৬১ বর্ষ ৬ সংখ্যা / ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ২৮ ভাদ্র, ১৪৩০
মানুষের দৃষ্টি ঘোরাবার চেষ্টা
সুপ্রতীপ রায়
মানুষের মূল সমস্যাগুলি থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়েই তৎপর। ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’, ‘রাজ্য সংগীত’ অথবা ‘ভারত’ ইত্যাদি নিয়ে যে ধরনের সক্রিয়তা দেখানো হচ্ছে, মানুষের রুটি রুজির সমস্যাগুলি নিয়ে সে ধরনের সক্রিয়তা নজরে আসছে না। ৭ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ১ বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। অতীতে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ বলে কোনো দিবস ছিল না। বিজেপি ২০ জুনকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বলা বাহুল্য, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত বিধানসভায় গৃহীত হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ১ বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের নামে আহূত সর্বদলীয় বৈঠকে বামফ্রন্ট যোগ দেয়নি। বামফ্রন্ট মনে করে, আরএসএস-র কর্মসূচি রূপায়ণ করছে তৃণমূল সরকার।
‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’-এর পর জাতীয় সংগীতের আদলে রাজ্যের নিজস্ব সংগীত তৈরি হবে বলে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় গত আগস্টের শেষে জানিয়েছিলেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ বলেছিলেন, “বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব সংগীত রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সংগীত নেই। একটা জাতীয় সংগীত গোটা দেশের জন্য প্রযোজ্য। তবে অন্য রাজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব সংগীত রয়েছে”। রাজ্য সংগীত নিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক করে সময় নষ্ট করা হয়েছে।
অন্যদিকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দিয়ে দেশের নাম শুধু ‘ভারত’ হতে চলেছে। জি-২০-র নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্রে রাষ্ট্রপতিকে বলা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’। ভারতীয় সংবিধান এবং এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতিকে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে আগামীদিনে দেশের নাম শুধুমাত্র ‘ভারত’ হবে। গত ১ সেপ্টেম্বর আরএসএস-র মোহন ভাগবত বলেছিলেন, আমাদের দেশের নাম ভারত। যদিও আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি সংক্রান্ত ৫২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, “দেয়ার শ্যাল বি এ প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া”। এই ধারাতে বাধ্যতামূলকভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে - ইংরেজিতে তৈরি সব নথিতে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। সংবিধানের ৬০ নম্বর ধারায় - ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আরএসএস-র অ্যাজেন্ডা অনুসারেই দেশের নাম পরিবর্তনের তৎপরতা।
দেশ ও রাজ্যের মূল সমস্যাগুলি থেকে জনগণের নজর ঘোরাতেই এসব করা হচ্ছে। আমাদের রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার খবর প্রতিদিন আসছে। রাজ্যের শাসকদল তোলাবাজি, দুর্নীতিতে যুক্ত। রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই। শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা দিশাহীন। পরিস্থিতি এমনই যে, এবছর বেশিরভাগ কলেজে স্নাতক স্তরের আসন ফাঁকা। কারণ যুবক-যুবতীরা ভাবছেন এই রাজ্যের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
আমাদের রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র জানিয়েছেন-জিডিপি’র পরিমাপ অনুযায়ী দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান পশ্চিমবঙ্গের। পশ্চিমবাংলায় শাসকদলের নেতারা লুটপাটের মাধ্যমে একটি সমান্তরাল অবৈধ অর্থনীতি গড়ে তুলেছেন। মেলা, খেলা, উৎসব আর অর্থহীন প্রকল্পগুলির মাধ্যমে রাজ্য কোষাগারকে শূন্য করা হচ্ছে। কর্মসংস্থানমুখী কোনো আর্থিক পরিকল্পনা বর্তমান রাজ্য সরকারের নেই। রাজ্য বিপুল পরিমাণ ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছে।
রাজ্য কোষাগারে টাকা আনতে হাট বাজারের জমিও বিক্রি করতে চাইছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে হাট-বাজারের জমিকে সরকারি খতিয়ানে তালিকাভুক্ত করার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি জমি রাজ্য সরকার দ্রুত নিলাম করবে। যদিও গত দশকে এক ছটাক খাস জমি কোনো ভূমিহীনকে দেওয়া হয়নি। যে জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিলি করে দেওয়া যেত, সেই সরকারি জমি যাচ্ছে ভূমি মাফিয়াদের হাতে।
