E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ২২ সংখ্যা / ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ / ২৮ পৌষ, ১৪২৯

সকালই দিন চেনায়...

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


বয়স যত বাড়ছে আরও বেশি বেশি করে ছোটোবেলা ধাক্কা মারছে। ঘুরে ফিরে মনে পড়ে যায় কত কথা। আমরা যে সময় বেড়ে উঠেছি সেই সময় আমাদের বাবা মায়েদের মধ্যে বড়ো অংশেরই সাধ্য ছিলনা বাচ্চাদের খেলার সরঞ্জাম কিনে দেবার। কারোর কারোর থাকত। একটা ক্রিকেট ব্যাট। অথবা একটা ফুটবল। খুবই ছোটো ছোটো চাহিদা। জোগান অপ্রতুল। যার কাছে থাকত তাকে ঘিরে মৌমাছির ঝাঁক। যে বা যারা আউট হয়ে গেলেই ‘আর খেলব না’ বলে বাড়ি চলে যেত। আমাদের ফিল্ডিং দেওয়াই সার হতো। ব্যাট করার সুযোগ আর জুটতো না। যেন জুলজুল চোখে টিভির বিজ্ঞাপন দেখা। প্রায় তার কিছু পরপর সময় থেকেই আমাদের মনের মধ্যে আস্তে আস্তে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপনী ট্যাগলাইন - ‘নেবার্স এনভি, ওনার্স প্রাইড’...। তার আগে খেলায় ব্যাট না পাবার দুঃখ থাকলেও কোনো হীনম্মন্যতা কাজ করত না। গত শতাব্দীর নয়ের দশকের শুরু থেকে আস্তে আস্তে যা আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং যা এখন বেশ পুষ্পপত্র সুশোভিত আকার ধারণ করেছে।

নস্টালজিয়া থাক। মাথা থেকে মন - নষ্ট যা যা হবার তা হয়ে গেছে বা করে দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে লজিক তো আছে অবশ্যই। কিন্তু সবকিছুতে ‘ওয়ানস আপঅন এ টাইম...’ খুঁজে লাভ নেই। তার চেয়ে এলন মাস্ককে নিয়ে একটু গল্প করা ঢের ভালো। ট্যুইটারের সিইও হয়েই কয়েক হাজার ছাঁটাই করার পর গত ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখ ‘মুখোশ’বাবুর ইচ্ছে হয়েছিল ট্যুইটারের ইউজারদের নিয়ে একটু খেলবেন। তা তিনি এক ট্যুইটে ভোট চেয়ে জানালেন, ‘আমি কি ট্যুইটারের প্রধানের পদ থেকে সরে যাব? আমি এই ভোটের ফলাফল মেনে চলব।’ ভোটের ফলে ৫৭.৫ শতাংশ জানালেন ‘আপনি সরে যান’। আর ৪২.৫ শতাংশ বললেন ‘আপনি থেকে যান’। যদিও ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পরেই মাস্কবাবু জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আর খেলবেন না এবং এই খেলার ফলাফল মানবেন না। ওই অনেকটা আমাদের বিভিন্ন রাজ্যের মতো। যেখানে বিজেপি ভোটে হেরে গেলেও বলে আমরা হারিনি। উলটে প্রবল বিক্রমে বিধায়ক কেনাবেচা করে সরকার উলটে দেবার খেলা চলে। যাক সেসব বাজে কথা। এলন বাবু আরও জানিয়েছেন, আগামীদিনে এই ধরনের কোনো ভোটে শুধুমাত্র ‘এলিট’ ব্লু টিকধারী ট্যুইটার ব্যবহারকারীরাই অংশ নিতে পারবেন। বিষয়টা আশা করি বেশ জলবৎ তরল হয়ে গেছে। অতএব, বিষয় পালটানো যাক।

‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’... বহুশ্রুত এবং চালু পুরোনো প্রবাদ। কাঁচা বাংলায় যার অর্থ নাকি সকাল দেখেই বোঝা যায় দিন কেমন যাবে। ২০২৩-এর শুরুতেই ৫ জানুয়ারি সকালে নজরে পড়েছিল আমাজনের চিফ এক্সিকিউটিভ অ্যান্ডি জেসির এক বিবৃতি। যাতে সংস্থার কর্মীদের উদ্দেশ্যে ৪ জানুয়ারি তিনি জানিয়েছিলেন, “নভেম্বরে আমরা যে কর্মী সংখ্যা কমিয়েছিলাম তারপর আমরা আজ জানাচ্ছি আমরা আরও ১৮,০০০ কর্মী ছাঁটাই-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তাঁর বিবৃতিতে অ্যান্ডি আরও জানান, অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার জন্যই এই পদক্ষেপ এবং আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে। তথ্য বলছে, বিগত ২৩ বছরে এটাই আমাজনে সর্ববৃহৎ কর্মী ছাঁটাই। গতবছর থেকে বিভিন্ন সংস্থায় ধাপে ধাপে যে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে এবার তা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে চলেছে। এর আগেই অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, ২০২৩-এর শুরুতেই বিভিন্ন সংস্থায় বড়ো সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাই হতে পারে। লে-অফ ট্র্যাকারের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-এর জানুয়ারি মাসের প্রথম ৬ দিনে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মী ছাঁটাই হয়েছে ৩০,৬১১ জন। যা ২০২২-এর গোটা ডিসেম্বর মাস জুড়ে যা ছাঁটাই হয়েছিল তার চেয়ে বেশি। ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’...

বিগ জায়ান্ট অ্যামাজনের কথা না হয় বাদ দেওয়া যাক। বড্ডি বড্ডি বেওসামে ইয়ে সব ছোটি ছোটি ঘটনায়ে হোতি হ্যায়। ১২ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিজনেস টুডে-র এক প্রতিবেদন অনুসারে কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে ডাউ জোনস। যে সংস্থা ২০২১-এ ১৫০০ এবং ২০২২-এ ১৮০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন জানিয়েছে, ২০২৩-এ একাধিক আমেরিকান সংস্থা বড়োসড়ো কর্মী ছাঁটাই-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সমস্ত সংস্থার অনেকেই ২০২২ থেকেই নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। ইতিমধ্যেই যে সমস্ত সংস্থা কর্মী ছাঁটাই-এর পথে হেঁটেছে তার মধ্যে আছে কয়েনবেস (২০ শতাংশ বা ৯৫০ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে), ব্ল্যাক রক (৩ শতাংশ বা ৫০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে), সেলসফোর্স (১০ শতাংশ বা ৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে), বেড বাথ অ্যান্ড বিয়ন্ড (সংখ্যা জানা যায়নি)। স্টিচ ফিক্স কর্মী কমাচ্ছে ২০ শতাংশ। এছাড়াও কর্মী ছাঁটাই করবে ম্যাকডোনাল্ড, ওন্ডার গ্রুপ, ভেরিলি, ফ্লেক্সপোর্ট, ভিমিও, হুয়োবি প্রভৃতি সংস্থা। সম্ভাব্য ছাঁটাই শুরুর লাইনে দাঁড়িয়ে আছে পেপসিকো, অ্যাডোব, সিটি গ্রুপ, সিএনএন, ক্রাকেন, মরগ্যান স্ট্যানলি, ইন্টেল, মাইক্রোসফট-এর মতো সংস্থা। গোল্ডম্যান স্যাক্স এই সপ্তাহেই কোম্পানির ইতিহাসে সবচেয়ে বড়ো ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে। খরচ কমানোর জন্য কমপক্ষে ৩,২০০ জন বা মোট কর্মী বাহিনীর ৭ শতাংশকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হবে বলে জানা গেছে। সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ, ডেভিড সলোমন, গত মাসের শেষের দিকে কর্মীদের জানিয়েছিলেন, ক্রমবর্ধমান সুদের হারের কারণে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এই ছাঁটাই প্রয়োজনীয় ছিল। ফোর্বস ইন্ডিয়া সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে ৯৩০টি টেক কোম্পানিতে মোট ছাঁটাইয়ের সংখ্যা ১,৪৬,৪০৭। ২০২৩-এ এই সংখ্যা কোথায় যেতে পারে তার কোনো আগাম অনুমান এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে পরিস্থিতি যে খুব একটা সুখকর হবে না তা বেশ স্পষ্ট।

