E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৭ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা / ১৭ জুলাই ২০২০ / ১ শ্রাবণ ১৪২৭

ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অক্ষঃ কমিউনিটি কিচেনের কথা

সৌম্যজিৎ রজক


রিক্সাচালক মুরারী সামন্ত নিজের সামান্য রোজগার থেকেই ৫০০ টাকা তুলে দিলেন বিমান বসুর হাতে। শ্রমজীবী ক্যান্টিন প‍‌রিচালনার জন্য।

।। এক ।।
মার্গারেট থ্যাচার বলেছিলেন, খোলা বাজারের অর্থনীতি নির্বিকল্প।

ঢালাও বেসরকারিকরণের কোনও বিকল্প নেই। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত অর্থনীতি বাতিল। সবকিছুকে ‘প্রাইভেট’ হতে হবে এবার থেকে। হতেই হবে।

নয়ের দশকের গোড়া। ভারত টপাটপ গিলতে শুরু করল নির্বিকল্প সেই দাওয়াই। সবকিছু ‘প্রাইভেট’ হতে শুরু করল আমাদেরও।

গল্পটা স্রেফ অর্থনীতির ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকল না। থাকার কথাও নয়।

সেই নয়ের দশকের গোড়া থেকেই আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক জীবনও কেমন যেন পাল্টে যেতে শুরু করেছে। শ্রমের বাজারের চেহারা তো পাল্টেছেই, অসংগঠিত ক্ষেত্রে ভিড় বেড়েছে শ্রমশক্তির। অবসরের, বিনোদনের পরিসরও বদলে যেতে থেকেছে চোখের সামনে। বদলে যেতে থেকেছে সামাজিক মূল্যবোধের ধরন ধারণও।

মফস্‌সল পাড়ার বটতলায় যে দাদু গল্প শোনাতেন প্রতি রোববার দুপুরে, তাঁর কাছে ভিড় করা কচিকাঁচাদের সংখ্যা কমেছে হপ্তায় হপ্তায়। ভিড় বাড়তে শুরু করেছে পাড়ার নির্দিষ্ট একটি দু’টি বাড়িতে। বি আর চোপরা প্রযোজিত ‘মহাভারত’ দেখার জন্য; অথবা ‘শক্তিমান’।

পরিবর্তনটা, এমনকি, বাড়ির ভেতরেও ঘটছিল। নয়ের দশকের শেষের দিকেই মধ্যবিত্ত পাড়ার প্রায় প্রতি বাড়িতেই চলে এসেছে টেলিভিশন সেট। কখন যেন নিম্নবিত্ত বাসার ছাদেও গজিয়ে উঠেছে অ্যান্টেনা। সেটা সরিয়ে এক সময় কেব্ল্ টিভি। বিনোদনের আরও নানা উপাদান।

তার আগে থেকেই ভাঙতে শুরু করেছিল পরিবারগুলো। হাঁড়ি আলাদা হয়ে যাচ্ছিল ঘরে ঘরে।

যৌথ এক জীবনবোধ থেকে আমরা সরে আসছিলাম এক ‘প্রাইভেট’ লাইফস্টাইলের দিকে।

নিও-লিবারাল যুগের এটাই দস্তুর। যার কোনও বিকল্প নেই। অন্তত ম্যাডাম থ্যাচার তেমনটাই বলেছিলেন।

এই যুগে যে প্রজন্মটা বড়ো হচ্ছিল, তাদের রীতিমতো তালিম দেওয়া হচ্ছিল ‘প্রাইভেট’ জীবনবোধের। ৯০ বা তার পরে যাদের জন্ম, শৈশব কৈশোরেই তাদের শেখানো হয়েছে একলা থাকার মন্ত্র। টুকরো হয়ে বেঁচে থাকার কৌশল। শেখানো হচ্ছিল নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিতে। বন্ধুর বা পাড়া-প্রতিবেশির কথা না ভেবে কেবলই নিজেরটা গুছিয়ে নিতে।

‘কমিউনিটি’ থেকে ‘প্রাইভেট’ এর দিকে এই যে গতি, এর কোনও বিকল্প নেই। শুধু ম্যাডাম থ্যাচার একথা বলেছিলেন তাই নয়, প্রায় সকলে এটাকে মেনেও নিয়েছিলেন। খেলাটা যে এভাবে ঘুরে যাবে, খুব একটা কেউ ভাবেননি বোধহয়।

আড়াই তিন দশক আগে আলাদা হয়ে যাওয়া হাঁড়িগুলো জোড়া লেগে গেল আচমকা। বাড়ির, পাশের বাড়ির, তার পাশের বাড়ির, পাশের ফুটপাথে থাকা সংসারের, সকলের।

‘কমিউনিটি কিচেন’ বা ‘যৌথ হেঁসেল’ আদতে নয়া-উদারনীতির যে অভিমুখ, ঠিক তার উল্টো অভিমুখে এক যাত্রা। স্রোতের বিপরীতে। ‘প্রাইভেট’ থেকে ‘কমিউনিটি’র দিকে।

।। দুই ।।
করোনার আগে স্প্যানিশ ফ্লু। দুনিয়াজোড়া মহামারী। আজ থেকে একশো বছর আগে।

এ দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের পথ চলাও শত বছরের।

এই একশো বছরে এরকম মহামারী না দেখলেও, এই সময়কালের মধ্যে অভিজ্ঞতা আছে একাধিক মন্বন্তরের। দুর্ভিক্ষের।

স্প্যানিশ ফ্লু-তে গোটা দেশে যত মানুষ মারা গেছেন, ’৪৩-’৪৪-এর আকালে শুধু বাংলাতেই তার থেকে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কলেরায়, ম্যালেরিয়ায়, ক্ষুধায় লেগেছে মড়ক।

অসহায় মানুষকে সহায় দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেছিল রাষ্ট্র? না, উল্টোটা করেছিল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসক, বাংলার মুসলিম লিগ সরকার, বিরোধীপক্ষের হিন্দু মহাসভা, জাতীয় কংগ্রেস - সব শেয়ালের এক রা। এক সুরে মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে শাসকশ্রেণির স্বার্থবাহী রাজনৈতিক শক্তিগুলো। মজুতদারদের কায়েমি স্বার্থ সুরক্ষিত করেছে। অসহায় মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করেছে আরও বেশি।

কমিউনিস্ট পার্টি কী করেছে? শাসকের নীতি অভিমুখের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম পরিচালনা করেছে। নিরন্ন মানুষের খাদ্যের জোগান দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছে। মজুতদারি, কালোবাজারির পক্ষে থাকা রাজনৈতিক শক্তিগুলোর বিরোধিতা করেছে। এটা একটা দিক। কিন্তু কেবল এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেনি নিজেকে। রাষ্ট্র যখন নিজের দায়িত্ব পালন করেনি তখন তার বিরোধিতা করার সাথে সাথে, ওই একইসময়ে, ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন কমিউনিস্ট কর্মীরা নিজেদের কাঁধে। ত্রাণকার্যে পালন করেছেন গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। গ্রাম-শহরে লঙ্গরখানা পরিচালনা করেছেন। অপরাপর দেশপ্রেমিক, মানবতাবাদী, প্রগতিশীল অংশের মানুষকে জুড়ে জুড়েই।

মোদ্দা কথাটা হলো, বিকল্পের দাবি উত্থাপন করার পাশাপাশি নিজের সীমিত সাধ্য নিয়ে সেই বিকল্পকে ইতিবাচকভাবে প্রতিষ্ঠা করার কাজ। নিষ্ঠার সাথে সে কাজ করেছেন কমিউনিস্টরা।

আজ ফের এক মারী থেকে আরেক মন্বন্তরের দিকে পরিস্থিতিকে ঠেলে দিচ্ছে শাসক। মানুষের নয়, মুনাফার কথা ভেবে সরকার গ্রহণ করছে একের পর এক পদক্ষেপ।

দরিদ্র-প্রান্তিক মানুষের জন্য যে কাজ করার কথা, সে দায়িত্ব পালন করেনি কেন্দ্র-রাজ্য সরকার। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন পার্টি ও গণসংগঠনের কর্মীরা। ত্রাণকার্য পরিচালনা করেছেন। জেলায় জেলায় গড়ে তুলেছেন, চালিয়েছেন কমিউনিটি কিচেন। যৌথ হেঁসেল।

কোথাও এলাকায় আঁটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের, কোথাও হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের, কোথাও এলাকার নিরন্ন মানুষকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করার এই উদ্যোগগুলি নজির গড়েছে শ্রেণি সংহতির। সীমিত সাধ্যের মধ্যেই কোথাও জাতীয় আয়োজন পরিচালিত হয়েছে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে, কোথাও মাসের পর মাস। শতাধিক দিন পেরিয়ে এখনও পরিচালিত হচ্ছে কোথাও কোথাও।

কমিউনিস্ট কর্মীদের সুমহান ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ভূমিকা পালনের মাধ্যমেই এবছর পালিত হচ্ছে কমিউনিস্ট আন্দোলনের শতবার্ষিকী। এ গর্ব আমাদের।

।। তিন ।।
সেদিনের ‘লঙ্গরখানা’র উত্তরাধিকার নিয়েই আজকের ‘কমিউনিটি কিচেন’। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় ভাষা। বিকশিত হয় বোধ। সমৃদ্ধ হয় চেতনাও।

যৌথ জীবনের সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে এনে পাশের মানুষের সাথে আত্মীয়তা গড়ে তুলতেও নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করছে কমিউনিটি কিচেনগুলো। এ নেহাতই পেটের জ্বালা নেভানোর পন্থা নয়, হতে পারে না। এ আসলে এক বিকল্প যাপনেরও খোঁজ। সাঁতলানো ডালের গন্ধে যে এতখানি আন্তরিকতা আছে কীভাবেই বা জানতে পারতাম আমরা? কমিউনিটি কিচেন-জাতীয় যাবতীয় আয়োজনের মূল নির্যাস হলো মানুষে মানুষে এক ধরনের পারস্পরিক মর্যাদাবোধের বিকাশ।

লকডাউনে নিজে কাজ হারানো তরুণ কমিউনিস্ট কর্মী যখন দিন রাত এক করে রান্নাঘরের খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনও মজুরের কাছে, তাঁদের মধ্যে মজবুত হচ্ছে সেতু। দৃঢ় হচ্ছে শ্রেণিসংহতি। দাতা-গ্রহীতার সম্পর্ক নয়, কমিউনিটি কিচেন সহনাগরিকের প্রতি মমত্বের বাঁধনে বাঁধছে মানুষকে।

মতাদর্শগত সংগ্রামের প্রশ্নেও এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যুক্ত করেছে এই উদ্যোগ। নিছক তত্ত্বে নয়, প্রয়োগে। অনুশীলনে।

।। চার ।।
বিপুল এই দেশে মাত্র ৪ ঘণ্টার নোটিশে আরোপ করা হয়েছিল অপরিকল্পিত লকডাউন। ‘দিন-আনি-দিন-খাই’ মানুষের বন্ধ হয়ে গেছিল ‘দিন-আনা’। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল ‘দিন-খাওয়া’ও।

জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ রোজগার হারিয়ে খাবার খুঁজছেন। ভাঁড়ার শূন্য। হাঁড়ি চড়ছে না উনুনে। স্বভাবতই দিশেহারা অবস্থা। দরিদ্রতম, প্রান্তিকতম মানুষের এই বিপন্নতায় ঠিক কোন্‌ পদ্ধতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব? এই পরিস্থিতি অভূতপূর্ব। মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা কারোরই নেই।

তথাপি কালক্ষেপ না করে অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথেই ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পার্টি ও গণসংগঠনের কর্মীরা। প্রাথমিকভাবে বিক্ষিপ্তভাবে, এখানে ওখানে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। অতি দ্রুত সর্বত্রই গৃহীত হয়েছে উদ্যোগ। প্রথম দিকে শুকনো খাবার, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি বিলি এবং ক্রমান্বয়ে জনতার রান্নাঘর বা কমিউনিটি কিচেন, বিনামূল্যে সবজিবাজার-জাতীয় উদ্যোগ গৃহীত হতে থাকে সাগর থেকে পাহাড় অবধি।

সাহস, দায়িত্ববোধ আর স্বপ্নে ভর দিয়ে সম্পুর্ণ অচেনা এক পথে সম্ভবপর হয়েছে এই কাজ। নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ইতিবাচক হস্তক্ষেপের কাজ।

এই পরিস্থিতি (অর্থাৎ লকডাউন) পেরিয়ে গেলেই কি খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নটি বাতিল হয়ে যাবে আদৌ? ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির বাজারে খাদ্যের সংস্থান কি সহজ হবে গরিব মানুষের পক্ষে? ইতিবাচক হস্তক্ষেপের তখন কি কোনও দায়িত্বই পালন করার থাকবে না? সেক্ষেত্রে যৌথ হেঁসেলকে কি কোনও স্থায়ী রূপ দেওয়া যেতে পারে? কমিউনিটি কিচেন চালাতে চালাতে এই সব প্রশ্নও সামনে এসেছে।

আপাত ত্রাণমূলক কার্যক্রম থেকে স্বনির্ভরতার দিকে এগোনোর পরিকল্পনাও কার্যত একটা বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই।

কলকাতার যাদবপুর অঞ্চলে পাশাপাশি দু’টো ওয়ার্ডে (৯৬ ও ৯৯) চলা দু’টো কমিউনিটি কিচেনকে সংযুক্ত করে উদ্বোধন করা হয় “জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিন”। উদ্বোধন করেন পার্টি রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

এবার থেকে কেবল নিঃস্ব, নিরন্ন মানুষের কাছেই নয়, কিচেন উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো সকলের জন্য। “৩৬৫ দিন শ্রমজীবী ক্যান্টিন”।

আনলক পর্যায়ে যে শ্রমজীবী মানুষ নিজেদের জীবিকায় ফিরে গেলেন অথবা যাদের সামর্থ্য আছে তাঁদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের বিনিময়ে খাবার জোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো। এলাকার যে মানুষ সম্পূর্ণ নিঃস্ব, নিঃসহায় অর্থাৎ যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের খাবার বিনামূল্যে দেওয়ার গ্যারান্টি থাকল।

দান-চ্যারিটি অথবা সাধারণ ভরতুকির ধারণার বাইরে বেরিয়ে এক স্থায়ী বিকল্প বন্দোবস্ত। একসাথে অনেক মানুষের রান্না হলে মাথাপিছু রান্নার খরচও কমতে থাকে। ফলে যত বেশি সংখ্যক মানুষকে এই উদ্যোগে শামিল করানো যায় তত বেশি নিরন্ন মানুষের খিদে মেটানো গ্যারান্টি করা সম্ভব। এই নিয়মেই পরিচালিত হতে চায় স্থায়ী ধরনের এক যৌথ হেঁসেলটি। স্বভাবতই কমিউনিটি কিচেনের যা মূল নির্যাস (অর্থাৎ পারস্পরিক মর্যাদাবোধ) তাকেও আরও পোক্ত করা সম্ভব এই কাঠামোতে।

‘প্রাইভেট’ থেকে ‘কমিউনিটি’র দিকে যে উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল, এখন তাকে ‘কমিউনিটি’ থেকে ‘কমিউন’-এর চেতনার দিকে অগ্রসর করার পালা।

।। পাঁচ ।।
এতদিন যারা টুকরো হয়ে বাঁচতে শেখাচ্ছিল মানুষকে, এবার তারা বলতে চেয়েছিল: ‘সামাজিক দূরত্ব’। ওরা ভেবেছিল, ওদের ভাষ্যের কোনও বিকল্প নেই।

জীবন সংগ্রামের ময়দানে নির্মিত হয়েছে বিকল্প সেই ভাষ্য। দূরত্বটুকু নিছকই শারীরিক, সামাজিক নয়।

সংকটকালে সামাজিক সংহতির পাঠ দিল কমিউনিটি কিচেন। শেখালো, কীভাবে ক্ষুধার্ত মানুষকে জুড়ে জুড়ে বানিয়ে নিতে হয় লড়াইয়ের অক্ষ। ক্ষুধার বিরুদ্ধে।