E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩৯ সংখ্যা / ১৪ মে, ২০২১ / ৩০ বৈশাখ, ১৪২৮

কোভিড সংক্রমণের তীব্রতায় বিপর্যস্ত রাজ্য

বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, দায় এড়াচ্ছে প্রশাসন


হালিশহরে প্রশাসনের উদাসীনতায় বাড়িতেই দীর্ঘ সময় পড়ে কোভিড আক্রান্তের মৃতদেহ।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্যে‌ ‌কোভিডের‌ ‌দ্বিতীয়‌ ‌তরঙ্গে‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌হার‌ ‌বাড়ছে‌ ‌প্রবলভাবে।‌ ‌‌২০২০‌ ‌সালের‌ ‌মার্চ‌ ‌মাসের‌ তৃতীয় ‌সপ্তাহে‌ ‌রাজ্যে‌ ‌প্রথম‌ ‌করোনা‌ ‌আক্রান্তের‌ ‌সন্ধান‌ ‌মেলার‌ ‌পর‌ ‌১৪‌ ‌মাসের‌ ‌মাথায় ‌রাজ্যে‌ ‌মোট করোনা‌ ‌আক্রান্তের‌ ‌সংখ্যা‌ ‌১০‌ ‌লক্ষের‌ ‌গণ্ডি‌ ‌ছাড়িয়েছে।‌ ‌প্রথম‌ ‌দফায়‌ ‌রাজ্যে‌ ‌দৈনিক‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌সংখ্যা‌ ছিল‌ ‌সর্বোচ্চ‌ ‌৫০-এর‌ ‌গণ্ডির‌ ‌মধ্যে।‌ ‌দ্বিতীয়‌ ‌ধাক্কায়‌ ‌গত‌ ‌এক‌ ‌সপ্তাহের‌ ‌ব্যবধানে‌ ‌তা‌ ‌১০০-এর‌ ‌গণ্ডি পেরিয়ে‌ ‌গেল।‌ ‌‌রাজ্যে‌ ‌মে‌ ‌মাসের‌ ‌প্রথম‌ ‌সপ্তাহে‌ ‌আক্রান্ত‌ ‌হয়েছেন‌ ‌প্রায় ‌এক‌ ‌লক্ষ‌ ‌মানুষ।‌ ‌‌যদিও‌ অভিযোগ‌ ‌রয়েছে, ‌এরাজ্যে‌ ‌নির্বাচন‌ ‌পর্ব‌ ‌থেকেই‌ ‌প্রকৃত‌ ‌তথ্য‌ ‌গোপন‌ ‌করা‌ ‌শুরু‌ ‌হয় ‌সরকারের‌ পক্ষ‌ ‌থেকে।‌ ‌‌পশ্চিমবঙ্গে‌ ‌সরকারি‌ ‌হিসেব‌ ‌অনুযায়ী, ‌১১‌ ‌মে‌ ‌কোভিড‌ ‌পজিটিভ‌ ‌হয়ে‌ ‌মারা‌ ‌গিয়েছেন‌ ১৩২ জন।‌ ‌বিগত‌ ‌কয়েকদিন‌ ‌ধরেই‌ ‌করোনায়‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌সংখ্যা‌ ‌১০০-এর‌ গণ্ডি ‌পেরোচ্ছে‌ ‌ক্রমাগত।