E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ১৮ সংখ্যা / ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২ / ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪২৯

এসএফআই’র ১৭তম সর্বভারতীয় সম্মেলন শুরু হায়দরাবাদে

সৃজন ভট্টাচার্য


সম্মেলনের সূচনালগ্নে ছাত্রদের মিছিল।

শিক্ষা বাঁচানোর লড়াইয়ের রুট ম্যাপ তৈরি হচ্ছে লড়াইয়ের মাটি তেলেঙ্গানায়। এসএফআই’র ১৭তম সারা ভারত সম্মেলন শুরু হয়েছে গত ১৩ ডিসেম্বর তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ শহরে। এদিন সম্মেলন শুরুর আগে সুসজ্জিত মিছিল হায়দরাবাদ শহর পরিক্রমা করে, হুসেইন সাগরের কিনারে প্রকাশ্য সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণআন্দোলনের নেতা মানিক সরকার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, সভাপতি ভি পি শানু, দীপ্সিতা ধর, রাগারাজু, মূর্তিসহ এসএফআই নেতৃত্ব। এদিন সম্মেলন মঞ্চে মানিক সরকার সহ সকল নেতৃত্বের তরফ থেকে শিক্ষা বিক্রির ইশতেহার নয়া শিক্ষানীতি - এনইপি’র বিরোধিতা করা হয়। মানিক সরকার বলেন, এনইপি’র মাধ্যমে একদল নতুন এলিট শিক্ষার্থী তৈরি হবে, প্রান্তিক অংশের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা থেকে ছিটকে যাবে। চাকরির ক্ষেত্রগুলোকে দখল করবে এই এলিট শিক্ষার্থীরা, বেকারত্বের হাহাকারে প্রান্তিক অংশের ছাত্রছাত্রীরা আরও পিছিয়ে পড়বে রুজিরুটির দৌড়ে। গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে করপোরেটদের স্বার্থে পরিচালনা করা হচ্ছে, আর তার সাথে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বোনা হচ্ছে সমাজে। কমরেড মাল্লু স্বরাজ্যম নগর (হায়দরাবাদ), শহিদ কমরেড অভিমন্যু, ধীরাজ, আনিস খান মঞ্চকে (ওসমানিয়া ইউনিভার্সিটি টেগোর অডিটোরিয়াম) সংগঠনের পতাকা, বীর শহিদ, স্বাধীনতার লড়াইয়ের সেনানীর ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। ডিজিটাল ডিভাইডেশনের বিরোধিতার পাশাপাশি সম্মেলনের প্রতিনিধিদের পরিচিতিপত্রের ফর্ম ফিলাপ আধুনিক কিউআর কোডের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে সাথে নিয়ে সবাই যাতে আধুনিক বিজ্ঞান ব্যবহারের সুযোগ পায় তার বার্তা দেওয়া হয় সম্মেলন মঞ্চ থেকে। তবে এখানে উল্লেখ্য, যারা কিউআর কোডের ব্যবহার করতে পারবে না তাদের জন্য বিকল্প কাগজ কলমের সুবিধাও ছিল, এখানে কোনো ডিজিটাল ডিভাইডেশন হয়নি।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রাক্তন এসএফআই নেতা ও বিচারপতি কে চান্দ্রু। চান্দ্রু সম্মেলনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন এনইপি, করপোরেটদের স্বার্থে পরিচালিত শিক্ষাব্যবস্থা দুটো-তিনটে ভারত তৈরি করেছে যেখানে এক ভারতের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে, অন্য এক ভারতের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সবার আগে দরকার সারা ভারতের বঞ্চিত ছাত্রছাত্রীদের ঐক্যবদ্ধ করা, বিভাজনকে ভেঙে দিয়ে এনইপি’র বিরুদ্ধে, সিলেবাসের গেরুয়াকরণ, ক্যাম্পাস বিক্রির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

এদিন সম্মেলন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শহিদ কমরেড ধীরাজ রাজেন্দ্রনের বাবা। আগামীদিনে লড়াকু মেজাজে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন তিনি। ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় স্লোগান দিয়ে নতুন লড়াইয়ের শপথ নেন দেশের ভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রতিনিধিরা, ভাষায় ভিন্ন হলেও তাদের শপথ তাদের মেজাজ এক ছিল।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন, সিআইটিইউ, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, ডিওয়াইএফআই সহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে নেতৃত্বরা সম্মেলনের সফলতা কামনা করে বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ছাত্রনেতৃত্ব এম. এ. বেবি, নীলোৎপল বসু, বিক্রম সিং’রা। “এডুকেট অল, এমপ্লয় অল, ইউনাইটেড অল” - স্লোগানকে সত্যি করার লড়াইয়ের ব্লু প্রিন্ট তৈরি হবে আরও দুদিন ধরে। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর সম্মেলনের কাজ শেষ হবে।


(সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ‌আগামী সংখ্যায়)