৫৮ বর্ষ ৩৯ সংখ্যা / ১৪ মে, ২০২১ / ৩০ বৈশাখ, ১৪২৮
সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা আন্দোলনের অগ্রণী সংগঠক কমরেড শক্তি মণ্ডল প্রয়াত
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্যে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা আন্দোলনের অগ্রণী সংগঠক, সত্যেন মৈত্র জনশিক্ষা সমিতির সভাপতি কমরেড শক্তি মণ্ডল করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৬ মে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি বেশ কিছুদিন উলুবেড়িয়ার একটি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। এদিন তিনি বিকেল ৩টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তাঁর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও পরিজনেরা রয়েছেন। কমরেড শক্তি মণ্ডলের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বিমান বসু।
কমরেড শক্তি মণ্ডল অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। সাতের দশকে পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে তিনি জেলা পার্টি অফিসে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সময় নিবর্তনমূলক আটক আইনে (পিডি অ্যাক্ট) বিনা বিচারে এক বছর জেল খেটেছেন। পরে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে পড়ার সময় অনেকবারই কংগ্রেসের গুন্ডাবাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন।
আটের দশকে তিনি জনশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব সত্যেন মৈত্রের সান্নিধ্যে আসেন এবং বেঙ্গল সোস্যাল সার্ভিস লিগের সঙ্গে জনশিক্ষা কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। নয়েক দশকের সূচনায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সর্বশিক্ষা অভিযানে তিনি অন্যতম নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন।
কমরেড শক্তি মণ্ডল সাক্ষরতা ও জনশিক্ষার প্রসারে নিবিড় কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছেন। দেশহিতৈষী পত্রিকার সঙ্গেও তাঁর ছিল ঘনিষ্ঠ সংযোগ। বিভিন্ন সময়ে দেশহিতৈষীতে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি বইও লিখে গেছেন। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে রচিত - ‘অনন্য বিদ্যাসাগরঃ ফিরে দেখা’, ‘অনন্য বিদ্যাসাগরঃ বর্ণপরিচয়’। এছাড়া লিখেছেন ‘গণ-সাক্ষরতাঃ ধারণা ও রূপায়ণ’ ইত্যাদি।
তিনি দেশে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ‘ড. সুশীলা নায়ার লিটারেসি অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭-০৮’ অর্জন করেছেন। তাঁর জীবনাবসানে বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতি গভীর শোকজ্ঞাপন করেছে।