৫৮ বর্ষ প্রথম সংখ্যা / ১৪ আগস্ট ২০২০ / ২৯ শ্রাবণ ১৪২৭
“কিসি কে বাপ কা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়”
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
কবি রাহত ইন্দোরি
‘সরকার চোর হ্যায়’। জরুরি অবস্থার সময় এক কবিসম্মেলনে কবি একথা বলার পরদিনই পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি সরকারকে চোর বলেছেন’। কবি বলেন - ‘হ্যাঁ বলেছি। তবে ভারত সরকার চোর বা পাকিস্তান সরকার চোর কিংবা আমেরিকা সরকার চোর, তা তো বলিনি’। উত্তরে পুলিশ বলে - ‘আপনি কি আমাদের এতটাই বোকা ভেবেছেন যে আমরা জানিনা কোন্ সরকার চোর?’ এতগুলো কথা যাঁর সম্বন্ধে তিনি প্রয়াত হয়েছেন ১১ আগস্ট। করোনা সংক্রমণে। কবি রাহত ইন্দোরি।
দেশে যদিও করোনা সংক্রমণ ততটা গুরুতর নয় বলেই এখনও পর্যন্ত সরকারের দাবি, তবুও প্রতিদিন হাজারে হাজারে মানুষ করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। এ এক অদ্ভুত দেশ! এখানে কারোর জন্য মেদান্ত, কারোর জন্য অন্ত। যাঁদের সামর্থ্য আছে তাঁরা গিয়ে মেদান্ততে ভর্তি হচ্ছেন। আর যাঁদের নেই, তাঁরা হাসপাতালের সামনে গিয়ে ‘চিচিং ফাঁক’ বলতে না পারায় হাসপাতালের দরজা খুলছে না। হাসপাতালের সামনেই সবকিছুর অন্ত হয়ে যাচ্ছে। দেশে লকডাউনে যেমন কেউ চাকরি হারিয়েছেন, আর কেউ ধনীর তালিকায় প্রথম দশে ঢুকছেন, পাঁচে উঠে আসছেন, চারে উঠে আসছেন সেরকমই করোনা সংক্রমিত কেউ কেউ চিকিৎসা পাচ্ছেন। কেউ কেউ পাচ্ছেন না। কেউ বেঁচে ফিরছেন। কারোর মৃত্যু হচ্ছে। আর সরকার নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে যাচ্ছে। বলে যাচ্ছে, আমরা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম বলেই দেশে করোনা বাড়তে পারেনি।
‘সঠিক সময়ে সঠিক সরকারি পদক্ষেপের’ কারণে ভারত এখন করোনা সংক্রমণে পৃথিবীর মধ্যে তৃতীয়, মৃত্যুতে পঞ্চম। ভারত রোগীর তালিকায়, মৃত্যুর তালিকায় ওপরে ওঠে, মুকেশ আম্বানি ধনীর তালিকায়। পৃথিবীর বড়োলোকদের তালিকায় কখনও পাঁচে, কখনও চারে উঠে পড়েন। এই যেমন আজ (১৩ আগস্ট) ভারতে সংক্রমিতের সংখ্যা ২৪ লাখ। মৃত্যু হয়েছে ৪৭ হাজার মানুষের। মুকেশ আম্বানি ক’দিন আগেই পৃথিবীর বড়োলোকদের তালিকায় চার নম্বরে উঠে এসেছেন। করোনা সংক্রমণ, করোনায় মৃত্যু এবং বিশ্বের ধনীর তালিকায় তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম স্থান এখন ভারতের দখলে। ক্রমশ ‘আত্মনির্ভরতার’ পথে।
থিওরি আগে না প্র্যাকটিক্যাল বিতর্কটা অনেকটা ডিম আগে না মুরগি আগের মতো। মীমাংসা না থাকলেও বিতর্কটা চলে। একদল বলে মুরগি আছে বলেই তো ডিম। আর অন্যদল বলে ডিম যদি আগে না হবে তো মুরগিটা কোথা থেকে এলো? ঘোরতর মুশকিল ডেকে আনা এই বিতর্কের মোদ্দা কথা - সব প্র্যাকটিক্যালেরই একটা থিওরি থাকে। আমাদের বোধগম্য হোক বা না হোক, আমরা প্র্যাকটিক্যালি যা দেখি তা থিওরি মেনেই হয়। তবে আপনারা আবার জিজ্ঞেস করবেন না যেন - ‘এ প্লাস বি হোল স্কোয়ার = এ স্কোয়ার প্লাস টু এবি প্লাস বি স্কোয়ার। তো ভাই ইহা টু এবি কাহাঁ সে আ গয়া?’ এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
যাক গে। যে কথা বলছিলাম। থিওরি এবং প্র্যাকটিক্যাল। আপনারা আবার ভেবে নেবেন না যেন যে আমি কায়দা করে আপনাদের কোনো থিওরিতে ঢুকিয়ে দিতে চাইছি। আমি নিতান্তই মুখ্যু সুখ্যু মানুষ। বুঝি কম। থিওরিতে ঢুকে কী লাভ বলুন। লকডাউনের সময় সরস্বতীদি, মঞ্জুদিদের যখন কাজে আসতে বারণ করে দেওয়া হয়, যখন বাড়িতে চালের কৌটো উপুড় করে এক দানা চালেরও খোঁজ পাওয়া যায় না, সেইসময় তাঁর কাছে ডিম অথবা মুরগি - কে আগে, সেই বিতর্ক অর্থহীন। যে থিওরি মেনেই বিপর্যয় হোক না কেন ঘরে চাল না থাকাটা, খেতে না পাওয়াটাই তাঁর কাছে প্র্যাকটিক্যাল।
আসলে দেশের সব সরকার তো কেরলের বাম সরকার নয়। অথবা রাজ্যের বাম ছাত্র যুব কর্মীও নয়। পারসেন্টেজ থিওরিতে যাঁদের আটকে রাখা যায়না। যাঁরা কোমর বেঁধে মুহূর্তে বাস্তব সমস্যার বাস্তব সমাধান বের করে ফেলেন। এই বিপর্যয়ের সময়েও অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেন। যাদবপুর থেকে শিলিগুড়ি, কোন্নগর থেকে নৈহাটি রান্না করা খাবার পৌঁছে দেন। দিনের পর দিন ভরতুকি দিয়ে শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালান। কেরল সরকার স্কুলের শিশুদের বাড়ি বাড়ি হয় মিড ডে মিল অথবা মিড ডে মিলের রেশন পৌঁছে দেয়। আদানি, আম্বানিরা লাভ বোঝেন, আর এঁরা বোঝেন কাজ। অবশ্য মাথাটা একটু চুলকে নিয়ে বলতেই হয় এর পেছনেও একটা থিওরি আছে। সেটা নিতান্তই গোদা। মানুষের পাশে থাকার থিওরি। সেই থিওরি সরস্বতীদি, মঞ্জুদিরা নিজেদের জীবনের প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজেদের মতো করে বুঝে নেন।
আমি চাইছি না, তবু লেখাটার মধ্যে বারবার কীভাবে যেন আদানি আম্বানিরা ঢুকে যাচ্ছেন। আর ঢুকে যাচ্ছে লাভ-এর কথা। যার পিঠোপিঠি আরও একটা শব্দ আছে। লোকসান। বিপরীতার্থক। শেয়ার বাজারে যেমন কেনাবেচা করতে গিয়ে কারো লাভ হয় আর কারো লোকসান, এও অনেকটা সেরকম। কারো অতিরিক্ত লাভ হচ্ছে মানেই কারো কিন্তু লোকসান হচ্ছে। তা নাহলে তো ওই ব্যালেন্স শিট বলে কী একটা আছে, সেটা মিলবে না। দেশের একটা বড়ো অংশের মানুষের যখন হাঁড়ি চড়ছে না, তখনই কেউ কেউ বড়োলোকদের তালিকায় লাফিয়ে লাফিয়ে জায়গা বদলাচ্ছেন, ওপরে উঠছেন সেটা অবশ্যই অতিরিক্ত লাভের জন্যই হচ্ছে। সবাই তো আর মেঘালয়ের রাজ্যপালের মতো ভাবতে পারেন না, বা মানুষের জীবনটাও বাসের পেছন নয়। যেখানে লেখা থাকে - ‘হিংসা কোরো না, তোমারও হবে’। হবে না কোনোদিনই। কোনোকিছুই এমনি এমনি হয়না। প্র্যাকটিক্যাল হওয়াতে গেলে তার একটা থিওরি লাগে। সম্পর্কযুক্ত সবটাই। কর্পোরেটের লাভের সঙ্গে আম জনতার লোকসান যতটা সম্পর্কিত, ঠিক ততটাই সম্পর্কযুক্ত ওই লাভ আর এই সঙ্কট এবং মহামারী।
