E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ প্রথম সংখ্যা / ১৪ আগস্ট ২০২০ / ২৯ শ্রাবণ ১৪২৭

সংখ্যাগুরু আধিপত্যবাদী এক ঘন অন্ধকার সময়

গৌতম রায়


ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর দেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মন্দিরের ভিত পুজোর অর্থ হলো ভারতে রাষ্ট্রীয় মদতে আধিপত্যবাদী সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতার কার্যত ভয়াল প্রতিষ্ঠা। আরএসএস ভারতের প্রবহমান ধারার বিপরীতে গিয়ে ‘হিন্দু’ বোধকে উগ্রতায়, সাম্প্রদায়িকতায়, মৌলবাদে, পরধর্মবিদ্বেষে ভরা একটা মতবাদ হিসেবে উপস্থাপিত করতে চায়।বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর মন্দিরের ভিতপুজোর ভিতর দিয়ে ‘হিন্দু’ বোধের অর্থ সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদ, আর এই একক গরিমায়, বহুত্বের চেতনাকে বিসর্জন দিয়েই যে আগামী ভারতকে তাঁরা পরিচালিত করতে চান, এই বার্তা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিত পুজোর মাধ্যমেই করেছে হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি।

মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিত পুজোর পর, বাবরি মসজিদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে দেশের সংখ্যালঘু মানসিকতার উপর ভয়ঙ্কর রকমের আতঙ্ক ছড়াবার পথ এখন ধরতে চাইছে আরএসএস, তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি এবং তাদের প্রকাশ্য আর ছদ্মবেশি সঙ্গীসাথীরা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাবরি মসজিদের অস্তিত্ব, যেটি ’৯২ সালের সূর্যোদয়কালেও ছিল,সূর্যাস্তের ভিতর যে ইতিহাসকে ধ্বংস করে দিয়েছিল বর্বরের দল, সেই ইতিহাসকে অস্বীকার করা হয়নি একটিবারের জন্যেও। বরঞ্চ জমি সংক্রান্ত বিবাদের রায় দানের ক্ষেত্রেও দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কঠোর নিন্দা করেছে।

এই অবস্থায় জমি সংক্রান্ত বিবাদের রায় যেহেতু হিন্দু সাম্প্রদায়িক শিবিরের পক্ষে গিয়েছে, তাই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে বিকৃত করে, ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার নোংরা রাজনীতির পথে নেমেছে হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি। বাবরি মসজিদের অস্তিত্বকে সুপ্রিম কোর্ট কোনো অবস্থাতেই অস্বীকার করেনি - এই চরম সত্যটাকে মুছে দিয়ে ভারতের রাজনীতিকে আরএসএসীয় হিন্দুত্বের ধারায় পরিচালিত করবার এক ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছে সংখ্যাগুরু আধিপত্যবাদ।

ইসলাম ধর্মমত একটা মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হলে তার অস্তিত্ব রোজ কেয়ামত পর্যন্ত থাকে বলে অভিহিত করেছে। বাবরি মসজিদকে স্থানান্তরিত করার যে আদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তা ব্রিটিশের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তরকালে সংখ্যালঘুর স্বার্থ সংরক্ষণের নিশ্চয়তা, যা ভারতের সংবিধানের অন্যতম প্রধান ভিত্তি, তার সঙ্গে কতোখানি সামঞ্জস্যপূর্ণ, এই বিতর্কের এখনই অবসান হয়ে গেছে - এটা কখনোই নিশ্চিত করে বলতে পারা যায় না। কারণ, সহনশীল ভারতে পরমত, পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা, মর্যাদা দেখানোর ঐতিহ্যকে যদি আরএসএস-বিজেপি’র সাময়িক বর্বরতার জেরে, আমরা ঠুন্‌কো বলে মনে করি, তাহলে আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে প্রচলিত আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক গতিধারাকেই আমরা অপমান করে বসব।

