E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা / ১৫ জুলাই, ২০২২ / ৩০ আষাঢ়, ১৪২৯

সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে কমরেড জ্যোতি বসুর শিক্ষাই হলো আমাদের রাজনৈতিক পাথেয়

জন্মদিনে জ্যোতি বসু স্মারক বক্তৃতায় সীতারাম ইয়েচুরি


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কর্পোরেট-হিন্দুত্বের মোকাবিলায় এক‍‌দিকে পার্টির স্বাধীন শক্তিবৃদ্ধি এবং অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপকতম কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিরোধের রাজনীতির শিক্ষা এটাই। এই ঐতিহ্যই কমরেড জ্যোতি বসুর উত্তরাধিকার। ৮ জুলাই প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে আয়োজিত জ্যোতি বসুর ১০৯তম জন্মদিনে স্বাধীনতার ৭৫ বছর শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় একথা বলেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর সম্পর্কে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, জ্যোতি বসুর সঙ্গে তিন দশক কাজ করার মধ্য দিয়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি এবং অনুপ্রাণিত হয়েছি। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন তিনি স্থির করেছিলেন যে, দেশে ফেরার পর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হবেন। ১৯৪০ সালে বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পড়ে দেশে ফেরার পর ওকালতি পেশায় যুক্ত হবার বদলে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সময় স্বাধীন ভারতের চরিত্র কেমন হবে তা নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চা এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে পৌঁছেছিল। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে পৌঁছে আমাদের আরেকবার স্মরণ করতে হবে সেই বিষয়সমূহ।

তিনি বলেন, ১৯২১ সালে আহমেদাবাদে কংগ্রেসের অধিবেশনে দুজন ব্যক্তি একত্রে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলেছিলেন - একজন ছিলেন স্বামী কুমারানন্দ, আরেকজন মৌলানা হসরত মোহানি। এরা দুজনেই সেই অধিবেশনে কমিউনিস্টদের প্রতিনিধি ছিলেন, ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম দাবি কমিউনিস্টরাই তুলেছিল। তখন মহাত্মা গান্ধী সেই দাবি অগ্রাহ্য করেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরেই যে প্রশ্নে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে তার মূল কথা ছিল কোন পথে এগোবে আমাদের দেশ? ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে দেশের বৃহত্তম অংশের জনগণ নিজেদের নিয়োজিত করেছিলেন, একাধিক রাজনৈতিক পক্ষ নানাবিধ রাজনৈতিক লক্ষ্যের ঘোষণা করেছিল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ভারতের বৈচিত্র্যকে পূর্ণ মর্যাদা দিতে হবে এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারত নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবে। কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে এই ধারণাকে সমর্থন করা হলেও দাবি তোলা হয় দেশবাসীর রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্বাধীনতার প্রশ্নে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ধারণা টিকে থাকবে এবং ভারত ধীরে ধীরে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পথে এগিয়ে চলবে। এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধী মত হিসেবে তৃতীয় একটি দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে, যেখানে বলা হয় ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ব্যাখ্যা করতে হবে। এক পক্ষের বক্তব্য ছিল, ভারত যেহেতু মুসলিমদের একটি বড়োসড়ো জনসংখ্যা সম্পন্ন দেশ তাই একটি মুসলিম রাষ্ট্র দরকার। অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে বলা হয়, ভারত নিজেকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবে।

সেই সময় আসা সাভারকরের হিন্দুত্বের ধারণা উল্লেখ করে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, সাভারকর বলেছিলেন হিন্দুত্ববাদ হলো একটি রাজনৈতিক প্রকল্প। ভারত যাদের মাতৃভূমি পিতৃভূমি এবং পুণ্যভূমি তারাই একমাত্র এখানে থাকতে পারবে। বলা হয় মুসলমানদের পূণ্যভূমি মক্কা মদিনা এবং খ্রিস্টানদের পুণ্যভূমি জেরুজালেম। হিন্দু রাষ্ট্র এবং মুসলিম রাষ্ট্র এই দুই রাষ্ট্রের ধারণা নিয়ে মুসলিম লিগের সভাপতি মহম্মদ আলি জিন্নাও একই কথা বলেন। সে সময় সাভারকর বলেন যে, তার সঙ্গে জিন্নার কোনো মতবিরোধ নেই। এই দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতেই স্বাধীন ভারত দুই ভাগে ভাগ হয়।

তিনি বলেন, এই তিন মত ও পথের সংগ্রাম আজও ভারতে বিবদমান। তখনকার সেই সংগ্রাম স্বাধীন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং সাধারণতান্ত্রিক চরিত্র নির্ধারণ করেছিল। সাভারকর স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছিলেন ‘হিন্দুত্ব’ হলো জাতিবিদ্বেষ সংবলিত সংকীর্ণতা দীর্ণ ফ্যাসিবাদী প্রবণতায় দেশ গঠনের রাজনৈতিক লক্ষ্য, হিন্দুধর্মের সাথে এর কোনো সম্পর্কই নেই। আজ বিজেপি সেই কথাই বলছে, সেই কাজই করছে। আমরা, কমিউনিস্টরা সেদিনও এমন রাজনীতির বিরোধিতা করেছিলাম, মোকাবিলা করেছিলাম - আজও সেই সংগ্রাম জারি রয়েছে। ধর্মীয় সংকীর্ণতা কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে কমিউনিস্টদের সংগ্রাম সক্রিয় ছিল, আছে - থাকবে।

