৫৮ বর্ষ ৩০ সংখ্যা / ১২ মার্চ, ২০২১ / ২৭ ফাল্গুন, ১৪২৭
মৃত্যুদূতের মতো গুঁড়ি মেরে আসছে সে পৃথিবীর পাঁজরের কাছে...
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
'নাজা নাজা'। শব্দটা দেখে মনে হতে পারে ভুল করে 'নাজি' লিখতে গিয়ে 'নাজা' লিখে ফেলা হয়েছে। যদিও বিষয়টা এরকম নয় মোটেই। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা শব্দ। সমার্থক শব্দকোষও দুটো শব্দের অর্থ যে কাছাকাছি এরকম কিছু বলছে না। তবে জীবনবোধ দিয়ে টেনেটুনে যদি এ'দুটোকে আপনি জুড়তে চান তাহলে জুড়তেই পারেন। বিষয়টা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত। কোন্ কথাকে আপনি কীভাবে বলবেন, ধরবেন, কী ব্যাখ্যা করবেন, কী অর্থ বের করবেন - তা নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষে। নাজা থেকে নাজি অথবা নাজি থেকে নাজা - বোধ দিয়ে দুই শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করে বলা যেতেই পারে - 'নাজুক নাজুক'।
'নাজা নাজা' যে গোখরো সাপের বিজ্ঞানসম্মত নাম সেটা প্রায় সকলেই জানেন। যেহেতু এবার গরমটা গত ২৮ ফেব্রুয়ারির পর বেশ কিছু আগেই পড়ে গেছে তাই হয়তো অনেকেরই শীতঘুম আগেভাগেই ভেঙেছে। আলস্য কাটাতে আড়মোড়া ভেঙেই তাই তাঁরা নিজের নিজের জাত চিনিয়ে হাঁক পেড়েছেন - 'এক ছোবলেই ছবি'। আমরা জানতাম না। বিশ্বাস করুন। দেখতে তো মানুষের মতোই। তাই এতদিন মানুষ বলেই ভাবতাম। সরীসৃপ কখনও ভাবিনি। কিন্তু ওই যে বলে, 'স্বভাব যায় না মলে'। 'সাপের স্বভাব যেমন মারে বিষাক্ত ছোবল'। তাই মানুষ সেজে থাকলেও ভেতরে যে আস্ত একটা সরীসৃপ লুকিয়ে বসে আছে - তা প্রকট হয়ে গেল প্রকাশ্য জনসভায় হিস হিসিয়ে ওঠা দেখেই। গোখরো থেকে গিরগিটি - স্বভাবজাতভাবে সকলেই সরীসৃপ। কেউ রঙ বদলায় কেউ বিষ ছড়ায়। তবে ইদানীং মানুষ সচেতন হয়েছে। তাই বিষাক্ত সাপ এখন আর পিটিয়ে মারে না। বন দপ্তরের লোকজন ডেকে এনে ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়। কারণ, তারা সভ্য সমাজে বসবাসের অনুপযুক্ত। মানুষ আর সাপের সহাবস্থান হয় না। 'এক ছোবলেই ছবি' করার হুমকি দিলেও না। বরং সাপে কামড়ালে প্রতিষেধক নিয়ে বিষকে নিস্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। তাই 'খেলা' এখন আর অত সহজ নয়।
রাজ্যে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে গত কয়েকদিন যা যা হয়েছে তা যে কোনো সুস্থ, বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের অসুস্থ হবার জন্য যথেষ্ট। আমাদের চারপাশে কত কত মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে। যাদের মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে দেখে মন ভরে যায়। দলে থেকে কাজ করতে না পারার দুঃখ দেখে অজান্তেই চোখ ভেসে যায়। যারা সেই গেছোদাদার মতো। 'তাঁরা' কখন 'উলুবেড়ে'তে থাকছেন আর কখন 'মতিহারি' হয়তো নিজেরাই জানেন না। চোখের জলে ভাসতে ভাসতে নদীর এপার থেকে ওপারে পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে। সকালে পাকা আমের মতো টপ টপ করে খসে পড়া। ফড়ে, দালালদের হাত ঘুরে ঝাঁকা ভরতি হয়ে বিকেলে বাজারে বিক্রি হওয়া - ক্রমশ চোখ সয়ে যাচ্ছে। একদিকে সাপের হিস হিসানি, বাপ মা ধরে টানাটানি - অন্যদিকে গোরু ছাগল আলু পটলের দেদার বিকিকিনি। এগুলো আর যাই হোক রাজনীতি নয়, মানুষের জন্য নয়, মানুষের ভালোর জন্য নয় - এটুকু বুঝতে আর অসুবিধে হয় না। গতকাল পর্যন্ত সারদা নারদ কাণ্ডের সঙ্গে নাম জড়ানো নেতা মন্ত্রীরা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে চিৎকার করে যারা গলা ফাটিয়েছে, তারাই আজ কোন্ জাদুবলে দলবদল করেই ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যায় তার ব্যাখ্যা কে দেবে? রাজ্যের মানুষ তো এখনও ভোলেনি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই অমোঘ ঘোষণা। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ৯০ দিনের মধ্যে চিটফান্ড কাণ্ডে যুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। মানুষ তো এখনও ভোলেনি ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের জনসভা থেকে বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিং-এর সেই চিৎকার - 'ভাগ মুকুল ভাগ, ভাগ মমতা ভাগ'। আজ কে যেন কোন্ দলে? আসলে গণতন্ত্রের আইপিএল, আইএসএল ঘিরে যে বিরাট বাজার তৈরি হয়েছে সেখানে নীতি আদর্শের দাম কানাকড়িও আছে কিনা সন্দেহ। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে এক সাক্ষাৎকারে যাদবপুর কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন - রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী ঝোঁকের বিপদ এখানেই। যা করা হয় তা আপাতদৃষ্টিতে অপরিকল্পিত বলে মনে হলেও পুরোটাই পরিকল্পিত। সাধারণ মানুষকে তাঁদের দাবি দাওয়া, লড়াই সংগ্রাম থেকে দূরে সরিয়ে দিতে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাতে মানুষ রাজনীতিকে ঘেন্না করতে শুরু করে। এ খেলার একটাই উদ্দেশ্য - মানুষকে রাজনীতি বিমুখ করে তোলা। তাই রাজনৈতিক ময়দানে অ-রাজনীতির মানুষের ভিড় বাড়ানো।
