৫৯ বর্ষ ২২ সংখ্যা / ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ / ২৯ পৌষ, ১৪২৮
পরিবেশ ও অরণ্য আইনের পর জৈববৈচিত্র্য আইনেও নেতিবাচক পরিবর্তন আনছে সরকার
তপন মিশ্র
২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংসদে বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল সরকার পেশ করে। ২০০২ সালে সংসদে দীর্ঘ আলোচনার মধ্য দিয়ে বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট, ২০০২ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, যখন এই আইনের কিছু পরিবর্তনের কথা সরকার বিবেচনা করল তখন দেশের মানুষের তাতে মতামত দেওয়ার কোনো সুযোগ সরকার দেয়নি। এই আইন তৈরির আগে প্রায় ৪ বছর ধরে বিতর্ক হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানকর্মীদের উদ্যোগে জন-জীববৈচিত্র্য নথি (পিউপিলস বায়োডাইভারসিটি রেজিস্ট্রার - পিবিআর) তৈরি করে সরকারের উপর আইন তৈরির জন্য চাপ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই নথিটি হলো - কোনো এক পঞ্চায়েত বা মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় যে জৈব সম্পদ রয়েছে এবং তার সঙ্গে যুক্ত পরম্পরাগত জ্ঞান, জৈবসম্পদ হারিয়ে যাওয়ার তথ্য ইত্যাদির সমাহার। এরাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ জৈববৈচিত্র্য আইন তৈরির আগে যে পিবিআর তৈরি করে তা সারা দেশে একটি প্রামাণ্য নথি হিসাবে পরিচিত হয়। ১৯৯২ সালে বসুন্ধরা সম্মেলনে ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি’ (সিবিডি)’ তৈরি হয় এবং এপর্যন্ত ১৬৬টি দেশ সহ ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়ন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। আমাদের দেশও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। জৈব বৈচিত্র্য (Biological Diversity) কেবল প্রজাতির বৈচিত্র্য নয়, এর মধ্যে জিন, জেনেটিক মেটেরিয়ালস, বাস্তুতন্ত্র ইত্যদি অন্তর্ভুক্ত। এখানেই ভাবার। কেন তড়িঘড়ি করে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী বিল সংসদে পাস করার জন্য উপস্থিত করা হলো? অবশ্য বিভিন্ন অংশের চাপে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-তে পাঠানো হয়েছে।
জৈববৈচিত্র্য সম্পদ কী?
জৈববৈচিত্র্যের সঙ্গে যুক্ত সম্পদের ব্যাপক চাহিদা আগেও ছিল এবং বর্তমান সময়ে তা ক্রমবর্ধমান। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি, ছত্রাক, শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া এমনকী ভাইরাসও। দীর্ঘকাল ধরে ঔষধি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে যে প্রজাতিগুলি, সেগুলি মূলত অরণ্যবাসী, আদিবাসী সহ বিভিন্ন জনজাতি দ্বারা লালিত এবং মৌলিক জ্ঞান। পৃথিবীর এক ব্যাপক অংশের মানুষের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে যে ছত্রাক বা শৈবাল প্রজাতি খাদ্য বা ঔষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয় তা অতীতে কোনো গবেষণাগারে পরীক্ষা করার পর ব্যবহার শুরু হয়নি, বরং তাদের ব্যবহারের পদ্ধতি আধুনিক মানুষ অনুকরণ করেছে। অনেক ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি আমাদের চারপাশে আছে যেগুলি জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ইদানীংকালে ফসলে রোগ পোকা দমন থেকে শুরু করে মানবদেহে বেশ কয়েকটি রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু জিনের (বিভিন্ন প্রজাতির) ব্যবহার অত্যন্ত