কৌশলগত কারণেই আরএসএস, নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় কখনোই প্রকাশ্যে বলে না। ’২৫ সালে জন্মলগ্ন থেকে তারা নিজেদের সাংস্কৃতিক সংগঠন বলে দাবি করে। তাদের মতাদর্শের অন্যতম তাত্ত্বিক নির্মাতা গোলওয়ালকর, সঙ্ঘের তাত্ত্বিক ভিত্তিকে উপস্থাপিত করেছিলেন, ‘সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ’ হিসেবে। ভারতের বহুত্ববাদী, সমন্বয়ী চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান এই তথাকথিত সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের। মুসলমান সহ জন্মসূত্রে হিন্দুও যদি আরএসএস’র পরধর্মবিদ্বেষী হিন্দুত্বে বিশ্বাসী না হন, তাহলে, সেই নাগরিকেরও ভারতে কোনো নাগরিক অধিকার থাকবে না - গোলওয়ালকর, তাঁর তথাকথিত সাংস্কৃতিক মোড়কে এই বীভৎস, আত্মঘাতী রাজনৈতিক ভাবনাকেই আরএসএস এবং তাদের বর্তমান রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি’র মূল অভিষ্ঠ হিসেবে চিহ্নিত করে গিয়েছেন।

সহমতাবলম্বী নন, এমন যে কোনো মানুষ, তিনি রাজনীতির দুনিয়ার হতে পারেন, সংস্কৃতি জগতের হতে পারেন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হতে পারেন, সামাজিক ব্যক্তিত্বও হতে পারেন - আরএসএস’র অভীষ্ঠ তথাকথিত ‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ তেমন কোনো মানুষের ন্যূনতম মানবিক অধিকার থাকতে পারে না - এই রাজনৈতিক অভিপ্সাকেই সাংস্কৃতিক চেতনা হিসেবে আরএসএস তুলে ধরে। এই চেতনাতেই তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি এই মুহূর্তে ভারত সরকার পরিচালিত করছে। এই ভাবনা থেকেই তারা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল। এখন সেই ধ্বংসস্তূপের উপর কোর্টের রায়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিত পুজো করেছে। আবার এই রাজনীতির আড়ালে লুকিয়ে রাখা সাংস্কৃতিক তত্ত্ব দিয়েই তারা জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়া উপস্থাপিত করেছে। সেখানেও শিক্ষার থেকে নিজেদের সাংস্কৃতিক দ্যোতনাকেই মুখ্য করেছে হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী শক্তি।

বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিছক একটি মন্দিরের শিলান্যাস করলেন না। ওই শিলান্যাসের ভিতর দিয়ে সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদের বীভৎসতার এক নতুন দিগন্তও তিনি উন্মোচিত করলেন। এই দিগন্ত উন্মোচনে না দেশ, না বিশ্ব কোন্‌ আলো পাবে? পাবে আলো থেকে অন্ধকারের আবর্তে ভারতকে ক্রমনিমজ্জিত করবার এক নৃশংস তাগিদ। সেই তাগিদের সবথেকে বড় লক্ষ্য হবে দেশের সহনাগরিক মুসলমান সম্প্রদায়। সেই তাগিদের অন্যতম লক্ষ্য হবে সেইসব মানুষ, যাঁরা জন্মসূত্রে হিন্দু হয়েও ধর্মনিরপেক্ষ। আক্রমণের লক্ষ্যস্থল হবে সেইসব মানুষ, যাঁরা প্রচলিত ধর্মীয় বিধিবিধানে বিশ্বাসী হয়েও, আরএসএস-বিজেপি-কে ‘হিন্দু’ ভাবধারার সোলপ্রোপ্রাইটার বলে মনে করে না। পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াকে স্বধর্ম পালনের একটি অত্যন্ত মূল্যবান শর্ত বলে যাঁরা মনে করেন, মোদীর মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর মন্দিরের শিলান্যাসের ফলে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার, সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদে পরিণত হওয়ার দরুন কার্যত তাঁরা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বেন।

