৫৮ বর্ষ ২২শ সংখ্যা / ১৫ জানুয়ারি ২০২১ / ১ মাঘ ১৪২৭
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে কৃষক আন্দোলনের প্রতি সংহতি
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দেশের সরকারের কৃষিবিরোধী জনবিরোধী নীতিসমূহের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের বার্তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেবার কথা প্রকাশ্য বিবৃতিতে জানালো কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। সরকারকে কৃষকদের দাবি মেনে নিতে বললেন শ্রমিকরা। এক যৌথ বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির পক্ষ থেকে ৬ জানুয়ারি একথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নসমূহ এবং স্বাধীন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলির মঞ্চের পক্ষ থেকে দেশজোড়া চলমান কৃষক আন্দোলনের প্রতি সক্রিয় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের আন্দোলন নির্দিষ্ট অভিমুখে পরিচালিত হবার জন্য অভিনন্দন জানানো হয়েছে ওই বার্তায়।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি আরও বলেছে, মাসাধিককাল ধরে লাখো কৃষক যেভাবে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও শীত এবং বৃষ্টিকে মোকাবিলা করে এবং কোথাও কোথাও পুলিশি অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েও যেভাবে তাঁদের প্রতিবাদ ধরনা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তা নজিরবিহীন। যে সমস্ত কৃষক ভাই এবং বোনেরা আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে শহিদি বরণ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ থেকে।
দানবীয় কৃষি আইনসমূহ এবং বিদ্যুৎ বিল যা এমনকি আইনও নয় সেগুলি প্রত্যাহার করার বিষয়ে নেতিবাচক এবং যে ইগো ভিত্তিক আচরণ করছে সরকার সে সম্পর্কে নিন্দা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির স্বাধীন ফেডারেশন এবং অ্যাসোসিয়েশনগুলির যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে।
গোদি মিডিয়া এবং অর্থের বিনিময়ে পোষা ভাড়াটে প্রচার সেনাদের ব্যবহার করে যেভাবে সরকার আন্দোলনরত কৃষকদের এবং তাঁদের সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কুৎসা করছে এবং তাদের খালিস্তানি বা সন্ত্রাসবাদী বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে সে সম্পর্কেও শ্রমিকদের সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
শ্রমিকদের এই কেন্দ্রীয় মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের সরকারের মিথ্যা প্রচার এই আন্দোলনের প্রতি কোনো নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিল্লির সীমানা জোড়া কৃষকদের এই অবস্থানরত ব্রিগেডগুলিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। আর দেশের মানুষের এই লড়াকু কৃষকদের প্রতি সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দেশের শ্রমিকরা এই সহমর্মিতার পদক্ষেপের একেবারে সামনের সারিতে থেকে তাঁদের ভূমিকা পালন করছেন।
এর পাশাপাশি শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং ফেডারেশনগুলির এই দেশ জোড়া সহমর্মিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে, কৃষকদের ঘোষিত আগামী কর্মসূচিগুলি সম্পর্কে দেশজুড়ে প্রচার করার মধ্য দিয়ে তাঁদের প্রতি মানুষের সমর্থন বৃদ্ধি করার জন্য পদক্ষেপ করতে।
কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় শ্রমকোডগুলির বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে কৃষকরা শ্রমিকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই আন্দোলনে শামিল থাকবেন। আগামী ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যগুলির রাজধানীতে ৩ দিনব্যাপী যে মহাপদযাত্রা আয়োজন করা হয়েছে সেই কর্মসূচিতে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে এক বার্তায় মোদী সরকারের জনস্বার্থবিরোধী, খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী এবং দেশবিরোধী নীতি সমূহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার স্বার্থে সাধারণতন্ত্র দিবসে কিষান প্যারেড কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে ব্যাপকতর কৃষক-শ্রমিক ঐক্য গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং স্বাধীন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন সমূহের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে কৃষকদের এবং খেটে খাওয়া মানুষের দাবিগুলির বিরুদ্ধে মিথ্যা তর্ক না চালিয়ে এবং অযথা দেরি না করে উপযুক্ত মর্যাদার সঙ্গে অবিলম্বে কৃষকদের দাবিগুলি মেনে নিতে হবে।