আমি যেহেতু তাত্ত্বিক কোনো মানুষ নই, নিতান্তই মোটা বুদ্ধিতে শব্দ কপচাই, তাই রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী ঝোঁক টোক বেশি বুঝি না। রঙিন রাজনীতির মঞ্চকে ঝলমলে ঝাঁ চকচকে দেখেই তুষ্ট থাকি। সায়ন, ম্যাজেন্টা, ইয়োলো আর ব্ল্যাক দিয়েই যে যেকোনো রঙ তৈরি করা হয় - সিএমওয়াইকে-র সেই বিজ্ঞানটা মোটা মাথায় ঢুকবে কীকরে! বুঝবো কী করে যে ঘন কালো রঙ তৈরি করতে শুধু শতকরার হিসেবে সামান্য এদিক ওদিক করতে হয়!
বাজে না বকে কাজে আসি। মানে কাজের কথায়। তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা কৃষকদের আন্দোলন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কৃষক আন্দোলনের জমায়েতে দলে দলে মহিলাদের যোগদান, কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গোছের আপাতদৃষ্টিতে নজর এড়িয়ে যাওয়া (বলা ভালো গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমাদের নজরের বাইরে রাখার চেষ্টা) - এইসব খবর ছাড়া গত এক সপ্তাহে আরও কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য মুজফ্ফরনগর দাঙ্গার মামলা থেকে উত্তরপ্রদেশে বিতর্কিত বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোম-এর অব্যাহতি। দাঙ্গায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়াও উত্তেজক ভিডিয়ো পোস্ট করার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং-এর মৃত্যু হওয়ায় তিনি আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি। ফলে এই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আদালতের তরফে দু-পাতার রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে। সুবোধ সিং মারা যান গত ২০১৮ সালে। ওই সময় তিনি বুলন্দশহরে পোস্টিং ছিলেন এবং গো-হত্যা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া এক ঝামেলায় উত্তেজিত জনতাকে থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর দেহ একটি ফাঁকা জায়গায় পুলিশের গাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়। আদালতের তরফে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দেওয়া ক্লোজার রিপোর্ট মেনে নিয়ে জানানো হয়, 'ক্লোজার রিপোর্ট জমা পড়ার পর আদালত তা নথিভুক্ত করে এবং একটি নোটিশ পাঠায় অভিযোগকারীকে। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও অভিযোগকারী আদালতে হাজিরা দেননি।' এই মর্মে আদালত বিজেপি নেতা সংগীত সোমকে দাঙ্গা মামলা থেকে বেকসুর খালাস করেছে।
আরও খুব খুব খুব সামান্য একটা ঘটনা ঘটেছে ওই যোগীরাজ্যেই। এই সময়েই। ১০ মার্চ। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের কাছে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করার ২ দিন পরেই ট্রাক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার বাবার। বুধবার সকালে মেয়ের মেডিক্যাল চেকআপের জন্য তাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালের বাইরেই একটি ট্রাক তাঁকে পিষে দেয়। তৎক্ষণাৎ কানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এর ঠিক ২ দিন আগেই নিজের গ্রামের তিন যুবকের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করেছিলেন ১৩ বছরের নির্যাতিতার বাবা। কাকতালীয় এইসব দুর্ঘটনার ঘটনায় খুব বেশি মাথা না ঘামানোই ভালো। তাতে 'বিকাশ' ভীষণ অস্বস্তি বোধ করে। পিছিয়ে পড়ে। হাজার হোক কোনো কিছুর বিনিময়েই বিকাশকে তো পিছোতে দেওয়া যায় না। বিকাশের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রি করতে হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ বিক্রি করতে হয়। তিলে তিলে দেশ বেচতে হয় গালভরা নাম 'বিলগ্নিকরণ'-এর আড়ালে। বছর বছর বিক্রি বাড়ে। সম্পদ বাড়ে কর্পোরেটের। আরও গরিব হয় দেশের মানুষ। আর বিদেশের কোনো সংস্থা এইসব বিষয়ে সমীক্ষা করলে তা হয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ।
