৬০ বর্ষ ৯ সংখ্যা / ১৪ অক্টোবর, ২০২২ / ২৭ আশ্বিন, ১৪২৯
কমরেড কুমার শিরালকরের জীবনাবসান
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য কমরেড কুমার শিরালকরের জীবনাবসান হয়েছে। ২ অক্টোবর নাসিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৫। তিন বছর ধরে তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
কমরেড কুমার শিরালকর সাতের দশকে ইঞ্জিনিয়ারের পেশা ছেড়ে উত্তর মহারাষ্ট্রে আদিবাসীদের আন্দোলন গড়ে তোলায় নিজেকে যুক্ত করেন। একদল আদর্শবাদী কর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে তিনি ‘শ্রমিক সংগঠন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। ভূস্বামীদের হাতে নিপীড়িত আদিবাসীদের সংগঠিত করেন। জরুরি অবস্থার সময়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মার্কসবাদী কমরেড শিরালকর ওই সংগঠনের কাজের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে ১৯৮২ সালে সিপিআই(এম)-এ যোগ দেন। মহারাষ্ট্রে খেতমজুর সংগঠন গড়ে তোলায় আত্মনিয়োগ করেন। অনেক বছর তিনি সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। পরে সংগঠনের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। সারা রাজ্যে দিনরাত তিনি সংগঠনের কাজে ঘুরে বেড়াতেন। বহু রাত রাস্তার বাস স্ট্যান্ডে খবরের কাগজ পেতে ঘুমোতেন। আদিবাসীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় নেতা কমরেড শিরালকর শ্রেণি শোষণ, সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। মহিলাদের সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলায় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।
কমরেড শিরালকরের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তিনি নানদরবার জেলায় একটি প্রান্তিক আদিবাসী গ্রামে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সেই অবস্থাতেও লড়াই চালিয়ে যান। সাম্প্রতিক সময়ে আদিবাসী শিশুদের পড়াশোনা ও চাষবাসের উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে মনঃসংযোগ করেছিলেন। কমরেড শিরালকর বিপুল ত্যাগস্বীকার, বিপ্লবী কাজের প্রতি নিষ্ঠা, রাজনৈতিক কাজ ও সামাজিক সংস্কারের মিশ্রণে উদাহরণস্বরূপ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জ্ঞাপন করেছে সিপিআই(এম), সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন, সিআইটিইউ।
কমরেড শিরালকরের শেষকৃত্যে সমবেত হয়েছিলেন শত শত গ্রামবাসী, বিশেষ করে আদিবাসীরা। তাঁদের ইচ্ছা অনুসারেই আদিবাসী প্রথা মেনে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।