৫৮ বর্ষ ২২শ সংখ্যা / ১৫ জানুয়ারি ২০২১ / ১ মাঘ ১৪২৭
বিজেপি-কে হারাতে হলে তৃণমূলকেও হারাতে হবে
গৌতম রায়
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসছেই, এটা ধরে নিয়ে একাংশের মানুষ, যাঁরা নিজেদের দলহীন, ধর্মনিরপেক্ষ, বামপন্থী ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষিত করতে ভালোবাসেন, তাঁরা একটা তত্ত্ব হাজির করেছেন। তত্ত্বটা হলো এই যে, বাম- কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটে লড়লেও বিজেপি-কে ঠেকানো শক্ত। তাই এই স্বঘোষিত লিবারেলদের বক্তব্য হলো, আসন্ন বিধানসভার ভোটে প্রধান শত্রু বিজেপি-কে রুখতে এই মুহূর্তেই বামপন্থীদের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা প্রয়োজন।
এই তত্ত্বের সমর্থনে একাংশের সংকীর্ণতাবাদী ভাবধারার মানুষ, যাঁরা বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন এবং এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস দল ও তাদের সরকারের খুব কাছাকাছি আছেন, তেমন লোকেদের পাশে নিয়ে একধরনের সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি করতে শুরু করে দিয়েছেন। এই কাজে তারা বিভিন্ন মঞ্চ ব্যবহার করছেন। মমতার সঙ্গে বামেদের বোঝাপড়ার তত্ত্বকে ঘিরে বামফ্রন্টের ভিতরে যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বেশ আগে থেকেই একটা বিভ্রান্তির পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারা যায়, সেই লক্ষ্যেই কখনো প্রয়াত সিপিআই(এম) নেতা জ্যোতির্ময় বসুর জন্মদিন ঘিরে, কখনো জ্যোতি বসুর অবদান নিয়ে আলোচনাকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি ঘনিষ্ঠ কিছু প্রাক্তন সাংবাদিক, একদা বামফ্রন্টের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা লোকজন এই সামাজিক প্রযুক্তিটা বেশ জোরদারভাবে চালাতে শুরু করেছিলেন। এখন ভোট যখন দরজাতে কড়া নাড়ছে, তখন এই লিবারেলরা কোনোরকম রাখঢাক না রেখেই মূল শত্রু বিজেপি-কে রুখতে মমতার দলের সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়ার সওয়াল করছেন। তারা মনে করেন মমতার দুর্নীতি, মিথ্যাচার, স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপস এবং বোঝাপড়া ইত্যাদি কোনো বিষয়ই নয়, কোনো ইস্যু নয়।
যে মমতা সম্পর্কে জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক মূল্যায়ন ছিলঃ ওঁর সব থেকে বড়ো অপরাধ, উনি এই রাজ্যে বিজেপি-কে পা রাখার জায়গা করে দিয়েছেন, সেই মমতাই পারবেন বিজেপি-কে ঠেকাতে, এই তত্ত্বের অসাড়তার দিকটি আমাদের জোরদারভাবে নজর দেওয়া দরকার। কংগ্রেসের সাংসদ হিসেবেই রাজনীতির পরিমণ্ডলে মমতা প্রথম পরিচিতি পেয়েছিলেন। সেই কংগ্রেসে নিজের নেতৃত্ব প্রাদেশিকস্তরে কায়েম করতে না পারার হতাশা থেকেই মমতা নয়ের দশকের শেষের দিকে আলাদা দল করেন। এই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই বিজেপি’র সঙ্গে একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক মহলে এই প্রচারও আছে যে, নির্বাচন কমিশনে মমতার দলের নিবন্ধীকরণ, নির্বাচনী প্রতীক পাওয়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিজেপি’র একটা খুব বড়ো ভূমিকা রয়েছে।
মমতা দল তৈরির অল্প কিছুদিনের ভিতরেই লোকসভার ভোট হয়। সেই ভোটে মমতা বিজেপি’র সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাত করে লড়েন। প্রকাশ্যে তিনি তখন বলেছিলেন, বিজেপি-কে ফ্রন্টে এনে লড়ব। সেই ভোটে মমতার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দমদম লোকসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) প্রার্থী অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হেরে যান। জেতেন বিজেপি’র তপন শিকদার। উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি বিধানসভা উপনির্বাচনে জেতেন বিজেপি’র বাদল ভট্টাচার্য। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ নামক নীতিবিহীন, সুবিধাবাদী জোট। তপন শিকদার এবং মমতা উভয়েই মন্ত্রী হন। এনডিএ-র সাড়ে ছয় বছরের শাসনকালের প্রায় পুরো সময়টাই মমতা মন্ত্রী থাকেন। মমতা বলেছিলেন বিজেপি তাঁর স্বাভাবিক মিত্র, বিজেপি-ও তাঁকে মা দুর্গার আসনে বসিয়েছিল।
এই সময়কালেই গোটা দেশজুড়ে সংখ্যালঘু মুসলমান ও খ্রিস্টানদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ চালায় আরএসএস’র সহযোগী বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ইত্যাদিরা। ওডিশার কেওনঝড়ে জিপের ভিতর বদ্ধ অবস্থায় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয় দুই শিশু পুত্র সহ অস্ট্রেলিয় মিশনারি ফাদার গ্রাহাম স্টুয়ার্স স্টেইনসকে। এই হত্যা করে আরএসএস’র শাখা সংগঠন বজরং দল। এই বর্বরতার প্রতিবাদে মমতা কিন্তু সেদিন একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওডিশা, ঝাড়খণ্ডে সেই সময়ে কেবলমাত্র খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে সেখানকার আদিবাসীদের উপর ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালায় গোটা হিন্দুত্ববাদী শিবির। প্রতিবাদ জানিয়ে একটা বিবৃতিও সেদিন মমতা দেননি। সেই মমতাকে সঙ্গে নিয়ে হবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র মোকাবিলা? এই তত্ত্বের কি এতটুকু বাস্তবসম্মত বিশ্বাসযোগ্যতা আছে?
মমতা যখন বাজপেয়ী মন্ত্রীসভার মন্ত্রী তখনই ঘটেছিল গুজরাট গণহত্যা। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে কি মমতার মুখ থেকে একটাও প্রতিবাদ শোনা গিয়েছিল? আজকের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, গণহত্যার পর যখন পুনর্নির্বাচিত হন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে, তখন এই মমতাই মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে ফুল পাঠিয়েছিলেন। সেই মমতা আজ মোদীর বিজেপি-কে মোকাবিলা করবেন, এইকথা কি কোনো অবস্থাতেই বিশ্বাসযোগ্য?
বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা যখন ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন, তখন রাজনাথ সিং দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন মমতার পাশে। মমতার সেই কর্মকাণ্ডে তাঁর পাশে আরএসএস এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি’র প্রত্যক্ষ মদতের বিষয়টি এতো সহজে ভুলে যাওয়া সম্ভব? আন্দোলনের নামে অরাজকতার ভিতর দিয়ে এই রাজ্যে নতুন শিল্প সম্ভাবনার সমূলে বিনষ্ট করবার মমতার উদ্যোগের পিছনে গোটা হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তির যে ভূমিকা, তাকে কি অস্বীকার করা যায়? আরএসএস’র পশ্চিমবঙ্গে সেদিনের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনুযায়ী মমতার শিল্পতাড়ুয়া ভূমিকার পক্ষে গ্রামাঞ্চলে সঙ্ঘের যে সামাজিক প্রযুক্তি, যা বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী হতে অনেকখানি সাহায্য করেছিল, সেই মমতার দ্বারা এখন বিজেপি’র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?
পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ক্ষমতাচ্যুত করে মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে আরএসএস-বিজেপি সহ গোটা হিন্দুত্ববাদী শিবির মমতাকে যে অকৃত্রিম সাহায্য করেছে, তার প্রতিদান হিসেবে, মুখ্যমন্ত্রী হয়েই মমতা প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতাকে এমন একটা জায়গাতে নিয়ে গেলেন, যার জেরে বিজেপি’র মেরুকরণের রাজনীতি কেবল পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা পূর্বাঞ্চলেই ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি অনেক সহজ হলো। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে সংখ্যালঘু স্বার্থের কথা বলে দেশের সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মমতা কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফুরফুরাশরিফ পর্যন্ত রেল ইত্যাদির শিলান্যাস করেছিলেন। কেবলমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এই ধরনের কাজে অর্থ সংস্থানের কোনো বিধি বিধান ভারতের সংবিধানে নেই। নিজেকে মুসলমান সমাজের উন্নতির সমার্থক হিসেবে দেখিয়ে একটা বড়ো অংশের মুসলমান সমাজের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে মমতা তাঁদের ভোট নিজের ঝুলিতে সংহত করেছেন। অপরদিকে এই সংখ্যালঘু প্রীতির ভণ্ডামির স্বরূপ না দেখেই একটা বড়ো অংশের মানুষের কাছে মমতা পরিণত হচ্ছেন মমতাজবেগমে, এই ধরনের প্রচার চালিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘সাম্প্রদায়িকতা’র প্রচার, প্রসার ও প্রয়োগ ঘটানো আরএসএস, বিজেপি’র পক্ষে খুব সহজ হয়েছে। সেই মমতা প্রতিহত করবেন বিজেপি-কে? - এটা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
মমতা ক্ষমতায় এসেই তাঁর সংখ্যালঘুপ্রীতির বিষয়টিকে এমনভাবে পরিচালনা করেন যা আরএসএস, বিজেপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘সাম্প্রদায়িকতা’কে প্রসারিত করে, সামাজিক মেরুকরণের কাজটিকে একদম পাকাপোক্ত করে ফেলে। মমতা যে হাজিবিবি সেজে ফটোশ্যুট করে বিজ্ঞাপন দেন, তা কি বিজেপি-কে হিন্দু জনমানসের একটা বড়ো অংশকে সাম্প্রদায়িক করে তুলতে সাহায্য করেনি? ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, জ্যোতি বসুদের মুসলমান সমাজ আজও তাঁদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির অন্যতম সোপান বলে মনে করেন। এইসব মানুষদের কি ফেজ টুপি পড়ে, নূর দাড়ি রেখে, মোনাজাতের ভঙ্গিমাতে ছবি তুলিয়ে নিজেদের মুসলিমপ্রেমী হিসেবে বিজ্ঞাপিত করতে হয়েছিল? মমতার এই হাজিবিবি হিসেবে নিজেকে বিজ্ঞাপিত করবার ভিতর দিয়ে যে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতাকে ক্ষমতায় এসেই উসকে দিলেন, ইমাম, মোয়াজ্জিনদের ওয়াকফের টাকা থেকেই সামান্য কিছু ডোল দিয়ে, মুসলমান সমাজে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার থেকে ধর্মীয় আচার আচরণের চর্চাকেই বেশি উৎসাহ দিলেন, তা সবথেকে বেশি উপকৃত করলো বিজেপি-কে এই রাজ্যে নিজেদের মেলে ধরতে। এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিহত করবেন বিজেপি-কে? এটা কি আদৌ বাস্তবযোগ্য কোনো রাজনৈতিক চিন্তা?
