E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ২২ সংখ্যা / ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ / ২৯ পৌষ, ১৪২৮

প্রয়াত সাহিত্যিক মণি মুখোপাধ্যায়


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ‘গণতন্ত্র ও গোপাল কাঁহার’-এর স্রষ্টা ও এই সময়ের বিশিষ্ট কথাকার মণি মুখোপাধ্যায় চলে গেলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে সাতটায় দমদম পার্কের বাড়িতে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবনাবসান হয়। বয়স হয়েছিল ৮২বছর। তাঁর স্ত্রী ও জেষ্ঠ্যপুত্র বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক অভীক মুখোপাধ্যায় বর্তমান। দু’বছর আগে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্রের জীবনাবসান হয়।

মণি মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৯ সালে অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। পরবর্তী সময়ে কলকাতায় চলে আসেন। লেখাপড়া কলকাতায়। খুব অল্প বয়সে কেষ্টপুর, দমদম পার্ক অঞ্চলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। চাকরি সূত্রে দুর্গাপুরে ইস্পাত কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনেও অংশ নেন। মানুষের জীবন সংগ্রামের প্রতি আগ্রহের কারণে দেখেছেন রাঢ় অঞ্চলের মানুষের জীবন। যার ফলশ্রুতি তাঁর গল্পের পটভূমি হিসাবে একের পর এক উঠে এসেছে ‘দখল’, ‘খেতু বাগদির স্বাধীনতা’, ‘চার নম্বর ফান্দিস ও ভুট্টা খেতের ছগনলাল’, ‘সোনালী পিঁপড়ে’, ‘বাদা বাউড়ির উপাখ্যান’ এর মতন আশ্চর্য সব গল্পে। মূলত গল্পকার হলেও মণি মুখোপাধ্যায় ছিলেন অন্যতম শক্তিশালী কবিও। ‘অক্ষরের আলো’ তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ। পাঠক মহলে তাঁর গল্পগ্রন্থ ‘দখল ও অন্যান্য গল্প’, ‘নির্বাচিত গল্প ৪০’ দারুণ সাড়া ফেলে। তাঁর গল্প অবলম্বনে ষাটের দশকে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ, শিবপুর শাখা মঞ্চস্থ করে পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘বুনো রামনাথ’। এছাড়া তাঁর গল্প নিয়ে চেতনা নাট্যদল পথনাটক করে ‘ক্ষেতু বাগদি ও গোপাল কাঁহার’, সায়ক নাট্য দল করে একাঙ্ক নাটক ‘স্বর্ণচাঁপা’। মার্কসবাদে বিশ্বাসী লেখক মণি মুখোপাধ্যায় জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ছিলেন সিপিআই(এম)’র সদস্য।

মণি মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে তাঁর বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ মৈত্র ও পার্টি নেতৃত্ব। বুধবার রাতেই নিমতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের রাজ্য সম্পাদক রজত বন্দ্যোপাধ্যায় এক শোক বার্তায় জানান, বিগত শতাব্দীর সাতের দশক থেকে মণি মুখোপাধ্যায়ের গল্প বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তিনি ছিলেন রাজ্য উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য। দুর্গাপুরে লেখক শিল্পীদের সংগঠন গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা নেন এবং সংগঠনের সূচনার সময় থেকেই তিনি এই সংগঠনের সদস্য ছিলেন। ভারতীয় গণনাট্য সংঘ-র পক্ষ থেকেও তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।