‌ কোভিড‌ ‌পজিটিভিটি‌ ‌রেট‌ ‌অর্থাৎ‌ ‌সংক্রমণের‌ ‌হারে‌ ‌পশ্চিমবঙ্গ‌ ‌এখন পৌঁছেছে দেশের‌ ‌প্রথম‌ ‌তিনটি‌ ‌রাজ্যের‌ ‌মধ্যে।‌ মে‌ ‌মাসের‌ ‌প্রথম‌ ‌সাত‌ ‌দিনের‌ ‌সমীক্ষায়‌ ‌সংক্রমণের‌ ‌হার‌ ‌বৃদ্ধির‌ (৩৪.৪‌ ‌শতাংশ)‌ ‌তালিকায়‌ পশ্চিমবঙ্গ‌ ‌তৃতীয়‌ ‌স্থানে।‌ ‌প্রথম‌ ‌দু’টি‌ ‌স্থানে‌ ‌রয়েছে‌ ‌কেবল‌ ‌গোয়া‌ ‌এবং‌ ‌পুদুচেরি।‌ ‌জনস্বাস্থ্য‌ বিশেষজ্ঞদের‌ ‌বক্তব্য, ‌এরাজ্যে‌ ‌কোভিড‌ ‌পজিটিভিটি‌ ‌রেট‌ ‌যেভাবে‌ ‌বাড়ছে‌ ‌তা‌ ‌আশঙ্কার।‌ প্রতি‌ ‌চব্বিশ‌ ‌ঘণ্টায়‌ যত‌ ‌সংখ্যক‌ ‌নমুনা‌ ‌পরীক্ষা‌ ‌হবে‌ ‌তার‌ ‌নিরিখে‌ ‌কতজন‌ ‌পজিটিভ‌ ‌হচ্ছেন, ‌সেই‌ ‌হারই‌ ‌হলো‌ ‌কোভিড‌ পজিটিভিটি‌ ‌হার। ‌‌যদিও‌ প্রয়োজনের‌ ‌তুলনায়‌ ‌এখনও‌ ‌এরাজ্যে‌ ‌নমুনা‌ ‌পরীক্ষার‌ ‌সংখ্যা‌ ‌অনেকটাই‌ ‌কম।‌ ‌মে ‌মাসের‌ ‌প্রথম‌ ‌সাত‌ ‌দিনের‌ ‌সমীক্ষায়‌ ‌পশ্চিমবঙ্গে‌ ‌এই‌ ‌হার‌ ‌ছিল‌ ‌৩৪ শতাংশের‌ বেশি।‌ ‌এই নিরিখে মহারাষ্ট্র, ‌দিল্লিকেও‌ ‌ছাপিয়ে‌ ‌গিয়েছিল‌ ‌পশ্চিমবঙ্গ।‌ ‌আর‌ ‌‌সংক্রমণের‌ ‌এই‌ ‌ভয়াবহতার‌ ‌মধ্যেই‌ দায়‌ ‌এড়ানোর‌ ‌নয়া‌ ‌নজির‌ ‌সৃষ্টি‌ ‌করলেন‌ ‌রাজ্যের‌ ‌মুখ্যমন্ত্রী।‌ ‌রাজ্যের‌ ‌মানুষকে‌ ‌সতর্ক‌ ‌করার‌ পাশাপাশি‌ ‌মুখ্যমন্ত্রী‌ ‌তথা‌ ‌স্বাস্থ্যমন্ত্রী‌ ‌মমতা‌ ‌ব্যানার্জি‌ ‌বললেন, ‘নিজের‌ ‌দায়িত্ব‌ ‌নিজে‌ ‌নিন’।‌ ‌ঠিক‌ তখনই‌ ‌রাজ্য‌ জুড়ে‌ ‌প্রায়‌ ‌এক‌ ‌লক্ষ‌ ‌রেড‌ ‌ভলান্টিয়ার‌, বামপন্থীরা ‌প্রতিটি‌ ‌মুহূর্তে‌ ‌খবর‌ ‌পেলেই‌ ‌পৌঁছে‌ ‌যাচ্ছেন, পাশে‌ ‌দাঁড়াচ্ছেন‌ ‌অসুস্থ, ‌করোনা‌ ‌আক্রান্ত‌ ‌মানুষের‌।‌

