E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪৩ সংখ্যা / ১০ জুন, ২০২২ / ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯

১৭তম সারা ভারত জনবিজ্ঞান কংগ্রেস

জয়দেব চন্দ্র


ভোপালে সারা ভারত জনবিজ্ঞান কংগ্রেসে মূল মঞ্চে বিশিষ্টরা।

গত ৬ থেকে ৯ জুন, ডঃ অমিত সেনগুপ্ত নামাঙ্কিত পরিসরে (এক্সটোল কলেজ ক্যাম্পাস, রোহিতনগর) মধ্যপ্রদেশের ভোপালে অনুষ্ঠিত হলো ১৭তম সারা ভারত জনবিজ্ঞান কংগ্রেস। এই কংগ্রেসে এবারের থিম ছিলঃ ‘স্বাধীনতার ৭৫ বছর এবং ভারতবর্ষের ধারণা, বিজ্ঞান মনস্কতা, গণতন্ত্র, স্বনির্ভরতা, সমতা ও উন্নয়ন’। এই জনবিজ্ঞান কংগ্রেসের সংগঠক হলো সারা ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্ক। সারা ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্ক সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চল্লিশটিরও বেশি জনবিজ্ঞান সংগঠনের একটি নেটওয়ার্ক। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ এবং সমাজের সাথে বিজ্ঞানের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলির একটি নেটওয়ার্ক হিসাবে ১৯৮৭-এর কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই ভারত সরকারের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কমিউনিকেশন (এনসিএসটিসি)-এর সহযোগিতায় ভারত জনবিজ্ঞান জাঠার মতো এক দেশব্যাপী কর্মসূচি সংগঠিত করে। দেশে ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই এবং বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিগত প্রশ্নে আলোচনা এবং আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়।

১৭তম সারা ভারত জনবিজ্ঞান কংগ্রেসের সূচনা হয় ৬ জুন বিকেল ৪টায় দেশের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির অক্ষুণ্ণতাকে স্মরণ করে। নানা বর্ণের পতাকা উড়িয়ে সংগঠক, প্রতিনিধি এবং অতিথিরা সূচনা করেন এই কংগ্রেসের। মূল মঞ্চে ভোপালের কচিকাঁচাদের উদ্বোধনী সংগীতের পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সভাপতি জ্ঞানেন্দ্র সিং এবং অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি রামপ্রকাশ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট স্বনামধন্য সাংবাদিক ও বিশিষ্ট লেখক পি সাইনাথ, বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি কেরালা সরকারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা এবং বিশেষ অতিথি আইএমএসসি, চেন্নাইয়ের অধ্যাপক ইন্দুমতি এবং বিখ্যাত কবি ও লেখক রাজেশ যোশি। ৭ ও ৮ জুন, ৮টি বিষয়ে সাবপ্লেনারি ও কর্মশালা সংগঠিত হয়। বিষয় ছিলঃ শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, বিজ্ঞানমনস্কতা, স্বনির্ভরতা, সমতা, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও উন্নয়ন, পরিবেশ এবং কৃষি। ১০০ থেকে ২০০ জনকে নিয়ে দুটি করে বিষয় নিয়ে একটি করে সাব প্লেনারি সংগঠিত হয়। আবার ৫০ থেকে ১০০ জনকে নিয়ে ৫/৬টি কর্মশালা সমান্তরালভাবে সংগঠিত হয়। এইরকম মোট প্রায় ৩০টির মতো সংগঠিত কর্মশালার সবগুলিই ছিল প্রাণবন্ত। প্রতি কর্মশালায় সারাভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্কের সদস্য এবং অতিথি বিশেষজ্ঞরা ৩/৪টি বিষয় উপস্থাপন করেন। উপস্থাপনা ছিল তাত্ত্বিক সমস্যা, সমাধানের দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ।

এছাড়াও প্রর্দশনী, শেয়ার ইওর আইডিয়া, কোভিড অতিমারীর অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন প্রদেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কংগ্রেসে এক অনন্য মাত্রা যোগ করে। সারা দেশের ১৭টি রাজ্য থেকে ৩১টি সংগঠনের ৩৪৫ জন প্রতিনিধি এই কংগ্রেসে অংশ‌ নেন। সাব প্লেনারিতে বিশেষজ্ঞ বক্তাদের বক্তব্য প্রতিনিধিদের মননকে সমৃদ্ধ করে। কর্মশালায় প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ কংগ্রেসে আলোচিত বিষয়বস্তু সমূহকে আরও প্রাঞ্জল করে তোলে। ৯ জুন, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের একটি বিশেষ অধিবেশনের পর সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারা ভারত জনবিজ্ঞান কংগ্রেসের সমাপ্তি ঘটে। কংগ্রেসে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল সভায় প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যজিৎ রথকে সভাপতি এবং আশা মিশ্রকে সম্পাদক করে ৫৩ জনের নতুন কার্যকরী কমিটি তৈরি হয়।