কথা হচ্ছিল লাভ নিয়ে। লাভ-এর ল-এ আ-কারটা সরিয়ে একটা ও-কার বসিয়ে দিলে আরও একটা শব্দ পাওয়া যায়। লোভ। শুধুমাত্র আ-কার আর ও-কারের পার্থক্য তো। তাই এই শব্দদুটো বেশ হাত ধরাধরি করে চলে। ভাই ভাই গোছের। বড়ো প্রেম। যুক্ত হলেই তখন আরও লাভ আরও লাভ ছাড়া আর কিছু থাকেনা। অতিরিক্ত লাভের লোভে ধাক্কা আসে পরিবেশে। নির্বিচারে ধ্বংস হয় গাছপালা, জল, জঙ্গল, পরিবেশের ভারসাম্য। আমাজন আর মধ্যপ্রদেশ বা ঝাড়খণ্ড, বোলসোনারো, ট্রাম্প বা মোদীতে তখন আর কোনো পার্থক্য থাকেনা। জনস্বাস্থ্য, বিজ্ঞান গবেষণা, ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বলা ভালো সমস্ত ক্ষেত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর সেই ফাঁক দিয়েই টুক করে ঢুকে পড়ে মহামারী। যদিও লাভসন্ধানীদের তাতে কিছু যায় আসেনা। মহামারী হোক, মানুষ মরুক - লাভ যেন অটুট থাকে। তাঁরা তাঁদের ‘লাভ জিহাদ’ ‘লোভ জিহাদ’ চালিয়েই যান। থিওরি মেনে। প্র্যাকটিক্যালি।
বিষয়টা এরকম নয় যে এই সমস্যা শুধু ভারতের। এই সমস্যা সারা পৃথিবীর। তাই তো খুব চালাকি করে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মানুষের মনে প্রথম থেকে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিলো ‘সোশ্যাল ডিসটেনসিং’। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিক থাকা অনেকটা সোনার পাথরবাটির মতই। গোল গোল গণ্ডি কেটে দেওয়া হয়েছিলো। আপনি গণ্ডিবদ্ধ থাকুন। গোষ্ঠীবদ্ধ নয়। বিচ্ছিন্ন হন। মহামারীর কারণ না ভেবে মহামারীর পরিণাম নিয়ে ভাবুন। অবশ্য বামেদের চাপে অনেকেই এখন ‘ফিজিক্যাল ডিসটেনসিং’-এ ফিরেছেন।
এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন - “ওঁরা বলছেন সামাজিক দূরত্ব। আমরা বলছি শারীরিক দূরত্ব। এটা কী চিরকাল থাকবে? না আমরা তা মনে করিনা। আমরা বিশ্বাস করি, মহামারী অতিমারী যাই হোক না কেন এটা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই অতিমারীর কারণ হচ্ছে মহামন্দা। বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সঙ্কট। এই সঙ্কট থেকে অতিমারীকে আলাদা করা যায় না। এটা একটা নতুন পরিস্থিতি। আর এই মহামারীকে ব্যবহার করেই লুটেরা পুঁজিবাদ আরও মুনাফা করতে চাইছে। আরও সম্পদ কেন্দ্রীভূত করতে চাইছে। কিছু মানুষ নিজেরা বেঁচে যেতে চাইছে।”
যদিও দেশের সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যাতেই সরকারের বিশেষ কিছু হেলদোল নেই। দেশবাসীকে কুমীরছানা দেখানোর মতো করোনা সঙ্কট দেখিয়ে তলে তলে হয়ে যাচ্ছে সবই। দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও রেলের বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া আটকে নেই। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির নামে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেবার চেষ্টা আটকে নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিক্রি করে দেওয়া আটকে নেই। হেট স্পিচের বিরাম নেই। মব লিঞ্চিং থেমে নেই। নির্বাচিত সরকার পালটে দিয়ে বাঁকা পথে ক্ষমতা দখলের চেষ্টার বিরাম নেই। তবলিগি জামাতের জমায়েত বেআইনি হলেও রাম মন্দিরের