E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৯ সংখ্যা / ১৪ অক্টোবর, ২০২২ / ২৭ আশ্বিন, ১৪২৯

ডাউন সখেরবাজার লেন

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


কেউ বাজার করে পেটের তাগিদে। প্রয়োজনে। আবার কেউ বিলাসিতায়। হয়তো বা মজা দেখতেও। আমি, আপনি বাজার গেলে খবর হয়না। তিনি গেলে হয়। তাঁরা গেলে হয়। হয়েছেও। তাঁর মহামূল্যবান সময় থেকে কিছুটা বের করে তিনি বাজারে গেছেন। সবজি কিনেছেন (মিডিয়া বলেছে শুধু রাঙাআলু কিনেছেন)। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। ছবি তুলেছেন। সেই ছবি ট্যুইট করেছেন। অতএব খবর হয়েছে। কোন মিডিয়ার ঘাড়ে কটা মাথা যে এটাকে খবর করবে না? এটাকে খবর করার সরকারি নির্দেশিকা মিডিয়ার মেলে ঢোকেনি এই যা। তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যায়। তিনি কেন বাজারে গেছিলেন? বাজার গরম করতে? মানুষের পালস বুঝতে? নিছক পি আর ইভেন্ট? দলীয় প্রচার? গিমিক? নাকি অর্থনীতি সবটাই লাটে ওঠানো গেছে কিনা তার সরেজমিনে তদন্ত করতে?

খবরটা দিন পাঁচেক আগের। ৮ অক্টোবরের। একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। হঠাৎ করেই নাকি দিল্লিতে সবজির দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে আলু ১৮ থেকে ২২ টাকা। ফুলকপি ৯৮ টাকা কেজি। টম্যাটো ৫৪ টাকা, বেগুন ৪৫ টাকা কেজি। খুচরো বাজারে দাম আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ফুলকপি ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, টম্যাটো ৫০ টাকা। একই ঘটনা ঘটেছে হিমাচল, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়ে। আইএএনএস জানাচ্ছে, সিমলার ঢালি মার্কেটে মটর কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা। যা নাকি গতবছর ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। চণ্ডীগড়ে মটর ২০০ টাকা কেজি, টম্যাটো ৬০ টাকা কেজি। ক্যাপসিকাম ৮০ টাকা কেজি। গতকালই এক সবজি বিক্রেতা বলছিলেন কলকাতাতেও নাকি হঠাৎ করেই গত কয়েকদিনে আচমকাই সবজির দামে আগুন লেগেছে। তিনি ভয়ে মাল তুলতে পারছেন না। যদি বিক্রি না হয়। অর্থাৎ দিল্লি হোক বা কলকাতা - দাম কাউকে রেয়াত করে না। তবে কিনা, আপনি যদি ছবি তুলে ট্যুইট করার জন্য শখ করে বাজারে যান হেইডা অন্য বিষয়। তখন আপনি দাম মালুম পাবেন না। ট্রেডিং ইকনমিকস ডট কম জানাচ্ছে, ভারতে ক্রেতা মূল্য সূচক (কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা সিপিআই) বেড়েই চলেছে। অক্টোবর ২০২১-এ যা ছিল ১৬৫.৫ জানুয়ারি ২০২২-এ তা হয় ১৬৫.৭। এপ্রিল ২০২২-এ ১৭০.১, জুলাই ২০২২-এ ১৭৩.৪ এবং সেপ্টেম্বর ২০২২-এ ১৭৫.৩। যা ২০১১ থেকে ২০২২-এর মধ্যে সর্বাধিক। এটা অবশ্য কোনো বিদেশি সংস্থার ভারতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে দেওয়া তথ্য নয়। এই তথ্য কেন্দ্রের স্ট্যাটিসটিক্স অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (এমওএপিআই) মন্ত্রকের। যাদের তথ্য অনুসারে বর্তমানে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৪১। গত আগস্ট মাসে যা ছিল ৭.০০। গত জানুয়ারি মাস থেকেই যা ঊর্ধ্বমুখী। বিজনেস টুডে-তে ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই নিয়ে টানা ৯ বার ক্রেতা মূল্য সূচক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমিত মূল্য সূচক ৬ শতাংশের তুলনায় বেড়েছে। এপ্রিল মাস থেকে তা আছে ৭ শতাংশের ওপরে। যার ফলে দেশের গরিব মানুষের জিনিস কেনার ক্ষমতা কমছে এবং তাঁদের প্রতিদিনের জীবনযাপনের খরচ বাড়ছে। চা বা চপ ভেজে ব্যক্তিগত বা দেশীয় অর্থনীতি কতটা তরতরিয়ে বেড়ে চলবে তা হয়তো একমাত্র ‘চা-ওয়ালা’ অথবা তাঁর চা-চপ-এর দোকান করার পরামর্শদাত্রী আস্থাভাজন বোন বলতে পারবেন।

