E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা / ১৬ এপ্রিল, ২০২১ / ২ বৈশাখ, ১৪২৮

আরএসএস’র বিশ্বস্ত প্রতিনিধি মমতা

গৌতম রায়


গত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আরএসএস’র যে নিয়ন্ত্রণ তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি’র উপরে ছিল, আজ ২০২১ সালে এসে, সেই নিয়ন্ত্রণ কিছুটা আলগা হয়ে পড়েছে কি না, এটা এখন ভারতীয় রাজনীতির একটা বহুল চর্চিত বিষয়। অটলবিহারী বাজপেয়ী দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি নিজে এবং তাঁর দল বিজেপি তাদের মূল মস্তিষ্ক আরএসএস’র প্রতি যে প্রশ্নাতীত আনুগত্য নিয়ে চলতো, মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই দ্বিধাহীন আনুগত্যের ভরকেন্দ্র সঙ্ঘের থেকে সরে এসে অনেকটাই ব্যক্তি মোদী এবং বিশেষ অনুগত বিজেপি নেতাদের দিকে চলে এসেছে বলে আরএসএস’র একটা বড়ো অংশের ভিতরে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি দলটিকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাইয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব ব্যক্তি মোদী নিজের উপরেই আরোপ করছেন। আর সেই কৃতিত্বের ভাগ বাটোয়ারাপর্বে আরএসএস সমুচিত গুরুত্ব পাচ্ছে না - এটা একটা বড়ো অংশের সঙ্ঘ নেতাদের অভিমত। ফলে বাজপেয়ীর আমলের বিজেপি, অর্থাৎ, সঙ্ঘের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে তাদের সুনির্দিষ্ট কাঠামোর ভিতরে থাকা দল আর সঙ্ঘের কাঠামোকে প্রকাশ্যে অস্বীকার না করেও একটা ভিন্ন ধারাতে পরিচালিত করা দল - এই দুই পর্যায়টি ঘিরে সঙ্ঘের ভিতরে জোরদার অভ্যন্তরীণ বিতর্ক শুরু হয়েছে।

মোদী এবং তাঁর কাছের লোকেরা মনে করেন যে, ২০১৯ সালে বিজেপি’র একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার মূল কৃতিত্বটা এককভাবে মোদীর। তারা এই কৃতিত্বের ভাগ অমিত শা প্রমুখদের দিলেও আরএসএস’কে খুব একটা বেশি গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। আন্তর্জাতিকস্তরের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির শাসনক্ষমতায় থাকা রাজনীতি এবং অর্থনীতির দ্বারা পরিপুষ্ট বহুজাতিকগুলির সঙ্গে মোদীর যে সখ্য এবং মোদীর বদান্যতায় ভারতের নতুন পুঁজিপতি আদানি-আম্বানিদের যে সম্পর্ক কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে, তাতে মোদী পরিমণ্ডলের বিজেপি-আরএসএস’র ঘেরাটোপের কঠিন অনুশাসনের ভিতরে থাকতে খুব একটা আর রাজি নয়। শাসন ক্ষমতায় থাকার দৌলতে মোদীর বিজেপি নেতারা যে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদের মালিক হয়ে উঠছে, সেই অর্থসম্পদের অংশ আরএসএস’কে দেওয়া ঘিরেও একটা সঙ্কটের, দ্বন্দ্বের এবং সংঘর্ষের আবর্ত তৈরি হচ্ছে বলেও খবরে প্রকাশ। বাজপেয়ী জমানায় এই আর্থিক প্রসঙ্গটিতে সঙ্ঘকে বঞ্চিত করবার কোনো মানসিকতা সেই সময়ের শীর্ষ বিজেপি নেতাদের ছিল না। রাজনৈতিক এবং আর্থিক ক্ষেত্রে কোনো মানসিক এবং প্রয়োগ কৌশলজনিত সমস্যা না থাকার ফলে সেই সময়ে সঙ্ঘের সঙ্গে বিজেপি’র বড়ো কোনো সঙ্কট হয়নি। কিন্তু এই দু’টি বিষয়েই দ্বিতীয় দফায় মোদী ক্ষমতায় আসার পর সঙ্ঘ এবং মোদীর বিজেপি’র ভিতরে সংঘর্ষের আবহাওয়া ক্রমেই ঘোরালো হতে শুরু করেছে।

মোদী দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হয়েই আরএসএস ঘরানার যেসব মানুষ তখনো বিজেপি’র নানা শীর্ষপদে ছিলেন, সেইসব মানুষদের ভিন্ন ভিন্ন ঘেরাটোপে পুড়ে ফেলতে শুরু করেন। প্রথম দফা মোদী সরকারের সময়ে এল কে আডবানিকে যেভাবে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হয়েছিল, সেটা কোনো অবস্থাতেই আরএসএস’র কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। দ্বিতীয় দফার মন্ত্রীসভা গঠনের অল্প আগেই বুঝতে পারা যায় যে, আরএসএস’র ঘরের লোক তথা বাজপেয়ী জমানার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনাথ সিং-কে অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন করে দেওয়া হবে। সেই জায়গাতে অত্যন্ত বেশি গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রীসভাতে আনা হয় সদ্য প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ-কে। বস্তুত এই অমিত শাহ মোদীর প্রথম দফা শাসনকালে যখন বিজেপি সভাপতি ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর দল পরিচালনার রীতিকৌশল ঘিরে সঙ্ঘের ভিতরে যথেষ্ট বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সঙ্ঘের শীর্ষস্তরের বেশিরভাগ নেতার কাছেই অমিত শাহ’র দল পরিচালনার পদ্ধতি খুব একটা গ্রহণযোগ্য হয়নি। আসলে সেই সময় থেকেই মোদী-শাহ জুটি যেভাবে সঙ্ঘের প্রভাবের বাইরে বিজেপি’কে নিয়ে এসে একদম নিজেদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে পুড়ে ফেলতে চাইছিলেন, সেটা আরএসএস কোনো অবস্থাতেই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।

এই পর্বেই শিবসেনার বিদ্রোহ।এই পর্বেই বাজপেয়ী, যোশী, আডবানির নিয়ন্ত্রণাধীন বিজেপি’র সঙ্গে মোদীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিজেপি’র তুলনা টানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই তুলনার ভিতর দিয়ে বাজপেয়ীর আমলের বিজেপি’র প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ, আর মোদীর বিজেপি খারাপ-এই ধরনের প্রকাশ্য মন্তব্য মমতার। শিবসেনা থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই যে বাজপেয়ী জমানার বিজেপি’র সঙ্গে মোদীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিজেপি’র তুলনা এবং শেষ পর্যন্ত বাজপেয়ীর সময়ের বিজেপি’র প্রশংসা আর মোদীর আমলের বিজেপি’র নিন্দা - এইসব গভীর তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক অনুধ্যান মমতা থেকে উদ্ধব ঠাকরের - সেগুলি আরএসএস’র প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছাড়া হয়েছিল - এমনটা ভেবে নেওয়ার আদৌ কোনো কারণ নেই। মমতা অতীতে বাজপেয়ীর আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এল কে আডবানি সম্পর্কে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করতেন। সেই অভিযোগ জানানোর ভিতরেও আরএসএস’র ইন্ধন ছিল না - এমনটা ভাববার কোনো কারণ নেই। বাজপেয়ী সরকারের ভিতরে আরএসএস’র পূর্ণ কর্তৃত্বের ভারসাম্য রাখার খেলায় সঙ্ঘের বোড়ের চাল হিসেবে মমতা তাঁর সেই সময়ের প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতেন। আর এখনো আরএসএস মোদীর বাজপেয়ীর উপর নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যে তাদের এই ‘দেবী দুর্গা’ মমতার উপরেই সবথেকে বেশি নির্ভরশীল হয়েছে।

আরএসএস’র যে বিভাজনের রাজনীতি, যার জেরে গ্রামীণ ভারতে সঙ্ঘ বিজেপি ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দলকে কার্যত নির্বাচনী সংগ্রামের ময়দানে দাঁড়াতেই দেয় নি, পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা পূর্ব ভারতে সেই বিভাজনের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করবার ক্ষেত্রে মমতা সঙ্ঘের নিজস্ব শাখা সংগঠনগুলির থেকেও অনেক বেশি সক্রিয় ছিলেন। বামফ্রন্টের আমলে যে কোনো জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে মমতা আওয়াজ তুলতেন, বামফ্রন্ট সরকার বেছে বেছে মুসলমানদের জমি দখল করছে। বিশেষ করে এই অপপ্রচারের মাত্রাকে মমতা বল্গাহীন করেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দর থেকে প্রস্তাবিত রায়চক পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে। এই পর্বে মমতার যে অপপ্রচার, বামফ্রন্ট বেছে বেছে মুসলমানদের জমি নিয়ে নিচ্ছে - এই প্রচারের কৌশল তো নাগপুরের রেশমবাগে আরএসএস’র সদর দপ্তর ‘কেশব ভবন’ দ্বারা নির্ধারিত। মমতা মুসলমানপ্রেমী সেজে, বামফ্রন্ট সরকার কর্তৃক মুসলমানদের উপর আর্থ-সামাজিক বৈমাত্রেয় আচরণের যে মিথ্যে অভিযোগ করেছিলেন, তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মুসলমান সমাজের ভিতরে একটা আত্মবঞ্চনার মনস্তত্ত্ব তৈরি করা। সেই মনস্তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে একদিকে মুসলমানদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছেন মমতা, অপর দিকে সেই ২০০৭-০৮ সাল থেকেই নিজেকে মুসলমান দরদি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে একটা বড়ো অংশের হিন্দু সহনাগরিকদের ভিতরে মুসলমান বিদ্বেষকে মমতা ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত করতে শুরু করেছিলেন। এই অঙ্কুরোদ্গমের পুরো কৌশলটাই আরএসএস মমতার মাধ্যমে প্রয়োগ করেছিল। আরএসএস-মমতার এই যৌথ কৌশলের ফলেই যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন এই বাংলার দেশভাগের পরেও সেভাবে মাথা চাড়া দিতে পারেনি, সেই বিভাজনকে তীব্র করে বিজেপি’কে এবং অবশ্যই নানা বর্ণের সঙ্ঘের শাখা সংগঠনগুলিকে সামাজিক এবং রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করবার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

ডঃ মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন মমতা। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী থেকে যেভাবে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নার্সিং কলেজ ইত্যাদির ঘোষণা মমতা করেছিলেন, কিছু ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করেছিলেন, তা থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, অসত্য প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সংখ্যাগুরুর মনস্তত্ত্বকে মমতা আরএসএস-বিজেপি’র দিকে ঠেলে দিতেই এই কাজ করেন। আরএসএস’র যে বিভাজনের রাজনীতি, কেন্দ্রে মনমোহন সিং সরকারের মন্ত্রী হিসেবে সেই বিভাজনের রাজনীতি, যা ঘৃণার রাজনীতির উন্মেষে সব থেকে সহায়ক, সেই রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের বুকে মমতা করে গিয়েছেন আরএসএস’র নির্দেশ ব্যতিরেকে, আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তা কখনোই মনে হয় না। তারপরেও ক্ষমতায় এসে যেভাবে মুসলমান সমাজেরই টাকাতে ইমাম, মোয়াজ্জিন ভাতা, অন্যদিকে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে অকেজো করে রেখে হবু শিক্ষকদের চাকরি পাবার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া - এসবের পিছনে নাগপুরের কেশব ভবনের তৈরি করে দেওয়া ছক, যে ছকের মাধ্যমে মুসলিম বিদ্বেষ তীব্র হবে, আখেরে লাভ হবে বিজেপি’র - এটা আজ জলের মতো পরিষ্কার। তাই মমতা ক্ষমতায় এসে অননুমোদিত দশ হাজার মাদ্রাসার অনুমোদনের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংখ্যাগুরুর মনস্তত্ত্বে একটা বঞ্চনার মানসিকতা তৈরি করে বিজেপি’কে শক্তিশালী হতে সবরকমভাবে সাহায্য করেন।

মোদীর বিজেপি’র সঙ্গে আরএসএস নেতৃত্বের যে ঠান্ডা লড়াই চলছে, পশ্চিমবঙ্গের চলতি নির্বাচনী সংগ্রামেও তার আঁচ পড়েছে। বহু ক্ষেত্রেই মুকুল রায়-দের মতো তৃণমূল থেকে আসা বিজেপি নেতাদের সঙ্ঘের পুরনো নেতা, কর্মীরা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। আরএসএস’র ধারাবাহিকতার ভিতর থেকে উঠে এসে যিনি এখন তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি’তে এসেছেন, সেই সমস্ত মানুষদের বাদ দিয়ে সদ্য তৃণমূল ত্যাগীদের ভোটে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া, প্রার্থী করার বিষয়টি নাগপুর থেকে কলকাতার অভেদানন্দ সরণিতে আরএসএস’র দপ্তরগুলিতে যথেষ্ট অসন্তোষ এবং বিরক্তি সৃষ্টি করেছে। বহু কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থীদের পাশাপাশি সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলির লোকেরাও আলাদাভাবে ভোটে লড়ছে। টালিগঞ্জের মতো আসন, যেখানে মোদীর বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়-কে প্রার্থী করেছে, সেখানেও আরএসএস’র পরিমণ্ডল থেকে ভারতীয় জনসঙ্ঘের সুদীপ্ত সোমকে প্রার্থী করেছে।

মোদীর বিজেপি’কে বিশেষ কোনো বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কি আরএসএস এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করছে যাতে বিশেষ অসুবিধায় না পড়েন মমতা? শীতলকুচির মর্মান্তিক ঘটনার পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা আরএসএস’র একদম ঘরের লোক দিলীপ ঘোষ ভয়ঙ্কর উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেছেন। সায়ন্তন বসু, রাহুল সিন্‌হার মতো তীব্র আরএসএস ঘরানার বিজেপি নেতারাও ভয়ঙ্কর প্ররোচনামূলক কথা বলেছেন। আরএসএস-ব্যাকগ্রাউন্ডের এইসব নেতারা সঙ্ঘের নির্দেশ ছাড়া এইসব কথা বলেছেন, সেটা কখনো বিশ্বাসযোগ্য নয়। দিলীপ ঘোষদের এই ভয়ঙ্কর মেরুকরণের রাজনীতির ফয়দাতে মমতার প্রতি একটা সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি হতে পারে জেনেও সঙ্ঘ ঘরানার বিজেপি নেতাদের এই কথাগুলির রাজনৈতিক প্রেক্ষিত আমাদের বোঝা দরকার। ভুলে গেলে চলবে না, ২০১৬’র বিধানসভা ভোটে খড়্গপুর কেন্দ্রে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রয়াত জ্ঞান সিং সোহনপালকে হারিয়ে সেই সময়ে রাজনীতির অঙ্গনে প্রায় অপরিচিত বিজেপি’র দিলীপ ঘোষের জয়ী হওয়ার পিছনে মমতা এবং তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিয়ে চাপান উতোর। সেই ভোটের অল্পদিন পরেই সঙ্ঘের বিশেষ ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী, যিনি এখন এই মোদী জমানায় আডবানিদের মতোই হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিতে অনেকটাই কোণঠাসা, সেই উমা কলকাতায় এসে বলেছিলেন, একশোটা কেন্দ্রে আরএসএস প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেছে মমতাকে জিততে। মমতা কিন্তু উমার এই কথার আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ করেননি। উমার সেদিনের কথার পুনর্যোজনা এবারের বিধানসভা ভোটেও ঘটছে না তো?