এদিকে‌ ‌জেলাগুলিতে‌ ‌করোনা‌ ‌আক্রান্তের‌ ‌সংখ্যাও‌ ‌বাড়ছে‌ ‌পাল্লা‌ ‌দিয়ে।‌ ‌দৈনিক‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌হারে‌ ‌বেশ‌ কয়েকদিন‌ ‌ধরে‌ ‌শীর্ষে‌ ‌উত্তর‌ ‌২৪ পরগনা‌ ‌জেলা।‌ ‌ওই‌ ‌হিসেব‌ (১১ ‌মে)‌ ‌অনুযায়ী, ‌চব্বিশ‌ ‌ঘণ্টায়‌ ‌এই‌ জেলায়‌ ‌কোভিডে‌ ‌মৃত্যু‌ ‌হয়েছে‌ ‌৩৯ জনের।‌ ‌কলকাতায়‌ ‌মৃত্যু‌ ‌হয়েছে‌ ‌৩৭জনের।‌ ‌দুই‌ ‌জেলাতেই‌ মৃত্যুর‌ ‌হার‌ ‌নিয়ন্ত্রণ‌ ‌করা‌ যাচ্ছে‌ ‌না‌ ‌বলে‌ ‌মানছে‌ ‌স্বাস্থ্যভবনও।‌ ‌দক্ষিণ‌ ‌২৪ পরগনাতেও‌ ‌এদিন‌ ‌সর্বোচ্চ‌ মৃত্যু, ‌১৫।‌ ‌উত্তরবঙ্গে‌ ‌দার্জিলিঙ ‌ও‌ ‌জলপাইগুড়িতেও‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌সংখ্যা‌ ‌বাড়ছে।‌ ‌সামগ্রিক‌ভাবে‌ ‌রাজ্যে‌ কোভিডে‌ ‌মোট‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌সংখ্যা‌ ‌এখন‌ ‌বেড়ে‌ ‌দাঁড়িয়েছে‌ ‌১২ হাজার‌ ‌৫৯৩।‌ ‌শুধু‌ ‌আক্রান্তের‌ ‌সংখ্যা‌ ‌নয়, করোনা‌ ‌পজিটিভ‌ ‌মৃত্যুর‌ ‌সংখ্যা‌ও‌ ‌প্রতিদিন‌ ‌আগের‌ ‌রেকর্ড‌ ‌ভাঙছে‌ ‌এ‌ ‌রাজ্যে।‌ ‌১০‌ ‌মে‌ ‌পর্যন্ত‌ ‌হিসেব‌ অনুযায়ী‌ ‌ওইদিন‌ ‌রাজ্যে‌ ‌নতুন‌ ‌করে‌ ‌কোভিডে‌ ‌আক্রান্ত‌ ‌হয়েছেন‌ ১৯ হাজার ৪৪৫‌ ‌জন।‌ তবে‌ ‌মুখ্যমন্ত্রীর‌ ‌ওই‌ ‌দায়‌ ‌এড়ানো‌ ‌মন্তব্যে‌ ‌বিস্মিত‌ ‌নন‌ ‌রাজ্যের‌ ‌করোনা‌ ‌মোকাবিলায় ‌যুক্ত‌ চিকিৎসকরা।‌ ‌তাদের‌ ‌বক্তব্য, ‌রাজ্যে‌ ‌করোনা‌ ‌এখনই‌ ‌নিয়ন্ত্রণের‌ ‌বাইরে।‌ ‌মে‌ ‌মাসের‌ ‌তৃতীয় ‌সপ্তাহে‌ গিয়ে‌ ‌একটা‌ ‌ভয়ঙ্কর‌ ‌পরিস্থিতি‌ ‌তৈরি‌ ‌হবে।‌ ‌তাই‌ ‌রাজ্য‌ ‌সরকার‌ ‌নিজের‌ ‌কাঁধ‌ ‌থেকে‌ ‌দায়িত্ব‌ ‌নামিয়ে‌ অন্যের‌ ‌কাঁধে‌ ‌চাপিয়ে‌ ‌দিতে‌ ‌চাইছে।‌

