E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৫ এপ্রিল, ২০২২ / ১ বৈশাখ, ১৪২৯

সিপিআই(এম) ২৩তম কংগ্রেস

বৈপ্লবিক লক্ষ্য পূরণের উপযুক্ত পার্টি গড়ে তোলার শপথ

জনস্রোতের প্লাবনের উচ্ছ্বলতা কান্নুর জুড়ে

শংকর মুখার্জি


সিপিআই(এম) ২৩তম কংগ্রেসের প্রকাশ্য সমাবেশ।


বাম এবং গণতান্ত্রিক বিকল্পের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে গণলাইন সম্পন্ন বিপ্লবী পার্টি আমাদের গড়ে তুলতে হবে। বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির সমাবেশের মধ্যে দিয়ে দেশের বিরাট অংশের জনগণের মধ্যে পৌঁছে যেতে হবে। বৃদ্ধি করতে হবে পার্টির প্রভাব। প্রসারিত করতে হবে গণভিত্তি। যা দেশের শ্রেণিশক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারবে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পার্টির সামনে মূল কাজ হবে বিজেপি’কে জনবিচ্ছিন্ন এবং পরাস্ত করা - সিপিআই(এম) ২৩তম কংগ্রেস থেকে সমগ্র পার্টির কাছে এই আহ্বানই জানানো হয়েছে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্রকে রক্ষা এবং পার্টির কর্মসূচিগত ও বৈপ্লবিক লক্ষ্যপূরণে পার্টির রাজনৈতিক-সাংগঠনিক শক্তিকে পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত সিদ্ধান্ত রূপায়ণে নিয়োজিত হবার ডাক দিয়েছে পার্টি কংগ্রেস। গত ৬-১০ এপ্রিল কেরালার কান্নুরে ই কে নায়নার একাডেমিতে ২৩তম পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন প্রাঙ্গণের নামকরণ করা হয় ই কে নায়নার নগর।

এক ঐতিহাসিক সমাবেশের মধ্যদিয়ে ১০ এপ্রিল পার্টি কংগ্রেসের সমাপ্তি হয়। সমাবেশ হয় স্থানীয় জওহর স্টেডিয়ামে, যার নামকরণ করা হয়েছিল কমরেড এ কে জি নগর। সহস্রাধিক রেড ভলান্টিয়ার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মার্চপাস্ট করে সমাবেশস্থলে পৌঁছায়। স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ ছিল, তিল ধারণের জায়গা ছিল না। স্টেডিয়ামের বাইরে সমগ্র কান্নুর শহর সমাবেশের দিন সকাল থেকে জনস্রোতে প্লাবিত হয়েছিল। শহরের রাজপথ চলমান লালপতাকার সমাবেশের ক্যানভাস হয়ে উঠেছিল। এই সুবিশাল জনসমাগম কেরালায় পার্টির ক্রমবর্ধমান জনভিত্তিরই পরিচায়ক। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, এস আর পিল্লাই, পলিট ব্যুরোর সদস্য প্রকাশ কারাত, পিনারাই বিজয়ন, মানিক সরকার, মহম্মদ সেলিম, কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণণ, এম এ বেবি।

পার্টি কংগ্রেসে প্রতিনিধি অধিবেশনের শেষে ৮৫ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি, যার মধ্যে ৮৪ জন পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়েছে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশন। কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভা থেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সীতারাম ইয়েচুরি এবং ১৭ জন পলিট ব্যুরো সদস্য নির্বাচিত হন। এই পার্টি কংগ্রেস থেকে বিমান বসু, এস আর পিল্লাই এবং হান্নান মোল্লা বিদায় নিয়েছেন। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবারই প্রথম এলেন ১৭ জন এবং ১৫ জন মহিলা আছেন। সারাদেশ থেকে নির্বাচিত/মনোনীত হয়ে ৭২৯ জন প্রতিনিধি এবং ৭৮ জন দর্শক পার্টি কংগ্রেসে অংশ নিয়েছিলেন। কংগ্রেসে গৃহীত হয়েছে ২২ প্রস্তাব। সিপিআই(এম)’র ২৩ তম কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪১টি ভ্রাতৃপ্রতিম কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টি।

পার্টি কংগ্রেস আগামী চার বছরের জন্য পার্টির সামনে ১০ দফা রাজনৈতিক কাজ এবং ১০ দফা রাজনৈতিক-সাংগঠনিক কাজ নির্ধারণ করেছে। রাজনৈতিক প্রস্তাবটি কংগ্রেসে পেশ করেন সীতারাম ইয়েচুরি। প্রকাশ কারাত পেশ করেন রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট।

