৫৮ বর্ষ ৩৯ সংখ্যা / ১৪ মে, ২০২১ / ৩০ বৈশাখ, ১৪২৮
শবাসন থেকে শব ভাসান
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ঘটনা - ১
‘‘পরিবেশের শুদ্ধিকরণের জন্য চারদিন ধরে যজ্ঞ করুন। একে যজ্ঞ চিকিৎসা বলা হয়। আগেকার দিনে আমাদের পূর্বপুরুষরা মহামারী থেকে রক্ষা পেতে যজ্ঞ চিকিৎসা করতেন। আসুন আমরা সবাই মিলে পরিবেশকে শুদ্ধ করে তুলি, তাহলে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ভারতকে ছুঁতেও পারবে না।’’ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশে তৃতীয় ঢেউ থেকে রক্ষা পাবার উপায় ইতিমধ্যেই বাতলে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রী উষা ঠাকুর। প্রথম পর্বে এভাবেই থালা বাজিয়ে আর মোমবাতি জ্বালিয়ে 'গো করোনা গো' বলে নেচে আমরা করোনাকে ‘জয়’ করেছিলাম।
ঘটনা - ২
বিশেষজ্ঞ-ডাক্তারদের বারবার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় রমরমিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে গোমূত্র-গোবর। সম্প্রতি গুজরাটের এক কোভিড সেন্টারে এরকম দৃশ্য দেখা গেছে। গুজরাটের বেশ কিছু গোশালাকে কোভিড কেয়ার সেন্টারে রূপান্তরিত করে সেখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন গোশালা কর্তৃপক্ষ। করোনা আক্রান্তদের ওষুধ হিসেবে দুধ-ঘি’র সাথে গোমূত্র মিশিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। উদ্যোক্তারা নিজেরাই সেকথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও সপ্তাহে একবার আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর লোক গোশালাতে যাচ্ছেন নিজেদের শরীরে গোবর ও গোমূত্র মাখতে। তাঁদের বিশ্বাস এর ফলে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছেন তাঁরা। এমনকি সেই দলে কিছু চিকিৎসকও আছেন।
ভিডিয়োতে দেখা গেছে, রীতিমতো লাইন দিয়ে বসে বালতি-বালতি গোমূত্র ও গোবর শরীরে মাখছেন কিছু ব্যক্তি। শরীরে ওই মিশ্রণটি শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন তাঁরা। এরপর গোরুকে জড়িয়ে ধরে বা গোরুর সামনে জোড় হাত করে বসে তাকে সম্মান জানিয়ে যোগাসন শুরু করেন অংশগ্রহণকারীরা। মনে পড়ছে ভাবীজি পাঁপড় খেয়ে করোনা তাড়ানোর কথা। রামদেবের ভিডিয়োর কথা?
ঘটনা - ৩
‘‘ভারতে আর অক্সিজেনের দরকার নেই। ঈশ্বরকে ভয় পাওয়ার ধর্ম দরকার। এইসব শকুনের জন্য একরাশ লজ্জা!’’ ‘‘এই দেশে এত চোর। অক্সিজেনের নয়, একটু মানবিকতার দরকার এই দেশের।’’ ‘‘আপনারা এই ভাইরাসকে ক্ষমতাশালী হতে দেবেন না। যদি আপনারা ভয় পান, তাহলে এরা আপনাদের আরও বেশি ভয় দেখাবে। আসুন একসাথে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে ধ্বংস করি। এটা সাধারণ ফ্লু ছাড়া আর কিছুই নয়, যা সংবাদমাধ্যম কর্তৃক বিশাল বড়ো আকার ধারণ করেছে এবং যার ফলে কিছু মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন। হর হর মহাদেব।’’ - ইনি সদ্য ট্যুইটার থেকে বিতাড়িত বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। ওপরের কথাগুলো করোনা সংক্রমিত হবার পর তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ।
বিজ্ঞানকে নিয়ে যে এভাবে তামাশা করা যেতে পারে তা বছর সাতেক আগেও ভারত জানত না। যতটা জেনেছে ২০১৪ সালের পর। যে সময়ের পর থেকে পুরাণ, ইতিহাস, মহাকাব্য, বিজ্ঞান - সব ঘেঁটে গুলে এক নতুন ভাবধারা ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা হচ্ছে মানুষের মধ্যে। সেখানে কঙ্গনা, উষা থেকে বিশাল নামের তালিকা - সকলেই এক পথের পথিক। এটাই বোধহয় আচ্ছে দিন-এ পৌঁছোবার প্রাক্ মুহূর্ত।
ঘটনা - ৪
কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছিলেন - রাজ্যে অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি নেই। অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে ‘‘গুজব ছড়ানো’’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। আদিত্যনাথ একথা বলার পরেই গত ৩ মে লক্ষ্ণৌয়ের গোমতীনগরের সান হাসপাতাল নোটিশ দিয়ে অক্সিজেন ঘাটতির কথা জানিয়ে রোগীর আত্মীয়দের অন্যত্র রোগী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে। এরপরেই ওই হাসপাতালের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এর ঠিক দু’দিন পর রাজ্যের অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের কাছে অভিযোগ জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। তাঁর অভিযোগ, তাঁর নির্বাচনী এলাকা বরেলিতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। ভেন্টিলেটর এবং অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেদের ফোন করলে তাঁরা ফোন তোলেন না। এর ফলে কোভিড রোগী ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। দেশের কোভিড ম্যানেজমেন্ট ঠিক কোন্ অবস্থায় আছে তা বোঝার জন্য হাঁড়ির এই চারটে চাল টিপলেই বাকিটা বোঝা যাবে।
একটু অন্য কথা
বছর দু'য়েক আগের যোগ দিবসে প্রধানমন্ত্রীর শবাসন করার একটা ছবি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। তারিখটা সম্ভবত ছিল ২১ জুন, ২০১৯। নিন্দুকেরা বলেছিলেন, ‘উনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। ওনাকে বিরক্ত করা ঠিক নয়’। এখন যদিও কোনো যোগ দিবস-টিবস নেই। তাই আপাতত কোনো শবাসনের ছবি মিডিয়া দেখাতে পারছে না। তবে শব-এর ছবি দেখাতে বাধ্য হচ্ছে। গঙ্গা, যমুনা জুড়ে শব ভাসছে। বালির চরে দেহ পুঁতে দেবার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। সাধারণ মানুষ, কিছু মিডিয়ার দাবি - সব দেহই নাকি করোনা সংক্রমণে মৃতদের। শ্মশানে দীর্ঘ লাইন, কাঠের অভাব, পোড়ানোর খরচ সামলাতে না পেরে অনেকেই কম খরচে কাজ সারছেন। সরকার যখন ভরসা দিতে পারছে না তখন ‘মা গঙ্গাই ভরসা’। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ - দেশের একাধিক রাজ্যে গত কয়েকদিনের এই ট্রেন্ড দেখার পরেও এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি সরকারি রাজনৈতিক দলের কোনো প্রথম সারির নেতৃত্বকে। এমনকি মাসে একবার করে টিভি, রেডিয়োতে ‘মন কী বাত’ বলা প্রধানমন্ত্রীও এখনও চুপ। সেই কোন্ ১৯৭৪-এ ‘নরক গুলজার’-এ লিখেছিলেন মনোজ মিত্র - ‘কথা বোলো না, কেউ শব্দ কোরো না। ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন, গোলযোগ সইতে পারেন না।’ শবাসন থেকে শব ভাসান - কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দ্বিতীয় দফায় মাত্র দু’বছরের মধ্যে ওপরের চিকনচাকন সরিয়ে ভেতরের খড়ের গাদন দাঁত বের করে দেশবাসীকে বলছে - ‘আচ্ছে দিন - আ গয়ে’। ‘আচ্ছে দিন - আ গয়ে’। ‘আচ্ছে দিন - আ গয়ে’।
করোনার পরিসংখ্যান দিতে আর ভালো লাগে না। তবে ভালো না লাগলেও আমাদের অবচেতনে সকলেই এখন এক একজন চিত্রগুপ্ত। প্রতিদিন সকাল বিকেল হিসেব রেখে চলেছি মনে মনে। আজ কত? আজ কত? হিসেব রাখতে হচ্ছে। আমার দেশের সরকার এই মহামারীর সময় মানুষের মনে ভরসা জোগানোর বদলে আতঙ্ক তৈরি করে দিয়েছে। তাই মৃত্যু সংখ্যা নিয়ে যতই ‘আন্ডার রিপোর্টিং’-এর অভিযোগ উঠুক না কেন, আমরাও গুনে চলেছি। ১৩ মে সকালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৭২৭ জন, গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৩.৪৮ লক্ষ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩ হাজার ৬৬৫। ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গেছেন ৪ হাজার ১২০ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিডে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩১৭ জনের। অবশ্য মৃতদের এই সংখ্যার মধ্যে নদীতে ভেসে বেড়ানো দেহগুলো যুক্ত আছে কিনা কেউ জানেনা। থাকতেও পারে। না থাকতেও পারে। সরকারি হিসেব আর সরকারি শ্মশানে দেহ পোড়ানোর হিসেব - গোঁজামিল তো রাজ্যে রাজ্যে।
দেশে অক্সিজেন সঙ্কট, ভ্যাকসিন সঙ্কট, বেড সঙ্কট, চিকিৎসা না পাওয়া, শহর থেকে গ্রামে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া - করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা অবশ্যই সরকারের। করোনা পরিস্থিতিকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দিয়ে সরকারের কাছে সেন্ট্রাল ভিস্তা, নিজেদের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা পূরণ, কর্পোরেটের তোষামোদি গুরুত্বপূর্ণ হলে যা যা হতে পারে ঠিক তাই তাই হচ্ছে। থালা বাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে, মন কী বাত বলে, স্বাস্থ্য খাতে খরচ কমিয়ে, পি এম কেয়ারস ফান্ডে হিসেববিহীন টাকা তুলে যে মহামারী নিয়ন্ত্রণ হয়না সেটা সরকারও ভালো করে জানে। যে খেলা হয়েছে, যে খেলা হচ্ছে - তা লাভ লোকসানের অঙ্ক কষেই। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের পকেটে লাগামছাড়া লাভের অঙ্ক তুলে দিতে গিয়েই মহামারীর আমদানি - অনেক মানুষের ক্ষতি। জীবনের ক্ষতি, রুটি রুজির ক্ষতি। ইতিহাস তো সেরকমই বলে।
“করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জমায়েত থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ে জানার পরেও কোনো রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সমাগমে বাধা দেওয়া হয়নি। সরকার ভেবেছিল যে করোনাকে পরাস্ত করে দেওয়া গেছে। ভারতের মানুষ করোনা সংক্রমণে বিপর্যস্ত। হাসপাতালে বেড নেই, স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্লান্ত। টিকাকরণেও সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এমনকি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেন - করোনার বিরুদ্ধে জয়ের পথে এগিয়ে চলেছে ভারত।” - এই বক্তব্য দেশের কোনো বিরোধী দল বা বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নয়। এ পর্যবেক্ষণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিক্যাল জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এর। গত ৮ মে ওই জার্নালের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে - ‘করোনা আবহে সংক্রমণ ঠেকানোর থেকে সমালোচনামূলক ট্যুইট মুছতে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার’।
গতকাল ১২ মে সিপিআই(এম), কংগ্রেস সহ দেশের প্রধান ১২টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এক চিঠি দেওয়া হয়েছে। যে চিঠিতে বলা হয়েছে - ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের এই মুহূর্তে কোন্ পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও বাস্তবায়ন করা উচিত, তা নিয়ে এর আগে বহুবার যৌথ অথবা পৃথক পৃথকভাবে আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে, আপনার সরকার এই সমস্ত পরামর্শ উপেক্ষা করেছে বা প্রত্যাখ্যান করেছে। এই কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে তা সর্বজনীন 'হিউম্যান ট্র্যাজেডি'র পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’’ বিরোধীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে করা ৯টি দাবির মধ্যে আছেঃ অবিলম্বে দেশজুড়ে বিনামূল্যে গণটিকাকরণ, দেশের মধ্যে বা বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা করুক সরকার, দেশীয় ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়াতে লাইসেন্স প্রক্রিয়ার সরলীকরণ, ভ্যাকসিনের জন্য বাজেটে বরাদ্দ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যায়, সেন্ট্রাল ভিস্তার নির্মাণ বন্ধ করে অক্সিজেন ও মেডিক্যাল সরঞ্জাম কিনতে সেই অর্থ ব্যয়, সমস্ত আন-অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট ফান্ড, পি এম কেয়ারসের টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন, অক্সিজেন এবং মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনা, কর্মহীন মানুষদের প্রতি মাসে ৬০০০ টাকা করে দেওয়া, দরিদ্রদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া, কোভিড আক্রান্ত হওয়া থেকে কৃষকদের বাঁচাতে কৃষি আইন বাতিল।
ইদানীং লিখতে ইচ্ছে করছে না। কী বোর্ডে হাত দিয়ে বসে থাকলেও আঙুল বিদ্রোহ করছে। আঙুলকে যে নিয়ন্ত্রণ করে বিদ্রোহ তারও। থাক সে কথা। আপাতত রবীন্দ্রনাথে ফিরি। ‘রাজা ও প্রজা’ প্রবন্ধের এক জায়গায় তিনি লিখছেন - “আমাদের দেশের লোকের পর্যবেক্ষণশক্তি এবং ঘটনাস্মৃতি তেমন পরিষ্কার এবং প্রবল নহে; আমাদের স্বভাবের মধ্যে মানসিক শৈথিল্য এবং কল্পনার উচ্ছৃঙ্খলতা আছে এ দোষ স্বীকার করিতেই হয়। একটা ঘটনার মধ্যে উপস্থিত থাকিয়াও তাহার সমস্ত আনুপূর্বিক পরম্পরা আমাদের মনে মুদ্রিত হইয়া যায় না - এইজন্য আমাদের বর্ণনার মধ্যে অসঙ্গতি ও দ্বিধা থাকে এবং ভয় অথবা তর্কের মুখে পরিচিত সত্য ঘটনারও সূত্র হারাইয়া ফেলি।” বাকিটুকু ভবিষ্যতের জন্যেই না হয় তোলা থাক।