বাগমারি কবরস্থানেও আর জায়গা ফাঁকা নেই।

রাজ্যের মানুষের স্বার্থে চিকিৎসক‌ ‌এবং‌ ‌স্বাস্থ্যকর্মীরা‌ ‌প্রাণপাত‌ ‌পরিশ্রম‌ ‌করলেও‌ ‌রাজ্য‌ ‌সরকারের‌ ‌অবিবেচক‌ ‌ভুমিকায়‌ কখনো‌ ‌হাসপাতালের‌ ‌বেড‌ ‌না‌ ‌পেয়ে‌ ‌চিকিৎসা‌ ‌না‌ ‌পেয়ে‌ ‌রোগীরা‌ ‌ফিরে‌ ‌আসছেন‌ ‌বাড়িতে, কখনো‌ ঘণ্টার‌ ‌পর‌ ‌ঘণ্টা‌ ‌মৃতদেহ‌ ‌থাকছে‌ ‌বাড়িতেই‌ ‌পড়ে।‌ ‌আবার‌ ‌কখনো‌ ‌হাসপাতাল‌ ‌থেকে‌ ‌করোনা‌ রোগীকে‌ ‌রেফার‌ ‌করলে‌ ‌পথেই‌ ‌মারা‌ ‌যাচ্ছেন‌ সেই ‌রোগী।‌ ‌মানুষের‌ ‌বাঁচার‌ ‌জন্য‌ ‌হাহাকার‌ এবং‌ আর্তি‌ ‌শোনা‌ ‌যাচ্ছে‌ ‌সর্বত্রই।‌

হাসপাতালগুলিতে ঘটা বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। যেমন অক্সিজেন‌ ‌না‌ ‌থাকায় ‌কলকাতার‌ ‌ন্যাশনাল‌ ‌মেডিকেল‌ ‌কলেজে‌ ‌ভরতি ‌বন্ধ‌ ‌করে‌ ‌দেওয়ার‌ ‌পাশাপাশি‌ জেলা‌ ‌হাসপাতাল‌গুলির‌ ‌ছবি‌ ও‌ ‌একই‌ রকম।‌ ‌উত্তর‌ ২৪ ‌পরগনার‌ ‌বনগাঁ‌ ‌থেকে‌ ‌নদীয়া‌ ‌জেলার‌ কল্যাণী‌ ‌মেডিকেল‌ ‌কলেজে‌ ‌অব্যবস্থা‌ ‌চলছেই।‌ ‌কল্যাণীর‌ ‌ওই‌ ‌হাসপাতালে‌ ‌করোনা‌ ‌রোগীকে‌ ‌সাধারণ‌ রোগীদের‌ ‌সঙ্গে‌ ‌একসাথে‌ ‌আইসিসিইউ-তে‌ ‌রাখা‌ ‌হয়েছে, ‌এমন‌ ‌তথ্যও‌ ‌সংবাদমাধ্যমে‌ ‌উঠে‌ ‌এসেছে।‌ উত্তর‌ ২৪ পরগনার‌ ‌কাকিনাড়া‌ ‌এবং‌ হালিশহরে‌ ‌করোনা‌ ‌আক্রান্ত‌ ‌মৃতদেহ‌ ‌কুড়ি‌ ‌থেকে ২৫ ‌ঘণ্টা পড়ে‌ ‌থাকার‌ ‌ঘটনাকেও ‌ছাপিয়ে‌ গেছে‌ হাওড়ার ‌লিলুয়া‌য় ৪৮ ঘণ্টা‌ ‌মৃতদেহ‌ ‌পড়ে‌ ‌থাকার‌ ‌নজির।