বিজেপি ক্ষমতায় থাকার সুযোগকে ব্যবহার করে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পার্টি কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছেঃ হিন্দুত্ববাদী শক্তির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সুবৃহৎ সমাবেশ ঘটাতে পার্টি কাজ করে যাবে। রাজনৈতিক, মতাদর্শগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং সাংগঠনিকভাবে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে হবে। একইসাথে নয়াউদারবাদী সংস্কার সাম্প্রদায়িক-করপোরেট আঁতাতকে শক্তিশালী করেছে। জাতীয় সম্পদের লুট চলছে। লুটেরা পুঁজিবাদকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দূর্নীতিকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে একটা সর্বব্যাপী স্বৈরতন্ত্র। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি'’কে জনবিচ্ছিন্ন ও পরাস্ত করতে হলে সিপিআই(এম)’র স্বাধীন শক্তি এবং আরও কার্যকরীভাবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটাতে হবে। একইসাথে শাসকশ্রেণির বিরোধী বিকল্প নীতির ভিত্তিতে বাম শক্তির এবং বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এই ঐক্যের ভিত্তিতে তীক্ষ্ণ করতে হবে জনগণের সংগ্রামকে।

ভারতীয় সাধারণতন্ত্রের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্র অটুট রাখতে, ভারতীয় সংবিধান এবং ভারতীয় জনগণকে দেওয়া সুনিশ্চিত সাংবিধানিক অধিকারগুলি যা হিন্দুত্ববাদী শক্তি মারাত্মক আক্রমণের শিকার তার রক্ষায় দেশের সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষকে এগিয়ে আসার আবেদন করেছে পার্টি কংগ্রেস। কেন্দ্রের সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন ও শ্রেণিআন্দোলন তীক্ষ্ণ করারও ডাক দিয়েছে পার্টি কংগ্রেস। অন্যদিকে নির্বাচনী লড়াইয়ে বিজেপি বিরোধী ভোটকে সর্বোচ্চহারে একজায়গায় আনতে উপযুক্ত নির্বচনী কৌশল গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে পার্টি কংগ্রেস।

প্রকাশ্য সমাবেশ - মাঠ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রেড ভলান্টিয়ারদের অভিবাদন নেতৃবৃন্দকে।


কেরালায় এলডিএফ সরকারকে রক্ষায় এবং পার্টির ওপর বিশেষকরে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় ফ্যাস্তিস্তধর্মী আক্রমণের বিরুদ্ধে সারাদেশে পার্টি প্রচার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

পার্টি কংগ্রেসে রাজনৈতিক প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট সর্বসম্মতিভাবে গৃহীত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর কংগ্রেস-পূর্ব ৪০০১টি এবং প্রতিনিধিরা ৩৯০টি সংশোধন এবং ১২টি পরামর্শ দিয়েছিল। এই সব বিচার করে গৃহীত সংশোধন ও পরামর্শগুলিকে যুক্ত করে রাজনৈতিক প্রস্তাবকে সমৃদ্ধ করা হয়েছ। রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর ৪৮ জন প্রতিনিধি ৫১৭ মিনিট আলোচনা করেন। ৪২ জন প্রতিনিধি রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্টের ওপর আলোচনা করেন। সীতারাম ইয়েচুরি রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার জবাবী ভাষণ দেন। রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্টের ওপর আলোচনার জবাবী ভাষণ দেন প্রকাশ কারাত।

গৃহীত রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রতিবেদনে আশু কাজে বলা হয়েছেঃ পার্টিসদস্যদের গুণমানে উন্নত করতে কঠোরভাবে পাঁচ দফা কাজকে ২০২৩ সালের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের সময় প্রয়োগ করতে হবে। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের পুনর্নবীকরণের মধ্যে পার্টিতে বৃদ্ধি করতে হবে তরুণ ও মহিলা সদস্য সংখ্যা। ছয় মাসের সময়সীমায় লক্ষ্য ঠিক করে পার্টি শাখাগুলিকে সক্রিয় করার কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। এরসাথেই পরিকল্পনা নিতে হবে শাখা সম্পাদকদের প্রশিক্ষণের। বিশেষ নজর দিতে হবে নতুন তরুণ সর্বক্ষণের কর্মী নিয়োগে। নতুন এবং আগে থেকেই থাকা উভয় সর্বক্ষণের কর্মীদের রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।পার্টি সংগঠনের সাথে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকে সংহত করতে নিতে হবে পরিকল্পনা, এবং নির্দেশিকাগুলির রূপায়ণ সুনিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষকে সংগঠিত করতে তৈরি করতে হবে গ্রামাঞ্চলে শ্রমিক ইউনিয়ন, ফেডারেশন।