আমরা যেহেতু ‘যাক শত্রু পরে পরে’র নীতিতে বেশি বিশ্বাসী তাই এইসব ছাঁটাই ফাটাই নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কারণ আমাদের নেই। কোন বাড়ির ছেলেমেয়ে ওইসব টেক কোম্পানি টোম্পানিতে কাজ করে তা নিয়েও আমাদের মাথাব্যথা নেই। কার চাকরি গেল, আর কার থাকল তা নিয়েও চাপ নেই। ‘আমার’টা থাকলেই হলো। আমিও চাকরি যাওয়ার লাইনে আছি কিনা এখন থেকে ভাবা শুরু করে কী করব? অবশ্য ‘মানিকন্ট্রোল’ জানিয়েছে, ২০২২-এ ভারতে ২০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই হয়েছে বিভিন্ন টেক কোম্পানিতে। যার মধ্যে আছে বাইজুস (৪,০০০), ওলা (২,১০০), ব্লিঙ্কিট (১,৬০০), লিডো (প্রায় ১২০০), আনএকাডেমি (১,১৫০) এবং বেদান্তু (১,১০৯)। জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২২। গত ১২ মাসে দেশে বেকারির হার ছিল যথাক্রমে ৬.৫৬ শতাংশ, ৮.১১ শতাংশ, ৭.৫৭ শতাংশ, ৭.৮৩ শতাংশ, ৭.১৪ শতাংশ, ৭.৮৩ শতাংশ, ৬.৮৩ শতাংশ, ৮.২৮ শতাংশ, ৬.৪৩ শতাংশ, ৭.৭৭ শতাংশ, ৮ শতাংশ, ৮.৩০ শতাংশ। তালিকার শীর্ষে ডিসেম্বর মাস। গত ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। যে মাসে গ্রামীণ বেকারির হার ৭.৪৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১০.০৯ শতাংশ। তালিকার শীর্ষে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা (৩৭.৪ শতাংশ)। তবে এইসব তুচ্ছ বিষয়ে এত টেনশন করবেন না। ১৩ জানুয়ারি, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের দীর্ঘতম গঙ্গাযাত্রার উদ্বোধন করতে চলেছেন। উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ ঘুরে ৩,২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এই ক্রুজ যাত্রা শেষ হবে আসামের ডিব্রুগড়ে। ৫১ দিনের গঙ্গাযাত্রায় মাথাপিছু খরচ ১২.৫৯ লক্ষ টাকা (১৫,৩০০ আমেরিকান ডলার)। বিশ্বের পর্যটন চিত্রে ভারতের নাম উঠবে। এখন কোনো তুচ্ছ সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না!

রাজ্য হোক বা দেশ - সমস্যা থেকে চোখ ঘুরিয়ে থাকাই এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি, আবাস যোজনায় দুর্নীতি সহ প্রায় গলা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাঝেই জানা গেছে, চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে তিন মাসেরও কম সময় বাকি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার পঞ্চদশ অর্থ কমিশন বরাদ্দের অধীনে রাজ্যের গ্রামীণ উন্নয়ন কাজের জন্য প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় তহবিলের প্রায় ৫০ শতাংশ এখনও ব্যয় করতে পারেনি। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩-এর চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গের জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অধীনে গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে কেন্দ্রীয় তহবিলের মোট ৪,৮৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত, সেই মোট পরিমাণের মধ্যে মাত্র ২,৪০২ কোটি টাকা, যা মোট পরিমাণের ৪৮.৫৪ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘বাকি ৫০ শতাংশ তহবিল আগামী তিন মাসের মধ্যে খরচ করে ফেলা যাবে এটা ভাবা সঠিক হবে না। তবে হ্যাঁ, পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিন স্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সঠিক সমন্বয়ে কাজ করলে একটা বড়ো অংশ খরচ করা যেতে পারে। জেলা আমলাতন্ত্রের সাথে সমন্বয় রক্ষা করে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ রাজ্য সরকারের সূত্র অনুসারে, বর্তমান পরিস্থিতি এতটা সংকটজনক হতো না, যদি বর্তমান প্রকল্পগুলিতে কাজের একটি অভিন্ন গতি আর্থিক বছরের শুরু থেকেই বজায় থাকত। অর্থাৎ কাজ যে হয়নি পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে তা কার্যত স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার।

অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির ভগ্নদশা, দেশের ক্রমবর্ধমান বেকার সমস্যা, দেশের কৃষকদের সমস্যা, লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সমস্যা, সরকারি অপরিণামদর্শিতার কারণে যোশীমঠের ধসে যাওয়া - যত সমস্যাই থাকুক না কেন, বিকাশমুখী দেশে এসব সমস্যার থেকে আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা আছে। এরকমই এক সমস্যার কথা সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন মোহন ভাগবত। এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘হিন্দু সমাজ এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধে রয়েছে। বিদেশি আক্রমণ, বিদেশি প্রভাব, বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এই লড়াই চলছে। সঙ্ঘ এই লড়াইয়ে সমর্থন জুগিয়েছে। আরও অনেকে জুগিয়েছেন। তার ফলে হিন্দু সমাজ এখন জেগে উঠেছে। যুদ্ধরত মানুষের পক্ষে আগ্রাসী হওয়া স্বাভাবিক’। ‘যুদ্ধের সময়ে অতি ব্যগ্রতা স্বাভাবিক। বাঞ্ছিত না হলেও স্বাভাবিক।’

যুদ্ধ কোথায় লেগেছে, কার বিরুদ্ধে হচ্ছে জানা নেই। তবে ভাগবতের কথা থেকে স্পষ্ট - এই যুদ্ধ ঘোষণা দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এবং যে যুদ্ধের প্রস্তুতিতে শান দেওয়া চলছে প্রতিনিয়ত। ঝনঝনি ফুটে বেরোচ্ছে ভাগবত থেকে মিশ্র, পাত্র থেকে শাহ-দের প্রতিটি বক্তব্যে। যে প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, ভাগবতের বক্তব্য বড়ো হিংসার বার্তা দিচ্ছে। অত্যন্ত বিপজ্জনক বার্তা। ২০২৪-এর সাধারণ নির্বাচনের আগে দাঙ্গাহাঙ্গামা, বিষ ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ছাড়া বিজেপি’র কোনো উপায় নেই। সঙ্ঘ-বিজেপি’র ‘নফরত মেশিন’। মুসলিম, খ্রিস্টান, কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে, তেমন হলে দলিত ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা করাই এদের লক্ষ্য।

ইদানীং লেখা কেমন যেন জট পাকিয়ে যাচ্ছে। কী, কেন, কখন, কোথায়, কীভাবের জটে খুব সহজ সরল সাধারণ বিষয়গুলো জটিল হয়ে যাচ্ছে। এক আজব, অনভিপ্রেত গোলোকধাঁধায় ঘুরপাক খাইয়ে ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের দেশে বিবিধের মাঝে মিলন মহানের বাণী ভুলিয়ে এক দেশ এক ভাষা, হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানের তত্ত্ব গেলানো হচ্ছে। প্রশ্ন একটাই - “লেখা আছে পুথিঁর পাতে, ‘নেড়া যায় বেলতলাতে’, নাহি কোনো সন্দ তাতে - কিন্তু প্রশ্ন ক’বার যায়?” স্বাধীনতার ৭৫ বছরে দাঁড়িয়ে যে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা কিংবা খুঁজে পাওয়া খুব জরুরি।