E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬১ বর্ষ ৬ সংখ্যা / ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ২৮ ভাদ্র, ১৪৩০

সিপিআই(এম) কর্মীরা সারা রাজ্যে মানুষের কাছে যাবেন

৫ অক্টোবর হবে সিবিআই দপ্তর অভিযান

রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত জানালেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আগামী ৫ অক্টোবর সিবিআই দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযান করবে সিপিআই(এম)। সদ্য সমাপ্ত পার্টির রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর দু’দিন পার্টির রাজ্য কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন আমরা করছি, পূর্ব ঘোষণা মতো তার কর্মসূচি আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা আগেই বলেছিলাম, পুজোর আগে দুর্নীতির মাথাদের হেপাজতে নিয়ে তদন্ত সম্পন্ন করে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে সিবিআই-ইডি-কেও আমরা ছেড়ে কথা বলব না। কলকাতা হাইকোর্টের ইডি-সিবিআই-কে প্রশ্ন করছে চার্জশিট হচ্ছে না কেন? রাত বারোটায় কী ঘটাবেন বলে অনেক প্রচার হলো, তারপরে পর্বতের মুষিক প্রসবও হলো না! ইডি-সিবিআই ডাকছে, কিন্তু কিছুই করছে না! রাজ্যের মানুষ দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি চায়, এটা তাঁদের প্রতি অবমাননা।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য স্থির। দল, রঙ না দেখে আইনকে আইনের পথে চলতে দিতে হবে, দুর্নীতির মাথাদের গ্রেপ্তার করে আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের যোগসাজশেই অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তু‍‌লে মহম্মদ সেলিম বলেন, তৃণমূল এবং বিজেপি এমন প্রচার করে যেন তাদের মধ্যে মুখ দেখা‍‌দেখি বন্ধ। আর যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যের প্রকল্প রূপায়ণের জন্য দিল্লি যান না, পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকে যান না, কিন্তু তিনিই ডিনার খেতে দিল্লি চলে গেলেন। কেমন আশ্রয় ও প্রশ্রয় সেখান থেকে পেলেন যে নিশ্চিন্তে বিদেশ সফরে চলে গেলেন! আমরা জনতার আদালতে দুর্নীতিবাজদের শাস্তির দাবি করছি। কে কার সঙ্গে ডিনার খেলো, কোন দুর্নীতিগ্রস্ত দল বদলে পদ্মফুলে চলে গেল, এসব দেখে ইডি-সিবিআই তদন্তের লাইন ঠিক করলে চলবে না। আইনকে আইনের পথে চলতে দিতে হবে।

তিনি বলেন, ৫ অক্টোবরের কর্মসূচির আগে সিপিআই(এম) কর্মীরা সারা রাজ্যে মানুষের কাছে যাবেন। স্থানীয় দাবি, মানুষের জীবনযন্ত্রণা ও সমস্যার কথা জেনে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তা তুলে ধরা হবে। বামফ্রন্ট সরকার পরিকল্পনা করে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলেছিল। এখন আবার লোডশেডিং হচ্ছে। সেগুলিকে ‘লোকাল ফল্ট’ বলে ভুল বুঝিয়ে মানুষকে খেপিয়ে তোলা হচ্ছে বিদ্যুৎকর্মীদের বিরুদ্ধে। একইভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রের বারোটা বাজিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মানুষকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি, গণবণ্টন থেকে গণপরিবহণ সব ক্ষেত্রে সর্বনাশ ঘটানো হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গণসংগঠন আন্দোলন করছে। সিপিআই(এম) তাদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে এবং তাদের সবার দাবিগুলিকে একত্রিত করে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পার্টির রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, গত দেড় মাসের কাজের পর্যালোচনার পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর্যালোচনা চূড়ান্ত করা হয়েছে বৈঠকে। পার্টিতে যে ধারাবাহিক ত্রুটি সংশোধনের অভিযান চলছে তাতে বিভিন্ন কমিটিতে আত্মপর্যালোচনার মধ্য দিয়ে নিজেদের ভুলক্রুটি চিহ্নিত করে মতাদর্শগত ও রাজনৈতিকভাবে নিজেদের শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমাদের পার্টি শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের পার্টি, তাই ব্যক্তিজীবনও তাঁর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকছে কীনা স্বেচ্ছামূলকভাবে তার মূল্যায়ন করা হয়। রাজ্য কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর সঙ্গে পার্টিতে সহকর্মীরাও আচার ও জীবনযাপন সম্পর্কে মতামত দেবেন, নির্মোহ মতামত আমরা গ্রহণ করতে চাই।