E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৫ এপ্রিল, ২০২২ / ১ বৈশাখ, ১৪২৯

রামনবমী ঘিরে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা উদ্বেগ ছড়িয়েছে


জেএনইউ-তে এবিভিপি’র হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার জামিয়া মিলিয়াতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিবাদ।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ১০ এপ্রিল রামনবমীর নামে বিভিন্ন রাজ্যে হামলার মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীকে কেন্দ্র করে মিছিল থেকে উত্তেজনা ছড়ানো হয়। এছাড়াও নিরামিষ খাবারের নামে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি’র দুর্বৃত্তরা ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির এই হামলায় গুজরাট ও ঝাড়খণ্ডে একজন করে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকেই। বিভিন্ন রাজ্যে রামনবমীর মিছিল থেকে পরিকল্পিত হিংসা এবং হাঙ্গামার পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সুরেন্দ্র জৈন বলেছেন, মুসলিম নেতারা এবং লেফট লিবারেলরা এই ঘটনার জন্য দায়ী।

রামনবমীকে ঘিরে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। একই সঙ্গে ধর্মীয় উৎসবকে আরএসএস এবং সংঘ পরিবার যেভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করছে, তারও তীব্র নিন্দা করেছে সিপিআই(এম)।

১২ এপ্রিল এক বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো বলেছে, এই ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি বন্ধ হোক। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট এবং বিহারের প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয় ব‍‍‌লে জানিয়েছে পলিট ব্যুরো। বলেছে, যথোপযুক্ত প্রস্তুতি না নিয়ে কীভাবে সংখ্যালঘু প্রধান এলাকা দিয়ে রামনবমীর মিছিলের অনুমতি দেওয়া হলো?

আরএসএস-সঙ্ঘ পরিবারের ধর্মীয় উৎসবকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির স্বার্থে মদত জোগানোর নিন্দা করেছে সিপিআই(এম)। সমস্ত অংশের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে সিপিআই(এম) ব‍‌লেছে, ধর্মের নামে যারা মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে, তা ব্যর্থ করতে হবে। সেই সঙ্গে যথোপযুক্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে পার্টির প্রতিটি শাখাকে জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন ঘটনাসূত্রে জানা যাচ্ছে, সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা ঘটে বিজেপি শাসিত মধ্য প্রদেশে। সেখানে খরগোন জেলায় রামনবমীর মিছিল থেকে মসজিদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে, সেইসঙ্গে সংলগ্ন এলাকার দোকান ও মুসলমানদের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর অন্যতম পান্ডা কপিল মিশ্র এসেছিলেন খরগোনে এবং রামনবমীর মিছিলে ছিলেন। তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে উগ্র সাম্প্রদায়িক প্রচার চালিয়েছেন। অন্যান্য জায়গার মতো খরগোনেও তীব্র স্বরে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে জনপ্রিয় গান ‘টোপিওয়ালে’ বাজিয়ে সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা ছড়ানো হয়। সেই গানের কয়েকটি লাইনের অর্থ হলো, যেদিন হিন্দুত্ব জেগে উঠবে, সেদিন টোপিওয়ালা মাথা ঝুঁকিয়ে জয় শ্রীরাম বলবে। রক্ত গরম হয়ে গেলে আর কথা নয়, তরোয়াল বলবে। এর পরের লাইনগুলো আরও প্ররোচনামূলক।

স্বাভাবিকভাবেই খরগোনে মসজিদের সামনে এই ধরনের গান বাজিয়ে প্ররোচনা সৃষ্টি করায় আপত্তি করা হয়। এর পরই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দুর্বৃত্তরা মসজিদ লক্ষ করে বেপরোয়া পাথর ছুঁড়তে থাকে। আশেপাশের মুসলমানদের বাড়িঘর ও দোকানেও হামলা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ থাকলেও প্রথমে তারা ছিল নির্বিকার, তারপর মৃদুভাবে ভিড়কে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। এরপরই বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এইভাবে পরিকল্পিত হামলাকে ‘সংঘর্ষ’ বলে বিজেপি নিয়ন্ত্রিত অধিকাংশ মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, রাজ্যের বিজেপি সরকার আক্রান্তদের বিরুদ্ধেই ঘটনার পর দিন থেকে আক্রমণ করতে শুরু করে। আক্রান্ত সংখ্যালঘুদেরই আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করে। শতাধিক মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুলডোজার দিয়ে ৫০ টির বেশি বাড়ি ও দোকান ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। চারজন সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এদের মধ্যে তিনজন দৈনিক মজুরির চুক্তিভিত্তিক কর্মী। তাঁদের সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ছাঁটাই করা হয়। অপর একজন স্থায়ী কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা গেছে ৭০ বছরের বৃদ্ধকেও রেহাই দেয়নি উগ্র রামভক্তরা। শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে এত মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট, রুটিরুজির সংস্থানকে ধূলিসাৎ করা হয়েছে। আইন-আদালত কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করা হয়নি।