অর্থনীতি বিষয়টা বেশ গোলমেলে। কী শক্ত শক্ত সব টার্ম। বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করলে আমার মাথা বেশ গুলিয়ে যায়। হয়তো বুঝিনা বলেই। তার চেয়ে সহজ কথা সহজভাবে বলাই ভালো যে, জিনিসপত্রের দাম ক্রমশ বাড়ছে। বেড়েই চলেছে এবং এতটাই দ্রুতগতিতে বাড়ছে যে, সামাল দেওয়া যাচ্ছেনা। উদ্বেগজনকভাবে দেশের শহরাঞ্চলের তুলনায় দাম বেশি বেড়েছে গ্রামাঞ্চলে। গত সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে ৮.৪১ শতাংশ। আপনি সূচকও বলতে পারেন। গত আগস্টে যে বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৬২ শতাংশ এবং জুলাই মাসে ছিল ৬.৬৯ শতাংশ। গত বছরের অনুপাতে সবজির দাম সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ১৮.০৫ শতাংশ, মশলাপাতির দাম বেড়েছে ১৬.৮৮ শতাংশ, দানাশস্যের দাম বেড়েছে ১১.৫৩ শতাংশ, দুধ এবং দুধজাতীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে ৭.১৩ শতাংশ, ফলের দাম বেড়েছে ৫.৬৮। শুধুমাত্র আচ্ছে দিন-এ ঘোড়ার ডিম, মানে ডিমের দাম কমেছে ১.৭৯ শতাংশ।

গত বছরের তুলনায় এ বছর দানাশস্যের দাম বেড়েছে ১১.৩৫ শতাংশ, সবজির দাম বেড়েছে ১৮.০৫ শতাংশ এবং মশলাপাতির দামে বৃদ্ধি ঘটেছে ৩.০৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গতবছরের তুলনায় এবছরের সেপ্টেম্বর মাসে খুচরো দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে ৮.৪১ শতাংশ, পান ও তামাকে ১.৯৮ শতাংশ, পোশাক পরিচ্ছদে ১০.১৭ শতাংশ, জ্বালানিতে ১০.৩৯ শতাংশ, বিবিধ ক্ষেত্রে ৬.০৬ শতাংশ।ব্যাঙ্ক অফ বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ মদন সবনবীশ এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, এবছর খরিফ মরশুমে চাল, মশলা, তৈলবীজের ফলন কম হওয়ার কারণে আগামী কয়েক মাস এইসব দ্রব্যের দাম আরও বাড়তে পারে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যেভাবে ডলারের অনুপাতে টাকার দাম ক্রমশ নামছে তাতে আগামী দিনে আরও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কারণ টাকার দাম যত পড়বে আমদানি খরচ তত বাড়বে। আমেরিকান ডলারের অনুপাতে ভারতীয় টাকার দাম এখন ৮২.৫০ পয়সার কিছু কম বেশি স্তরে ঘোরাফেরা করছে। যা আগামীদিনে আরও পড়ার আশঙ্কা।