প্রকাশ্য সমাবেশে বলছেন সীতারাম ইয়েচুরি। মঞ্চে নেতৃবৃন্দ।


কংগ্রেসে গৃহীত ২২টি প্রস্তাব

বিভিন্ন জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর পার্টির অবস্থান এবং আগামী কর্মসূচি বিবৃত করে ২২টি প্রস্তাব কংগ্রেসে গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবগুলি হলোঃ হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে। কেরালার বাম গণতান্ত্রিক সরকারের সাফল্যকে স্যালুট জানিয়ে। জন্মু এবং কাশ্মীরের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে। আদিবাসী মানুষের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে। এলআইসি’র বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে পলিসিহোল্ডার,কর্মচারী এবং এজেন্টদের দেশজুড়ে গণআন্দোলনের পক্ষে। শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা জন্য। ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই। শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে।লাক্ষাদ্বীপে নিপীড়ন বন্ধ করো। আন্তঃরাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকারের জন্য লড়াই। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে। ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনের বিরুদ্ধে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টি এবং কৃষকদের ঋণমকুব সুনিশ্চিত করতে। দলিতদের মধ্যে অন্যায় এবং অত্যাচার বৃদ্ধি প্রসঙ্গে। মহিলাদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আক্রমণের বিরুদ্ধে।শ্রমিক কৃষক ঐক্য প্রসঙ্গে। ভয়াবহ বেকারি সমস্যা প্রসঙ্গে। শিক্ষার অধিকারের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে। পেট্রোল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদের আহ্বান। স্বাধীন ও বহুত্ববাদী সংবাদমাধ্যমের সমর্থনে। বিজ্ঞানমনস্কতা এবং সমালোচনামূলক ভাবনা সম্পর্কে। বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের অধিকার সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশনের সঙ্গে ভারতীয় আইনগুলিকে সামঞ্জস্য করা সম্পর্কে।

পার্টি কংগ্রেসে উপস্থিত মোট ৮০৭ জন প্রতিনিধি ও দর্শক

সিপিআই(এম)’র ২৩তম কংগ্রেসে ৭৩৪ জন প্রতিনিধি ও ৭৮ জন দর্শক নির্বাচিত/মনোনীত হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে ৭২৯ জন প্রতিনিধি ও ৭৮ জন দর্শক অর্থাৎ মোট ৮০৭ জন উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির ৪ জন সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনস্ত শাখার ১ জন উপস্থিত থাকতে পারেননি। উপস্থিতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির শাখার ১ জন প্রতিনিধি পরিচিতি পত্র জমা দেন নি। প্রতিনিধিদের মধ্যে ৯৪ জন (১২.৮৯ শতাংশ) এবং দর্শকদের মধ্যে ১২ জন (১৫.৫৮ শতাংশ) মোট ১০৬ জন মহিলা কংগ্রেসে অংশ নেন। ১ জন প্রতিনিধি ও ৩ জন দর্শক তাঁদের লিঙ্গ পরিচয় উল্লেখ করেননি। কংগ্রেসে বয়স্ক প্রতিনিধি পালৌলি মহম্মদ কুট্টি (৯০ বছর) এবং বয়স্ক দর্শক ছিলেন কাশ্মীরের গুলাম কাদির ভাট হাফরু (৮৮ বছর); সর্বকনিষ্ঠ প্রতিনিধি কেরালার আর্য রাজেন্দ্রন (২৩ বছর) এবং সর্বকনিষ্ঠ দর্শক বিহারের শৈলেন্দ্র যাদব (২৮ বছর)। সবচেয়ে দীর্ঘ পার্টিজীবন পালৌলি মহম্মদ কুট্টির। তিনি ১৯৫১ সালে পার্টি সদস্যপদ অর্জন করেছিলেন। প্রতিনিধি ও দর্শকদের মধ্যে আর্য রাজেন্দ্রনের পার্টিজীবন সবচেয়ে ছোটো, ২০১৭ সালে তিনি পার্টি সদস্যপদ পান। কংগ্রেসে উপস্থিত ৬২১ জন প্রতিনিধি এবং ৪১ জন দর্শক পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী।