‌ শুধু‌ ‌এই‌ ‌ঘটনাগুলি‌ ‌নয়, ‌রাজ্যের‌ ‌বিভিন্ন‌ ‌প্রান্তে‌ ‌এই‌ ‌ধরনের‌ ‌বহু‌ ‌ঘটনার‌ ‌খবর‌ ‌বিভিন্ন‌ ‌মাধ্যমে‌ ‌উঠে‌ আসছে।‌ ‌স্থানীয় ‌পৌরসভাগুলি‌ ‌উদ্যোগ‌ ‌নিচ্ছে‌ ‌না।‌ ‌এই‌ ‌আবহে‌ ‌সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে সাধারণ‌ ‌মানুষের ‌ভেতরে‌ ‌আতঙ্ক‌ প্রবলতর‌ ‌হচ্ছে।‌ ‌‌এ প্রসঙ্গে স্থানীয়‌ ‌প্রশাসনের‌ ‌বক্তব্য‌, ‌শ্মশানে‌ ‌মৃতদেহের‌ ‌চাপ‌ ‌থাকায় ‌দ্রুত‌ ‌দাহ‌ ‌করা‌ ‌যাচ্ছে‌ না।‌ আবার‌ ‌হাসপাতালে‌ ‌শয্যা‌ ‌সংখ্যা‌ ‌বৃদ্ধি‌ ‌সহ‌ ‌সাম্প্রতিক‌ ‌বিভিন্ন‌ ‌সরকারি‌ ‌নির্দেশিকা‌ ‌সম্পর্কে‌ চিকিৎসক‌ ‌মহলের‌ ‌বক্তব্য, ‌রাজ্য‌ ‌সরকার‌ ‌যে‌ ‌সমস্ত‌ ‌প্রস্তাব‌ এখন ‌বাস্তবায়িত‌ ‌করতে‌ ‌বলছে‌ ‌তা‌ ‌দ্রুত‌ করা‌ ‌সম্ভব‌ ‌নয় ‌এই‌ ‌পরিকাঠামোতে।‌ ‌তাই‌ ‌কার্যত‌ ‌অসুস্থ‌ ‌রোগীদের‌ ‌হাহাকারের‌ ‌এখনই‌ ‌কোনোৎ সমাধানের‌ ‌দিশা‌ ‌দেখাতে‌ ‌পারছেন‌ ‌না‌ ‌তাঁরা। সাধারণ মানুষও বুঝতে পারছেন অক্সিজেন, ওষুধ নিয়ে, কালোবাজারি নিয়ে তাদের যন্ত্রণার কথা শোনার জন্য কেউ নেই।

সংবাদমাধ্যমে‌ ‌প্রকাশিত‌ ‌খবর‌ ‌অনুযায়ী, ‌রাজ্য‌ ‌সরকার‌ ‌দু‌’কোটি‌ ‌প্রতিষেধকের‌ ‌বরাত‌ ‌উৎপাদক‌ সংস্থাগুলির‌ ‌কাছে‌ ‌দিলেও‌ ‌মে‌ ‌মাসে‌ ‌পশ্চিমবঙ্গে‌ ‌খুব‌ ‌বেশি‌ ‌হলে‌ ১৪‌ ‌লক্ষ‌ ২৪ ‌হাজার‌ ‌এর‌ ‌মতোট ‌ডোজ‌ সরবরাহ‌ ‌করা‌ ‌হবে।‌ ‌কিন্তু‌ ‌তার‌ ‌মধ্যে‌ ‌অর্ধেক‌ ‌অর্থাৎ‌ ৭ ‌লাখের‌ ‌কিছু‌ ‌বেশি‌ ‌ডোজ‌ ‌রাজ্য‌ ‌সরকার‌ হাতে‌ ‌পাবে।‌ ‌বাকি‌ ‌অর্ধেক ‌যাবে‌ ‌বেসরকারি‌ ‌হাসপাতালগুলোতে।