৬০ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ / ৩০ চৈত্র, ১৪২৯
ভারতীয় দর্শন প্রসঙ্গে (ছয়)
শ্রীদীপ ভট্টাচার্য
● বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হলো - তৎকালীন অর্থাৎ সমসাময়িক ভারতে যে সমস্ত তাত্ত্বিক বিষয়ে দর্শনের জগতে বিতর্ক ছিল সেই সমস্ত বিষয়ে বৌদ্ধ দর্শনের বক্তব্যগুলি।
(১) কার্য-কারণের মধ্যে সম্পর্ক;
(২) সমগ্র (অবয়বী) ও অংশের (অবয়ব) মধ্যে সম্পর্ক;
(৩) সাধারণের (বা সার্বজনীনের) সাথে নির্দিষ্টের সম্পর্ক;
(৪) বস্তুর সাথে ‘গুণের বা বৈশিষ্ট্যের’ সম্পর্ক এবং উত্তরাধিকার সম্পর্কের সমস্যা;
(৫) শক্তি ও শক্তিমানের মধ্যে সম্পর্ক;
প্রথম বক্তব্য সম্পর্কে বলা যায়, কার্য-কারণ সম্পর্কে বৌদ্ধ মতাদর্শ বলে, সমস্ত কিছুই তাৎক্ষণিক সুতরাং কার্য-কারণ কোনো নিয়ম মেনে চলে না। কার্যর তাৎক্ষণিক অবস্থানের পশ্চাতে রয়েছে তাৎক্ষণিক যে ঘটনা তাকেই কারণ বলে। চিরস্থায়ী বাস্তবতা বলে কিছু নেই। সমস্ত বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটে চলেছে। এই পরিবর্তন নির্ধারণ করে অপর ঘটনা।
● দ্বিতীয় বক্তব্য, বৌদ্ধ দর্শন সমগ্রর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। খণ্ড বা অংশকে সমগ্র হিসাবে বিবেচনা - একটা ভ্রম।
● তৃতীয়ত, বৌদ্ধ দর্শন সার্বজনীনতাকে স্বীকৃতি দেয় না। একমাত্র ব্যক্তিরই শুধুমাত্র যাওয়া ও আসা। হাতের পাঁচটা আঙুল যার প্রত্যেকটির বিশেষত্ব রয়েছে। তবে ‘অঙ্গুলিত্ব’ বলে কোনো সার্বজনীনতা নেই।
● বৌদ্ধ দর্শনে, বিশেষকরে ‘সৌত্রনতিকা বৌদ্ধবাদ’-এর মানে গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্য বাদ দিয়ে কোনো অন্তর্বস্তুর বস্তুর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। যাকে আমরা অন্তর্বস্তু বলে অভিহিত করছি তা আসলে অনুভূতি সৃষ্টি করে। অনুভূতির সংমিশ্রণই আমাদের মধ্যে অন্তর্বস্তু সম্পর্কে ধারণা তৈরি করে।
● বৌদ্ধ দর্শনে শক্তির থেকে আলাদা করে শক্তিমানের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না।
● বৌদ্ধ মতবাদে সমস্ত কিছুই পরিবর্তনশীল, অপরিবর্তনীয় বলে কিছু নেই। উপনিষদের স্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়র বিপরীতে এটাই বিশ্বাস করে। এই পরিবর্তনশীল বস্তু ও তার গুণাবলিকে জানা যেতে পারে।
জৈন ধর্ম তথা জৈন মতবাদ
ভারতের এই ধর্মীয় ও দার্শনিক ধারার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মহাবীর জৈন (খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ - ৫২৭) - এভাবেই মনে করা হয়। তবে এটা সত্য নয়, জৈন ধর্মের তথা দর্শনের উদ্ভব অনেক আগেই হয়েছিল। মহাবীর জৈন নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি ২৪তম তীর্থঙ্কর (ধর্মগুরু) ও তার আগে ২৩ জন তীর্থঙ্কর ছিলেন। যজুর্বেদে ঋষভ, অজিতনাথ ও অরিষ্টনেমি এই তিন জৈন ধর্মগুরুর কথা পাওয়া যায়। ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী ঋষভ জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। মহাবীর জৈন ছিলেন পরেশনাথের শিষ্য। জৈন ধর্মকে জনপ্রিয় করার সাথে সাথে সংস্কারও করেছিলেন মহাবীর জৈন। এই জন্যই মহাবীর জৈনকে জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। তবে জৈন মতাবলম্বীদের মত অনুসারে জৈন দর্শন অনাদিকাল ধরে বিরাজ করে। আমরা যে ‘জৈন দর্শন’ নিয়ে আলোচনা করছি তা হলো শুধুমাত্র বর্তমান ধারা।