শিলান্যাস জনসমাগম করেই হতে পারে। তিরুপতি মন্দিরের ৭৩৪ জন কর্মী করোনা সংক্রমিত হলেও তা নিয়ে সরকারি ট্যুইট নেই। মন্দিরও বন্ধ করার সরকারি নির্দেশ নেই। সরকারি মিডিয়া ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সম্প্রচারে বাধা নেই। দেশে ‘হাসপাতাল সংস্কৃতির থেকে মন্দির সংস্কৃতি বেশি প্রয়োজন’ প্রচারে খামতি নেই। বেকারত্বের হার নিয়ে, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে, লকডাউনে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের ছাঁটাই হওয়া নিয়ে, বামপন্থীদের দাবি নিয়ে সরকারের মুখে কুলুপ। দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছে না। অথচ দেশের গুদামে পড়ে থাকা খাদ্যশস্য কেন মানুষকে না দিয়ে ইথানল তৈরিতে দেওয়া হবে জবাব নেই তা নিয়েও।
গত সোমবার, ১০ আগস্ট উত্তর কন্নড়ের কুমটায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএসএনএল কর্মীদের ‘‘দেশদ্রোহী’’ বলেছেন বিজেপি সাংসদ অনন্ত কুমার হেগড়ে। যার বক্তব্য অনুসারে ‘‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) দেশের জন্য একটি কালো দাগ। অর্থ, পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও, এমনকি বাজার তৈরি করে দেওয়া সত্ত্বেও টেলিকম কর্মীরা কাজ করতে অস্বীকার করছেন। এর একটাই ওষুধ বেসরকারিকরণ, সেটাই করবে আমাদের সরকার। প্রায় ৮৫ হাজার কর্মীর চাকরি কেড়ে নেওয়া হবে। পরে আরও অনেক কর্মীকে বরখাস্ত করা হবে।’’ আর দেশের প্রধানমন্ত্রী রাম মন্দিরের শিলান্যাস করে জানিয়েছেন - রামমন্দির হলে দেশের অর্থনীতি পালটাবে। এর আগে নোটবন্দিতে একবার দেশের অর্থনীতি পালটেছে। তারপর জিএসটিতে। তারপর ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে। এবার নবতম সংযোজন রামমন্দির। এই প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের একটা কথা বলা যেতেই পারে। ৩৭০ ধারা তুলে নেবার পরে কাশ্মীরে গত ১ বছরে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ৯০০ কোটি টাকা। যদিও দেশের কোনো প্রান্ত থেকে এই বিনিয়োগ আসেনি। এই বিনিয়োগ করেছেন কাশ্মীরিরাই।
এ এক বড়ো অদ্ভুত সময়। দ্রুত বদলে দেবার চেষ্টা হচ্ছে সবকিছু। ভাগ করে দেবার চেষ্টা হচ্ছে মানুষ, জমি, সংস্কৃতি, ভাবনা, বিশ্বাস। ভারতটা মুষ্টিমেয় কিছু কর্পোরেটের পৈতৃক সম্পত্তি নাকি রাম, শ্যাম, যদু, মধু, হাসিম শেখ, রামা কৈবর্তদের জীবনধারণের মাটি সেই ধারণাটাই গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে প্রতিদিন। চেষ্টা হচ্ছে নিজভূমে পরবাসী করে দেবার। লেখাটা শুরু করেছিলাম সদ্য প্রয়াত কবি রাহত ইন্দোরিকে দিয়ে। তাঁকে দিয়েই শেষ করি। এনআরসি/সিএএ/এনপিআর আন্দোলনের সময় কবি লিখেছিলেন - “যো আজ সাহিবে মসনদ হ্যায় কল নহি হোঙ্গে।/কিরায়েদার হ্যায়, জাতি মকান থোড়ি হ্যায়,/সভি কা খুন হ্যায় শামিল ইহা কী মিট্টি মে/কিসি কে বাপ কা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়।”