কেন্দ্রে তখন ইউপিএ-২ সরকার। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এক ট্যুইটে নরেন্দ্র মোদি লিখেছিলেন, ‘কার আগে পতন হবে, তা নিয়ে ইউপিএ সরকার ও টাকার দামের প্রতিযোগিতা হচ্ছে।’ সেই সময় টাকার দাম পড়া নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে একাধিকবার কটাক্ষও করেছিলেন তিনি। ওই বছরেরই আগস্ট মাস। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের টাকার দামের পতন প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বলেছিলেন - টাকার দাম নিয়েও কোনও চিন্তা নেই বর্তমান সরকারের। এদের সামনে দেশকে নিয়ে ভাবার কোনো সময় নেই। ডলারের সামনে টাকা শক্তি নিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নজরে আসেনি।একদিকে গততিনমাসে যেভাবে দ্রুত টাকার দাম পড়ছে সেই সময় সরকার সেই পতন আটকাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমার দেশের জন্য চিন্তা হয়। টাকার দাম যদি এভাবে পড়তেই থাকে, পড়তেই থাকে তাহলে পৃথিবীর অন্য শক্তিশালী দেশ এর সুযোগ নেবে। তা আটকানোর কোনও চেষ্টা দেশের সরকার করেনি। গত পাঁচবছর ধরে আমরা শুনছি তিন মাসে জিনিসের দাম কমবে। যদিও গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে একশোবার জিনিসের দাম বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে পারেনি দিল্লির সরকার। এমন একটা ক্ষেত্র পাওয়া যাবে না যেখানে মানুষ বলতে পারবে সরকার সদর্থক কিছু করেছে। কোথাও কিছু নজরে পড়ছে না। আজ দেশ বিরাট সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।” ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে কথাটা বোধহয় বড়োই নির্মম সত্যি।

গত ১৮ জুলাই ২০২২, দ্য ইকনমিক টাইমস-এ ভারতীয় টাকার দাম নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের দেওয়া তথ্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত আমেরিকান ডলারের ভারতীয় টাকার দাম পড়েছে ২৫ শতাংশ। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন শুধুমাত্র ২০২২ সালে ভারতীয় টাকার দাম পড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভারতীয় টাকার দাম ছিল ৬৩.৩৩ টাকা। এইবছরের ৩০ জুন তা ছিল ৭৮.৯৪ টাকা এবং জুলাই মাসের ১১ তারিখ তা ছিল ৭৯.৪১ টাকা। ১৮ জুলাই টাকার দাম দাঁড়ায় ৭৯.৯৮ টাকায়। গত ১০ অক্টোবর আমেরিকান ডলারের অনুপাতে ভারতীয় টাকার দাম পড়েছে প্রায় ৩৮ পয়সা। এদিন ভারতীয় টাকার দাম দাঁড়ায় ৮২.৬২ টাকা। যা টাকার মূল্যের সর্বকালীন নিম্নস্তর। এই ১০ অক্টোবরই সেনসেক্স পড়েছে ৮০০ পয়েন্ট। শুধু একদিনের পতন দেখলে হবেনা। এই পতন লাগাতার চলছে ২০২২ জুড়েই। এই বছরের জুন মাসেই নিফটি ৫২ সপ্তাহের সর্বনিম্ন স্তর ছুঁয়ে ফেলেছে। ১৭ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত সেনসেক্স এবং নিফটিতে পতন হয়েছে ১৩ শতাংশ। এরপর গত তিনমাসে আরও অনেকটা নেমেছে সেনসেক্স ও নিফটি। দুঃখ পাবেন না। আচ্ছে দিন আনতে গেলে বা আচ্ছে দিন এসে গেলে এরকম একটু আধটু হয়। গত জানুয়ারি মাসে সি-ভোটারের এক সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৭.৪ শতাংশ জানিয়েছিলেন, গত এক বছরে তাঁদের আয় কমেছে এবং খরচ বেড়েছে। ২০ শতাংশর মত ছিল আয় একই আছে এবং খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে ১১.৫ শতাংশ জানিয়েছিলেন, আয় বাড়লেও খরচ বেড়েছে। সমীক্ষায় ৬৫.৭ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছিলেন, গত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

