E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৭ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ১৭ জুলাই ২০২০ / ১ শ্রাবণ ১৪২৭

কমরেড গুণধর সামন্ত প্রয়াত


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য কমরেড গুণধর সামন্ত প্রয়াত হয়েছেন। তিনি পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন। কমরেড সামন্ত ১১ জুলাই সকাল সাতটা নাগাদ তমলুক জেলা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৫৮। তাঁর আন্তরিক ব্যবহারের কারণে পার্টির কর্মী, সমর্থকদের কাছে খুবই আপন ছিলেন।

১৯৬২-তে পাঁশকুড়া ব্লকের মালিদা গ্রামে জন্ম কমরেড গুণধর সামন্তের। কেন্দুআড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরে খুকুড়দহ হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। পরে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে পড়ার সময়েই বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই গণ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৮২-তে তিনি সিপিআই(এম)-র সদস্যপদ অর্জন করেন। পার্টি কমসূচি, আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে শেষদিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। একসময় তিনি পার্টির মালিদা শাখার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৫-এ পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হন। তখন মেদিনীপুর অবিভক্ত জেলা। দীর্ঘদিন গণশক্তির জেলা সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মেদিনীপুর জেলা ভাগ হলে তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পার্টির কাজে যুক্ত হন। ২০১৫-তে জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পার্টির জেলা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তও ছিলেন।

মৃত্যুর দিন দশেক আগে জ্বর, শ্বাসকষ্টের জন্য তাঁকে তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। তাঁর প্যারা-টায়ফয়েড ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় উন্নতি হওয়ায় বাড়ি ফিরে আসেন। ১০ জুলাই আবার অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকাল সাতটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্য হয় বলে জানানো হয় হাসপাতাল সূত্রে। বাড়িতে স্ত্রী, এক ছেলে রয়েছেন।

কমরেড গুণধর সামন্তের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। শোক প্রকাশ করেছেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, মিনতি ঘোষ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, পার্টিনেতা হিমাংশু দাস, গণশক্তি পত্রিকার সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী, সহকারী সম্পাদক অতনু সাহা, নন্দন পত্রিকার সম্পাদক অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী। দেশহিতৈষী পত্রিকার সঙ্গেও কমরেড গুণধর সামন্ত-র দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। তাঁর জীবনাবসানে দেশহিতৈষী’র কমরেডরাও শোকাহত এবং ব্যথিত। নিরঞ্জন সিহি শোকবার্তায় বলেন, ‘অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র ছিলেন গুণধর সামন্ত। পার্টির প্রতি আনুগত্য, শ্রদ্ধা ছিল গভীর। তাঁর অকাল প্রয়াণে জেলা পার্টির বড়ো ক্ষতি হলো।’

এদিন কমরেড গুণধর সামন্তের মরদেহ পার্টির জেলা দপ্তরে আনা হয়। রক্তপতাকা দিয়ে মরদেহ ঢেকে দেন পার্টিনেতা হিমাংশু দাস, নির্মল জানা। শ্রদ্ধা জানান ভরত মাইতি, রীতা দত্ত, শ্যামল মাইতি, পরিতোষ পট্টনায়েক, ইব্রাহিম আলি, তাপসী মণ্ডল সহ জেলা কমিটির সদস্য এবং জেলা দপ্তরের কর্মীরা। শ্রদ্ধা জানান প্রবীণ কৃষক নেতা প্রশান্ত প্রধান। কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-যুবক-মহিলা আন্দোলনের নেতৃত্বও শ্রদ্ধা জানান। জেলা দপ্তর থেকে মরদেহবাহী শকট প্রয়াত কমরেডের বাসভবন পাঁশকুড়ার মালিদা গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। সেখানেই শেষকৃত্য হয়েছে এদিন। পার্টি নেতৃত্বও মরদেহবাহী শকটের সঙ্গেই গ্রামে যান। এদিন সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর আসতেই জেলা দপ্তর সহ পার্টির প্রতিটি কার্যালয়ে রক্তপতকা অর্ধনমিত রাখা হয়, এদিনের সমস্ত কর্মসূচিও স্থগিত রাখা হয়।