৬০ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ / ৩০ চৈত্র, ১৪২৯
উত্তরকন্যা অভিযান রুখতেও পুলিশি বর্বরতা
লাঠি কাঁদানে গ্যাসেও স্তব্ধ করতে পারল না যৌবনের স্রোত
ডিওয়াইএফআই-এর উত্তরকন্যা অভিযান।
ছবিঃ রাজু ভট্টাচার্য
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে যুবদের কল্লোলিত মিছিলে উত্তাল হলো শিলিগুড়ির রাজপথ। পুলিশের নির্মম লাঠির আঘাত ও কাঁদানে গ্যাসের শেলও রুখতে পারল না ১৩ এপ্রিলের উদ্ধত যৌবন তরঙ্গকে। ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি এদিন উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল। সরকারি প্রকল্পে সীমাহীন দুর্নীতি বন্ধ করা, সবার জন্য স্থায়ী কাজ, শূন্যপদে নিয়োগ, ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করার দাবি সহ সাম্প্রদায়িক শক্তির বিভাজনের রাজনীতি রুখতে এবং ঐক্য ও সংহতি অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্য নিয়ে ছিল এদিনের উত্তরকন্যা অভিযান।
এই কর্মসূচিকে সফল করতে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের সর্বত্র প্রচার চালিয়েছে ডিওয়াইএফআই।সংগঠনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদিন মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার প্রভৃতি জেলা সহ তরাই ডুয়ার্সের প্রতিটি অঞ্চল থেকে প্রায় কুড়ি থকে পঁচিশ হাজার যুবক-যুবতী হাজির হয়েছিলেন শিলিগুড়িতে।
এদিন মহানন্দা সেতু সংলগ্ন এয়ারভিউ মোড় থেকে প্রায় পৌনে দুটো নাগাদ শুরু হয়বর্ণাঢ্য মিছিল। মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন কৃষি ও চা বলয়ের অগণিত যুবকর্মী,তপশিলি জাতি,আদিবাসী জনঅংশের যুবরা। এদিনের মিছিলে যুবতীদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। মিছিলে কৃষি ভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা, বন্ধ চা বাগান খোলা, ন্যূনতম মজুরি প্রদান এবং বেকারদের কাজের দাবিতে সুতীব্র কণ্ঠে স্লোগান ওঠে।
সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখার্জি, সভাপতি ধ্রবজ্যোতি সাহা, রাজ্য নেতা কলতান দাশগুপ্তদের নেতৃত্বে সুদৃশ্য ট্যাবলো ও সংগঠনের পতাকা শোভিত সুবিশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিল চলার পথে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলারা বিভিন্ন স্থানে ফুল ছড়িয়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দিত করেন। মিছিলটি বর্ধমান রোড,ঝঙ্কার মোড়, জলপাই মোড় হয়ে নৌকাঘাট পেরিয়ে তিনবাত্তি মোড়ে এলে পুলিশ ব্যারিকেড করে পথ আটকায়। তখন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে মমতা সরকারের পুলিশ বেপরোয়াভাবে লাঠি চালায়। সেইসঙ্গে মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে কম করেও ২৫ থেকে ৩০ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে। পুলিশের এই নির্মম আক্রমণে অসংখ্য যুবকর্মী আহত হয়।আক্রান্ত হন যুবতীরাও। এমনকী পুরুষ পুলিশ মহিলাদের উপর হামলা চালায়। এই পুলিশি বর্বরতায় অনেকে আহত ও রক্তাক্ত হন। তাদের অনেককেই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয়। পুলিশ এই জঘন্য আক্রমণ চালিয়েও ক্ষান্ত হয়নি, হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য, মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, কলতান দাশগুপ্ত সহ উত্তরবঙ্গের অনেক যুব নেতা-নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে এনজেপি থানায় নিয়ে যায়। এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন সংগঠনের নেতা কর্মীদের পাশাপাশি অন্যান্য গণ সংগঠনের কর্মীরা। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত থানার বাইরে চলছে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ।