E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৫ এপ্রিল, ২০২২ / ১ বৈশাখ, ১৪২৯

বিষয়টা দাঁড়াচ্ছে এরকম - মান মানেই কচু

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


‘ধর্মাবতার হুজুর! এটা মানহানির মোকদ্দমা। সুতরাং প্রথমেই বুঝতে হবে মান কাকে বলে। মান মানে কচু। কচু অতি উপাদেয় জিনিস। কচু অনেক প্রকার, যথা - মানকচু, ওলকচু, কান্দাকচু, পানিকচু, শঙ্খকচু ইত্যাদি। কচুগাছের মূলকে কচু বলে, সুতরাং বিষয়টা একেবারে মূল পর্যন্ত যাওয়া দরকার।’ আদালতে এরকমই দাবি পেশ করেছিল কুমির। যদিও ধূর্ত শেয়াল প্রস্তুত ছিল বিচারপ্রক্রিয়া ভেস্তে দেবার। তাই এর বিপক্ষে হাজারো যুক্তি খাড়া করতে সময় লাগেনি। অতএব, মূল পর্যন্ত যাবার আগেই ভেস্তে দেওয়া বিচার প্রক্রিয়ায় তিনমাসের জেল আর সাতদিনের ফাঁসি ছাড়া বিশেষ কোনো রায় মেলে না। আর আদালত চত্বরের বিশৃঙ্খলার খবর জানতে হলে সুকুমারের হ য ব র ল-র শেষ অংশটা একবার পড়ে নিন। বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। খবরের কাগজ পড়ার বা টিভি চ্যানেল খুলে মারামারি, হুমকি, হামলাবাজি দেখার কোনও দরকার নেই।

সুকুমার রায়ের আবোল তাবোলের এক ছড়ার চরিত্রকে উদ্ধৃত করে বাম ছাত্র-যুবদের ‘বডি শেমিং দোষে দুষ্ট’ একটা স্লোগান খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। যেখানে রাজ্যের এক শিক্ষামন্ত্রীকে ‘চাকরি দিতে ব্যর্থ' ট্যর্থ বলা হয়। সেসব অবশ্য বেশ কয়েকবছর আগের কথা। তখনও দুর্নীতির বিষয়টা এতটা সামনে আসেনি। এখন তো হাইকোর্ট প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় কান ধরে, চোখে আঙুল দিয়ে শাসক এবং শাসক ঘনিষ্ঠদের দুর্নীতির প্রশ্নে একের পর এক নিদান হাঁকছেন। এতে অনেকেরই হৃৎকম্প বাড়ছে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ছে। তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। সকালে কাউন্টার খোলার আগেই উডবার্ন ওয়ার্ডের সমস্ত বেড বুক হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতাল চত্বর সন্ত্রস্ত করছে লালবাতির ভিড়।

আনিস খান, তুহিনা খাতুন, ভাদু শেখ, বগটুই, তপন কান্দু, পানিহাটি, হাঁসখালি, কাকদ্বীপ, দেগঙ্গা, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, বাঁশদ্রোণী - গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সামগ্রিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য এই ক’টা নামই যথেষ্ট। এর কোনোটা ছাদ থেকে ফেলে খুন, কোনোটা ধর্ষণের ভয় দেখানোয় আত্মহত্যা, কোনোটা ক্ষমতা দখলে রাখতে খুন, কোনোটা বখরার রাজনীতির রেষারেষির জের, আর কোনোটা হাড় হিম করা ধর্ষণ। এখন কোনো একটা ঘটনা সম্পর্কে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর মতের সাথে আপনি সহমত হতেই পারেন। যাঁর মতে, “একটা ছোট্ট ঘটনা ঘটে গেলেই যেটা আমরা পছন্দ করিনা, তা সত্ত্বেও হয়ে যায় নিজেদের মধ্যে, সেটা নিয়েই সারাক্ষণ... এই যে তোমরা বারবার দেখাচ্ছো একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গেছে, নাকি রেপড হয়ে। আপনি রেপড বলবেন, না পেগনেন্ট বলবেন, না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন, একটা এনকোয়ারি করেছেন কি?...” তাঁর মতে, এ রাজ্যে যে ঘটনাই ঘটুক তা হয় ‘সাজানো ঘটনা’, নয় ‘ছোটো ঘটনা’, নয় ‘তুচ্ছ ঘটনা’। যদিও ঘটনাচক্রে এবার চার ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন সেই দময়ন্তী সেন। যিনি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্ত করেছিলেন। যাঁর রিপোর্টে ধর্ষণের উল্লেখ ছিল এবং মুখ্যমন্ত্রী যে ঘটনাকে ‘সাজানো ঘটনা’র তকমা দিয়েছিলেন। হয়তো যে বিষয়টা আমাদের নজর এড়িয়ে গেছে তা হলো সেবারও এই ঘটনায় যেসব ‘প্রভাবশালী’রা জড়িত ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন তাঁর শাসক ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী বান্ধবীর মদতে পালিয়ে যান। যে অভিনেত্রী পরবর্তী সময়ে শাসকদলের সাংসদও হয়েছেন। দশ বছর পর ২০২২-এও যেসব ঘটনা ঘটছে তার প্রায় সব ঘটনাতেই জড়িত রাজ্যের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। ২০১২ হোক বা ২০২২ - রাজ্যের হাল হকিকৎ ক্রমশ দুর্বিষহ অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে কারা? ধর্ষণ যদিও সামাজিক সমস্যা তবু কেন বারবার প্রায় প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়াচ্ছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদেরই? সে প্রশ্ন ওঠা কি খুব অসঙ্গত?

ঠিক ধর্ষণের মতোই একথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই দুর্নীতি এবং তৃণমূল আজ সমার্থক। রাজ্যের বুকে ঘটা প্রায় প্রতিটি দুর্নীতির ঘটনার পেছনে জড়িয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের বড়ো, মেজ, সেজ, ছোটো, ন, ভাইপো, ভাইঝি, ভাগনে, ভাগনিদের নাম। টেট নিয়োগ দুর্নীতি হোক, বা অবৈধ কয়লা চালান, কিংবা বেআইনি বালি খাদান অথবা তোলাবাজি - সুতোর টান পড়লে ঠিক চলে আসছে কেউ না কেউ। কোনোভাবেই চেপে রাখা যাচ্ছে না রাঘব বোয়ালদের নাম। জাল পাতা হলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ঠিক তাঁরা ফসকে ফসকে বেঁচেও যাচ্ছেন। বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কখনো তাদের ঢাল উডবার্ন ওয়ার্ড আবার কখনও হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বীরভূম থেকে নাকতলা, আলিপুর টু পোটোপাড়া - সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। নিজেদের ‘নির্দোষ’ বা ‘চক্রান্তের শিকার’ দাবি করা এইসব নেতা-কর্মীরা হাজিরা এড়াতে যে তৎপরতা দেখান তাতে তাঁরা যে ধোয়া তুলসীপাতা নন বা চক্রান্তের শিকার নন তা বুঝতে মানুষের সময় লাগে না।

রাজ্যে এই মুহূর্তে বহু চর্চিত বিষয় - এসএসসি দুর্নীতি মামলা। যেখানে অন্যান্যদের পাশাপাশি সরাসরি নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন আব্দুল গনি আনসারি নামের এক ব্যক্তি। শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী নিয়োগেও এসএসসি-র বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়েও একাধিক ক্ষেত্রে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। ১১ এপ্রিল সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দ কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি এক রিপোর্ট পেশ করেন। যে রিপোর্ট অনুসারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জমানায় চাকরি পাওয়া ৬০৯ জনের নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। এমনকী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সুপারিশে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ৫ সদস্য নিয়ে যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করা হয়েছিল তাও বেআইনি। এরপরেই ১২ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজাম প্যালেসে সিবিআই দপ্তরে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ উল্লেখযোগ্যভাবে এই নির্দেশের পাশাপাশি জানায়, কোনোভাবেই এই হাজিরা এড়াতে পারবেন না তিনি। এসএসকেএম হাসপাতালে উডর্বান ওয়ার্ডে ভরতি হওয়া যাবে না। সিবিআই চাইলে তাঁকে গ্রেফতারও করতে পারে।

এই প্রসঙ্গে একটা পুরোনো ঘটনা একটু ঝালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। ধরে নিন এটা উদাহরণ মাত্র। কী যেন বলে? হিমশৈলের চূড়া! সেরকম। ঘটনাটা ২০১৮ সালের। সে বছর কোচবিহারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য এসএসসি তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। তফশিলি জাতিভুক্তদের জন্য মেধাতালিকার প্রথম স্থানে নাম ছিল ববিতা বর্মণের, যার রোল নম্বর ২২২২১৬২৭০০০৭২০। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে নাম ছিল যথাক্রমে লোপামুদ্রা মণ্ডল ও ছায়া রায়ের। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় বাম জমানার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম ওয়েটিং লিস্টের প্রথম স্থানে। যার রোল নম্বর ২২২২১৬২৭০০০২২০। ওই বছরের ৩১শে আগস্ট কাউন্সেলিং-এও তিনি গরহাজির ছিলেন। কিন্তু ওই বছরের আগস্ট মাসের শেষে বাবা পরেশ অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেবার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হঠাৎ করে মেধাতালিকায় নাম উঠে যায় অঙ্কিতার। ওই বছরেরই নভেম্বর মাসে প্রায় নিঃশব্দে তিনি যোগ দেন মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদে। যে কথা জানিয়েছিলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। ঘটনা খুঁজতে গেলে পাওয়া যাবে অনেকই।

