E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩৯ সংখ্যা / ১৪ মে, ২০২১ / ৩০ বৈশাখ, ১৪২৮

প্রয়াত কমরেড রঞ্জনা নিরুলা


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ শ্রমিক আন্দোলনের প্রবীণ নেত্রী কমরেড রঞ্জনা নিরুলা প্রয়াত হয়েছেন। ১১ মে গভীর রাতে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে জীবনাবসান হয় তাঁর। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সিআইটিইউ’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কমরেড নিরুলা সিপিআই(এম) দিল্লি রাজ্য কমিটির সদস্যও ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫।

কমরেড নিরুলার প্রয়াণে গভীর শোক জানিয়েছেন সিআইটিইউ’র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্ধনমিত রাখা হয়েছে সংগঠনের পতাকা। শোক জানিয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন এবং সিপিআই(এম) দিল্লি রাজ্য কমিটি।

কমরেড নিরুলা আশা কর্মীদের সর্বভারতীয় কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় কেন্দ্রে তিনিই প্রথম মহিলা, যিনি কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৮৪৫-এ দিল্লির একটি সম্পন্ন পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম কমরেড নিরুলার। বাবা ছিলেন চিকিৎসক, যুক্ত ছিলেন রাষ্ট্রসঙ্ঘে। পড়াশোনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন কমরেড রঞ্জনা নিরুলা। বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গেও সংযোগ হয় তাঁর। সাতের দশকে দেশে যুক্ত হন বামপন্থী আন্দোলনে। ১৯৭৮-এ দিল্লি রাজ্য সিআইটিইউ’র সর্বক্ষণের কর্মী হন। থাকতেন শ্রমিক কলোনিতেই। দক্ষিণ দিল্লি এবং ফরিদাবাদে কারখানা শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজে নিয়োজিত হন তিনি।

১৯৭৯-তে শ্রমজীবী মহিলাদের কোঅর্ডিনেশন কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন কমরেড নিরুলা। দিল্লিতে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি গঠনের সময় থেকে যুক্ত থেকেছেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিরও সদস্য ছিলেন। শ্রমজীবী মহিলাদের মুখপত্র ‘দ্য ভয়েস অব দ্য ওয়ার্কিং ওম্যান’ পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক ছিলেন তিনি। যুক্ত ছিলেন বিড়ি শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজেও। ২০০৯-এ আশা কর্মীদের সর্বভারতীয় কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠিত হলে তিনি আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন। সেই দায়িত্বেই ছিলেন আমৃত্যু।

সিআইটিইউ বলেছে, মহিলাদের সমানাধিকারের সরব প্রবক্তা, সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদী শক্তির সাহসী সমালোচক কমরেড নিরুলা কর্মীদের গড়ে তোলার কাজে অত্যন্ত যত্নশীল ছিলেন। তাঁর জীবনাবসানে দেশের শ্রমিক আন্দোলন এবং সিআইটিইউ’র বিরাট ক্ষতি হলো।

সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সভাপতি মালিনী ভট্টাচার্য এবং সাধারণ সম্পাদক মরিয়াম ধাওয়ালে শোক জানিয়ে বলেছেন, সংগ্রামের বহু কর্মীকে এগিয়ে চলার পথ দেখিয়েছেন কমরেড নিরুলা। অত্যন্ত সহৃদয় ছিলেন তিনি সহকর্মীদের প্রতি। কোথাও কোনও সহায়তার প্রয়োজন জানলে ছুটে গিয়েছেন বরাবর।

খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি এ বিজয়রাঘবন এবং সাধারণ সম্পাদক বি বেঙ্কট বলেছেন, পঞ্চাশ বছরের বেশি শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন কমরেড নিরুলা। নবীনদের উৎসাহ দিয়েছেন বরাবর। পুঁজিবাদ এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের অন্যতম নেত্রীকে হারালো শ্রমজীবী আন্দোলন।