মধ্যকালীন ভারতে সাধনার ধারায় নানক, কবীর, দাদু, তুকারাম, রবিদাস, খাজা মঈনুদ্দিন চিস্তি, শ্রীচেতন্য, সেলিম চিস্তির মতো মানুষেরা, মানুষকে ভালোবাসার নামই ধর্ম - এই যে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিলেন, যে শিক্ষার আলোকে শত প্রতিবন্ধকতা, দারিদ্র্য, বিদেশি আক্রমণেও ভারত কখনো পরাজিত হয় নি, সেই ভালোবাসার পরম ধর্মটিই ভারত থেকে অবসৃত হবে। উনিশ শতকে শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদা দেবী, স্বামী বিবেকানন্দ, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, হাজি মহম্মদ মহসিন, জ্যোতিবা ফুলের মতো মানুষেরা জীবে প্রেমকেই জীবনের পরম লক্ষ্যের যে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন, সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদ, সংখ্যালঘুর অধিকারকে নস্যাৎ করে নেওয়ার ভিতর দিয়ে নবজাগরণের সমস্ত মূল্যবোধকে তা ধ্বংস করে দেবে।

ভারতের বেহাল অর্থনীতি কোভিড ১৯-জনিত অপরিকল্পিত লকডাউন এবং তার পরবর্তী প্রেক্ষিতে একদম মুখ থুবড়ে পড়েছে। গোটা দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষের ভয়াল হাতছানি। ছাঁটাই এখন উচ্চবিত্তের দুয়ারে পর্যন্ত কড়া নাড়ছে। মধ্যবিত্ত ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকে নিম্নবিত্তে পরিণত হতে চলেছে। অতিমারীর জেরে তড়িঘড়ি শেষ করে দিতে হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তারপর থেকে সংসদের অধিবেশন বসেই নি। এই সময়েই সংসদকে এড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের ভিতরে সবথেকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর মন্দির তৈরির উদ্দেশে ট্রাস্ট তৈরি করেছে অধ্যাদেশের ভিত্তিতে।

বাবরি মসজিদকে ধ্বংস করে, সেই জায়গাটিকেই রামের জন্মস্থান হিসেবে গাজোয়ারিতে প্রমাণ করতে রাষ্ট্রক্ষমতাকে সার্বিক ভাবে কাজে লাগিয়েছে আরএসএস-বিজেপি। মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি তাদের কাছে ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো বিষয় আদৌ ছিল না। ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের নোংরা কৌশল। কোনো মন্দির ধ্বংস করে পাঁচশো বছর আগে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল, রাষ্ট্রক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে দখল করেও আরএসএস-বিজেপি তা প্রমাণ করতে পারে নি। অতীতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রায় সাড়ে ছয় বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বকালে, সবরকমভাবে দেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগকে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিল আরএসএস-বিজেপি, যাতে যে কোনো অবস্থাতে প্রমাণ করা যায়, মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদটি তৈরি হয়েছিল। চেষ্টা সফল হয় নি। নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম পাঁচ বছরেও এই চেষ্টা কম হয় নি।কিন্তু গায়ের জোরে মন্দির ভেঙে, মসজিদ তৈরির হিন্দু সাম্প্রদায়িক তত্ত্বটি যে কোনো অবস্থাতেই প্রমাণ করা যায় নি, তা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের বাবরি মসজিদের জমি সংক্রান্ত রায় থেকেই পরিষ্কার।সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের জমিটি যে ‘রামলালা’র জমি হিসেবে নির্ধারিত করেছে, তা যে কোনো তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নয়, একাংশের ‘ভক্ত’দের বিশ্বাসের ভিত্তিতে করা হয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের রায় থেকেই পরিষ্কার।

