E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা / ১৪ জুলাই, ২০২৩ / ২৮ আষাঢ়, ১৪৩০

এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল এবং ভোট চুরির ভবিষ্যৎ


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২০১৮ আর ২০২৩ সাল এক নয়। সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে আরএসএস এবং তার দুর্গার দল। এবারের সন্ত্রাস ছাড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূলের অতীতে গড়া নজিরও। মনোনয়ন থেকে ভোট গণনায় চুরির হিসেবকে বৈধতা দেবার যাবতীয় চক্রান্ত শত চেষ্টাতেও লু‍‌কনো যাচ্ছে না। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নজিরবিহীন কারচুপি কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপে মানুষের আদালতে ধরা পড়ার পর এবার কলকাতা হাইকোর্ট ১২ জুলাই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে বলেছে, কমিশনকে জানিয়ে দিতে হবে জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আদালতের নির্দেশের ওপর।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের এই ব্যাপক ভোট লুট এবং তাকে বৈধতা দেবার ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে কমিশন-সহ নবান্নের ভূমিকা ঘিরে। যেভাবে বিরোধী জয়ী প্রার্থীদের সার্টিফিকেট দেবার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্গণনার নাম করে ডেকে পাঠিয়ে কার্যত কেড়ে নেওয়া হয়েছে শংসাপত্র, তার সঙ্গে কমিশনের ওয়েবসাইট চালু না হওয়ার বিষয়টিকে ঘিরে সন্দেহ গাঢ় হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের একাংশে প্রচারিত ভোটের ফলাফলের সাথে বিরোধী দলের নিজস্ব সূত্রে প্রাপ্ত ফলাফল না মেলাও মিডিয়ার একাংশের এই চক্রান্তে জড়িত থাকার দিকটিও কি প্রকট করছে না?

সাধারণভাবে এর আগে দেখা গেছে, সার্টিফিকেট পাওয়ার কিছু পরে তা এগিয়ে থাকা বা বিজয়ীর ট্রেন্ড বোঝাতে নথিভুক্ত করা হতো কমিশনের ওয়েবসাইটে। সেক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়ে নিশ্চিত হতেন প্রার্থী। এবারে বেশ কিছু বিরোধী বিজয়ীকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তাঁর ফল বাতিল করা এক বৃহৎ চক্রান্তের অংশ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল অনেকেই। যেভাবে বিডিও থেকে থানার ওসি গণনা কেন্দ্রে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের লোক ঢোকানো থেকে ছাপমারা ব্যালট পেপার জানলা গলিয়ে ফেলে দেওয়ায় সহায়তা করেছে তা ক্রিমিনাল অফেন্স। সাক্ষ্য লোপাট করতে অনেক ক্ষেত্রেই বন্ধ ছিল সিসিটিভি। অভিযোগ উঠেছে, কালীঘাট থেকে ক্যামাক স্ট্রিটে ধাপে ধাপে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটানোর ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয়েছে। নজিরবিহীনভাবে ঘটেছে মনোনয়ন জমা দেবার পর নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রার্থী বা তাঁর এজেন্টের নাম রাতারাতি মুছে দেবার মতো সন্দেহ উদ্রেককারী ঘটনা। অথচ এই ধরনের একটিও ঘটনার কথা জানা যায়নি যেখানে শাসকদলের কোনও প্রার্থী বা এজেন্ট এমন ঘটনার শিকার। তাই হুমকি, হামলা, দৈহিক আক্রমণ, বোমা, গুলি, মহিলাদের শ্লীলতাহানির হুমকি - এরকম সাধারণ ঘটনাগুলি যা আকছার ঘটায় তৃণমূলীরা তার সঙ্গে ওয়েবসাইট পর্ব মেলে না।

তাই বিচারাধীন অবস্থায় থাকা এবারের ত্রিস্তর নির্বাচনের ফলাফলকে এই চক্রান্তের প্রেক্ষিতেও দেখা দরকার। অতএব বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফ’র জান কবুল লড়াইয়ে মানুষের ব্যাপক সমর্থন এই জোচ্চুরির ফলের পার্টিগণিতে মাপা যাবে না।