পশ্চিমবাংলার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। রাজ্য সরকার বারংবার আর্থিক সংকটের কথা বলছে। যদিও মন্ত্রী আর বিধায়কদের ভাতা একলাফে বাড়িয়ে চারগুণ করা হয়েছে। মন্ত্রী, বিধায়কদের ৪০ হাজার টাকা ভাতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলী জমানায় চার দফায় মন্ত্রী ও বিধায়কদের ভাতা বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যের একজন পূর্ণমন্ত্রী বেতন ভাতা মিলিয়ে পাবেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বিধায়করা বেতন ভাতা সমেত পাবেন ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। রাজ্য নাকি ঋণগ্রস্ত।
দেশের ও রাজ্যের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। উভয় সরকারের খাদ্যনীতি করপোরেটমুখী, জনবিরোধী। ‘খাদ্যের অধিকার’, ‘খাদ্যের সুরক্ষা’ নেই। গণবণ্টন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। করপোরেট স্বার্থে সরকার গণবণ্টন ব্যবস্থাকে ধাপে ধাপে তুলে দিতে চাইছে। এফসিআই’র জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ছাঁটাই করা হয়েছে। আধার সংযোগের নামে বিপুল অংশের গরিব মানুষের নাম রেশন থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। দাবি উঠেছে – রেশন কার্ডে আধার সংযোগ চলবে না, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে আলু, পেঁয়াজ সহ সমস্ত ফসল সরকারকে কিনতে হবে, খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
গরিব মানুষের হাতে কাজ নেই। আবার প্রায় ১৯ মাস আমাদের রাজ্যে বন্ধ আছে ১০০ দিনের কাজ। এমনকী কাজ করেও ২,৬০০ কোটি টাকা বকেয়া মজুরি পড়ে আছে। বকেয়া মজুরি মেটাবার উদ্যোগ কোথায়? তৃণমূলী রাজত্বে পশ্চিমবাংলায় রেগার টাকা লুট হয়েছে। কিন্তু লুট যারা করল তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আইনে ব্যবস্থা কোথায়? কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে রেগা আইন মানা হচ্ছে না। আইনে বলা আছে - সপ্তাহ শেষে মজুরির টাকা জব কার্ড গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে মজুরির টাকা না দিতে পারলে ১৬ তম দিন মজুরি না পাওয়া পর্যন্ত ০.০৫ শতাংশ হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই নিশ্চুপ।
কেন্দ্রে মোদি সরকার আসার পর থেকে ‘রেগা’ প্রকল্পে ক্রমাগত বরাদ্দ ছাঁটাই করা হচ্ছে। জবকার্ড ছাঁটাই, কর্মদিবস সংকোচন, মজুরি বৃদ্ধি না করা – এসব এখন রীতিতে পরিণত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই খাতে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ ধার্য হয়েছে ৬০,০০০ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ সালের বরাদ্দের থেকে ১৮ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ আর্থিক বর্ষে সারা দেশে ৫ কোটির বেশি জবকার্ড ছাঁটাই করা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে ‘ভুয়ো’ কারণ দেখিয়ে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১,৫৭,৩০৯টি এবং ২০২২-২৩ সালে ৮৩,৩৬,১১৫টি জবকার্ড বাতিল করা হয়েছে। এখন বছরে ২০০ দিনের কাজ ও ৬০০ টাকা মজুরির দাবি উঠেছে।
আমাদের রাজ্যে পাট চাষিদের অবস্থা সঙ্গীন। কিন্তু পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়ানো হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পাটের যে সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করা হয় তা উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম। এবছরে পাটের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ৫,৭০০ টাকা। সারা ভারত কৃষক সভা সঠিকভাবেই দাবি করেছে পাটের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ৮,৫০০ টাকা করতে হবে। সারা রাজ্যে প্রায় ৪০ লক্ষ পাটচাষি আছেন। চটকলগুলিতে ২ লক্ষ ৫০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পাটচাষ ও পাট শিল্পের উপর বিপুল পরিমাণ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। ধান, আলুর দামও চাষি পাচ্ছেন না। জমি থেকে চাষি উৎখাত হচ্ছেন। বর্গাস্বত্বের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কৃষক আত্মহত্যা বাড়ছে।
