৬১ বর্ষ ৬ সংখ্যা / ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ২৮ ভাদ্র, ১৪৩০
প্রতিরোধের সমাবেশ থেকে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তিকেই হটাতে লড়াইয়ের বার্তা মহিলাদের
রানি রাসমণি রোডে মহিলা সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বৃন্দা কারাত।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মহিলাদের অধিকার রক্ষা করতে হলে পরাস্ত করতে হবে তৃণমূল-বিজেপি দুই অন্ধকারের শক্তিকেই। আগামী ৫ অক্টোবর দিল্লির বুকে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মহিলা সমাবেশ হবে। যারা দেশ বিক্রি করছে, তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে, দেশ শুধু ওদের নয়, আমাদের সবার। সেই সমাবেশেও যোগ দিয়ে মোদি সরকারকে প্রত্যাখানের বার্তা দিতে হবে। কলকাতার রানি রাসমণি রোডের সুবিশাল সমাবেশ থেকে বিজেপি এবং তৃণমূল দু’য়ের বিরুদ্ধেই এই ভাষাতেই প্রতিরোধ সংগ্রাম তীব্র করার আহ্বান জানালেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রীবৃন্দ। ৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে মহিলাদের এই ‘প্রতিরোধের সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আক্রান্ত মহিলা প্রার্থীরা, শহিদদের পরিবারের মহিলারা। এই কর্মীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন বৃন্দা কারাত, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম ধাওয়ালে, সভাপতি পি কে শ্রীমতি, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ, রাজ্য সভাপতি জাহানারা খান, কার্যকরী সভাপতি দেবলীনা হেমব্রম, মহিলা আন্দোলনের নেত্রী রেখা গোস্বামী, মিনতি ঘোষ, অঞ্জু কর প্রমুখ।
সমাবেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বৃন্দা কারাত বলেন, মোদি দিল্লিতে বসে বুলডোজারের রাজনীতি করছে, আর পশ্চিমবঙ্গে সেই বুলডোজারের স্টিয়ারিং হাতে বসে আছে তৃণমূল। ওদের বিষাক্ত রাজনীতিতে মহিলারা প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন। মহিলাদের অধিকার রক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনের পথে এগোতে হলে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তিকেই হটাতে হবে।
সমাবেশে এসেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শহিদ রাজিবুল হক এবং মনসুর আলমের পরিবারের সদস্যরাও। তাঁদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে এদিনের বৃষ্টি ভেজা সমাবেশ। এছাড়াও এসেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আক্রান্ত এমন অনেক লড়াকু মহিলা সহ জয়ী হয়েছেন এমন অনেকেই। বারবনী, ভাঙর ২ নম্বর ব্লক, তারকেশ্বর ও উলুবেড়িয়ার মহিলা প্রার্থীরা এদিন মঞ্চে উঠে সমবেত মানুষকে শুনিয়েছেন কীভাবে মনোনয়ন জমার সময় থেকে গণনাকেন্দ্র পর্যন্ত তৃণমূল তাঁদের ওপরে হামলা চালিয়েছে। গোটা সমাবেশ তাঁদের লড়াইকে সেলাম জানিয়েছে।
বৃন্দা কারাত, মরিয়ম ধাওয়ালে এবং পি কে শ্রীমতি সমাবেশে বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের গুন্ডাদের আক্রমণ সন্ত্রাসের পরেও মহিলারা যেভাবে লড়াই করেছেন সেটাই প্রতিরোধের সংগ্রাম। ভোটে হারুন জিতুন যাই হোক, আপনারা সারা দেশের মানুষের কাছে জয়ী হয়েছেন।
সমাবেশকে অভিনন্দন জানিয়ে এছাড়াও ভাষণ দেন দেবলীনা হেমব্রম। সভানেত্রীর ভাষণে জাহানারা খান বলেছেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে প্রতিদিন নারী নির্যাতন ঘটছে, শাসকদল মদত দিচ্ছে দুষ্কৃতীদের। মিড ডে মিল, আশা কর্মীদের পারিশ্রমিক বাড়ছে না, মন্ত্রী-বিধায়কদের ভাতা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শুধু এরাজ্যেই মহিলারা ধর্ষিতা হচ্ছেন না, বিজেপি শাসিত রাজ্যে ধর্ষকদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে গলায় মালা পরিয়ে বরণ করা হচ্ছে। তাই বিজেপি এবং তৃণমূল দু’য়ের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ সংগ্রাম তীব্র করতে হবে।’’