পার্থবাবুর ঘটনায় ফিরে আসি। একক বেঞ্চের নির্দেশ আসার পর একঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দ কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় একক বেঞ্চের নির্দেশনামা হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড হয়েছে কিনা। দেখা যায়, তখনও আপলোড হয়নি। এরপরই একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি এসএসসি সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্ত মামলাতেও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। পরের দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশের উপর চার সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করে ডিভিশন বেঞ্চ।

বিগত কয়েক বছর ধরে এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে সরগরম রাজ্য। বারবার এসএসসি নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে। উঠেছে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ। সিলেকশন টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি পাননি বহু যোগ্য প্রার্থী। বেশ কয়েকবছর ধরে আন্দোলন করছেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তিন দফায় ৩৯৪ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়েছেন নবম-দশম শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থীরা। এসএসসি-র দুর্নীতির অভিযোগে নিয়োগ মামলা পৌঁছেছে হাইকোর্টে। চলছে শুনানি। এই পরিস্থিতিতেও নিয়োগপ্রার্থীরা আন্দোলন জারি রেখেছেন। অন্যদিকে বিচারব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা পিছলে পিছলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। গ্রুপ-ডি তে ৮৯ জন অকৃতকার্য প্রার্থীর নাম কীভাবে নিয়োগের প্যানেলে ঢুকে পড়লো, সেই বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জেরার মুখে জানিয়েছিলেন শান্তিপ্রসাদ। এরপর নবম-দশমের নিয়োগেও জড়িয়ে গেছে তাঁর নাম। আবার সিবিআই জেরার মুখে পড়তে চলেছেন তিনি।

এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আধিকারিক অলোক সরকারের বিরুদ্ধে গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি ধারায় ষড়যন্ত্র, ৪২০ ধারায় প্রতারণা ও ৪৬৮ নম্বর ধারায় জালিয়াতি, ৪৭১ নম্বর ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে নতুন করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারকের কথায় - “তিনি নির্লজ্জের মতো মিথ্যা বলেছেন।”আদালতের নির্দেশ, নতুন করে এফআইআর দায়ের করবে সিবিআই। প্রসঙ্গত, এই মামলার হলফনামা অনুসারে, উপদেষ্টা কমিটির কমপক্ষে দু’টি বৈঠক হয়েছিল বা তার বেশিও হয়ে থাকতে পারে। অথচ আদালতের সামনে এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা বারবার জানিয়েছেন, উপদেষ্টা কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে ১৩ মার্চ গান্ধী মূর্তির সামনে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নামঞ্চে গিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “চাকরির দাবিতে আইনি লড়াই চলবে। পাশাপাশি রাস্তার আন্দোলনকেও আরও তীব্র করে তুলতে হবে। আমরা আপনাদের পাশে আছি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে লড়ব আমরা। শুধু কলকাতায় নয়, জেলায় জেলায় আন্দোলন করতে হবে। এই লড়াই জিততেই হবে আমাদের। এর শেষ দেখে ছাড়ব আমরা। আপনারাও এর শেষ দেখে ছাড়বেন। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে বলে তথ্য রয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অথচ আদালত তাঁকেই স্বস্তি দিয়েছে। কিন্তু স্বস্তি তো সাধারণ মানুষের দরকার। নেতা-মন্ত্রীরা মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার জন্যই কাজ করবেন, এটাই দস্তুর। কিন্তু এখানে দেখলাম উলটে মন্ত্রীকে স্বস্তি দেওয়া হচ্ছে। মানে মন্ত্রী এমন কাজ করেছেন যে তাঁর স্বস্তির দরকার হয়ে পড়েছে। আমরা কিন্তু তাঁকে স্বস্তিতে থাকতে দেব না। এসএসসি-র উপদেষ্টা, শিক্ষামন্ত্রী সব মিলিয়ে একটা চক্র তৈরি হয়েছে। উডবার্ন ওয়ার্ড এই চোরদের বাঁচাচ্ছে। কিন্তু কেউ বাঁচাতে পারবে না।”

অবস্থা দ্রুত বদলাচ্ছে। সময় যত এগোবে অবস্থা আরও বদলাবে। উডবার্ন বা ডিভিশন বেঞ্চ আর বেশিদিন রক্ষাকবচ হয়ে থাকতে পারবে না। ধর্ষণ হলে মানুষ আঙুল উঁচিয়ে ধর্ষণই বলবে। প্রেক্ষিত খুঁজতে বসবে না বা খুঁজতে বসবে না এটা রেপ, নাকি প্রেগন্যান্ট, নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স। আমরা সময়ের অপেক্ষায়। “হে সময়, হে বিকলাঙ্গ বিভ্রান্ত সময়/ কানা কুকুরের মতো এটো-কাটা ঘাঁটাঘাঁটি ভুলে/ পৃথিবীর আয়নায় মুখ রেখে জামা জুতো পরে/ সূর্যের বল্লম হাতে, একবার অশ্বারোহী হও।”