কী হবে দুর্নীতি মামলাগুলির? আদালতে সিবিআই বলেছে - টেট দুর্নীতি আকাশ ছোঁয়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অনেকগুলি মামলা চলছে বিভিন্ন আদালতে। এখনও পর্যন্ত তিনজন তৃণমূল বিধায়ক সহ ২৫ জন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুধু শিক্ষক নিয়োগ নয় রাজ্যের ৬০টি পৌরসভায় টাকার বিনিময়ে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভায় নিয়োগ ও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির যোগ আছে। জানা যাচ্ছে, বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগে যে সংস্থা ওএমআর শিট তৈরি করেছিল সেই একই সংস্থা পৌরকর্মী নিয়োগের দায়িত্ব পেয়েছিল।
ফ্ল্যাট দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নুসরত জাহান। পৌরকর্মী নিয়োগ-কয়লা-বালি-গোরু পাচার-১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ-মিড ডে মিলের টাকা গায়েব - সব কিছুর সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল।
কী হবে অভিষেক ব্যানার্জির? খোদ মমতা ব্যানার্জি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে ভাইপো অভিষেক গ্রেপ্তার হবেন। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার দ্রুত উত্থান কোন পথে? লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও অভিষেক ব্যানার্জি। এই সংস্থাটি কোটি কোটি অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত।
কলকাতা করপোরেশনের বিরুদ্ধে বড়ো দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। শিশুদের জন্য বর্ষাতি এবং পোশাক কেনায় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল পরিচালিত করপোরেশন। বিনা টেন্ডারে বিপুল পরিমাণ মূল্যের বরাত দেওয়া হয়েছে।
আসলে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয় দলই পশ্চিমবাংলায় বোঝাপড়ার রাজনীতি করে চলেছে। এদের মূল লক্ষ্য কমিউনিস্টরা। যেমন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় মমতা এবং বিজেপি’র টার্গেট সিপিআই(এম)। তৃণমূল রাজ্যে বিজেপি-কে জমি পাইয়ে দিয়েছে। আরএসএস ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি যাদবপুরের উপাচার্য হলেও মমতা নিশ্চুপ। সম্প্রতি কলকাতায় ইমামদের একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন দাঙ্গার সঙ্গে বিজেপি এবং বামপন্থীদের একই লাইনে দাঁড় করিয়েছেন। এটি আসলে বিজেপি’কে আড়াল করার চেষ্টা। সম্প্রতি অনাস্থা বিতর্কে বিজেপি এমপি নিশিকান্ত দুবে বলেছেন - রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠনে বিজেপি কীভাবে সাহায্য করেছে। উপনির্বাচনে তৃণমূল ভোটদানে বিরত থেকে বিজেপি-কে সহায়তা করেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও তৃণমূলের ভূমিকা সবার জানা। আবার এরাজ্যে তৃণমূল পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি’র আন্দোলন কোথায়?
সর্বশেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমবাংলার গ্রামাঞ্চলের মানুষ তৃণমূল-বিজেপি’র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ২০১১-র নির্বাচনের পর মূলধারায় মিডিয়ার চর্চা ছিল – ভোটে ‘বামপন্থীদের রক্তক্ষরণ।’ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি’র ভোট কমলেও মিডিয়াতে চর্চা হয় না - ‘বিজেপি রক্তভরণ’। লুটের নির্বাচনে গ্রামপঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূল পেয়েছে ৫১ শতাংশ, বিজেপি পেয়েছে ২৩শতাংশ, বামপন্থী, কংগ্রেস এবং আইএসএফ মিলে ২৩ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছে। চিন্তিত বিজেপি আর তৃণমূল।
তাই ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে বিভাজনের রাজনীতিকে সামনে এনেছে বিজেপি এবং তৃণমূল। ভোটের স্বার্থে, ক্ষমতার লোভে তৃণমূল সমস্ত প্রতিক্রিয়াশীল হাতিয়ারগুলিকে ব্যবহার করে। দু'টি দলই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে নানা উপজাতি জনগোষ্ঠীর দ্বন্দ্বগুলিকে খুঁচিয়ে তোলে। তৃণমূল সরকারে আসার পর দার্জিলিং পার্বত্য পরিষদকে টুকরো করে ১৫টি বিভিন্ন পাহাড়ি গোষ্ঠীকে নিয়ে উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড় এবং ডুয়ার্সের অখণ্ড নেপালি জাতিগোষ্ঠীকে ভাগ করা হয়েছে। মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়কে ভোটের অঙ্কে বিচার করে বিজেপি এবং তৃণমূল। দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের উদ্দেশ্যে ‘পশ্চিমবঙ্গ বাউড়ি উন্নয়ন পর্ষদ’, ‘বাগদি উন্নয়ন পর্ষদ’, ‘হাড়ি উন্নয়ন পর্ষদ’ ইত্যাদি গঠন করা হয়েছে।
আসলে তৃণমূল সমস্ত দিক থেকে ব্যর্থ। দুর্নীতির পাঁক থেকে উঠে আসবার ক্ষমতা নেই তৃণমূলের। তৃণমূলকে বাঁচাবার চেষ্টা করেও বিজেপি’র লাভ হবে না। মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল এবং বিজেপি। বামপন্থীরাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবে।