E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ২৬ সংখ্যা / ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ / ২৯ মাঘ, ১৪২৭

প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচার এবং প্রতিহিংসার জবাবে কৃষক আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্রতর হবে

১৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে রেল রোকোর ডাক


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক বিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও তীব্র করতে চলেছে কৃষক সংগঠনগুলি। সেই লক্ষ্য নিয়ে সংযুক্ত কৃষক মোর্চা ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ৪টা - সারা দেশে রেল রোকোর ডাক দিয়েছে। তার আগে ও পরে কর্মসূচি পালিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী গত কয়েকদিন ধরে সংসদে কৃষকদের আন্দোলন সম্পর্কে ‘আন্দোলনজীবী’, ‘পরজীবী’, ‘বিভ্রান্ত’, ‘এফডিআই’ (ফরেন ডেস্ট্রাকটিভ আইডিওলজি) ইত্যাদি বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এসব মন্তব্যের মধ্যদিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, কৃষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধেই প্রস্তুত তিনি। এই অবস্থায় আন্দোলনকে তীব্র করারই পথ নিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। ১০ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত কৃষক মোর্চা বৈঠকে বসে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করেছে।

সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা ১০ ফেব্রুয়ারি বলেছেন, কৃষকরা ৭৫ দিন ধরে দিল্লির সীমান্তে বসে আছেন। সরকারের কাছে তাঁরা বারবার আবেদন করেন তিন কৃষি আইন তুলে নিতে। সরকার যতবার ডেকেছে, প্রত্যেকবারই তাঁরা আলোচনায় উপস্থিত হয়েছেন। কৃষকরা চেয়েছিলেন সরকার পরিস্থিতি উপলব্ধি করুক, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুক। কিন্তু তার বদলে সরকার আক্রমণের পথ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আজও দু’ঘণ্টা ধরে মিথ্যা কথা বলেছেন, গাল পেড়েছেন, কৃষকদের বদনাম করেছেন। এই প্রেক্ষিতে আন্দোলন ছাড়া কৃষকদের অন্য কোনো রাস্তা নেই। সরকারের হাতে পুলিশ আছে, আধাসেনা আছে, দুষ্কৃতী আছে। সবই ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষকের একমাত্র রাস্তা আন্দোলন। সংবিধান আন্দোলন, প্রতিবাদের অধিকার দিয়েছে। কৃষকরা সেই অধিকারই প্রয়োগ করবেন। সংযুক্ত কৃষক মোর্চা বৈঠকে বসে স্থির করেছে এই আন্দোলন দীর্ঘ হবে।

হান্নান মোল্লা এদিন জানিয়েছেন, সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির নেতৃত্বের মধ্যে একটি যৌথ বৈঠক হতে চলেছে। সেই বৈঠক থেকে কৃষক-শ্রমিকদের যৌথ আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক হবে। মজদুর কৃষকের যৌথ লড়াইকে আরও শক্তিশালী করা হবে।

কৃষক মোর্চা সিদ্ধান্ত করেছে, রাজ্যে রাজ্যে যে মহাপঞ্চায়েত হচ্ছে তা চলতে থাকবে। মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেইসব সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। গ্রামে গ্রামে এই পঞ্চায়েত হতে থাকবে।

হরিয়ানাতে ইতিমধ্যে কৃষকরা টোল প্লাজা খুলে দিয়েছেন। আন্দোলনের এই পর্বে রাজস্থানে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে টোল প্লাজা খুলে দেওয়া হবে। সমস্ত সড়ক হবে টোল মুক্ত।

২০১৯’র ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন সেনারা। সেই নিহত সেনাদের স্মরণে এবং কৃষক আন্দোলনে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারানো ২০০ শহিদের স্মরণে ওই দিন দেশজুড়ে মশাল মিছিল হবে। এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে হান্নান মোল্লা বলেছেন, সন্ধ্যা সাতটায় দেশজুড়ে সমস্ত গ্রাম-গঞ্জে-শহরে মশাল মিছিল হবে। জনগণের সমস্ত অংশ, গণতান্ত্রিক সংগঠনকে ওই মিছিলে শামিল হতে আহ্বান জানিয়েছে কৃষক সভা।

১৬ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের বিশেষকরে পাঞ্জাবের কৃষকনেতা ছোট্টুরামের জন্মদিবস। সেইদিন দেশজুড়ে কৃষকরা চলমান আন্দোলনের সমর্থনে সভা-সমাবেশ করবেন। বিশেষকরে আন্দোলনের বিষয় ব্যাখ্যা করে বলবেন। সরকারের মিথ্যাচারের জবাব দেবেন।

১৮ ফেব্রুয়ারি হবে রেল রোকো। দুপুর ১২টা থেকে চার ঘণ্টার জন্য রেল অবরোধ করা হবে দেশজুড়ে। এর আগে, কৃষক মোর্চার ডাকে ৮ ডিসেম্বর সারা ভারতে হরতাল হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি হয়েছে দিল্লিতে ও অন্যান্য রাজ্যে কৃষক প্যারেড। রেল রোকো করে কৃষকরা সরকারকে হুঁশিয়ারি দেবেন, এখনও এই আইন প্রত্যাহার না করলে আরও বড়ো আন্দোলনের মুখে পড়তে হবে।