E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৩১ সংখ্যা / ১৭ মার্চ, ২০২৩ / ২ চৈত্র, ১৪২৯

আলুচাষিদের প্রতি রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় আন্দোলনের উত্তাপ বাড়ছে


উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখরে আলুচাষিদের বিক্ষোভ।

সুপ্রতীপ রায়ের প্রতিবেদনঃ আলুচাষিদের সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে ১১ মার্চ রাজ্য সড়ক, জাতীয় সড়ক দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার ডাকে এদিন রাজ্যের আশিটি জায়গায় অবরোধ এবং আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রচুর সভা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষক সভা দাবি জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে কৃষকদের কাছ থেকে কমপক্ষে এক হাজার টাকা কুইন্টাল দরে আলু কিনতে হবে।

তৃণমূলের দলদাস পুলিশ আর পোষা গুন্ডাদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে যেভাবে হাজার হাজার কৃষক ১১ মার্চ রাস্তা অবরোধে শামিল হয়েছেন তাতে তৃণমূলের কপালে ভাঁজ পড়েছে। তৃণমূল প্রশাসন যে ভাষা বোঝেন সেই ভাষাতেই আন্দোলনকারীরা জবাব দিয়েছেন। আন্দোলনের চাপে বেশ কয়েক জায়গাতে প্রশাসন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন।

এদিন পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের কাছে প্যামড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড, ঘাটালে রাস্তায় আলু ঢেলে অবরোধ হয়। হুগলি জেলার ১৭টি ব্লকের ১৭টি স্থানে, আমতার শেহগোড়ী মোড়, মুর্শিদাবাদের বাহাদুরপুর, শক্তিপুর, নদীয়ার ধানতলা, চাকদহ চৌমাথা, কৃষ্ণনগরের বিষ্ণুপুর, বীরভূমের দুবরাজপুরের সাত কেন্দুরী মোড়, বোলপুরে কাশীপুর বাইপাস রোড, নলহাটির চামটি বাগান, সিউড়ির কড়িধ্যা, সাঁইথিয়া, আমোদপুর, নলহাটি প্রভৃতি স্থানে অবরোধ হয়। বাঁকুড়ার জয়পুর, কোতুলপুর, বেলিয়াতোড়, পিড়লগাড়ি মোড়, ইন্দপুরে অবরোধ হয়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতে অবরোধের ফলে জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। আলিপুরদুয়ারে চেকো মোড়, শালকুমার মোড়, ফালাকাটার জটেশ্বরের খাড়াকদম এবং মাদারিহাট-বীরপাড়া রোডে রাঙ্গালীবাজনায় পথ অবরোধ হয়। জলপাইগুড়ির চাউলহাটি হয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার রাস্তা, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, মালদহ জেলার হবিবপুরের কেন্দপুকুর, গাজোলের আলমপুর, রতুয়া ২নং ব্লকের শ্রীপুর, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুর, ইটাহার, রায়গঞ্জ-সহ বিভিন্ন জায়গাতে অবরোধ হয়।

১১ মার্চের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি বিপ্লব মজুমদার ও রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার বলেন - দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

কেন আলুচাষিরা এত ক্ষুব্ধ

আলুচাষিরা এত ক্ষুব্ধ যে, বাধ্য হয়েই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। আলুর দাম দ্রুত নামছে। রাজ্যের ১৫ লক্ষ আলু চাষি বিপদে। বস্তা পিছু ১৫০-২০০ টাকা লোকসানে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। এক বস্তা আলুর উৎপাদন ব্যয় কমপক্ষে ৪০০ টাকা। চাষিরা আশঙ্কা করছেন, এই দাম আরও নামবে। রাজ্য সরকার মনে করছে, এবছর রাজ্যে প্রায় ১২০ লক্ষ টন আলুর ফলন হবে। অতিরিক্ত ফলন হওয়ার জন্য দাম আরও নামবে। এবছর আলুর উৎপাদনের জন্য আদর্শ আবহাওয়া ছিল।

কিন্তু আলুচাষিদের অভাবী বিক্রির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য রাজ্য সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও ঘোষণা করেনি। এছাড়া আলুচাষিদের সংকটের জন্য আরও একটি কারণ আছে। গতবছর হিমঘরে রাখা আলু নতুন আলু ওঠার পড়েও রয়ে গেছে। জানুয়ারি মাসে গতবারের পুরনো আলুর প্রায় এক লক্ষ টনের কাছাকাছি রয়ে গেছে। পুরনো আলু থেকে যাওয়ার কারণে নতুন আলু বাজারে আসার পর দাম পাচ্ছে না। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আলু উঠতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, রাজ্যের হিমঘরগুলিতে আলু সংরক্ষণ করার ক্ষমতা ৬৪ লক্ষ টন। ফলন হবে ১২০ লক্ষ টন। তাহলে এই আলু থাকবে কোথায়? আলুচাষিদের অনুমান বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা লোকসান হবে।

তৃণমূল সরকারের নীতিতে বিপদে আলুচাষিরা

তৃণমূল দল রাজ্যে সরকারে আসার পর থেকেই বিভিন্ন ফসলের দামে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ওদের নীতি কৃষি বিরোধী, কৃষক বিরোধী। ২০১৮ সালে ওডিশাতে বন্যা হয়েছিল। সেই সময় আলুর চাহিদা বৃদ্ধি পেলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলু ভরতি ট্রাক পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় আটকে দিয়ে সেই আলু কম দামে বিক্রি করে দিয়েছিল তৃণমূলের দালালরা। এখন অন্য রাজ্যের আলু মজুত করে বাংলার আলুচাষিদের সর্বনাশ করে দিচ্ছে। খুবই বিপদের মধ্যে আছেন সেই আলুচাষিরা যারা চুক্তিতে জমি নিয়ে আলুচাষ করেছেন। এপ্রসঙ্গে যেটা উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো, গত বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্যের আলু উৎপাদক এলাকাগুলিতে আলুর উৎপাদন কমে যায়। তখন রাজ্য সরকার পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের বড়ো বড়ো ব্যবসায়ীদের থেকে কয়েক হাজার মেট্রিকটন আলু এরাজ্যের হিমঘরে মজুত করে। পরে এটা বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে অন্যরাজ্যের আলু প্রবেশ করার ফলে সেই বছর রাজ্যে উৎপাদিত আলুর অনেকটাই অবিক্রিত রয়ে গেছে। আমাদের রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদিত আলু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর হিমঘর মালিকরা বের করে দিয়েছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে সেই আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা বস্তা দামে। গতবছরের মজুত করা পুরনো আলু দাম কমিয়ে দিচ্ছে এবছরের নতুন আলুর।

বামফ্রন্ট সরকারের পদক্ষেপ ছিল আলুচাষিদের পক্ষে

বামফ্রন্ট সরকারের সময় দুবার আলুর ফলন অতিরিক্ত হওয়ার ফলে কৃষকদের কাছ থেকে একবার ৪০০ কোটি ও অন্যবার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করে আলু কেনে সরকার। ফলে অভাবী বিক্রি থেকে রক্ষা পেয়েছিল কৃষকরা।

আলুচাষিদের সংকট প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার বক্তব্য

আলুচাষিরা যে সংকটের মধ্যে পড়বেন সে বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা সঠিক অনুমান করেছিল। এপ্রসঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার সভাপতি বিপ্লব মজুমদার ও সম্পাদক অমল হালদার বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার আলুচাষিদের সর্বনাশ করে দিয়েছে। ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দামে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি মাঠের সব আলু উঠে গেলে আলুচাষিদের দুর্দশার কথা ভেবে শিউড়ে উঠতে হচ্ছে...’’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, ‘‘...সারের চড়া দাম ও কালোবাজারির কারণে উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে রাজ্যের কৃষকদের। বর্তমানে সব ধরনের আলু চাষের গড় উৎপাদন খরচ একর পিছু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। অনুমান করা হচ্ছে এবছর একর প্রতি আলুর উৎপাদন দাঁড়াবে কমবেশি ১২০ কুইন্টাল। কিন্তু নতুন আলু বাজারে এসে যাওয়ায় জমিতে আলুর বিক্রয়মূল্য এখন কুইন্টাল প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি একরে ১২০ কুইন্টাল আলু উৎপাদন হলে চাষি হাতে পাবেন ৩৬ থেকে ৪৮ হাজার টাকা। এর ফলে প্রতি একরে কৃষকদের লোকসান দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।...’’।

আলুচাষিদের রক্ষা করতে রাজ্য সরকারের কাছে কী প্রস্তাব ছিল?

পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা আলুচাষিদের বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসেই রাজ্য সরকারের কাছে দাবি করেছিলঃ
(১) অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
(২) আলুর অভাবী বিক্রি বন্ধ করতে অন্তত ১ হাজার টাকা সহায়ক মূল্য দিয়ে সংগ্রহ করতে হবে সরকারকে।
(৩) প্রয়োজনের অতিরিক্ত আলু ভিনরাজ্যে ও বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করতে হবে।
(৪) আলু নির্ভর শিল্প গড়ে তুলতে হবে।
(৫) হিমঘরে আলু সংরক্ষণে আলুচাষিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
(৬) চুক্তিচাষিদের বিষয়টিকেও যুক্ত করতে হবে।

