E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা / ১৪ জুলাই, ২০২৩ / ২৮ আষাঢ়, ১৪৩০

সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ

ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় চরম বিকৃতি ঘটিয়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছেঃ পলিট ব্যুরো


পঞ্চায়েত ভোটের দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভে বলছেন মহম্মদ সেলিম।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসাত্মক এবং যাবতীয় নিয়ম লঙ্ঘনকারী ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামরত জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে। ১২ জুলাই দিল্লি থেকে প্রচারিত বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটগণনা প্রক্রিয়ার ঘটনাবলিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় নির্দেশ লঙ্ঘন করে ভোটদাতাদের মতামত বিকৃত করার যে বিরাট তৎপরতা শাসকদল চালিয়েছে, তার সহযোগী ভূমিকা পালন করেছে রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। হাইকোর্টের নির্দেশনামার খোলাখুলি লঙ্ঘন করেই তারা এই কাজ চালিয়েছে।

ভাঙড় অঞ্চলে জেলা পরিষদের একটি আসনে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতলেও, মানুষের সেই রায় উলটে দিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন আধিকারিকরা। এই অন্যায় ঘটনার প্রতিবাদে বিরাট গণবিক্ষোভ তৈরি হয়। পুলিশ সেই বিক্ষোভে যথেচ্ছ গুলি চালালে ৪ জন মানুষ প্রাণ হারান। একইসঙ্গে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে পুলিশ। ফলে ওই অঞ্চলে পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে।

পলিট ব্যুরো বলেছে, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল কি ব্যাপক আকারে বিকৃত করা হয়েছে, ভাঙড়ের ঘটনা তার নিদর্শন। মানুষের আসল রায় উলটে দেওয়ার স্বার্থেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অচল করে রাখা হয়েছিল এবং গণনা প্রক্রিয়াও অত্যন্ত ধীরগতিতে চালানো হচ্ছিল। গভীর রাতে বামপন্থী ও অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির কাউন্টিং এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রের বাইরে বের করে দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ‘ভোটগণনা’ হয়েছে। সুতরাং পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ফলাফলের কোনও বৈধতাই নেই। বেআইনি কাজ এমন মাত্রায় পৌঁছেছিল যে, সিপিআই(এম)’র প্রতীকে ছাপ দেওয়া বিপুল সংখ্যক ব্যালট গণনাকেন্দ্রের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্যালটগুলি যে আদৌ গোনা হয়নি, তা-ও বেশ স্পষ্ট।

পলিট ব্যুরোর অভিমত, মানুষের মতামত উলটে দেওয়ার এই কায়দা থেকেই স্পষ্ট, বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত করতে এবং বিজেপি’কে দ্বিতীয় স্থানে ঠেলে তোলার লক্ষ্যেই ভোটগণনার প্রক্রিয়ায় এই বিরাট বিকৃতি করা হয়েছে।

পলিট ব্যুরো বলেছে, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের নামে এই প্রহসন কার্যত গণতন্ত্রকেই উপহাসাস্পদ করে তুলেছে দেখে বুধবার ১২ জুলাই কলকাতা হাইকোর্ট ভোট ফলাফল প্রকাশ স্থগিত রাখতে বলে একটি অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করতে বাধ্য হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে জীবন-মৃত্যু লড়াইয়ে শামিল বামপন্থী, কংগ্রেস, আইএসএফ এবং অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির প্রতি সংহতি জানিয়েছে পলিট ব্যুরো। পাশাপাশি, এই কঠিন মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গবাসীর পাশে দাঁড়াতে দেশের সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষের উদ্দেশেও আহ্বান জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো।