E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ২৬ সংখ্যা / ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ / ২৯ মাঘ, ১৪২৭

কাজের দাবিতে ছাত্র-যুবদের নবান্ন অভিযান দমন করতে মমতা সরকারের হিংস্র পদক্ষেপ

প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে হরতাল


নবান্ন অভিমুখে এগিয়ে চলেছেন ছাত্র-যুবরা।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১১ ফেব্রুয়ারি যেভাবে ছাত্র-যুবদের নবান্ন অভিযানকে দমন করতে মমতা ব্যানার্জির সরকার হাজার হাজার পুলিশ নিয়ে তিনস্তর চারস্তর ব্যারিকেড গড়ে লাঠি জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে রাষ্ট্রশক্তির প্রতাপ দেখালো, তাতে কৃষক আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল দিল্লির সীমান্তে কেন্দ্রীয় সরকারের যুদ্ধসাজ মনে করিয়ে দিল। এই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে বাম  ও সহযোগী দলসমূহের পক্ষ থেকে।

এই ধর্মঘট প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, আজকে বামপন্থী ছাত্রযুব সংগঠনগুলি এবং জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্রযুব সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষার উন্নয়ন ও কাজের দাবিতে যে নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি ছিল তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে খানিকটা জালিয়ানওয়ালাবাগের মতো অবস্থা তৈরি করে তৃণমূল সরকারের পুলিশ বাহিনী যে নির্মম অত্যাচার নামিয়ে এনেছে তাতে দেড়শোর বেশি ছাত্রছাত্রী ও যুবকযুবতী আহত হয়েছেন। অনেকের আঘাত গুরুতর। ইতিপূর্বে মাদ্রাসা শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষক, মহিলাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ওপরেও রাজ্যের পুলিশ অত্যাচার করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য বামফ্রন্ট ও বাম সহযোগী দলসমূহের পক্ষ থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার রাজ্যব্যাপী হরতালের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

প্রায় দু’মাস ধরে চাকরির দাবিতে নবান্ন অভিযানের পক্ষে রাজ্যজুড়ে অসংখ্য মিছিল-মিটিং সংগঠিত করা হয়।  এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে  শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-যুবদের মিছিল আসে। এদিনের দৃপ্ত অভিযান বাংলার ছাত্র যুবদের আন্দোলনের গৌরবময় ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দিল। আহত এবং রক্তাক্ত হয়েও রাষ্ট্রশক্তির চোখরাঙানিকে অগ্রাহ্য করে যে সাহসিক অভিযান আজ রাজ্যবাসী প্রত্যক্ষ করল সেখানেই রয়েছে রাজ্যের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ইঙ্গিত।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো’র সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, পুলিশি আক্রমণের নৃশংসতার মুখে ছাত্র যুবরা যে দমে যাননি তাদের স্যালুট। এই রক্তক্ষয় বৃথা যাবেনা। মমতা ব্যানার্জির সরকার চাকরি দিতে পারেনা কিন্তু চাকরির দাবিতে স্মারকলিপি দিতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালায়। তাঁর এত ভয় কিসের? এদিন মমতা ব্যানার্জি ডোরিনা ক্রসিংকে ব্যারিকেড করে  কলকাতায় সিঙ্ঘু বর্ডার তৈরি করতে চেষ্টা করেছেন।

নতুন প্রজন্মের কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার যে চেষ্টা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সংহতি জানাতে গণতন্ত্রপ্রিয় ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এদিন ছাত্রযুবদের নবান্ন অভিযানে যেভাবে দমনপীড়ন চালিয়েছে মমতা সরকারের পুলিশ, তার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়েই প্রতিবাদ, ধিক্কার, মিছিল, সমাবেশ সংগঠিত হয়ে চলেছে।