E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা / ১৬ জুলাই, ২০২১ / ৩১ আষাঢ়, ১৪২৮

বামফ্রন্টের দাবি


পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার


উত্তর হাওড়ায় রাস্তায় উনুন জ্বালিয়ে রান্না করে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ মহিলা সমিতির কর্মীদের।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে এবং এর ফলে উদ্ভূত জনজীবনের যন্ত্রণা লাঘব করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ইতিবাচক হস্তক্ষেপ দাবি করেছে বামফ্রন্ট। ১৪ জুলাই রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়েছে।

এদিন বামফ্রন্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারপরে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, অতিমারী এবং অর্থনৈতিক মন্দায় জনজীবন যখন সামগ্রিকভাবে বিপর্যস্ত, তখন পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন তেল, রান্নার গ্যাসের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনের দুর্দশা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় প্রতিদিন দাম বাড়ানো হচ্ছে জ্বালানি তেলের, কলকাতা সহ দেশের সব বড়ো শহরে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি একশো টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধির সাফাই গেয়ে এই অপরাধকে আড়াল করা যাবে না। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময়ে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৮ ডলার, অথচ তখন কলকাতায় পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৭৯.৮৬ টাকা। এখন তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭৪.৫৩ ডলার। অথচ ডিজেল ও পেট্রোলের দাম একশো টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার জ্বালানি তেলের ওপরে কর বসিয়ে রাজস্ব আদায় করছে ব্যাপক হারে। সেই কারণে পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের চড়া মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। মোদী সরকার পেট্রোলের ওপরে উৎপাদন শুল্ক ২৫৮ শতাংশ এবং ডিজেলের ওপরে ৮২০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। এর প্রভাবে গণ পরিবহণের খরচ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দামও আকাশছোঁয়া হয়েছে। এরাজ্যের সরকারও এই মূল্যবৃদ্ধির দায় এড়াতে পারে না। তারাও পেট্রোপণ্যের থেকে চড়া রাজস্ব আদায় করে থাকে। অতীতে বামফ্রন্ট সরকার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে হস্তক্ষেপ করতে আদায়কৃত করের পরিমাণ উল্লেখজনকভাবে কমিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। বর্তমান তৃণমূল সরকার সেই লক্ষ্যে কোনো উদ্যোগ নিয়ে জনগণের সমস্যার সুরাহার চেষ্টা করছে না, বরং পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির সুযোগে রাজ্যের কোষাগার ভরানোর কাজ করছে এবং সরকারের ঢাক পেটানোর জন্য বিজ্ঞাপনের ব্যয় বিপুল হারে বাড়িয়ে চলেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পেট্রোপণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং তারফলে গণ পরিবহণের খরচ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিতে বামফ্রন্ট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং জনজীবনের যন্ত্রণা লাঘব করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ইতিবাচক হস্তক্ষেপ দাবি করছে। আমরা ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে রাজ্যের কোথাও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গেলেই পুলিশ প্রশাসন হিংস্রভাবে বাধা দিচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে। কলকাতায়ও বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করে লালবাজারে লকআপে পাঠিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। অথচ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস মাইক লাগিয়ে মঞ্চ বেঁধে জমায়েত করে এই ইস্যুতে কোভিড বিধি না মেনেই তাদের কর্মসূচি করে চলেছে, পুলিশ প্রশাসন তাদের ক্ষেত্রে সবরকমের সহযোগিতাই করছে। একই সময়ে, একই বিষয়ে, একই ধরনের কর্মসূচিতে বিরোধীদের প্রতি পুলিশ প্রশাসনের দমনমূলক আচরণ প্রশাসনের নির্লজ্জ দলীয় পক্ষপাতিত্বকে প্রকাশ করছে। আমরা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে তৃণমূল সরকারের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছি।