৫৮ বর্ষ ২২শ সংখ্যা / ১৫ জানুয়ারি ২০২১ / ১ মাঘ ১৪২৭
তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাজ্যের সর্বত্র কৃষক-খেতমজুরদের জাঠা চলছে
নারায়ণগড়ে ১১ কিমি পথ অতিক্রম করছে কৃষক জাঠা।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি প্রবেশের বিভিন্ন স্থান-সিঙ্ঘু, টিকরি, পালওয়াল, শাজাহানপুর, গাজিপুর সীমান্তে কৃষকরা যতদিন বসে থাকবেন এ রাজ্যেও ততদিন টানা চলবে কৃষক জাঠা।
গড়বেতায় কৃষক খেতমজুররা শামিল জাঠায়।
এর আগে এই কৃষক সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানিয়ে কলকাতায় হয়েছে বিরাট কৃষক সমাবেশ; বামপন্থী, সহযোগী দল ও কংগ্রেসের অবস্থান বিক্ষোভ। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে হয়েছে কৃষক-খেতমজুরসহ ছাত্র-যুব-মহিলা-শ্রমিকদের মিছিল-সমাবেশ। এই সংহতি আন্দোলনকে আরও ছড়িয়ে দিতে রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র এই কৃষক জাঠার কর্মসূচি নিয়েছে সারা ভারত কৃষক সভা ও সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন। এখন আর শুধু জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয়ভাবে নয়. একেবারে গ্রামপঞ্চায়েত, ব্লক স্তরে কৃষক-খেতমজুররা এই কর্মসূচি সংগঠিত করছেন। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদীয়ার বিভিন্ন স্থানে এই কৃষক জাঠা হয়েছে। আগামীদিনে রাজ্যের প্রতিটি অঞ্চলে, ব্লকে এই কর্মসূচি সংগঠিত করার পরিকল্পনা চলছে। ১৩ জানুয়ারি সারা রাজ্যে কৃষি বিলের কপি পোড়ানো হয়েছে। অল ইন্ডিয়া কিষান সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটির ডাকে এই কর্মসূচি হয়।
সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটির পশ্চিমবঙ্গ শাখা আরও কয়েকটি কর্মসূচি নিয়েছে। এগুলি হলোঃ ১৮ জানুয়ারি মহিলা কিষান দিবস পালন, এতে মহিলা কৃষিজীবীরা অংশ নেবেন। এরপর হবে ২০-২২ জানুয়ারি টানা ৭২ ঘণ্টা কৃষকদের অবস্থান। কলকাতার ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির সামনে এই অবস্থানে কয়েক হাজার কৃষক অংশ নেবেন বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই অবস্থান কর্মসূচির পর ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে পালিত হবে আজাদ হিন্দ কিষান দিবস এবং ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষক সাধারণতন্ত্র দিবস। প্রসঙ্গত, ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে প্যারেডের লক্ষ্যে কৃষকরা দিল্লি অভিমুখে অভিযান করবে।
জাঠা এগিয়ে চলেছে ডেবরার গ্রাম্য পথ ধরে।
এই কৃষক জাঠা কর্মসূচিগুলিতে ব্যাপক সংখ্যায় কৃষক-খেতমজুররা জমায়েত হচ্ছেন। কৃষক জাঠাগুলি গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক অঞ্চলের দীর্ঘপথ অতিক্রম করছে। তিনটি কৃষি আইন বাতিলের সাথেই এই কৃষক জাঠাগুলি থেকে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার, রেগায় ২০০ দিনের কাজ ও দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি, ফসলের দাম বৃদ্ধির মতো দাবিগুলিও তুলে ধরা হয়েছে। ‘বয়কট রিলায়েন্স, বয়কট আদানি, বয়কট জিও’ স্লোগানেও সোচ্চার হচ্ছে এই জাঠা কর্মসূচিগুলি।