আন্দোলনের প্রস্তুতিতে কৃষকসভা

কিন্তু রাজ্য সরকার আলুচাষিদের সংকট নিয়ে নির্বিকার থাকল। অতএব আন্দোলনের আহ্বান জানাল পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা। ১৯ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার রাজ্য কাউন্সিল অধিবেশনে পরিস্থিতি পর্যলোচনা করে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলো। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে সরকারের পক্ষ থেকে আলু কেনার দাবিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণবঙ্গের আলুচাষিদের কনভেনশন এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গে আলুচাষিদের কনভেনশন এবং ১১ মার্চ সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হলো। কাউন্সিল অধিবেশনে আলু উৎপাদক জেলাগুলির প্রতিনিধিরা বলেন, লাভজনক দরের সুযোগ ক্রমশ কমছে। যে হারে দাম কমছে, চাষের খরচ ওঠার সম্ভাবনাও থাকছে না। কোচবিহার জেলার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ওই জেলায় আলুর দাম নেমে গেছে। আলুর দাম নেই। শুধু আলু চাষ নয়, তামাক চাষেও ওই জেলায় লোকসান নেমে এসেছে। গত বছর যে তামাক পাতা ৪ হাজার টাকা মন বিক্রি হয়েছে, এবার সেই দাম ঠেকেছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। রাজ্য ও জাতীয় সড়ক অবরোধের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল সভা শেষে অমল হালদার বলেন, ‘‘আলুচাষিরা বিপদে। সরকারের হেলদোল নেই। আলুচাষিদের স্বার্থে তাই ১১ মার্চ রাজ্যজুড়ে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ করে সরকারকে আলুর ন্যূনতম দাম ঘোষণা করে আলু কিনতে বাধ্য করা হবে।”

২৩ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দুটি কনভেনশনের আহ্বান

২৩ ফেব্রুয়ারি হুগলির পুরশুড়ার দেবেন্দ্র হিমঘরে ও ২৬ ফেব্রুয়ারি আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা কমিউনিটি হলে আলুচাষ ও আলুচাষিদের বাঁচানোর দাবিতে আহূত দুটি কনভেনশনে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয় - রাজ্য সরকারকে কমপক্ষে কুইন্টাল প্রতি এক হাজার টাকা দামে আলু কিনতে হবে, হিমঘরে আলু সংরক্ষণে কৃষকদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, সরকারকে কৃষকের কাছ থেকে লাভজনক দামে আলু কিনতে হবে।

ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস জুড়ে জেলায় জেলায় কৃষকসভার নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়েছে

১১ মার্চের আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের মাঝামাঝি জেলায় জেলায় সারা ভারত কৃষকসভার নেতৃত্বে আলুচাষিরা আন্দোলন করেছেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রকোনার গাছশীতলা চৌরাস্তাতে আলু ফেলে বিক্ষোভ দেখান আলুচাষিরা, ২২ ফেব্রুয়ারি মেমারিতে ও মাথাভাঙায় সতীশহাট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন কৃষকরা। ৫ মার্চ বাঁকুড়ার ওন্দায় পথ অবরোধ করেন আলুচাষিরা, ৮ মার্চ সহায়ক মূল্যে আলু ও পেঁয়াজ কেনার দাবিতে বর্ধমান-নবদ্বীপ রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা।

১০ মার্চ উত্তাল কোচবিহার

১০ মার্চ বন্ড সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের বেপরোয়া লাঠি চার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের মুখে পড়তে হয় আলুচাষিদের। ওইদিন কোচবিহার ১নং ব্লকের দেওয়ানহাট সোনালী অ্যাগ্রো লিমিটেড হিমঘরের সামনে পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। কোচবিহার জেলায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে এবছর আলু চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১২ লক্ষ টন আলু উৎপন্ন হয়েছে। কিন্তু কোচবিহার জেলার হিমঘরগুলিতে আলু সংরক্ষণ করতে পারছেন না আলুচাষিরা। ১০ মার্চ দেওয়ানহাট হিমঘরের সামনে আলুর বন্ড সংগ্রহ করতে হাজির হন কয়েক হাজার আলু চাষি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও চাষিরা বন্ড পাননি। বন্ড তুলে নেয় দালালরা। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কৃষকরা। কৃষকরা অবরোধ করেন কোচবিহার-দিনহাটা রাজ্য সড়ক। পুলিশের বর্বর আক্রমণে প্রচুর আলুচাষি আহত হন।

অর্থাৎ ১১ মার্চের বড়ো লড়াইয়ের আগে গত দু’মাসে আলুচাষিদের দাবি নিয়ে অসংখ্য ছোটো ছোটো আন্দোলন হয়েছে।

আরও বড়ো লড়াইয়ের পথে

১১ মার্চের আন্দোলনের পর অনেকেই আশা করেছিলেন, রাজ্য সরকার আলুচাষিদের সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা নেবে। কিন্তু রাজ্য সরকার উল্টো পথে হাঁটছে। রাজ্য সরকার যে দামে আলুচাষিদের কাছ থেকে আলু কিনবে বলে ঘোষণা করেছে তা অভাবী বিক্রির থেকেও কম দাম। রাজ্য সরকারের ঘোষণা, তারা ৬ টাকা ৫০ পয়সা কেজি দামে আলু কিনবে। মাঠে অভাবী বিক্রির থেকেও নিচে রাজ্য সরকারের আলু কেনার এই সহায়ক মূল্য। আলুচাষিদের নিয়ে রাজ্য সরকারের রসিকতার বিরুদ্ধে আরও বড়ো আন্দোলন গড়ে উঠবে।