গুজরাটের হিম্মতনগর ও খাম্বাতেও একইভাবে হিন্দুত্ববাদীদের মিছিল থেকে সংখ্যালঘু এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। সবরকণ্ঠ জেলার হিম্মতনগরে দুপুরের দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে অবস্থা আয়ত্তে আনে বলে জানা যায়। আনন্দ জেলার খাম্ভাতেও দোকান,বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর চলে মিছিল থেকে। এখানে রামনবমীর মিছিল যাবার পথে সংঘর্ষ এলাকা থেকে একজনের দেহ মিলেছে। এই দু’জায়গাতেই পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়।

এদিকে ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগা এলাকাতেও সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানো হয়। ১০ এপ্রিল বিকেলে হিরহি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। দশটি বাইক ও পিক আপ ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এখানে হিংসায় ১ জনের মৃত্যু ও ১২ জন জখম বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

জেএনইউ-তে হামলা

রামনবমীতে আমিষ খাবার নিষিদ্ধ করার নামে বিদ্বেষ ছড়াতে জেএনইউ’র ক্যাম্পাসে নির্বিচারে হামলা চালায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। এই হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হন, কারও কপাল ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। কাউকে লাঠিপেটা করা হয়। একাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। জেএনইউ’র হোস্টেলে আমিষ-নিরামিষ দু’রকম খাদ্যই থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের পছন্দ অনুয়ায়ী খাবার নেন। সেদিন এবিভিপি’র বাহিনী ক্যাম্পাসের কাবেরী হস্টেলে ঢুকে গায়ের জোরে আমিষ খাদ্যের সরবরাহ বন্ধের হুমকি দেয়। এর প্রতিবাদ করেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাতে উগ্র চেহারা নেয় ওরা এবং শারীরিক আক্রমণ নামিয়ে আনে। ফলে মেস সম্পাদক সহ অনেকেই আক্রান্ত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে যখন সব অংশের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিবাদ সভা হচ্ছিল, তখন ফের সেখানে হামলা চালায় হিন্দুত্ববাদী উন্মত্ত বাহিনী। নির্বিচারে পাথর ছোঁড়ে, সেই সঙ্গে বিজেপি’র মদতে চলে হামলা। ছাত্র সংসদ এবং এসএফআই এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। ছাত্র সংসদ বলেছে, এবিভিপি নিজেদের ব্রাহ্মণ্যবাদী বিচার চাপিয়ে দিতে জুলুম চালিয়েছে। জেএনইউ এবং প্রতিষ্ঠানের হস্টেল সব অংশের বিচারধারাকে মর্যাদা দিয়ে পরিচালিত হয়। সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা অনুযায়ী নিজের পছন্দের খাদ্য পেতে সমস্যা হয়না। উগ্র দক্ষিণপন্থী এবিভিপি’র এই আচরণে স্পষ্ট যে, তারা গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ পরিসরের উপর কর্তৃত্ব কায়েম করতে চায়। ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ বলেছেন, এই হামলার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা এই বিভাজনের রাজনীতির সামনে মাথা নোয়াবে না। এসএফআই প্রতিষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষ এবং সব অংশের সমান মর্যাদা রক্ষার ঐতিহ্যের পক্ষে সংগ্রাম জারি রাখার ডাক দিয়েছে। সংগঠনের দিল্লি রাজ্য সম্পাদক প্রীতীশ মেনন বলেছেন, দুষ্কৃতী বাহিনী হস্টেলের সামনে রাখা বাইক ভেঙেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করেছে। নীতি পুলিশির এই বাহিনীকে পরাস্ত করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে হারিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে।

