৫৯ বর্ষ ১৩ সংখ্যা / ১২ নভেম্বর, ২০২১ / ২৫ কার্ত্তিক, ১৪২৮
হাওড়া ও কলকাতা কর্পোরেশনের ভোট ১৯ ডিসেম্বর
বকেয়া সমস্ত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় ভোটগ্রহণের দাবি সিপিআই(এম)-এর
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আগামী ১৯ ডিসেম্বর হাওড়া ও কলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই কর্পোরেশনে এই দিনটিতে নির্বাচন করার জন্য রাজ্য সরকার যে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল তাতে সায় দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ৯ নভেম্বর কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এই নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রীয় বাহিনী না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে বুথে থাকবে না ভিভিপ্যাট মেশিন। এছাড়া কোনো মাইক্রো-অবজার্ভার থাকবে না। থাকছে না সিসিটিভি-ও। ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা কর্পোরেশনের ১৪৪টি এবং হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এবারে হাওড়া কর্পোরেশনের ভোটে পূর্বতন বালি পৌরসভার ১৬টি ওয়ার্ড থাকছে না বলে জানা গেছে। ২০১৫ সালে এই ১৬টি ওয়ার্ডকে হাওড়া কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। তারপর ২০১৮ সালে সেই ওয়ার্ডগুলি হাওড়া কর্পোরেশন এলাকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা হলেও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে তা কার্যকর করা হয়নি। প্রসঙ্গত, হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডে বুথ রয়েছে ১০০০টি এবং কলকাতায় ১৪৪টি ওয়ার্ডে বুথের সংখ্যায় প্রায় ৪৭০০টি।
হাওড়া, কলকাতা বাদ দিলে রাজ্যে শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোল এবং চন্দননগর কর্পোরেশনের নির্বাচনও দীর্ঘদিন বকেয়া রয়ে গেছে। এছাড়া বকেয়া রয়েছে রাজ্যের ১১৫টি পৌরসভার ভোট। এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) নেতা রবীন দেব বলেছেন, সরকার শুধুমাত্র ২টি কর্পোরেশনের ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বাকি আরও ৪টি কর্পোরেশনের ভোট কেন হবে না, বোঝা যাচ্ছে না। দুর্গাপুর কর্পোরেশনের ভোটও ২০২২ সালে বকেয়া হবে। আমরা মনে করি, কর্পোরেশনের ভোট করতে হলে ৬টি কর্পোরেশনেরই ভোট করা উচিত। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালে লকডাউন হয়েছে। কিন্তু তার আগে থেকেই রাজ্য সরকার স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকারগুলিকে পঙ্গু করে রেখেছে। স্রেফ দলীয় স্বার্থে স্থানীয় স্বার্থে অকেজো করে রেখেছে। এখন বিধানসভা নির্বাচনে কোরামিন পাবার পর ধাপে ধাপে নির্বাচনের কথা ভাবছে। এখানে শাসকদলের নিজস্ব সুবিধা-অসুবিধাই মূল উদ্দেশ্য। আমরা নির্বাচন চাই, নির্বাচন দাবি করছি। যদি শুধু কর্পোরেশনের ভোট করতে হয়, তাহলে ৬টি কর্পোরেশনের ভোট একসঙ্গে করা হোক। আর যদি পৌরসভা হয়, তাহলে সমস্ত পৌরসভার ভোট একসঙ্গে করা হোক।
শুধুমাত্র ২টি কর্পোরেশনে ভোট করানোর উদ্যোগ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, তিন বছর ধরে নির্বাচন করানো হয়নি, বেআইনিভাবে পৌরসভা চলছে। সেখানে লুট চলছে। এখন যেহেতু সবারই নির্বাচন বকেয়া, তাহলে সব ভোট একসঙ্গেই হোক। যাদের নির্বাচন আগে বকেয়া রয়েছে, তাদের নির্বাচন না করে পরে বকেয়া হওয়া নির্বাচন আগে কেন? আসলে বাইরের বাহিনী নিয়ে এসে যাতে ভোট লুট করা যায় সেজন্য কলকাতা আর হাওড়ায় আগে ভোট করতে চায়। ভোট লুট আর পুলিশি মদত ছাড়া তৃণমূল জিততে পারবে না। ভোট লুট করে জিতে তারপর সেটা দেখিয়ে বাকিগুলিতেও ভোট লুট করে জিতবে ভাবছে।
তিনি আরও বলেন, বকেয়া নির্বাচন করে পৌরসভা পরিচালনাকে আইনসম্মত করতে হবে। আমরা তিন বছর ধরে বারবার এই দাবি করেছি। আর বেআইনিভাবে পৌরসভা পরিচালনায় যে বেআইনি খরচ ও লেনদেন হয়েছে তার কী হবে? সেটাও ধামাচাপা দেওয়া চলবে না।