৬০ বর্ষ ২৭ সংখ্যা / ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ৪ ফাল্গুন, ১৪২৯
স্কুলে বাচ্চার নির্ঝঞ্ঝাট প্রবেশাধিকারটুকুও কি আদৌ সুনিশ্চিত পশ্চিমবঙ্গে!
উর্বা চৌধুরী
“এখনো ভরতি হইনি, হাই স্কুলে ভরতি হতে ১২০০ টাকা লাগবে, বাবা মা’র হাতে এখন এত টাকা নেই। তাই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। টাকা জমিয়ে তারপর, বা বড়দির সাথে কথা বলবে মা, যদি কিছুটা কমানো যায়।’’ ১১ বছরের এক মেয়ের কথা।
এ জাতীয় কথা শুনে প্রথমেই সেই চিরকালীন আক্ষেপ আরও একবার হতে পারে এই ভেবে যে, স্কুলশিক্ষাকে বাণিজ্যকারেরা এমন ব্যাবসা বানিয়ে ছাড়ল যে, “হাতে টাকা না থাকা” বাপ-মায়ের বাচ্চা স্কুলে ভরতিটুকুও হতে পারবে না! তারপর জানা যায় যে, কোনো বেসরকারি স্কুল নিয়ে আসলে কথা হচ্ছেই না। কথা হচ্ছে - কলকাতার একটি সরকার পোষিত হাই স্কুল নিয়ে, যেখানে ভরতি হতে লাগবে ১২০০ টাকা, যে টাকা জমা করতে পারলে ১১ বছরের খুদেটি স্কুলে ভরতে হতে পারবে, নতুবা পারবে না; অথবা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাকে, তার পরিবারকে - হাতে “যদি” টাকা আসে, বা “যদি”বড়দি কিছুটা কমান। ভরতি হতে পারবে না সেই বাচ্চা, যার বিনাব্যয়ে বিদ্যালয় শিক্ষা গ্রহণের অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে সরকারি, সরকার পোষিত স্কুল।
আজও চোখে পড়ছে বাচ্চাদের স্কুলে ভরতিতে বিলম্ব! অর্থের জন্য!
আলোচনার গভীরে পৌঁছানোর আগে উপরে লেখা ঘটনাটির আরও কয়েকটি দিকের উল্লেখ করতে পারলে প্রতিটি জরুরি উপাদানের দিকে নজর যেতে পারে, এবং বাস্তব পরিস্থিতিতে যে যে প্রতারণা, ও প্রবঞ্চনা চলতেই থাকে - সেগুলি সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে।
১২০০ টাকা হাতে না থাকার কারণে ভরতিতে বিলম্ব হওয়ার ঘটনাটি ছিল ডিসেম্বর ২০২১-এর। অতিমারীর আর্থ-সামাজিক পরিণতির ভয়াবহতা তখনো বহাল রয়েছে। যে পরিবারের মেয়ে ভরতি হতে পারছে না, সেই পরিবার কেবল সাধারণভাবে আর্থিক দিক দিয়েই বঞ্চিত, উৎপীড়িত, তেমনটা নয়, সে বাড়তি উৎপীড়নের শিকার হয়েছে অতিমারীতে। কারণ তার মা গৃহ সহায়িকা, বাবা পাড়ার ছোট্ট কারখানার শ্রমিক। অতিমারীতে পরিযায়ী শ্রমিকদের কীভাবে দুর্দশার মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল তা আমরা জানি, চালু উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হাজার হাজার পরিবারের। জানুয়ারি ২০২২-এ প্রকাশিত অক্সফ্যাম-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অতিমারীতেই ভারতে একদিকে ৮৪শতাংশ সাধারণ মানুষের পরিবারের উপার্জন কমেছিল, অন্যদিকে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ১০২ থেকে বেড়ে হয়েছিল ১৪২।
১২০০ টাকা হাতে না থাকার কারণে ভরতিতে বিলম্ব হওয়ার ঘটনাটি ছিল ডিসেম্বর ২০২১-এর। অতিমারীর কারণে তখনো পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি স্কুলও খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, শুধু তাই নয়, পাক্কা ২৩ মাস বন্ধ থাকা সরকারি, ও সরকার পোষিত স্কুলের বাচ্চাদের পড়াশুনা কীভাবে হবে, কী হবে বিকল্প বা জরুরিকালীন ব্যবস্থা তার কোনো কার্যকরী পরিকল্পনা বা ঘোষণা করেনি। অথচ সেই বন্ধ পড়ে থাকা স্কুলেই ভরতির টাকা জমা না করতে পারার দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে বাচ্চাদের। অদৃশ্য স্কুল, কিন্তু দৃশ্যমান ভরতির ফি।
