E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৭ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ১৭ জুলাই ২০২০ / ১ শ্রাবণ ১৪২৭

কমরেড দেবী পাঠকের জীবনাবসান


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) হাওড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর প্রাক্তন সদস্য ও জেলার ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নেতা কমরেড দেবী পাঠকের জীবনাবসান হয়েছে। ১১ জুলাই রাত বারোটা দশ মিনিটে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। গত কয়েক দিন অসুস্থ থাকার পর এদিন তাঁর শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি ঘটে এবং তাঁর মৃত্যু হয়।

কমরেড দেবী পাঠকের আদি বাড়ি ছিল আমতার রসপুরে। অভাবের তাড়নায় স্কুল জীবনের সমাপ্তি ঘটিয়ে শ্রমিক হিসাবে ইলেকট্রিকের কাজ শুরু করেন। এই কাজ করতে করতেই গত শতাব্দীর ছয়ের দশকে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। কমরেড দেবী পাঠক ১৯৬৬-তে সিপিআই(এম)’র সদস্যপদ অর্জন করেন। পশ্চিম হাওড়া এলাকায় শ্রমিক সংগঠন ও বস্তিবাসীদের সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। ভারত জুট মিল, আরতি কটন মিল ও পশ্চিম হাওড়া অঞ্চলের ছোট ছোটো কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে ইউনিয়ন গড়ে তোলেন তিনি। পার্টির পূর্বতন পশ্চিম হাওড়া ও মধ্য হাওড়া লোকাল কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে পশ্চিম হাওড়া লোকাল কমিটি ও ১১ নম্বর জোনাল কমিটির সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ১৯৮৮-তে তিনি পার্টির জেলা কমিটির সদস্য ও ২০০১ সালে তিনি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। কমরেড দেবী পাঠক পাটির সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন। তিনি বালি জগাছা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিবাচিত হয়েছিলেন। পরবতীকালে তিনি হাওড়া পৌরসভার ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে তিন বার কাউন্সিলর নিবাচিত হন। বতর্মানে দেবী পাঠক সিআইটিইউ হাওড়া জেলার সভাপতি এবং সংগঠনের রাজ্যে কমিটির সদস্য ও সর্বভারতীয় কাউন্সিল সদস্য ছিলেন। এ ছাড়াও জেলা ও রাজ্যে বস্তিবাসীদের সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। তিনি দীর্ঘ দিন বস্তি সংগঠনের হাওড়া জেলার সভাপতি ছিলেন। অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত পার্টি ও শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণের কাজে ও বিভিন্ন আন্দোলনে কমরেড দেবী পাঠক নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পালন করেছেন। বিরোধীদের যে কোনো আক্রমণের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন তিনি। অকৃতদার কমরেড দেবী পাঠকের আচার-আচরণ, কথাবার্তা, ব্যবহার ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন সকলের কাছে শিক্ষণীয়।

কমরেড দেবী পাঠকের ভাই, ভ্রাতৃবধূ, ভাইপো, ভাইঝি বতর্মান। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পার্টির হাওড়া জেলার নেতৃবৃন্দ। ১২ জুলাই সকালে তাঁর মরদেহ পার্টির জেলা কমিটির দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে নিয়ে আসা হলে রক্ত পতাকা ও মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, জেলা কমিটির সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার, রাজ্য কমিটির সদস্য দীপক দাশগুপ্ত, দিলীপ ঘোষ, পরেশ পাল সহ পার্টির জেলা কমিটির সদস্যদবৃন্দ। বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষ থেকেও কমরেড দেবী পাঠকের মরদেহে মাল্যদান করা হয়। বাঁশতলা শ্মশানে এদিনই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।