● মহাবীর ও বুদ্ধদেব সমসাময়িক ছিলেন। ভারতীয় উপ-মহাদেশে ধর্ম হিসাবে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম প্রায় একইসময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ভ্রান্তির কারণে বহু পশ্চিমী দার্শনিক জৈন দর্শনকে বৌদ্ধ দর্শনের ফলশ্রুতি হিসাবে বিবেচনা করেছেন। দুই ধর্মেই সম্রাট অশোকের যুগের শিলালিপিতে সর্ব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমস্ত ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সম্প্রীতির সাথে বসবাস করার কথা বলা হয়েছে। এই শিলালিপিগুলিতে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম (হিন্দু ধর্ম নয়) এবং শ্রমণ ধর্ম (বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম)-র কথা বলা হয়েছে।
● ‘জিন’ শব্দ থেকে জৈন শব্দটি এসেছে। ‘জিন’ শব্দের অর্থ বিজয়ী। ‘বিজয়ী’ হওয়ার অর্থ কী? পার্থিব আকাঙ্ক্ষা ও দুর্বলতা পরাস্ত করেই একজন ‘জিন’ হতে পারে। ‘জিন’ হওয়ার প্রক্রিয়ায় একজন সর্বোচ্চ জ্ঞানের অধিকারী হয়। বিহারের রাজকীয় ক্ষত্রিয় পরিবারে মহাবীর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মহাবীর ১২ বছর ধরে গভীর ধ্যান ও গুরুতর কঠোর অনুশীলন করেছিলেন। ৩০ বছর বয়সে সমস্ত বিষয়-সম্পদ পরিত্যাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। আধ্যাত্মিক জাগরণের লক্ষ্যে তাঁর এই বাড়ি ছেড়ে যাওয়া।
● জৈন ধর্মও বৌদ্ধ ধর্মের মতো ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। জৈন মতবাদ বেদের কর্তৃত্বে আস্থা স্থাপন করে না। বর্ণব্যবস্থাকেও স্বীকার করে না। জৈন ধর্মের মূল গ্রন্থ যথাক্রমে অষ্টম শতাব্দীতে হরিভদ্র রচিত ‘সদ্-দর্শন-সমুচ্চয়’ এবং পঞ্চদশ শতাব্দীতে গুণরত্ন রচিত ‘তর্ক রহস্য দীপিকা’।
● জৈন দর্শনের যুক্তি বিন্যাস অত্যন্ত উন্নতমানের এবং এটাই জৈন দর্শনের শক্তি। এই যুক্তি আস্তিকতাবাদীদের প্রশ্ন করেছিল ও তাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। আস্তিকতাবাদীদের সাথে জৈন মতাবলম্বীদের বিতর্ক অত্যন্ত আকর্ষণীয়। আস্তিকতাবাদীদের যুক্তি ছিল - ‘মাটি দিয়ে পাত্র তৈরি হয়, মাটি নিজে এই পাত্র তৈরি করে না। তার জন্য একজন কুমোর দরকার। একইভাবে, এই মহাবিশ্ব নিজে থেকেই তৈরি হয়নি, মহাবিশ্ব ঈশ্বরের সৃষ্টি।’
এর উত্তরে জৈন দর্শন বলেছে -
(১) ‘কুমোর যে পাত্রটি তৈরি করেছিলেন তা বলার অর্থ, পাত্রটি তৈরি করার আগে এটির অস্তিত্ব ছিল না। একইভাবে, ঈশ্বর এই বিশ্বজগৎ তৈরি করে থাকলে একটা সময়ে এই জগতের অস্তিত্ব ছিল না। কিন্তু বাস্তবে বিশ্বজগৎ, প্রকৃতি চিরকালীন। প্রকৃতির অস্তিত্ব ছিল না এমন কোনো পর্যায় থাকতেই পারে না। সুতরাং পাত্র-কুমোর এই ব্যাখ্যা প্রকৃতি জগতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।’
জৈন দর্শনের পক্ষ থেকে অবশ্য একাধিক উত্তর রয়েছে। আর একটি উত্তর হলো -
(২) ‘পাত্র-কুমোরের ব্যাখ্যা গ্রহণ করলেও আমরা ধরে নিতে পারি যে, একজন কুমোর দ্বারা সমস্ত পাত্র তৈরি করা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনই একজন ঈশ্বর সমগ্র জগৎ সৃষ্টি করেননি। অসংখ্য ঈশ্বর প্রকৃতির অসংখ্য অংশ তৈরি করেছিলেন। অসংখ্য পিঁপড়ে মিলে যে বাসা তৈরি করে এটি সেই ধরনের প্রয়াস। সুতরাং, ঈশ্বরবাদীরা কী করে একজন সৃষ্টিকর্তার কথা বলেন?’
● একই প্রশ্নের আরও কয়েক ধরনের উত্তর নিচে দেওয়া হলো -
(৩) ঈশ্বরবাদীরা যুক্তি দেখান যে, কুমারের যেমন পাত্র তৈরি করার দক্ষতা ও প্রজ্ঞা রয়েছে, তেমনই ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, সমস্ত কিছু তৈরির দক্ষতা ও প্রজ্ঞা তাঁর রয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই যে, কোনো সৃজনশীল পরিচর্যা ছাড়াই অনেক গাছপালা আপনিই বেড়ে ওঠে। এর পিছনে কি রয়েছে ঈশ্বরের প্রজ্ঞা। মহাবিশ্বে অনেক শূন্যতা রয়েছে। এই শূন্যতার স্রষ্টা কে? শূন্যতা কি কেউ সৃষ্টি করতে পারে। যদি তা না হয়, তাহলে এই শূন্যতা কীভাবে বিরাজ করছে।
(৪) পাত্র প্রস্তুতকারী কুমোরকে আমরা দেখেই জানতে পারি যে, তিনিই পাত্রটি তৈরি করেছেন। ঈশ্বরকে তো আমরা দেখতে পারছি না, তাহলে কীভাবে মানছি যে, তিনি এই জগৎ সৃষ্টি করেছেন।
(৫) কুমোর তো তার দুই হাত ছাড়াও যন্ত্র ব্যবহার করে পাত্র তৈরি করে। যদি তাঁর দেহই না থাকে তাহলে ঈশ্বর কীভাবে এই জগৎ সৃষ্টি করলেন? শুধুমাত্র কুমোরের জ্ঞানই তো পাত্র বানানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ব্যবহারিক কাজের ভূমিকা ব্যতিরেকে পাত্র তৈরি হতে পারে না। ঠিক তেমনই শুধুমাত্র ঈশ্বরের প্রজ্ঞাই জগৎ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট হতে পারে না। তাহলে তো ঈশ্বরেরও ব্যবহারিক কাজ করতে হবে। ঈশ্বরের শরীর থাকলে তা তো দৃশ্যমান হওয়া উচিত।
(৬) কর্ম তত্ত্ব গ্রহণ করলেও মেনে নেওয়া উচিত যে ঈশ্বর শক্তিহীন। সৃষ্টি ব্যক্তির কর্মের ওপর নির্ভর করে হয়, ঈশ্বরের ইচ্ছাধীন নয়। ক্ষমতাহীন একটি সত্তা কীভাবে ঈশ্বর হতে পারে?
(৭) ঈশ্বর কি সহানুভূতির সাথে জগৎ সৃষ্টি করেছেন? যদি তাই করে থাকেন তাহলে তো পৃথিবীতে শোক-দুঃখ-যন্ত্রণা থাকা উচিত নয়। কিন্তু পৃথিবীতে তো শোক-দুঃখ-যন্ত্রণা-কষ্ট বিরাজ করছে। তার অর্থ হলো, ঈশ্বর সংবেদনশীল নন। সেক্ষেত্রে এই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে লাভ কী?
(৮) ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমানই হবেন তবে তিনি এমন শক্তি সৃষ্টি কেন করলেন যা তাঁর সৃষ্টিকেই নস্যাৎ করে দেয়? কেন তিনি নাস্তিকদের সৃষ্টি করলেন যা তার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে?