এক বছর আগের ঘটনার প্রসঙ্গ তোলার কারণ, নীতিগত দিক দিয়ে দেউলিয়া সরকারের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করতে ঠিকই, তবে ঘটনা নিতান্তই এক বছর আগের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বছর বছর এই পরিস্থিতি নিয়ে লিখে যাওয়া চলে - কারণ এবছরও পরিস্থিতি একই আছে।
স্কুল শিক্ষা ঠিক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এ রাজ্যে - তা নিয়ে নানাবিধ ক্ষেত্রকে জড়িয়ে, নানা কোণ থেকে দেখে, নানা প্রসঙ্গ তুলে আলোচনা করা যায়; তবে বুনিয়াদি যে প্রসঙ্গ - তা হলো প্রবেশাধিকার - বাচ্চা কি বিনা বাধায় স্কুলে যেতে পারছে - তা নিয়ে আলোচনা শুরু করা সবচেয়ে বাস্তবসম্মত হবে বলে মনে হয় - কী কী বাস্তব পরিস্থিতি জড়িয়ে আছে স্কুলের গেটের ভিতরে বাচ্চার ঢুকতে পারার সঙ্গে? আর স্কুলের ভিতর পা রাখাকে ঘিরে বাচ্চার কী কী অধিকার রয়েছে? এই আলোচনা দিয়ে যদি শুরু না করা যায় তাহলে ভরতি, স্কুলছুট না হওয়া, উন্নত গুণমানের শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষকের চাকরি, পাঠক্রম, পাঠ্যসূচি - এর একটি নিয়েও আলোচনা শুরুই করা যাবে না।
স্কুলে বাচ্চার প্রবেশাধিকার মানে কী?
২০০৯ সালে ভারতে পাশ হয়েছে বিনাব্যয়ে বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন। এই আইনের ভিত্তি ছিল - ২০০১ সালে ভারতে শিক্ষাকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসাবে স্থান দেওয়া। এই আইনের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা কর্তব্যের মধ্যে চারটি অবশ্য কর্তব্যকে লক্ষ্যপূরণের উপায় হিসাবে উপলব্ধি করা হয়েছিল -
১) শিক্ষাক্ষেত্রকে সর্বজনীন করা (ইউনিভারসাল অ্যাকসেস) - দেশের প্রতিটি বাচ্চা যেন স্কুল অবধি বিনা বাধায় পৌঁছাতে পারে;
২) সর্বজনীন ভরতিকরণ (ইউনিভারসাল এনরোলমেন্ট) - দেশের প্রতিটি বাচ্চা যেন বিনাব্যয়ে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার শিকার না হয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে স্কুলে ভরতি হতে পারে;
৩) শিক্ষার আঙিনায় সর্বজনীন রক্ষাকরণ - অন্তত প্রারম্ভিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে অষ্টম শ্রেণি অবধি কোনো বাচ্চা যেন স্কুলছুট হয়ে না যায়;
৪) অন্তত প্রারম্ভিক শিক্ষা অবধি বাচ্চার জন্য উন্নত গুণমানের শিক্ষার সুনিশ্চিতকরণ।
অতএব বোঝাই যাচ্ছে - স্কুলে বাচ্চার প্রবেশাধিকার বলতে প্রথম দুটি বিষয়কে বোঝানো হয় - অর্থাৎ কি না - বাচ্চা যেন স্কুল অবধি বিনা বাধায় পৌঁছাতে পারে, এবং বিনাব্যয়ে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার শিকার না হয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে স্কুলে ভরতি হতে পারে।
যে ঘটনার উল্লেখ করে এই লেখার সূচনা, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এখনো, শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ পাশ হওয়ার ১৪ বছর পরও, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাচ্চার “বিনাব্যয়ে” স্কুলে ভরতি হওয়ার আইনি কর্তব্যটুকুও একশ ভাগ সুনিশ্চিত করতে পারেনি। লেখায় উল্লেখ করা একটি মাত্র ঘটনাই এই ব্যর্থতার প্রামাণ্য সূত্র নয় - বছরের পর বছর ধরে ভরতির জন্য সরকার পোষিত হাই স্কুলে বাচ্চার থেকে ফি নিয়ে চলা আসলে এমন একটি কীর্তি - যা স্পষ্টত দেশের আইন ভাঙার উদাহরণ, মায় এদেশের বাচ্চার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ। এই কলকাতা শহরের বুকে, অন্যান্য জেলার টাউনে, গ্রামেগঞ্জে, আরও এমন স্কুলের তালিকা প্রস্তুত করে ফেলা সম্ভব যেগুলিতে ভরতি হওয়ার সময়ে এমন পরিমাণ টাকা লাগছে - যার কারণে আর্থিকভাবে বঞ্চিত বাচ্চাদের পরিবারগুলি হয় সেখানে ভরতি হওয়ার কথা ভাবতে পারছে না, অথবা যেভাবে হোক টাকা জোগাড় করে ভরতি হচ্ছে। এমন ঘটনাও ঘটছে যেখানে কি না ভরতির টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অপেক্ষা করতে করতে অবশেষে যখন টাকা জোগাড় হলো, তখন শোনা গেল স্কুলে আর সিট নেই। কোনো স্কুল শোনা যায় কিছুটা টাকা কমায় - যদিও এর থেকে এমন ধারণা করার কোনো উপায় নেই যে, সব স্কুলই বাচ্চার দরকারে ভরতির টাকার পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে - কেউ কেউ আলোচনার মধ্যেই যায় না।
এই সমস্যার জন্য স্কুলকে কি সম্পূর্ণভাবে দায়ী করে দেওয়া চলে?
না - মূল দায় রাষ্ট্রের, সরকারের। কারণ এই টাকা নেওয়ার মূল কারণ হলো, সরকার পোষিত স্কুলগুলিকে সুষ্ঠুভাবে চালানোর মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সরকার মোটেই দিচ্ছে না - ফলে স্কুল বাধ্য হচ্ছে বাচ্চার পরিবারের উপর অর্থের বোঝা চাপাতে। যদিও এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে চাইব - ‘চাপ সৃষ্টি’-র প্রক্রিয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক সংগঠন, ছাত্র সংগঠনগুলির, এমনকী নানা সময়ে প্রতিবাদে লিপ্ত থাকা নাগরিক পরিসরেরও গুরুতর দৃষ্টিভঙ্গিগত ত্রুটি বা গাফিলতি রয়েছে - অন্যায্য কিছুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চাপ যদি সৃষ্টি করতেই হয়, তবে সেই চাপ যে রাষ্ট্র, বা সরকারের উপরই সৃষ্টি করা যুক্তিযুক্ত - উৎপীড়িত জনগণের (এক্ষেত্রে বাচ্চার পরিবার) উপর নয় - এ আর কে না জানে! ২০১০ সালের এপ্রিল মাস থেকে লাগু শিক্ষার অধিকার আইন পাশ হওয়ার পরও দিনের আলোয় সেই আইন ভাঙার যে পরম্পরা চলে আসছে - তার সিংহভাগ দায় সরকারের বটেই, তবে এরাজ্যের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারার দুর্বলতা, ও বোঝাপড়াকেও কিন্তু তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
