E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ১ সংখ্যা / ১৩ আগস্ট, ২০২১ / ২৭ শ্রাবণ, ১৪২৮

ত্রিপুরার চিঠি


ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি

রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে জনগণের ঐক্য ভাঙার বিপজ্জনক খেলায় মেতেছে বিজেপি

হারাধন দেবনাথ


সিপিআই(এম) নেতা রঞ্জিত ঘোষকে দেখতে হাসপাতালে মানিক সরকার।

কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী। ‘ভিসন ডকুমেন্ট’-এ দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতি রাজ্য সরকার পূরণ করেনি। এর বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে সিপিআই(এম)-র লড়াই থামিয়ে দিতে পুলিশ প্রশাসনকে দলদাসে পরিণত করে বিজেপি ব্যাপক সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশের সামনে সিপিআই(এম) অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইদানিং রাজ্যে তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গের নেতৃত্ব এসে তৎপরতা দেখাচ্ছে। কোথাও কোথাও ওদের উপরও আক্রমণ করেছে বিজেপি। সংবাদ মাধ্যমের একাংশ একে পুঁজি করে বিজেপি-তৃণমূলের লড়াই প্রচারে আনছে। বামপন্থীদের লড়াই, তাদের উপর ফ্যাসিস্তসুলভ আক্রমণ, জনগণের সমস্যা প্রচারের আলোর বৃত্তের বাইরে রাখা হচ্ছে। জাতি-উপজাতি ঐক্য এ রাজ্যের গণআন্দোলনে ভিত। এই ভিতে আঘাত হানতেই জাত্যভিমানের বিপজ্জনক খেলা শুরু হয়েছে। আধা-ফ্যাসিস্ত শক্তি, সাম্প্রদায়িক, বিভেদকামী শক্তির মূল লক্ষ্য প্রগতিশীল বামপন্থীদের দুর্বল করা, ঘরবন্দি করে রাখা। কিন্তু বামপন্থীরা আদর্শে অবিচল থেকে লড়াইয়ের ময়দানে নতুন বন্ধুর সমাবেশ ঘটানোর চেষ্টা করছেন। মূল সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকারের কৌশল কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তা অভিজ্ঞতায় রয়েছে ত্রিপুরার মানুষের। পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা সামনে এনে সাধারণ মানুষ বলছেন বিজেপি’র মতো তৃণমূল কংগ্রেসও জনগণের মঙ্গল চায় না। বিকল্প দেখাতে পারে বামপন্থীরা। তাই বিজেপি এ রাজ্যেও কমিউনিস্টদেরই একমাত্র শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

জিইয়ে রাখা হচ্ছে সন্ত্রাসের আবহ

রাজ্যের অন্যান্য স্থানের মতো কমলপুর শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় ফের ব্যাপক সশস্ত্র তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি। কমলপুর শহরে সিপিআই(এম), ডিওয়াইএফআই এবং টিওয়াইএফ-র নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ চালায় শাসক দলের দুর্বৃত্তরা। কর্মসংস্থানসহ ৮ দফা দাবিতে ডিওয়াইএফআই এবং টিওয়াইএফ’র ডাকে মিছিলে বাধা দেয় মোহনপুরে। পুলিশের সামনেই প্রাণঘাতী আক্রমণে মারাত্মক আহত হয়েছেন সিপিআই(এম)-র প্রবীণ নেতা মহকুমা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জিত ঘোষসহ সিপিআই(এম) এবং টিওয়াইএফ-র তিন নেতা। ৭ জন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। পোড়ানো হয় একটি অটোরিকশা। সিপিআই(এম) কমলপুর অঞ্চল অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা হয়। পুলিশ প্রশাসনকে কিভাবে দলীয় কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তার সর্বশেষ উদাহরণ কমলপুর। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। করোনা অতিমারী আইন লঙ্ঘন করে কারফিউর মধ্যে নিরাপত্তাকর্মীসহ সিপিআই(এম) কমলপুর অফিসে হামলার পরও মন্ত্রী মনোজ দেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত সাড়ে তিন বছর ধরে একটানা ফ্যাসিস্তসুলভ আক্রমণ চলছে।

সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর সদস্য মানিক সরকারের বক্তব্য হলো ভয় পেয়েছে শাসকদল। তাই নির্দিষ্ট কিছু কম বয়সী ছেলে যাদের প্রলুব্ধ করে গত বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহার করেছিল, সেই সমস্ত ছেলেকে দুর্বৃত্তপনার কাজে লাগাচ্ছে। এটা বিজেপি’র জনবিচ্ছিন্নতার নিদর্শন।

তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে মানিক সরকার জানান, ত্রিপুরায় ওরা প্রথম আসেনি। তাদের আসায় নতুন কিছু প্রভাব পড়তে পারে, আলাদাভাবে এমন কোনো মূল্যায়ন নেই আমাদের। আমরা তাদের অবস্থান জানি, আমাদের অবস্থানও তারা জানে। আগরতলায় সিআইটিইউ রাজ্য দপ্তরে রক্তদান, মরণোত্তর দেহদান ও চক্ষুদান শিবিরে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি।

ঐক্য ভাঙার বিপজ্জনক পথ

বিধানসভা নির্বাচনে উপজাতি সর্বস্বতার স্লোগান তুলেছিল আইপিএফটি। এখন একই ধরনের আওয়াজ তুলছে তিপ্রা মথা। এটাও উপজাতিদের সর্বনাশ করবে। এই বার্তা উঠে আসছে বামপন্থীদের প্রচারে। রাজ্যের জাতি-উপজাতিসহ অন্য অংশের জনগণের মধ্যে গড়ে ওঠা ঐক্য ভাঙার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ ধ্বনিত হচ্ছে।

তিপ্রাল্যান্ডের পর এখন গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের স্লোগান তুলে একাংশ উপজাতি জনগণকে বিভ্রান্ত করে চেষ্টা হচ্ছে উপজাতি অঞ্চলে সিপিআই(এম)’র ভিত দুর্বল করার। এডিসি নির্বাচনের আগে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের যে সংজ্ঞা দিয়েছিল তিপ্রা মথা, ক্ষমতা দখলের পর এডিসি’র প্রথম অধিবেশনে সেই সংজ্ঞা পালটে দিয়েছে শাসকদলই। সম্পূর্ণ উলটো কথা বলছে।

উপজাতিদের একাংশকে বিভ্রান্ত করে, ভুল বুঝিয়ে তিপ্রা মথা যেভাবে এডিসি দখল করেছে তার আগে উপজাতি যুব স‍‌মিতি, আইপিএফটি পৃথকভাবে দুইবার একইভাবে এডিসি-র ক্ষমতায় ছিল। উপজাতিদের চরম সর্বনাশ করেছে। তিপ্রা মথাও সর্বনাশ করবে। সুদীর্ঘ রাজন্য শাসনের পর কংগ্রেস শাসন যেমন রাজ্যের মানুষ দেখেছেন তার সাথে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকেও দেখেছেন। উপজাতির ভাষা, সংস্কৃতির বিকাশ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সবই দেখেছেন চোখের সামনে। এডিসি গঠন, ককবরক ভাষাকে রাজ্য ভাষায় স্বীকৃতি দেওয়া সহ যা কিছু হয়েছে সবই করেছে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার এবং এডিসি প্রশাসন যে জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে রাজ্য এবং এডিসি এলাকাকে, এখন সেই অগ্রগতি থমকে গেছে।

নতুন করে জঙ্গি কার্যকলাপ

ত্রিপুরায় জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধির আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বড়সড় হামলা চালাল সন্ত্রাসবাদীরা। অতি সম্প্রতি ধলাই জেলার লংতরাইভ্যালি মহকুমার ও ওয়াদুকছড়ায় এনএলএফটি সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন দু’জন বিএসএফ জওয়ান। রাজ্যে গত দেড় দশকের বেশি সময়ে জঙ্গিদের হাতে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গত তিন বছরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খামখেয়ালির বহু অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের বিরুদ্ধে। পূর্ব গোবিন্দবাড়ি ভিলেজে খুন হয়েছেন বিএসএফ ৬৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সাব ইন্সপেক্টর ভুরু সিং (৫৫) ও কনস্টেবল রাজকুমার (৪০)। সংঘর্ষের পর জঙ্গিরা জওয়ানদের দুটি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করেছে। এ ঘটনায় দুই জওয়ান আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে দুই জওয়ান নিহত ও দুইজন আহত হবার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী।

দীর্ঘ বছর বাদে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের ঘটনায় রাজ্যে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বিজেপি জোটের রাজত্বে এমনিতেই আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ অঙ্গের ভূষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ত্রিপুরায়। এই অবস্থায় উগ্রপন্থী তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছেন জনমনে। জঙ্গিদের গুলিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুই জওয়ান নিহত ও আগ্নেয়াস্ত্র লুটের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি

হীরার শাসনে ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা তলানিতে। দুর্বৃত্তরাজ কায়েম হয়েছে সারা রাজ্যে। রাজনৈতিক সন্ত্রাস যেমন তীব্র, তেমনি খুন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও অহরহ ঘটে চলেছে। লাশ উদ্ধর এখন প্রায়দিনই সংবাদ শিরোনামে।

জুলাই মাসের শিরোনাম সন্ধানে দেখা যাচ্ছে এক মাসে ত্রিপুরায় খুন হয়েছেন ১০ জন। এরমধ্যে দু’জন মহিলাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। গার্হস্থ্য হিংসার ফলে খুন হয়েছেন ৪ জন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২৩টি। অভিযোগ, এরমধ্যে তদন্তে হয়তো খুনের রহস্যও বেরিয়ে আসতে পারে। রাস্তায়, পরিত্যক্ত স্থানে লাশ পড়ে থাকার মতো ঘটনা আছে এরমধ্যে। এমনকি গত একমাসে বেশ ক’জন ভবঘুরে ব্যক্তির লাশও উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।

চমকে ওঠার মতো একমাসে আত্মহত্যার ঘটনাবলি। সংবাদপত্রগুলোর মধ্যে প্রায় ৪৭ জনের আত্মহত্যার খবর হয়েছে। বিভিন্ন বয়সের মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ প্রায় সব বয়সই আছে এই তালিকায়। অভাব, বেকারত্ব, ঋণের জালায় অসময়ের মৃত্যুর কাছে ভেঙে পড়েন অনেকে। ১৩ জুলাই বোধজংনগরের পরিবারের আর্থিক অভাব-অনটনের জেরে বাড়ির রান্নাঘরে ঝুলে পড়েন এক বধূ। ঠিক তার পরের দিনই অভাবের তাড়নায় আরেকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে সোনামুড়ার আড়ালিয়া গ্রামে। অভাবের তাড়নায় এক ব্যক্তি তার বাড়ির রান্নাঘরে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেন। ঋণের বোঝা সইতে না পেরে জয়নগরের এক যুবক আত্মঘাতী হন। বাধারঘাটের এক উচ্চশিক্ষিত যুবক কাজ না পেয়ে বেকারত্বের জ্বালায় আত্মহননের পথ বেছে নেন। আত্মহত্যা করেন এক নিরাপত্তা জওয়ানও। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, পরিস্থিতির নেতিবাচক ধারায় জীবনযুদ্ধে হার মেনে যাচ্ছেন অনেকে। মানসিক শিরোনামে উঠে এসেছে ৯টি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা। শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ৫টি। ধর্ষিতা হয়েছে নাবালিকা। রেহাই পায়নি অবুঝ শিশুও। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছেন অনেকে। এই জেরে খুন হয়েছেন ৪ জন, আত্মহত্যায় বাধ্য হন ৩ জন, নির্যাতনের শিকার হন ৭ জন গৃহবধূ। মহিলাদের উপর অত্যাচার-অপরাধের ঘটনা যে মারাত্মক আকার নিচ্ছে সংবাদমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই তার খবর রয়েছে। যদিও সরকার বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে। বিজেপি জোট সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা ‘সব কুছ ঠিক হ্যায়’ দেখাতে ব্যস্ত।

চুরি ছিনতাই প্রচণ্ড পরিমাণে ঘটছে। শহর-গ্রাম সব জায়গাতেই একইরকম পরিস্থিতি বলে অভিযোগ রয়েছে। বহু অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয় না। খবরের শিরোনাম ঘেঁটে দেখা গেছে, ৫৭টি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে এই একমাসে। খবরে আসেনি এমন ঘটনাও অনেক ঘটতে থাকতে পারে বলেই আশঙ্কা তথ্যাভিজ্ঞ মহলের। ডাক্তারের বাইক চুরি হয়েছে। সাংবাদিকের বাইক চুরি হয়েছে। এমনকি বড়দোয়ালিতে এক থানার ওসি’র ঘরে চুরি হয়েছে। স্কুল-মন্দিরও বাদ যায়নি। আগরতলা সেন্ট্রাল শহরে পোস্ট অফিস চৌমহনিতে এসডিপিও অফিসের সামনে চুরি হয়েছে। আদালতও বাদ যায়নি চোরের থাবা থেকে। কারফিউ’র মধ্যে চোরের দাপট কিভাবে চলতে দিলো পুলিশ প্রশাসন? তার কোনো জবাব নেই।

শরণার্থী সমস্যা

২৬ জুলাই দামছড়ায় দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদ বাঁধে। এতে ১৫-১৬ জন মানুষ জখম হন। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। ২৫টি পরিবারের বাড়িঘর লুটপাট, আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। স্থাবর সম্পত্তি বিশেষ করে নানা ধরনের ফসলের বাগান ধ্বংস করে দেওয়া হয়। ঘটনার পর একটা অংশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে দামছড়া থেকে পালিয়ে আসামে চলে যায়। ৭ দিনের মতো সেখানে ছিল পরিবারগুলি।

প্রশ্ন হলো এরকম একটি ঘটনা কেন হলো? ২২-২৩ বছর ধরে মিজোরাম থেকে আসা ব্রু শরণার্থীদের আগলে রেখেছেন স্থানীয় মানুষ। কোনো গণ্ডগোল হয়নি। হঠাৎ করে কেন পারস্পরিক হিংসা ছড়াল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিবাদকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে দেখাতে চাইছে। ঘটনা আদৌ তা নয়।

বিবাদের মূল কারণ জমি। সেখানে ৮২৯টি পরিবার আছে। এখন তাদের ক্যাম্প ছাড়তে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী তাদের জমি দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবারকে ৩০ বাই ৪০ ফুট জমি দেওয়া হচ্ছে। ঘর তৈরি ব্যতীত একছটাক অতিরিক্ত জায়গাও নেই সে জমিতে। মাত্র ৪৮১ পরিবারের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছে। বলা হয়েছে আর জায়গা নেই। বলা হয়েছে, ঘর তৈরির পর ২৪ মাস বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে প্রত্যেক পরিবারকে। তারপর কি করবে ওরা? যারা ঘর পেয়েছেন তারা জায়গার জন্য স্থানীয় হালাম চড়াইদের বাগানে ঢুকে পড়ে। ঠেলাঠেলি থেকে গণ্ডগোল বাঁধে। জমির সমস্যা কাটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে শুধু দামছড়া না, ৩৫-৪০ হাজার ব্রু পুনর্বাসনের সর্বত্রই বিবাদ তৈরি হবে। যা কাম্য নয় - বলছেন মানুষ।