স্বাধীনতার সময়ে জাতীয় কংগ্রেসের সামন্ত-জমিদারদের সাথে বুর্জোয়াদের সমঝোতার আপসপন্থাকে মৌলবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, সেই আপস ছিল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ঐতিহাসিক। আমরা, কমিউনিস্টরা সঠিকভাবেই বলেছিলাম রাজনৈতিক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতেই হবে, জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে অবহেলা হলে অচিরেই দেশে নানবিধ সংকট উদ্ভুত হবে। আমাদের সেই আশংকার কথা আজকের ভারতে একশো শতাংশ সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। একদিকে জাতিভেদের মতো জঘন্য সামাজিক সমস্যাকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে, আরেকদিকে কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক শক্তির আঁতাতে সরকারি সিলমোহর জুটিয়ে নেওয়া লুঠেরা ব্যবস্থা জনজীবনকে অশেষ দুর্দশাগ্রস্ত করে তুলেছে। এই উদ্দেশ্যেই ভারতের প্রকৃত ইতিহাসকে পাল্টে দিয়ে পৌরাণিক কাহিনিকেই ইতিহাস বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা হচ্ছে, আমাদের দার্শনিক ঐতিহ্যকে হিন্দু ধর্মতত্ত্বে বদলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।

তিনি বলেন, এহেন পথে চলার ফলে দেশের পুঁজিবাদী বিকাশ আদৌ সম্পূর্ণ হলো না, বিপরীতে সমাজের ভিতর থেকে নতুন করে সাম্প্রদায়িকতার বিপদ মাথাচাড়া দিল। এমনটা হলো কারণ চলতি শাসনের ফলে জনজীবনের উপরে যেসকল উৎপীড়ন, নিপীড়ন, শোষণ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তার মীমাংসায় সমাজচেতনার এক বিরাট অংশই প্রগতির পথে না এগিয়ে অতীতদিনের পশ্চাদপদতা আঁকড়ে ধরেছে। এই হলো বুর্জোয়া-জমিদার সমঝোতার অভিশাপ। স্বাধীনতার আগে এবং পরে আমরা এই বিপদের কথাই উল্লেখ করেছিলাম। জনগণের অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে সমাজকে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়াই ফ্যাসিবাদী রাজনীতির প্রধান প্রবণতা। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমাদের উপলব্ধিতে এই অনুভব থাকতেই হবে, নাহলে উদ্ভুত বিপদের মোকাবিলা করা যাবে না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পৌঁছে আমরা এমন এক পরিস্থিতির সম্মুখীন যখন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকার ভারতের সংবিধানকে বদলাতে চাইছে। বিজেপি জানে, যে হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণের কথা তারা বলছে তা কোনোভাবে সম্ভব নয়। বর্তমান ভারতীয় সংবিধান থাকলে হিন্দু রাষ্ট্র করতে তাদের সংবিধান বদলাতে হবে। সংবিধানের চার ভিত্তি - আর্থিক সার্বভৌমত্ব, সামাজিক ন্যায় বিচার, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র - এই চার স্তম্ভই আক্রান্ত। তিস্তা শীতলবাদের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আজকের ভারতে গণতন্ত্রের হাল কেমন! সত্যি প্রকাশের জন্য সাংবাদিক জুবেইরকে গ্রেফতার হতে হয়েছে। ২০১৪ সালের পর একের পর এক নতুন আইন তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকার কেড়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার।

সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, প্রতি যুগেই এমন একটা সময় আসে যখন আমাদের শ্রেণিসংগ্রাম ও বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যেতে আশু লক্ষ্য চিহ্নিত করতে হয়। সেই মুহূর্তের পরিস্থিতির সাপেক্ষে আমাদের চিহ্নিত করতে হয় শত্রুকে। মূল বিষয় বা প্রশ্ন হচ্ছে নির্দিষ্ট সময় দাঁড়িয়ে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের কী প্রয়োজন সেই নিরিখেই আমাদের পথ তৈরি হবে। ১৯৭৭ সালে আমরা উপলব্ধি করেছিলাম আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করতে জরুরি অবস্থা এবং ইন্দিরা গান্ধীকে পরাস্ত করতে হবে তাই আমরা জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করতে প্রস্তুত সব শক্তির সঙ্গে একজোট হই, একইভাবে, আমাদের বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটাতে আমাদের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে। তাই বিজেপি-কে পরাস্ত করতে সক্ষম এবং ইচ্ছুক সমস্ত শক্তিকে একজোট করার দিকে আমরা এগোচ্ছি। খুব সম্ভবত আমাদের দেশে জোট রাজনীতির প্রথম স্থপতি ছিলেন জ্যোতি বসু। ১৯৬৭ সালে বাংলায় প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকার থেকে শুরু তারপর বাংলায় এবং দেশের যতগুলি যুক্তফ্রন্ট সরকার তৈরি হয়েছে তাতে তাঁর অবদান রয়েছে।। ২০০৪ সালে এনডিএ সরকারকে হারানোর জন্য বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক নেতৃত্বে ছিলেন কমরেড সুরজিৎ। সেই সময়ের মূল প্রশ্ন ছিল কিভাবে বিজেপি-কে পরাস্ত করতে পারার মতো সংখ্যা একত্রিত করা যায়। বিরোধীদের প্রতি তার পরামর্শ ছিল নিজের নিজের রাজ্যে যাও বিজেপি বিরোধী শক্তি বিরোধীকে যতটা সম্ভব একত্র করো যাতে প্রতিটি রাজ্য থেকে বেশি সংখ্যায় বিজেপি বিরোধী সাংসদ জিতে আসতে পারেন। বাস্তবে ঠিক এটাই হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের যুক্তফ্রন্ট কিন্তু নির্বাচনের পরে গঠিত হয়েছিল, একই কায়দায় ২০০৪ সালের প্রথম ইউপিএ সরকার নির্বাচনের পরে গঠিত হয়। এই অভিজ্ঞতাগুলি থেকেই স্পষ্ট ভারতের নির্বাচনের আগে দেশব্যাপী বিজেপি বিরোধী কোনো মোর্চা গঠন সম্ভব নয়। কিছু মানুষ এখন থেকেই মোদির এবং বিজেপি’র বিকল্প জোট ইত্যাদি গড়ার কথা বলেছেন কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা হলো এই ধরনের বিকল্প রাজ্য স্তরে গড়ে তুলতে হবে। যেমন তামিলনাড়ুতে হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমন একজন প্রার্থীকে খুঁজে বার করতে হবে যাকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি সমর্থন জানাতে প্রস্তুত হবে। এই প্রার্থীকে সামনে রেখে আমরা বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এবং আদর্শগত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারব। এটাই মূল ইস্যু। এ প্রসঙ্গে তিনি জ্যোতি বসুদের সমর্থনের উদাহরণ টেনে বলেন, জ্যোতিবাবু এবং সেই সময়ের নেতাদের, যাদের আমরা নবরত্ন বলি, তাঁদের থেকে শিখতে হবে কীভাবে আশু লক্ষ্য পূরণ করে আমাদের আদর্শ এবং রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।

তিনি বলেন, আমরা পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাম্প্রদায়িকাতাকে হারাতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির সর্বোচ্চ ঐক্য গঠন করতে হবে। আমাদের প্রাথমিক কাজ হল বিজেপিকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাকে দুর্বল করতে হবে এবং তাকে হারাতে হবে সেই কাজ করতে গেলে সবার আগে আমাদের পার্টির স্বাধীন শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে। আমাদের পার্টির সংগঠন এবং জন ভিত্তি মজবুত করতে হবে। এই জোট কেবলমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। সামাজিক ন্যায়ের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংস্থা এবং গণতান্ত্রিক শক্তিকে জোটে শামিল করতে হবে। আমরা বলছি হিন্দুত্বের মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপকতম এবং কার্যকরী ঐক্য। এটাই স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমাদের সামনে রাজনৈতিক কর্তব্য। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিরোধ রাজনীতির এই শিক্ষা, এই ঐতিহ্যই কমরেড জ্যোতি বসুর উত্তরাধিকার। আজকের পরিস্থিতিতে আমাদের সেই উত্তরাধিকার কার্যকর করতে সফল হতেই হবে। জ্যোতি বসুর ১০৯ তম জন্ম দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। তিনি বলেন নিউ টাউনে জ্যোতি বসু সেন্টার অফ সোশ্যাল স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ গড়ে তুলতে আমরা রাজ্যব্যাপী অর্থ সংগ্রহ করব। ইতিমধ্যে আমরা মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এদিন বলেন, জ্যোতি বসু নিজেকে মেহনতি মানুষের লড়াইয়ে উৎসর্গ করেছেন। বিলেট থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে দেশে ফিরে মেহনতি মানুষের মুক্তি সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আকাল মহামারী রক্ষার লড়াই থেকে দাঙ্গা প্রতিরোধে নীতিনিষ্ঠভাবে অবিচল ছিলেন জ্যোতি বসু। রেল শ্রমিক থেকে বন্দর শ্রমিক, জুট মিল সহ সমস্ত অংশের মেহনতি মানুষের লড়াইয়ে সক্রিয় অংশ নিয়েছেন এবং এই লড়াইয়ে বেশি বেশি মানুষকে জড়ো করেছেন। তিনি বলেন আজকে ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের শেষে জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ এর সম্পাদক রবীন দেব ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অনুষ্ঠানে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র ও রামচন্দ্র ডোমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেছেন কবীর চট্টোপাধ্যায়, কঙ্কন ভট্টাচার্য, রঞ্জিনী ভট্টাচার্য, বিমান গোস্বামী ও সপ্তক দাস।