৫৮ বর্ষ ৩০ সংখ্যা / ১২ মার্চ, ২০২১ / ২৭ ফাল্গুন, ১৪২৭
নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়া নেহাতই দুর্ঘটনা - পুলিশি রিপোর্ট
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ার কাছে বিরুলিয়া বাজারে ১০ মার্চ সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পায়ে আঘাত লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করেই রাজনীতির অঙ্গন সরগরম হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এই ঘটনাকে ‘চক্রান্ত’ বলে অভিযোগ করে বলেছেন, ৪/৫ জন মিলে নাকি তাঁকে ধাক্কা মেরেছে! তাঁর অভিযোগ, তাঁর কপালে, হাতে এবং কাঁধেও নাকি লেগেছে। কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় হলো, তিনি ঘটনার সময় জেড প্লাস নিরাপত্তা বলয়ে ছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি স্থানীয় কোনো চিকিৎসককে দেখাননি। সরকারি হাসপাতালেও যাননি। অথচ মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে ভেঙে শুধু নন্দীগ্রামকে আলাদা করে স্বাস্থ্য জেলা তৈরি করেছেন। নন্দীগ্রামের গ্রামীণ হাসপাতালকে জেলা হাসপাতাল করা হয়েছে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য নন্দীগ্রামের সেই ‘সুপার স্পেশালিটি’ হাসপাতালে সমস্ত রকম চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। এসব কিছু থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে চিকিৎসা না করিয়ে সোজা চলে আসেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। এই সমস্ত ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে দলীয় স্তরে, বিভিন্ন মহলে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা তৈরি হয়। উঠে আসে নানা প্রশ্ন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, রাজ্যবাসীর অজানা নয়, অতীতে মমতা ব্যানার্জি বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য কীভাবে মিথ্যা গুজব, ভাঁওতা, অপপ্রচার ছড়িয়েছেন অবিরাম।
এই সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, বারে বারে মিথ্যাচার করা, মমতা ব্যানার্জির আক্রান্ত হবার কাহিনি মানুষ আর বিশ্বাস করবেন না। তিনি এদিন এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেছেন, আগে অসংখ্যবার তৃণমূল নেত্রী পালে বাঘ পড়েছে বলে রব তুলেছিলেন। আজকের ঘটনা আবার প্রমাণ করলো মমতা ব্যানার্জি আছেন মমতা ব্যানার্জিতেই। আমরা যে কোনো আক্রমণের ঘটনার নিন্দা করি। কিন্তু উনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উনি যখন জেলায় যান তখন আশেপাশের পাঁচটা জেলার পুলিশ পরিবেষ্টিত হয়ে থাকেন। তার মধ্যে আক্রমণের ঘটনা ঘটেই বা কী করে! এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত। অনেকেই মনে করেছিলেন এবারও গুন্ডামি, মস্তানি করে নির্বাচনে জিতবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গুন্ডামি, মস্তানি ঘটেনি। এখন হিংসার নাম করে ভাগ করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক যেমন হিন্দু-মুসলমানের নামে ভাগ করার চেষ্টা বিজেপি-তৃণমূল দু’পক্ষ মিলেই করে চলেছে। মানুষ এসব ভাগাভাগির চেষ্টা মেনে নেবেন না। তেমনই বিশ্বাস করবেন না মমতা ব্যানার্জির আক্রান্ত হবার কাহিনি।