লাভদায়ক শিল্প। বেশ কয়েকটি মহামারী, এমনকী এই সময়ের কোভিড অতিমারী প্রতিরোধকারী টিকার উৎস বিভিন্ন প্রজাতির রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাস। যেমন গোরুর বসন্ত রোগের ভাইরাস দিয়ে গুটিবসন্তের টিকা থেকে শুরু করে শিম্পাঞ্জির ফ্লু রোগের ভাইরাস দিয়ে কোভিডের টিকা পর্যন্ত বেশকিছু মারণ রোগের টিকার উৎস হলো ভাইরাস বা তার মধ্যে থাকা নিউক্লিক অ্যাসিড। বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায় এমন সমস্ত জৈবসম্পদ (প্রজাতি থেকে নিউক্লিক অ্যাসিড পর্যন্ত) বর্তমানে মুনাফা তৈরির এক আকর্ষণীয় ক্ষেত্র।
সংশোধনীর ঢাল, বিষাক্ত তরোয়াল এবং সরকারের দ্বিচারিতা
সংশোধনী পেশ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী ভুপেন্দর যাদব বলেন যে, এই সংশোধনীর আসল উদ্দেশ্য হলোঃ (১) ভারতীয় পরম্পরাগত চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করা। (২) জৈবিক সম্পদ ব্যবহার করে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষিত করা। (৩) দেশের ‘বৈদ্য’, ‘হাকিম’ এবং আয়ুষ স্বীকৃত চিকিৎসকদের পরম্পরাগত জ্ঞান যাতে অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত না হয় এবং তাঁদের জ্ঞানের উপযুক্ত মূল্যায়ন করে যাতে তাঁদের বাঁচার মতো জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করা যায় তার প্রতি নজর দেওয়া।
আসলে প্রথম এবং তিন নম্বর লক্ষ্য হলো ঢাল। আসল বিষাক্ত তরোয়াল হলো দ্বিতীয়টি। আমাদের দেশ জৈবসম্পদ এবং তার সঙ্গে যুক্ত জ্ঞানে অনেকটা সম্পদশালী। একদিকে যাঁরা পরম্পরাগতভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করেন, তাঁদের সম্পদের অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, অন্যদিকে বিদেশি পুঁজির বিনিয়োগের স্বার্থরক্ষা করা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই সম্পদ আহরণ, জৈব সম্পদের পেটেন্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে বহুজাতিকদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য অর্থাৎ বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে এই আইন সংশোধন। জৈববৈচিত্র্য সম্পদে বিনিয়োগ অন্য যেকোনো প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় লাভদায়ক। এক্ষেত্রে আমাদের দেশে যথেচ্ছ বিদেশি বিনিয়োগ এবং জৈবসম্পদের সঙ্গে যুক্ত পরম্পরাগত জ্ঞান (traditional knowledge)-এর চুরি রোধ করতেই বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০০২ তৈরি হয়। এই আইনে তিনটি স্তরে জৈববৈচিত্র্য সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা তৈরি হয়। যেমন - (১) জাতীয় স্তরে ন্যাশনাল বায়োডাইভারসিটি অথরিটি (এনবিএ), (২) রাজ্য স্তরে স্টেট বায়োডাইভারসিটি অথরিটি (এসবিএ) এবং (৩) পঞ্চায়েত বা মিউনিসিপ্যালিটি স্তরে বায়োডাইভারসিটি ম্যানেজমেন্ট কমিটি (বিএমসি)। বিএমসি স্তরে এলাকার জনসাধারণের অংশগ্রহণের সুযোগ অনেক বেশি। এই স্তরেই জনজীববৈচিত্র্য নথি তৈরি করা হয় এবং জৈব সম্পদ সংরক্ষণের এই কমিটির গুরুত্ব অপরিসীম।
