৫৭ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ১৭ জুলাই ২০২০ / ১ শ্রাবণ ১৪২৭
পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসি’র নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয়ঃ পলিট ব্যুরো
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ইউজিসি’র পরীক্ষা নেবার একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। ৬ জুলাই এক সার্কুলারে ইউজিসি গোটা দেশে একই ধাঁচে অনলাইন/ ওপেন বুক পরীক্ষা নেবার কথা বলেছে।
একই সঙ্গে, সিবিএসই’র সিলেবাস থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিচ্ছেদ বাদ দেবার সিদ্ধান্তের কথা বলেছে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে পলিট ব্যুরো।
পলিট ব্যুরো বলেছে, এখনও দেশে ইন্টারনেট যোগাযোগ মাত্র ৩৬ শতাংশ। বিরাট অংশের ছাত্রের অনলাইন ক্লাস বা পরীক্ষার কোনও সুযোগই নেই। বিশেষ করে প্রান্তিক অংশের এবং দুর্গম, ডিজিটাল যোগাযোগ না-থাকা অঞ্চলে যারা বাস করে। ইউজিসি-র নির্দেশ বৈষম্যমূলক, গ্রহণযোগ্য নয়।
পলিট ব্যুরো বলেছে, সংবিধানে শিক্ষা যুগ্মতালিকায় রয়েছে। রাজ্য সরকার, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়া ইউজিসি এইরকম এক ফতোয়া দিতে পারে না। একেক জায়গায় একেক রকম ভাবে পড়ানো ও পরীক্ষা পদ্ধতি রয়েছে। শিক্ষকদের এবং বিশেষ করে ছাত্রদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর সংখ্যক অনুমোদিত কলেজ রয়েছে, তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সংক্রমণ বাড়ছে, লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর মধ্যে বহু ছাত্র ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগই পাবে না, অনলাইন পঠনপাঠন বা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
পলিট ব্যুরো বলেছে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ডিজিটাল বিভাজন মেনে নেওয়া যাবে না। চূড়ান্ত বর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ছাত্রদের পরীক্ষা নিয়ে ডিগ্রি দিতেও হবে যাতে তারা তাদের পরবর্তী ভবিষ্যতে পা রাখতে পারে। এই অবস্থায় পূর্বতন সেমেসটারগুলির ফল দেখে তাদের ডিগ্রি দেওয়া হোক।
পলিট ব্যুরো বলেছে, অনিশ্চয়তা ও কর্তৃপক্ষের সংবেদনহীনতার ফলে ছাত্ররা এখন তীব্র মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে। অনলাইন পরীক্ষার এই প্রস্তাব তাদের যন্ত্রণা আরও বাড়াবে। ইতিমধ্যেই এমনও ঘটনা ঘটেছে যে অনলাইন ক্লাস করতে পারেনি বলে ছাত্ররা আত্মঘাতী হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই পূর্ববর্তী সেমেস্টারের ফলাফলের ওপরে ডিগ্রি দেবার দাবি জানিয়েছে পলিট ব্যুরো।
সিবিএসই সিলেবাস থেকে নাগরিকতা, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মতো বিষয় বাদ দেবার বিরোধিতা করে পলিট ব্যুরো বলেছে, লকডাউনের অজুহাতে সিবিএসই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবিধানের মূল্যবোধকে খর্ব করবে এমন পদক্ষেপ। এইসব পরিচ্ছেদই বাদ গেল কেন, তার কোনও যুক্তিও দেখাতে পারেনি সিবিএসই। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি তুলেছে পলিট ব্যুরো।