‌ ‌সাধারণ‌ ‌মানুষকে‌ ‌সেখানে‌ গাঁটের‌ ‌কড়ি‌ ‌খরচ‌ ‌করেই‌ ‌টিকা‌ ‌নিতে‌ ‌হবে।‌ ‌চাপতে‌ ‌পারে‌ ‌পরিষেবা‌ ‌করও।‌ ‌‌রাজ্য‌ ‌সরকারের‌ ঘোষণা‌ ‌অনুযায়ী‌ ১৮‌ ‌থেকে ৪৪‌ ‌বছর‌ ‌বয়সীদের‌ ‌বিনামূল্যে‌ ‌এই‌ ‌প্রতিষেধক‌ ‌দেওয়া‌ ‌হবে‌ ‌পরবর্তী‌ পর্বে।‌

এরই‌ ‌মধ্যে‌ ‌খাস‌ ‌কলকাতা‌ ‌শহরে‌ ‌অক্সিজেনের‌ ‌অভাবে‌ ‌তিনজন‌ ‌করোনা‌ ‌আক্রান্তের‌ ‌মৃত্যুর‌ অভিযোগে‌ ‌কাঠগড়ায়‌ ‌বেহালার‌ ‌বিদ্যাসাগর‌ ‌হাসপাতাল।‌ ‌গত‌ ‌দু’দিনে‌ ‌পরপর‌ ‌তিনজনের‌ ‌মৃত্যু‌ হয়েছে।‌ ‌অভিযোগ, ‌অক্সিজেনের‌ ‌অভাবেই‌ ‌মৃত্যু‌ ‌হয়েছে।‌ ‌তবে‌ ‌হাসপাতাল‌ ‌কর্তৃপক্ষের‌ ‌দাবি, অক্সিজেনের‌ ‌সঙ্কট‌ ‌নেই।‌ ‌কিন্তু‌ ‌সিলিন্ডারের‌ ‌ফ্লো-মিটার‌ ‌অর্থাৎ‌ ‌রেগুলেটরের‌ ‌অভাব‌ ‌রয়েছে।‌ ‌যার‌ ফলে‌ ‌সিলিন্ডার‌ ‌থাকলেও‌ ‌রেগুলেটরের‌ ‌অভাবে‌ ‌অক্সিজেন‌ ‌দেওয়া‌ ‌যাচ্ছে‌ ‌না।

এদিকে‌ ‌মহামারীর‌ ‌দুর্বিষহ‌ ‌পরিস্থিতিতে‌ দু’রকম ছবি রাজ্যজুড়ে ‌একদিকে‌ ‌মানুষকে‌ ‌সহায়তা‌ ‌দিতে বামপন্থীদের‌ ‌রাত‌ ‌দিনের‌ ‌মেহনত, অন্যদিকে‌ ‌সংক্রমণ‌ ‌মোকাবিলায়‌ ‌সরকারের‌ ‌ব্যর্থতা‌ দেখা যাচ্ছে। ‌চিকিৎসা‌ ‌পরিষেবার‌ ‌ক্ষেত্রে সারা‌ রাজ্যের‌ ‌পাশাপাশি‌ ‌মহানগর‌ ‌জুড়ে‌ ‌মানুষের‌ ‌জন্য ‌লাখো রেড‌ ‌ভলান্টিয়ার্সদের‌ ‌প্রাণপাত‌ ‌লড়াই, ধারাবাহিক‌ ‌কাজ‌ ‌জানান‌ ‌দিচ্ছে‌ ‌ভোট‌ মুখীনতা‌ ‌নয়, ‌মাঝরাত‌ ‌হোক‌ ‌কিংবা‌ ‌ভোরবেলা, ‌দাবদাহ‌ থেকে‌ ‌বৃষ্টির‌ ‌জমা - ‌জল‌ ‌সব‌ ‌প্রতিকুলতা‌ ‌ছাপিয়ে‌ ‌মানুষের‌ ‌দুয়ারে‌ ‌সহায়তা‌ ‌নিয়ে‌ ‌রয়েছেন‌ বামপন্থীরাই।