২০১০ সালে জাপানের নাগোয়া শহরে কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটির অধীনে অন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যার নাম ‘নাগোয়া প্রোটোকল’। এখানে জৈববৈচিত্র্যের যাঁরা রক্ষক তাঁদের জৈব সম্পদ থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত না করে বরং তাঁদের সঙ্গে জৈব সম্পদের ভাগাভাগির ব্যবস্থা (Access to Genetic Resources and the Fair and Equitable Sharing of Benefits Arising from their Utilization to the Convention on Biological Diversity)-র কথা বলা হয়। কম কথায় এই চুক্তিকে ‘নাগোয়া প্রোটোকল অন অ্যাক্সেস অ্যান্ড বেনেফিট শেয়ারিং’ (Nagoya Protocol on Access and Benefit Sharing) বা এবিএস সম্পর্কে নাগোয়া চুক্তি বলা হয়। এই চুক্তিতেও ভারত সরকার স্বাক্ষর করে। জৈব সম্পদের রক্ষক হলেন তাঁরাই যাঁরা এই সম্পদের কাছাকাছি থাকেন এবং অনন্তকাল ধরে তাঁদের রুজির জন্য যেমন এই সম্পদ ব্যবহার করেন তেমনই তাঁরা তা রক্ষাও করেন।
২০০২-এর আইন ও জৈবসম্পদের ভাগাভাগি
জৈব বৈচিত্র্য আইন (২০০২)-এ কিছু পরিবর্তনের জন্য যে সংশোধনী গত ১৬ ডিসেম্বর সংসদে পেশ করা হয় তাকে যুক্তিগ্রাহ্য করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, এদেশে পরম্পরাগত চিকিৎসকদের সঙ্গে জৈবসম্পদের ভাগাভাগির ব্যবস্থা করার অন্যতম লক্ষ্য নিয়ে এই সংশোধনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনটা নয় যে, ২০০২ সালে তৈরি জৈববৈচিত্র্য আইনে জৈবসম্পদের ভাগাভাগির ব্যবস্থা নেই। ২০১০ সালে নাগোয়া প্রোটোকল তৈরির আগে এই ব্যবস্থা ছিল। এই আইন তৈরির পেছনে যে তিনটি মূল উদ্দেশ্যের কথা বলা হয় সেগুলি হলো - (১) জৈববৈচিত্র্য এবং তার সঙ্গে যুক্ত পরম্পরাগত ব্যবহারিক জ্ঞানের সংরক্ষণ, (২) জৈবসম্পদের টেকসই ব্যবহার এবং (৩) সম্পদ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের সমবণ্টন সুনিশ্চিত করা। ২০১৮ সালে কেন্দ্রের পরিবেশ ও বনমন্ত্রক (এমওইএফসিসি)-ও একটি নথি তৈরি করে যার নাম ‘ইমপ্লিমেন্টেশন অফ নাগোয়া প্রোটোকল ওন অ্যাক্সেস অ্যান্ড বেনেফিট শেয়ারিং: ইন্ডিয়াস এক্সপেরিয়েন্স’ (‘Implementation of Nagoya Protocol on Access and Benefit Sharing: India’s Experience’)। তখনও জৈববৈচিত্র্য আইন পরিবর্তনের প্রয়োজনের কথা বলা হয়নি।
২০০২ আইনের অধ্যায় পাঁচ-এর ২১ নম্বর ধারায় ন্যাশনাল বায়োডাইভারসিটি অথরিটি-কে সম্পদের সমবণ্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া আছে। এমনকী পরম্পরাগত জ্ঞানের অধিকারী আদিবাসীদের পক্ষে পেটেন্ট দানের অধিকারও দেওয়া আছে। ফলে নাগোয়া প্রোটোকল অনুযায়ী নতুন করে এই ধারা যুক্ত করার কোনো আবশ্যকতা তেমন ছিল না। কিন্তু এই সংশোধনী আইনে আবার সেইকথাই বলা হয়েছে। আসলে জৈববৈচিত্র্য সম্পদ আহরণে বিদেশি পুঁজির বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে এই সব নতুন ঢালের কথা বলা হয়েছে। এই ধারার (ডি) উপধারায় বলা আছেঃ “association of Indian scientists, benefit claimers and the local people with research and development in biological resources and bio-survey and bio-utilisation”। এখানে কেবল দেশের বিজ্ঞানীদের, স্থানীয় মানুষ - যাঁরা জৈববৈচিত্র্য সম্পদের ব্যবহারকারী তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা হয়। তা সত্ত্বেও নির্লজ্জভাবে এই নতুন সংশোধনীর নামে বিদেশি পুঁজির প্রবেশের রাস্তাকে প্রশস্ত করতে এই ব্যবস্থা।