সামাজিক বিন্যাসের দিক থেকে প্রতিনিধিদের মধ্যে ৫৩ জন দলিত, ৪২ জন আদিবাসী, ৫৫ জন মুসলিম এবং ৩৮ জন খ্রিস্টান; দর্শকদের মধ্যে ৯ জন দলিত, ৬ জন আদিবাসী, ৫ জন মুসলিম এবং ২ জন খ্রিস্টান। শ্রেণিগত উৎস বিচারে প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন ১৩৭ জন (১৮.৭৯ শতাংশ) শ্রমজীবী শ্রেণি, খেতমজুর ৫১ জন (৬.৯৯ শতাংশ), গরিব কৃষক ১১৩ জন (১৫.৫ শতাংশ), মধ্য কৃষক ১৫৪ জন (২১.১২ শতাংশ), ধনী কৃষক ২৭ (৩.৭১ শতাংশ), জোতদার ১০ জন (১.৩৭ শতাংশ), বুর্জোয়া ১৯ জন (২.৬১ শতাংশ), পাতি বুর্জোয়া ৬ জন (০.৮২ শতাংশ) এবং মধ্যবিত্ত ২০৭ জন (২৮.৪ শতাংশ)। শিক্ষাগত দিকদিয়ে ৩০০ জন ( ৪১.১৫ শতাংশ) প্রতিনিধি ও ২৯ জন (৩৭.৬৬) দর্শক স্নাতক; ২১৩ জন (২৯.২২ শতাংশ) প্রতিনিধি ও ২৭ জন (৩৫.০৬ শতাংশ) দর্শক স্নাতকোত্তর।

প্রতিনিধিদের মধ্যে ৪০৬ জন(৫৫.৬৯ শতাংশ) ছাত্রফ্রন্টে কাজ করার মধ্যদিয়ে পার্টি সদস্য হয়েছেন।৭২ জন ট্রেড ইউনিয়ন, ৫০ জন কৃষক ফ্রন্ট, ২০ জন খেতমজুর ফ্রন্ট, ১০৪ জন যুব ফ্রন্ট, ৩৪ জন মহিলা ফ্রন্ট, ১১ জন সাংস্কৃতিক ফ্রন্টে কাজ করার মধ্যদিয়ে পার্টি সদস্যপদ পান। দর্শকদের মধ্যে ২৫ জন ট্রেড ইউনিয়ন ফ্রন্ট এবং ২২ জন ছাত্রফ্রন্ট থেকে পার্টি সদস্য হয়েছেন। প্রতিনিধিদের মধ্যে কাজের মূল ক্ষেত্র হলো - ২৮৬ জনের পার্টি সংগঠনে, ১৪৩ জনের ট্রেড ইউনিয়নে, ১০৩ জনের কৃষক সভায়, ৪০ জনের খেতমজুর ফ্রন্টে, ১৪ জনের ছাত্র সংগঠনে, ২৬ জনের যুব সংগঠনে, ৪৭ জনের মহিলা সংগঠনে, ৭ জনের সাংস্কৃতিক সংগঠনে এবং মধ্যবিত্ত কর্মচারী সংগঠনে ৪ জনের। ২৮৯ জন প্রতিনিধি ও ৩১ জন দর্শকের মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার তলায়।

১৭০ জন প্রতিনিধি এবং ৫১ জন দর্শকের এটাই প্রথম পার্টি কংগ্রেস। সবচেয়ে বেশি পার্টি কংগ্রেসে উপস্থিত থেকেছেন এস আর পিল্লাই এবং বিমান বসু। দুজনের এটা ১৬তম পার্টি কংগ্রেস। এছাড়া জর্নাদন পতি, এন কে শুল্কা, হরি সিং কাঙ, মানিক সরকার,পালৌলি মহম্মদ কুট্টি, পি মধু ১৫টি করে পার্টি কংগ্রেসে উপস্থিত থেকেছেন। বিমান বসু ১৯৬৪ সালে সপ্তম কংগ্রেসে ‘বিশেষ অনুমতি’-তে উপস্থিত ছিলেন।

৩৭৯ জন প্রতিনিধি এবং ২৫ জন দর্শকের জেলজীবনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।এঁদের সম্মিলিত জেলজীবন ১২৮ বছর, তাঁরা মোট ৬৯২ বার জেলে গেছেন। সবচেয়ে দীর্ঘ জেলজীবন মহম্মদ ইউসুফ তারিগামির, ৬ বছর। আত্মগোপনে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে ১৫১ জন প্রতিনিধি এবং ৯ জন দর্শকের। এঁদের সম্মিলিতভাবে আত্মগোপনে থাকার সময় হলো ১০৯ বছর। মোট ২১৫ বার তাঁরা আত্মগোপনে থেকেছেন। দীর্ঘসময় আত্মগোপনে থেকেছেন কান্তি গাঙ্গুলি (৮ বছর ৬ মাস), হিমাংশু দাস (৫ বছর ১১ মাস), গণেশ শংকর সিং (৫ বছর ৩ মাস) এবং অমল হালদার (৫ বছর ২ মাস)।