এই অবস্থাতে আরএসএস পরিচালিত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অভিযানকে বৈধতা দিতে, সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ‘হনুমানদাসগড়ি আখড়া’ পরিচালিত কর্মকাণ্ডই আসল ‘রাম’, আর বাকি অযোধ্যাতে যত রামমন্দির আছে, সেগুলিকে ‘নকল রাম’ হিসেবে চিহ্নিত করার এক কদর্য খেলা চলেছে। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ভিতর ছলনা করে ঢুকে একটি ধাতু মূর্তি রেখে এসে, সেই মূর্তিটিকে ঘিরে তথাকথিত পুজোপাঠের যে কর্মকাণ্ড চলেছিল, তার পরিচালক হলো এই হনুমানদাসগড়ি আখড়া। এই আখড়াটি সর্বস্তরের হিন্দু জনগোষ্ঠীর কাছে সর্বমান্য একটি সংস্থা, এটা ভেবে নেওয়ার আদৌ কোনো কারণ নেই। খোদ অযোধ্যাতেই অনেক ধর্মীয় আখ‌ড়া, সংগঠন আছে, যারা এই হনুমানদাসগড়ি আখড়ার তীব্র বিরোধী। এই আখড়ার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ থেকে ফৌজদারি অপরাধের বহু অভিযোগ আছে। এই আখড়ার লোকেদের সাগরদ্বীপে কপিলমুনির (এই মন্দিরটির যাবতীয় অর্থকড়ি এঁদের এক্তিয়ারভুক্ত) আশ্রমটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অল্পকিছুদিন আগে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংস ঘিরে তাঁর নিজের প্রকৃত অবস্থানটিকে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন।

বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপর মন্দিরের ভিত পুজো করতে যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রথম যান হনুমানগড়ি আখড়ার হনুমান মন্দিরে। প্রচারমাধ্যম এই মন্দিরটিতে মোদীর যাওয়ার এই বিষয়টিকে এভাবেই উপস্থাপনা করে যে, অযোধ্যাতে রামকাহিনিতে বর্ণিত পবনপুত্র হনুমানের যেন এই একটিই মন্দির আছে। মোদীর ওই মন্দিরে যাওয়ার বিষয়টিকে এভাবেই উপস্থাপিত করে বৈদ্যুতিন গণমাধ্যম যে, অযোধ্যাতে রামার্চনা করতে গেলে আরএসএস-বিজেপি’র পরিমণ্ডলের হনুমানগড়ি আখড়ার হনুমান মন্দির ব্যতীত পুণ্যার্থীদের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই।যেন রামকাহিনির রামচন্দ্র বা তাঁর অনুগামীদের কাছে ভক্তদের পৌঁছানোর একমাত্র গেটপাস আছে আরএসএস-বিজেপি অনুমোদিত ধর্মীয় সংস্থাগুলিরই।

এভাবেই সহনশীল ভারতকে ধ্বংস করতে প্রথমে সংখ্যাগুরুর সাম্প্রদায়িকতা, যার জেরে কোনো না কোনো পর্যায়ে সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িকতা যে প্রতিক্রিয়া হিসেবে জেগে ওঠেনি, তা নয়, সেই প্রেক্ষিতকে এখন সংখ্যাগুরুর আগ্রাসী আধিপত্যবাদে পরিণত করা হলো বাবরি মসজিদের উপর মন্দিরের শিলান্যাস করে। এই সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদের উগ্রতার ভিতর দিয়েই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান এবং ঐতিহ্যকে ভাঙবার মরিয়া চেষ্টা হিন্দু সাম্প্রদায়িক আরএসএস, বিজেপি এবং তার সঙ্গীসাথীরা চালাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো আরএসএস-বিজেপি’র কখনো দৃশ্যমান, কখনো অদৃশ্যমান বন্ধু, সংখ্যাগুরুর আগ্রাসী আধিপত্যবাদ বিস্তারের চরম সহায়ক হিসেবে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন। অবাম, অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিও যে সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদ বিস্তারের ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধে খুব আন্তরিক এবং যত্নবান, তা হলফ করে বলা যায় না।