বর্তমান আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৩(২)(সি) (ii) ধারায় কোনো সংস্থা এনবিএ’র অনুমতি ছাড়া জৈবসম্পদ ব্যবহার করতে পারবে না - তা বলা আছে। পরিষ্কার বলা আছে যে, “...incorporated or registered in India under any law for the time being in force which has any non-Indian participation in its share capital or management”। অর্থাৎ দেশীয় সংস্থা ছাড়া যে কোনো বিদেশি সংস্থা এমনকী দেশে নিবন্ধিকৃত কিন্তু বিদেশি কোনো যোগ আছে তারাও এই পর্যায়ে পড়ে। এবারে সংশোধনীতে এনবিএ এবং এসবিবি স্তরে এদের ঢালাও অনুমতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ নম্বর ধারাকে সংশোধন করে এনবিএ এবং এসবিবি স্তরে আমলাদের প্রাধান্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বেশি বেশি করে আমলাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এনবিএ’র প্রধান (চেয়ারপারসন) সাধারণভাবে একজন খ্যাতমানা বিজ্ঞানী হয়ে থাকেন। তাঁর মেম্বার সেক্রেটারি (যিনি এনবিএ’র মেম্বার সেক্রেটারি)-কে এতোটাই অধিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে, তিনি চেয়ারপারসনের কাজ করতে পারে অর্থাৎ কোনো আদেশে মেম্বার সেক্রেটারি স্বাক্ষর করলেই যথেষ্ট। বিজ্ঞানীদের পরিবর্তে আমলাদের দিয়ে দেশের জৈববৈচিত্র্য সম্পদ মুনাফাখোরদের সামনে উন্মুক্ত করে দেওয়া অনেক সহজ কাজ হবে।
আঘাত আসবে কোথায়?
প্রথম আঘাত আসবে কৃষি ক্ষেত্রে, তার পর আসবে ওষুধ শিল্প, টিকা তৈরি শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে। যদি এই সমস্ত শিল্প সরাকারি উদ্যোগে হতো তাহলে চিন্তা ছিল না। সময়ান্তরে নয় বরং মুনাফার নিরিখে ভারতের কৃষি বিশেষকরে বীজ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এত বড়ো বাজার বিশ্বে নেই বললেই চলে। তার কারণ হলো, আমাদের দেশের বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য। কয়েকটি উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা বোঝা যায়।
মনসান্টো ১৯০১ সালে তৈরি একটি আমেরিকান অ্যাগ্রোকেমিক্যাল এবং কৃষি বায়োটেকনোলজি সংস্থা। পৃথিবীজুড়ে বিধিনিষেধ না মেনে জেনেটিক্যালি মোডিফাইড অর্গানিজম (জিএমওএস) এবং বিপজ্জনক কীটনাশক উৎপাদন, পরিবেশের ক্ষতি এবং কৃষকদের সর্বনাশের কারণ এই সংস্থা। বিভিন্ন দেশের সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আমাদের দেশের ক্ষেত্রে হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাপ্রুভাল কমিটি)গুলির সঙ্গে এদের অসাধু যোগাযোগ সেসব দেশের কৃষিব্যবস্থাকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
ভারত সরকারের তৎকালীন পরিবেশ ও বনমন্ত্রক, বর্তমানে এমওইএফসিসি, ভারত সরকারের ওষুধশিল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে ৯৫০০টিরও বেশি উদ্ভিদ প্রজাতিকে সনাক্ত ও নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫টি প্রজাতি উদ্ভিদের বিশ্ব বাণিজ্যে ধারাবাহিক চাহিদা রয়েছে। কালোজিরা, অমলতাস (বান্দর লাঠি), হলুদ, ভারতীয় সরিষা, উচ্ছা, বেগুন, নিম, গুড়মার ইত্যাদি কিছু সুপরিচিত উদ্ভিদের পেটেন্ট রয়েছে।
জিন থেকে শুরু করে জৈববৈচিত্র্যের বিভিন্ন উপাদান চুরি এখন বহুজাতিকদের লক্ষ্য। ফলে বহুজাতিকদের স্বার্থে জৈববৈচিত্র্য সংক্রান্ত ২০০২ সালের আইন পরিবর্তন এখন আমাদের সরকারের কাছে বড়ো জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এনভায়রনমেন্টাল ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট আইন, অরণ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন, অরণ্য নীতি পরিবর্তনের পাশাপাশি তাই বায়োডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০০২-এর সংশোধনী খুব দরকার হয়ে পড়েছে সরকারের। গত ১৬ ডিসেম্বর সেই দুষ্কর্মটিই করেছে আমাদের দেশের সরকার।