গায়ে 'দেশদ্রোহী' তকমা লাগাতে আমি বাবা বিন্দুমাত্র আগ্রহী নই। 'সাতে পাঁচে না থাকা' মানুষ যেমন হয় আর কী। তাই সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন নিউজ পোর্টালের গলা চিপে ধরা থেকে শুরু করে, প্রধান বিচারপতির মন্তব্য অথবা মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া - কোনো বিষয়েই আমি কোনো প্রশ্ন করিনা। অনলাইন মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে এডিটরস গিল্ড যখন প্রতিবাদ জানিয়ে বলে - 'তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক আইন, ২০২০ অনুসারে কোনওরকম আইনি নির্দেশিকা ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকার দেশে যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গার খবর ব্লক করে দিতে, মুছে দিতে বা ঘুরিয়ে দিতে পারে। এই আইনের বিভিন্ন ধারা অনুসারে অকারণেই ডিজিটাল মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সরকার। এই ধরনের নির্দেশিকা জারির আগে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনাই করছে না। এই মর্মে কেন্দ্রের একটি বিষয়ের উপর অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত যে, সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ করে ভারতের সংবিধানের মিডিয়া স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। যা দেশের গণতন্ত্রকে একপেশে করে দিচ্ছে।' - তখন আমি চুপ থাকি। এক ধর্ষণের মামলায় দেশের প্রধান বিচারপতির করা মন্তব্যের প্রতিবাদে দেশের একাধিক মহিলা সংগঠন যখন বলে - ''একজন ধর্ষককে আপনি, ভারতের প্রধান বিচারপতি, পরামর্শ দিচ্ছেন নির্যাতিতাকে বিয়ে করার! এর মাধ্যমে আপনি নির্যাতিতাকে গোটা জীবনের জন্য এমন একজন অত্যাচারীর হাতে তুলে দিচ্ছেন, যার কারণে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।''- এবং প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করে তখনও চুপ থাকি। আবার দেশের সর্বোচ্চ সুরক্ষা স্তর জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কীভাবে চার পাঁচ জন মিলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারে, তার পরেও কেউ গ্রেপ্তার হয়না তখনও আমার মনে কোনো প্রশ্ন জাগে না। জেড প্লাস ক্যাটাগরিতে সুরক্ষায় নিযুক্ত থাকেন ৫৫ জন নিরাপত্তা রক্ষী। যার মধ্যে ১০ জন এন এস জি কমান্ডো। মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পায়ে চোট লাগা সত্ত্বেও কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো এক ডান পায়ের ছবি মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের ছবি বলে ভাইরাল হয়ে যায় তা নিয়েও চুপচাপই থাকি। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তৃণমূল প্রার্থী যখন বলেন - 'আমার ভোট কম পড়লে বুথ দেখব। কোন্ বুথে কম ভোট পড়েছে দেখব। সেই বুথে লাইনও যাবে না, জলও যাবে না, পরিষ্কার কথা। সব ওই বিজেপি-কে দিয়েই করাতে হবে। জলও দেব না, কিচ্ছু দেব না।' - তখনও আমরা রা কাড়িনা।
আমরা কি আদপেই এতটা নির্লিপ্ত? বোধহয় না। তবে এটা ঠিক যে, মনের কোণে কোথাও বোধহয় একটা 'যাক শত্রু পরে পরে' গোছের ভাবনা তৈরি হয়ে গেছে। বলা ভালো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। একটু আগেই লেখার মধ্যে যে দক্ষিণপন্থী ঝোঁকের কথা এসেছিলো - এর সবটুকুই তার দান। অথচ এই ক্রমে ক্রমে আমি আপনি বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠলেও আমাদের সমস্যা তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি। পেট্রোলের দাম কমেনি, রান্নার গ্যাসের দাম কমেনি, বেকারের চাকরির সুযোগ বাড়েনি, নিয়োগে দুর্নীতি কমেনি, বঞ্চনা কমেনি, শোষণ কমেনি, কর্পোরেটের মুনাফার লোভ কমেনি। কমেনি কিছুই। দিনের শেষে এক পা এক পা করে পেছোতে পেছোতে কীভাবে দশ ফুট বাই দশ ফুটের একটা কোণে আমাকে আপনাকে সেঁধিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা খোলা চোখে ধরা পড়ছে না। মারটিন নিম্যোলার পৃথিবী বিখ্যাত সেই কবিতাটা বোধহয় আরও একবার আওড়ে নেওয়া যায় - 'যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল, আমি কোনো কথা বলিনি, কারণ আমি কমিউনিস্ট নই।' কিন্তু শেষবার যখন ওরা আসবে আপনাকে ধরে নিয়ে যেতে? তখন? ওদের শেষ লক্ষ্য কিন্তু আপনিই। অতএব...