এদিকে আরএসএস অনুগামী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি’র হুমকি-হামলা সত্ত্বেও ঘটনাকে আড়াল করতে মিথ্যা প্রচার শুরু হয়। জেএনইউ কর্তৃপক্ষ এই ছাত্র সংগঠনের সুরেই ঘটনার বর্ণনা দেয়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিযুক্ত উপাচার্যের পক্ষে ঘটনাটিকে ‘রামনবমীর পূজা নিয়ে বিরোধ’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এসএফআই, এআইএসএফ সহ বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং বিভিন্ন অংশের ছাত্র-ছাত্রীরা ঘটনার এই বিবরণকে পুরোপুরি মিথ্যা আখ্যা দিয়েছে। খাদ্যাভ্যাস চাপিয়ে দেবার এই জোরজুলুমকে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে সিপিআই(এম), সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই(এমএল)। এই পাঁচ বাম দল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে,কর্নাটকে মুসলিম ফল বিক্রেতার উপর হামলা হয়েছে রামনবমীতেই। দক্ষিণ দিল্লি কর্পোরেশনের মেয়র মাছ-মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন রামনবমী পালনের অজুহাতে। পছন্দের খাদ্য খাবার অধিকার, বৈচিত্রের সাংবিধানিক মর্যাদাকে অগ্রাহ্য করছে। জেএনইউ কর্তৃপক্ষকে কড়া ব্যবস্থা নেবার দাবি জানানোর পাশাপাশি সব নাগরিকদের ওপর খাদ্যাভ্যাস চাপিয়ে দেওয়াকে প্রতিরোধ করার ডাক দিয়েছেন বামপন্থীরা। হিংসার নিন্দা করেছেন জেএনইউ’র শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

ছাত্র-ছাত্রীরা এই হামলাকে ‘ফুড ফ্যাসিজম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সব অংশকে সমান মর্যাদা দেওয়ার ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই জারি রাখার বার্তাও দিয়েছেন তারা। এই হামলায় দায়ী এবিভিপি’র কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। উলটে গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভরত এসএফআই কর্মীদেরই আটক করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালে জেএনইউ ক্যাম্পাসে আরএসএস’র দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছিল। সেবারে ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষের সঙ্গে একাধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছিলেন। পুলিশ হামলাবাজদের একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার এবং দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন হওয়ায় হামলা করেও অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-অশান্তি

রামনবমীকে কেন্দ্র করে এ রাজ্যের হাওড়া, বাঁকুড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও অশান্তি তৈরির চেষ্টা চালায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। হাওড়ায় রামনবমীর একটি মিছিল জিটি রোড ধরে শিবপুর জৈন হাসপাতালের সামনে এলে রাস্তার ধারের কিছু যুবকের সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। মিছিল থেকে উত্তেজক স্লোগান দেওয়ায় গোলমালের সূত্রপাত। এর থেকে এলাকার যুবকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেওয়া সঙ্ঘীদের হাতাহাতি বেঁধে যায়। রাস্তার ধারের কিছু দোকান ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি উত্তেজক হয়ে উঠলে পুলিশ ও র‌াফ নামানো হয়। ফজিরবাজার অঞ্চলে কয়েকটি বাইক ভাঙচুর ও একটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে দমকলের গাড়ি এসে আগুন নেভায়। এদিকে হাওড়ার সাঁকরাইলে অস্ত্র হাতে রামনবমীর মিছিল করে সঙ্ঘীরা।

অন্যদিকে রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা থেকে নুনগোলা রোড, সুভাষ রোড এলাকা জুড়ে। মিছিলে অংশ নেওয়া বেশ কিছু মানুষের ছোঁড়া ইটে রক্তাক্ত হন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। কয়েকজন সাংবাদিকও ইটের আঘাতে জখম হন।

তবে লক্ষণীয় ঘটনা ঘটে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাঁকিনাড়ায়। সেখানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে রামনবমীর মিছিলে একসাথে হাঁটে তৃণমূল এবং বিজেপি। সেই সঙ্গে মিছিল থেকে এক সঙ্গে গলা মিলিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলা হয়। এই দুই দলের তাবড় নেতারা এই মিছিলে অংশ নেন। এই ঘটনার সূত্রে মোদি-দিদি এবং তৃণমূল-বিজেপি’র গোপন বোঝাপড়া আরও একবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে আরএসএস সহ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর যেমন বাড়বাড়ন্ত হয়েছে,তেমনি এদের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি ও হিংসার ঘটনাও উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। তৃণমূল দল ও সরকারের বদান্যতায় এরা ফুলে-ফেঁপে উঠে এখন রামনবমীকে কেন্দ্র করে রাজ্যে আস্ফালন করার সাহস পেয়ে যাচ্ছে।