● জৈন ধর্ম অনুসারে জ্ঞান অর্জনের পাঁচটি পর্যায় -
প্রথম পর্যায় - মতি বা সংবেদনশীল উপলব্ধি।
দ্বিতীয় পর্যায় - শ্রুতি বা অন্যের থেকে শোনা। চিহ্ন বা প্রতীকের মাধ্যমে জানা (এই চিহ্ন বা প্রতীক পরবর্তী সময়ে লিখিত ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল)।
তৃতীয় পর্যায় - অবধি - যা দূরের জিনিস বা বিষয় সম্পর্কে বোঝায়।
চতুর্থ পর্যায় - মন পাঠ বা মন পড়া।
পঞ্চম পর্যায় - কেবল বা সামগ্রিক বাস্তবতা বোধ।
পঞ্চম অর্থাৎ শেষ পর্যায় অতিক্রম করলে তীর্থঙ্কর হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যায়।
● জৈন দর্শনে অনুশীলনকে সত্যের নির্ণায়ক বলে মনে করা হয়। ব্যবহারিক কাজের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। জৈন মত অনুসারে প্রকৃত জ্ঞানের মাধ্যমে মানবজাতির জন্য কে ভাল বা কে মন্দ তা বিচার করা প্রয়োজন। জৈন দর্শনে তথা জৈন ধর্মে ‘অনেকান্তবাদ’ এক ধরনের দ্বৈতবাদ। এটা হলো অধিবিদ্যামূলক (Metaphysical) সত্য-সংক্রান্ত জৈন মতবাদ। ‘অনেকান্তবাদ’-এর উৎস হলো মহাবীরের শিক্ষা। ‘অনেকান্তবাদ’-এর অর্থ হলো বহুমুখিতা। দ্বৈতবাদ এই জন্য যে, জৈন মতবাদ অনুসারে আত্মা মানবদেহে অবস্থান করতে পারে আবার স্বাধীনভাবে দেহ ছাড়াই থাকতে পারে। জৈন ধর্মে বস্তু অজীব কিংবা সজীব। বস্তু ক্ষণস্থায়ী চরিত্রের, আবার স্থায়ী চরিত্রের হতে পারে। মৌলিক বস্তু ‘ধ্রুব’ হলো স্থায়ী, তবু ধ্রুবের গুণ ও প্রভাব ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়। গাছপালা, পোকামাকড়, পাখি ইত্যাদি সমস্ত জীবের প্রাণ আছে, তাই আত্মাও আছে। আমাদের ভাল-মন্দ সমস্ত কিছু আমাদের আত্মার সাথে যুক্ত রয়েছে। আত্মাই এই ময়লা থেকে পরিষ্কৃত হলে মহাবিশ্বের প্রান্তে পৌঁছে স্বাধীন হতে পারবে।
● ‘অনেকান্তবাদ’ জৈন দর্শনের অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্বগুলিকে প্রকাশ করে। একদিকে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে চ্যালেঞ্জ করে আবার অন্যদিকে আত্মার স্বাধীন অস্তিত্বকে গ্রহণ করে। জৈন ধর্মে দুইটি ভাগ রয়েছে - শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর।
● জৈন দর্শনের দুইটি ধারার কথা ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে। যথাক্রমে দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর। সাদা কাপড় ধারণ করেন বলে শ্বেতাম্বরী। নগ্ন থাকেন বলে দিগম্বর। দিগম্বর ধারার মতে কোনো সম্পদের অধিকারী থাকলে এবং পোশাক পরিধান করলে তার মোক্ষ সম্ভব নয়। দিগম্বরীরা মনে করেন, মহাবীরের অব্যবহিত পরেই শ্বেতাম্বরীদের পরাজয় ঘটেছে। তবে তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী দিগম্বর ধারা প্রাচীনতর। জৈনরা প্রতিটি জীবে আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে বলেই জৈনরা কঠোরভাবে নিরামিষাশী। জৈন ধর্ম নৈতিক মূল্যবোধকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়।
● জৈন ও বৌদ্ধ দর্শন সমসাময়িক হলেও, জৈন দর্শনের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো বস্তু বা বিষয় একমাত্র সত্য, তাদের গুণাবলি অসত্য - এটা সঠিক নয়। জৈন দর্শনের বক্তব্য হলো, তিনটি উপাদানকে বিবেচনায় রাখতে হবে - (১) যে কোনো বস্তুর গুণাবলির বিন্যাসের (collocations) কিছু অংশ অপরিবর্তিত থাকে; (২) নতুন কিছু গুণাবলির উদ্ভব ঘটে; (৩) পুরাতন কিছু গুণাবলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। গুণাবলির (qualities) প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তন হলেও প্রতিটি গুণেরই পরিবর্তন হয় না।
(ক্রমশ)