৫৮ বর্ষ ২২শ সংখ্যা / ১৫ জানুয়ারি ২০২১ / ১ মাঘ ১৪২৭
বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের যৌথ সমাবেশ হবে ব্রিগেড ময়দানে
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ একমঞ্চে দাঁড়িয়েই লড়াইয়ের কথা বলতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে অথবা মার্চ মাসের শুরুতে ব্রিগেড সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। রাজ্যজুড়ে ধারাবাহিকভাবে দেশের সাধারণ ধর্মঘট সহ জনগণের স্বার্থবাহী বিষয়গুলি নিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের আন্দোলন চলছে, তা আরও সংহত ও জোরদার করতে ব্রিগেডে এই যৌথ সমাবেশ আয়োজনের ডাক দেওয়া হলো। তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনী জোটের চেহারা তুলে ধরতে নেতৃবৃন্দ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৭ জানুয়ারি চার বাম দল সিপিআই(এম), সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্ত এবং আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। বিমান বসু সহ সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য ও রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরি এবং অশোক ঘোষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আসন সমঝোতার আলোচনা করতে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে এআইসিসি। এদিন বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ব্রিগেডের যৌথ সমাবেশ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন। চার বামদল এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে বৈঠকের পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, আমরা যাঁরা একসঙ্গে নির্বাচনে লড়াই করব, তাঁরা একসঙ্গে একমঞ্চে দাঁড়িয়েই লড়াইয়ের কথাও বলব। ব্রিগেড সমাবেশের দিন স্থির করে পরে ঘোষণা করা হবে। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আমরাও কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দকে এই সমাবেশে থাকার জন্য অনুরোধ জানাবো।
বৈঠকের পরে বিমান বসু বলেন, বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা করা হবে, তবে তা নিয়ে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, যৌথ আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে। আমরা মানুষের কাছে যাব রাজ্যের মানুষের জীবন যন্ত্রণার বিষয়গুলি নিয়ে। মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ, পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। অন্যদিকে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যুবক-যুবতীরা নিযুক্ত হচ্ছেন না। মানুষের এই সব কষ্ট-যন্ত্রণা, সরকারের বেনিয়ম, অব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাব। বৈঠকে স্থির হয়েছে, আগামী ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিবসে আমরা যৌথ কর্মসূচি পালন করব। ২৬ জানুয়ারি দেশের সাধারণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও বলে আমরা একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করব। আর ৩০ জানুয়ারি গান্ধী হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে রাস্তায় নামব। তৃণমূল-বিজেপি’র রাজনৈতিক মেরুকরণকে ভেঙে দেওয়া হবে যৌথ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তবে যৌথ আন্দোলনের পাশাপাশি বামপন্থী দলগুলি ও বিভিন্ন বামপন্থী গণসংগঠনসমূহ এবং কংগ্রেস তাদের নিজস্ব কর্মসূচিও পালন করবে।