এত কিছুই যখন বলা হলো তখন ষোলোকলাটাও নাহয় পূর্ণ করেই ফেলা যাক। গত ২ আগস্ট কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভগবত কে করাদ রাজ্যসভায় এক লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২, গত পাঁচ আর্থিক বছরে দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৯ লক্ষ ৯১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা ঋণ মকুব করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০২১-২২-এ মকুব হয়েছে ১,৫৭,০৯৬ কোটি টাকা, ২০২০-২১-এ ২,০২,৭৮১ কোটি টাকা, ২০১৯-২০-তে ২,৩৪,১৭০ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯-এ ২,৩৬,২৬৫ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮-তে ১,৬১,৩২৮ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত ব্যাঙ্কে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীর সংখ্যা ১০,৩০৬। যার মধ্যে সবথেকে বেশি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংখ্যা ছিল ২০২০-২১ আর্থিক বছরে। ২,৮৪০ জন। এর পরের বছর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংখ্যা দাঁড়ায় ২,৭০০। ২০১৯-এ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ছিল ২,২০৭ এবং ২০২০-র মার্চে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ছিল ২,৪৬৯। এই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তালিকায় ‘মেহুল ভাই’ থেকে শুরু করে আরও অনেক বড়ো বড়ো ভাইরা বিরাজমান। তাঁদের উদ্দেশ্যে ‘জাতীয়তাবাদী নমন’।

সম্প্রতি পুণের বিবেক ভেলাঙ্করের করা এক আরটিআই থেকে জানা গেছে, গত ১১ বছরে ১,২৯,০৮৮ কোটি টাকা ঋণ মকুব করেছে কানাড়া ব্যাঙ্ক। যে ঋণখেলাপিদের নাম প্রকাশ করতে রাজি নয় কানাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। যে প্রসঙ্গে ১২ অক্টোবর এক ট্যুইট বার্তায় সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, ‘‘ব্যাংক ১১বছরে বড়ো ঋণখেলাপিদের ১.২৯ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে।’’ মোদির পৃষ্ঠপোষকতায় সাম্প্রদায়িক-করপোরেট শক্তির বন্ধুদের এই লুটপাট চলছে। ঋণখেলাপিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করুন, তাদের বিচার করুন এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সাধারণ মানুষের আজীবন সঞ্চয় ফেরত দিন।

এই লেখাটা পুরোটা পড়ে ফেলার পর আপনার মনে হতেই পারে, নাহয় তিনি একটু বাজারে গেছিলেন, একটু রাঙাআলু কিনেছেন। সেই গল্প বলতে গিয়ে এত কথা বলে ফেলতে হবে? একদম ঠিক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলে তিনি কী বাজারে যাবেন না? নাকি সবজি কিনবেন না। তিনি যদিও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে লোকসভায় পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে সুপ্রিয়া সুলের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, তিনি খুব বেশি পেঁয়াজ রসুন খান না, তাঁর পরিবারে খুব বেশি পেঁয়াজ রসুন ব্যবহারের চল নেই। যার অর্থ ধরে নেওয়া যেতে পারে দেশের অর্থমন্ত্রী যেহেতু পেঁয়াজ খান না তাই পেঁয়াজের দাম বাড়া কমায় তাঁর কিছু যায় আসে না। একইভাবে তিনি হয়তো কোনোদিন বলে দেবেন সাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কিছুই ব্যবহার করেন না। তাই এসবেও তাঁর কিছু যায় আসেনা।

যদিও সাধারণ মানুষের আসে যায়। তাঁদের প্রতিদিন ঘাম রক্ত এক করে জীবন ধারণের সংগ্রাম করতে হয়। রোটি কাপড়া আউর মকানের জন্য প্রাণপণে যুঝতে হয়, চালিয়ে যেতে হয় অসম লড়াই। সদ্যপ্রয়াত কবি কৃষ্ণ ধরের কথায় - ‘‘আমি মানুষ/ মানবতার জন্যই আমার সব চিন্তাভাবনা।/ আমি কী করে মনে শান্তি পেতে পারি/ যখন অবিরাম রক্তপাত হচ্ছে মানুষের!’’ তাই লড়াই চলবে। মানুষকে সাথে নিয়ে মানুষের লড়াই। অধিকার রক্ষার লড়াই।