপ্তাহ পরেও একজন হোম গার্ড এবং একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার ছাড়া বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি সিট, অথচ তারা পুলিশের কর্মী। এই বাকি দু’জনের সম্পর্কে সিট কেন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারল না তা নিয়ে সন্দেহ ও প্রশ্ন তীব্রতর হচ্ছে।

সিটের তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।

অপরাধীরা শাস্তি না পেলে আরও বড়ো আন্দোলন হবে - বক্তব্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গণ সংগঠনের।