বাচ্চার স্কুলে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে আরেকটি বঞ্চনার দিক উল্লেখ করা দরকার - ২০১৭-১৮ সালের এনএসএসও-র প্রতিবেদন বলছে রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলের ৯৩.২৭শতাংশ রয়েছে বাচ্চার বাসস্থানের ১ কিমি-র মধ্যে, ১ থেকে ২ কিমি-র মধ্যে রয়েছে ৫.৭৯শতাংশ স্কুল, এবং ২ থেকে ৫ কিমি-র মধ্যে বা বেশি দূরত্বে রয়েছে বাকি ০.৯৪শতাংশ; এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের ৬০.৯৩শতাংশ রয়েছে বাচ্চার বাসস্থানের ১ কিমি-র মধ্যে, ১ থেকে ২ কিমি-র মধ্যে রয়েছে ২৪.৫১শতাংশ স্কুল, এবং ২ থেকে ৫ কিমি-এর বেশি দূরত্বে মধ্যে রয়েছে বাকি ১৪.৫৬শতাংশ। আপাতভাবে এই তথ্য দেখলে মনে হবে বাচ্চার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্বের প্রশ্নে যে আইনানুগ নিয়ম তা মোটের উপর মেনে চলছে এ রাজ্য। কিন্তু পরিসংখ্যানের কাগজ থেকে চোখ সরিয়ে, মাঠে নামলে দেখা যায়, এই দূরত্ব আয়ত্তে আছে রাজ্যের সুগম এলাকায়। দুর্গম এলাকায় যেখানে দূরত্বের জন্য বাচ্চার পক্ষে স্কুলে শারীরিকভাবে পৌঁছানোটাই বড়ো চ্যালেঞ্জ - সেরকম জায়গায় হাই স্কুল হয়তো রয়েছে ৭ কিলোমিটার দূরে। আরো দুশ্চিন্তার কথা হলো, ২০২১ সালে এ রাজ্যে দুদফায় মোট ৮৯টি স্কুল বন্ধ হয়েছে, গত জুন ২০২২-এ বন্ধ হয়েছে ২৫টি স্কুল। বেশ কিছু স্কুলের ক্ষেত্রে মার্জ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে - যা কি না স্পষ্টত অনুসরণ ও সুনিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র স্কুল ক্লাস্টারের আইডিয়াকে, একইসঙ্গে উড়িয়ে দেয় দূরত্বের প্রশ্নে অ্যাকসেস-এর তাৎপর্যকেও - কারণ এই মার্জিং-এর ক্ষেত্রে দূরের স্কুলকে মার্জ করার নিদর্শনও থেকে যাচ্ছে।
মোটের উপর এ কথা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, শিক্ষাকে যেভাবে আমরা চিনতে শিখেছি, বা উপলব্ধি করতে শিখেছি তাতে করে শিক্ষা যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের রশানালিটি, স্বচ্ছ্ব দৃষ্টি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, বিশ্লেষণের ক্ষমতাকে বাড়াবে। রাষ্ট্র আমাদের সামনে ন্যায্য থাকতে পারল, না কি নয়, ক্ষমতা কাঠামোয় আমাদের চেয়ে উপরের দিকে থাকা শ্রেণি, বর্গ, লিঙ্গ, জাত, গোষ্ঠীর দ্বারা আমরা শোষিত হলাম, না কি নয়, হলে কেমন করে তা ঠেকাতে হবে; ক্ষমতা কাঠামোয় আমাদের সমানে সমানে থাকা মানুষের সঙ্গে আমরা জুড়ব কেমন করে, আমাদের শ্রেণি সংহতি আরও পোক্ত হবে কেমন করে, গণতন্ত্রে আমরা অধিকার চর্চা করব কেমন করে, অগণতন্ত্রে কালব্যয় না করে রুখে দাঁড়াব ঠিক কোন মুহূর্তে - এই বিচার-বিবেচনার বোধ তৈরি করে দেয় শিক্ষা; আর ঠিক এই বোধ তৈরির কাজেই বারবার আঘাত হানছে রাষ্ট্র, সরকার। মাজা ভেঙে দিতে চাইছে সেই শিক্ষাব্যবস্থার যা আমাদের কড়ি ফেলে কিনতে হয় না, হাত পেতে ভিক্ষা চাইতে হয় না, যা আমাদের মৌলিক অধিকার। এমতাবস্থায়, সত্ত্বর যদি না আমরা প্রতিটি খুঁটিনাটির দিকে নজর করে, বিশ্লেষণ করে লাগাতার প্রতিবাদ প্রতিরোধের পথ নিই, তাহলে ইতিহাসে আমাদের রাগ, ক্ষোভ, উৎকণ্ঠা - কোনো কিছুরই মূল্য থাকবে না। আমরা কেবলই শৌখিনের মতো বিস্মিত হতে থাকব, আর চটতে থাকব।