মমতা তাঁর বিগত দশ বছরের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতাকে রোখার প্রশ্নে একটি পদক্ষেপও কি নিয়েছেন? আরএসএস-বিজেপি’র রামনবমী উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে সশস্ত্র মিছিলের অনুমতি দিতে মমতার প্রশাসনের এতটুকু অসুবিধা হয়নি। অথচ অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিকে ন্যায্য রাজনৈতিক দাবিদাওয়া ঘিরে মিছিলের, সভা-সমিতির অনুমতি দিতে মমতার পুলিশ, প্রশাসনের যতো আপত্তি।
আরএসএস-বিজেপি’র রামনবমী ঘিরে শিশুদের সামনে রেখে সশস্ত্র মিছিলের কোনো রাজনৈতিক মোকাবিলা কিন্তু মমতা বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস করেনি। হিন্দুত্ববাদীদের চরম প্ররোচনামূলক মিছিলের পাল্টা হিসেবে মমতা তাঁর দলের পক্ষ থেকে বের করেছিলেন হনুমান জয়ন্তীর মিছিল। যাঁরা বলছেন, ধর্মান্ধ বিজেপি-ই আমাদের প্রধান শত্রু, তাঁদের কাছে একদম বিজেপি’র আদলে হনুমান জয়ন্তীর মতো একটি ধর্মীয় অনুসঙ্গ ঘিরে বিজেপি’র সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতায় যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেস কি করে মিত্র হন? ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িকতা আর প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা, দু’টিই তো সমান অপরাধ। ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক বিজেপি-কে রুখবে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে যে তৃণমূল কংগ্রেস গত দশ বছরে বিজেপি-কে এই রাজ্যে একটা শক্ত রাজনৈতিক জমি করে দিয়েছে, তাঁরা? - এই যুক্তির কি এতটুকু বাস্তব রাজনৈতিক ভিত্তি আছে?
সমাজের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্যে দশ বছরে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন মমতা? বামফ্রন্ট সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাতে যে আধুনিকতা, বিজ্ঞানমনষ্কতার প্রচলন করেছিলেন ধারাবাহিকভাবে, তাকে ধ্বংস করেছেন গত দশ বছরে মমতা। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পর্যন্ত অমান্য করেছেন মমতা। মাদ্রাসার অনশনরত হবু শিক্ষকদের মসজিদের ভিতরে ঢুকে পিটিয়েছে মমতার পুলিশ।মমতার প্রশাসনের সীমাহীন দুর্নীতির জেরে আজ হাজার হাজার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন উত্তীর্ণ হবু শিক্ষক বেকার।
সেই মমতাই মুসলমানদেরই ওয়াকফের টাকা থেকে নিজের দলের সঙ্গে যেসব ইমাম, মোয়াজ্জিনদের ঘনিষ্ঠতা হয়েছে, তাঁদের সামান্য কিছু টাকা কার্যত ডোল হিসেবে ভাতা দিয়েছেন। এইসব ইমাম, মোয়াজ্জিনদের ছেলেমেয়ে, পরিবার পরিজনের শিক্ষার কি হবে, স্বাস্থ্যের কি হবে - সে সব ঘিরে একটি দিনের জন্যেও চিন্তা করেন নি মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, এই ভাতা দেওয়ার ভিতর দিয়ে আরএসএস-বিজেপি যে মমতাকে মুসলিম তোষণকারী হিসেবে প্রচার করে, একটা বড়ো অংশের মানুষদের ভিতরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢুকিয়ে নিজেদের নগ্ন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করেছে,সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। দুর্নীতি, প্রতারণা, গণতান্ত্রিক ও নাগরিক স্বাধীনতাকে দুরমুশ করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ও সরকারের মাথার মুকুট। রাজ্যের প্রতারিত, শোষিত মানুষ এই দুরমুশ থেকে মুক্তি চায়। এই জনবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই না করলে সুবিধা হবে কোন্ শক্তির তা বোঝা কি খুব শক্ত।