E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ২৭ সংখ্যা / ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ৪ ফাল্গুন, ১৪২৯

ত্রিপুরা

ষড়যন্ত্রের মাঝেও প্রতিরোধের ভোট

হারাধন দেবনাথ


কিছু স্থানে বিক্ষিপ্ত ঘটনা সহ ত্রিপুরায় ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোটদান পর্ব চলছে। ভোটারদের বাধাদানের সঙ্গে কোথাও কোথাও প্রতিরোধ করে ভোটদানের মেজাজও লক্ষ করা গেছে। অবাধ ভোটের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সর্বশক্তি প্রয়োগের দাবি জানিয়েছিল সিপিআই(এম)। পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার এবং রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী সাহসের সাথে ভোটদানের আহ্বান জানিয়েছিলেন ভোটারদের কাছে। নতুনদের জায়গা করে দিতে মানিক সরকার এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। সাব্রুমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী।

নির্বাচনকে বানচাল করে দিতে শাসক বিজেপি নির্বাচন ঘোষণার শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে। টাকার বিনিময়ে ওপিনিয়ন পোলের নামে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে শাসকদল। নির্বাচনের প্রাক্‌কালে পুলিশ ও নির্বাচনী কর্তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গভীর রাতে বৈঠক ঘিরে জনমানসে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিপিআই (এম)-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে বাইক বাহিনীর সদস্যকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী। বিজেপি’র হয়ে প্রচার করায় এক শিক্ষক ও ফিসারি অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিজেপি দুর্বৃত্তরা ‘ডেইলি দেশের কথা’র সাংবাদিক কৃষ্ণ পালের বাড়িতে ভোটের আগেরদিন বোমা হামলা করে। অন্য একটি ঘটনায় জনগণের চাপে পুলিশ বিজেপি’র এক কুখ্যাত সমাজদ্রোহীকে ভোটের আগের দিন গ্রেপ্তার করেছে।

১৬ ফেব্রুয়ারি দেখা যায় অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৪৪ নং বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে বিজেপি দুর্বৃত্তরা। শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথের বিধানসভা কেন্দ্র মোহনপুরে কয়েকটি বুথে বিরোধীদের কোনো এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি। ইভিএম বিকল থাকায় অনেক বুথ কেন্দ্রে ভোটারদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। ভোটদান পর্ব কোথাও কোথাও ধীর গতিতে হওয়ায় বিশেষ করে প্রবীণ ও শিশু কোলে নিয়ে আসা মায়েদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে অনেক কেন্দ্রে বাধা ডিঙিয়ে বামফ্রন্টের এজেন্টরা পোলিং বুথে গেছেন। হুমকি উপেক্ষা করে ভোটারদের দীর্ঘ সময় ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। উদয়পুরের কয়েকটি স্থানে মার খেয়েও মানুষ ভোট দিয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে শালগড়ায় বিজেপি-র গুন্ডা বাহিনীর আক্রমণে গুরুতর আহত সিপিআই(এম) কর্মী অমিক কুমার ভৌমিকের অবস্থা আশংকাজনক। রক্তক্ষরণ হওয়ায় আগরতলায় জিবি হাসপাতালে তার অপারেশন চলছে। ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্র ছাড়াও মজলিশপুর, সূর্যমণি নগর, রামনগর এবং ঋষ্যমুখ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পর পর আক্রমণের খবর আসছে। রাস্তা আবরোধ করে ধনপুরের ভবনীপুর সুকলের ভোটাররা ভোট দেওয়ার অধিকার আদায় করে নিয়েছেন। এই কেন্দ্রের প্রার্থী কেন্দ্রীয়মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক সরাসরি রিগিং-এ যুক্ত। টাকা দিতে গিয়ে প্রতিবাদী জনতার ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে কোনোরকমে রক্ষা পান। ধনপুর কেন্দ্রের ভবনীপুর, কালিকৃষ্ণনগর, নিদয়াসহ ১০টি বুথ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয় বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। এর ফলে দুপুর ১টা পর্যন্ত ওয়েব কাস্টিং বন্ধ থাকে। যদিও ওয়েব কাস্টিং ছাড়াই ভোটদান পর্ব চলছে। খবর লেখা পর্যন্ত ভোটদান চলছে এবং বিচ্ছিন্ন হামলা বাধাদানকে উপেক্ষা করেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন মানুষ।