E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ১৮শ সংখ্যা / ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ / ২ পৌষ ১৪২৭

কলকাতার সুবিশাল সমাবেশে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ


কলকাতার কৃষক সমাবেশে বলছেন হান্নান মোল্লা।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রের সর্বনাশা কৃষি আইন বাতিল না করা পর্যন্ত জারি থাকবে কৃষক আন্দোলন। ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় রানি রাসমণি রোডের বিশাল সমাবেশ থেকে এই দৃপ্ত আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতি (এআইকেএসসিসি) পশ্চিমবঙ্গ শাখার ডাকে এদিনের সমাবেশে এই সমিতির সর্বভারতীয় নেতা এবং সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, কেন্দ্রের কৃষি আইন কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা ‍‌নিয়ে এসেছে। এই সরকার দেশের বিমানবন্দর, প্রতিরক্ষা, রেল, জাহাজ থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক, কয়লা সমস্ত কিছু তুলে দিতে চাইছে পুঁজিপতি ও কর্পোরেটদের হাতে। এখন ওরা কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সাথে জমিও কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে। তাই এই সরকারের নীতি পরিবর্তনের জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এদিনের সমাবেশ থেকে রাজ্যপালের উদ্দেশে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে এবং দিল্লি সংলগ্ন পাঞ্জাব, হরিয়ানা সীমান্তে গত ২৬ নভেম্বর থেকে যে আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছে, সেই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে এদিন এই সমাবেশের আহ্বান জানানো হয়েছিল। রানি রাসমণি রোডের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোটা অঞ্চল প্লাবিত হয় কৃষকদের জমায়েতে। এআইকেএসসিসি’র চেনফ্ল্যাগ, পতাকার পাশাপাশি লাল পতাকা-ফেস্টুনে বর্ণময় হয়ে ওঠে চারপাশ। শিয়ালদহ এবং হাওড়া থেকে দু‍‌টি বিশাল মিছিল এসে রানি রাসমণি রোড সহ ধর্মতলা চত্বর ভরিয়ে তোলে। এই সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেছেন, দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে এ পর্যন্ত যে ৩০ জন প্রয়াত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আগামী ২০ ‍‌ডিসেম্বর দেশজুড়ে পালিত হবে শহিদ দিবস। এছাড়াও ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর রাজ্যে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে কৃষক জাঠা সংগঠিত করে কেন্দ্রের নয়া- কৃষি আইনের বিপজ্জনক দিকগুলি তুলে ধরা হবে।

এদিনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এআইকেএসসিসি’র পশ্চিমবঙ্গ শাখার আহ্বায়ক তথা প্রাদেশিক কৃষক সভার সম্পাদক অমল হালদার। সমাবেশের প্রধান বক্তা ছিলেন হান্নান মোল্লা। তিনি কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী যে আন্দোলন চলছে এবং দিল্লি ও তার সীমান্তবর্তী এলাকায় হাজার হাজার কৃষকের যে অবস্থান-বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে, তার বিবরণ ও অভিজ্ঞতার কথা সমাবেশে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর থেকেই একটার পর একটা আঘাত নেমে আসছে কৃষকদের ওপর। ক্ষমতায় আসার আগেও মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওরা কৃষকদের স্বার্থে কাজ করবে। কৃষিঋণ মকুব করবে, কৃষকদের আত্মহত্যা কমানোর উদ্যোগ নেবে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ওরা জানিয়ে দিলো স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ লাগু করবে না, এমনকি ওরা কৃষিঋণ মকুবও করবে না - সেটা ছেড়ে দেয় রাজ্য সরকারের ওপর। ওরা ক্ষমতায় আসার পর ৪২ শতাংশ বেড়েছে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা।

তিনি বলেন, এই সরকার আগে কর্পোরেটদের স্বার্থে জমি অধিগ্রহণ আইন আনতে কৃষক-বিরোধী অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে ভূমি অধিকার আন্দোলন। এই সরকার আজ পর্যন্ত যতগুলি আইন করেছে, সবই কর্পোরেট এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থে। দ্বিতীয়বারের জন্য এই সরকার ক্ষমতায় এসে কৃষক সহ সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণকে আরও তীব্র করেছে। করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের আতঙ্কে যখন দেশের মানুষ কার্যত গৃহবন্দি, তখন জুন মাসে কৃষক-বিরোধী তিনটি অর্ডিন্যান্স আনে। দেশব্যাপী এই অর্ডিন্যান্সের হাজার হাজার কপি পোড়ানো হয়। একটি গণতান্ত্রিক সরকার মানুষের কথা শুনবে, কিন্তু এরা তা করে না। কোনো কৃষক সংগঠনের সাথে, কারও সাথে কোনো আলোচনা না করেই কৃষি আইন সংসদে পাশ করিয়েছে। আমরা এই বিলের তীব্র প্রতিবাদ করেছি। এমনকি এনডিএ-র ৪-৫টি শরিক দলও এর বিরোধিতা করেছে। রাজ্যসভায় ওদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও ওরা জোর-জবরদস্তি এই বিল পাশ করালো। ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলনে শামিল হন কৃষকরা। ২৬ নভেম্বর সাধারণ ধর্মঘটের দিন আমরা গ্রামীণ ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছিলাম। যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নামল - ওরা বলল এটা নাকি শুধু পাঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলন। যেখানে ২৫ কোটি মানুষ ধর্মঘট করে কৃষি আইনের বিরোধিতা করল - সেটা কি শুধু পাঞ্জাবের আন্দোলন হতে পারে?

হাওড়া ব্রিজ ছেড়ে মিছিল এগিয়ে চলেছে সমাবেশের দিকে।

এই আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে হরিয়ানার বিজেপি সরকার এবং কেন্দ্রের কুৎসিত ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, যখন আন্দোলন শুরু হলো, তখন হরিয়ানা সীমান্ত সিল করে দেওয়া হলো। বন্ধ করে দেওয়া হলো পাঞ্জাবের সীমানাও। আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হলো। এমনকি জাতীয় সড়ক কেটে ৬ ফুট গর্ত করে দেওয়া হলো। এতকিছু করেও যখন ওরা আন্দোলনকে দমাতে পারল না, তখন ওরা কৃষকদের বলল একটা বিচ্ছিন্ন জায়গায় যেতে। কৃষকরা তৎক্ষণাৎ তা প্রত্যাখ্যান করে বলে দিলেন, আমরা জালিয়ানওয়ালাবাগ হতে দেবো না। ধীরে ধীরে এই আন্দোলন আরও তীব্র আকার নিলো। পাঞ্জাব, হরিয়ানার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ সীমান্তের ৬টি জায়গায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন কৃষকরা। প্রায় ৫০০-র বেশি সংগঠন যুক্ত হয়েছে এই আন্দোলনে। স্বাধীনতার পর এতবড়ো অহিংস কৃষক আন্দোলন দেশে কখনও হয়নি।

হান্নান মোল্লা তাঁর ভাষণে সরকারের আলোচনাকে নাটক বলে উল্লেখ করে বলেন, প্রথমে কয়েকটা মাত্র সংগঠনকে ডাকা হয়েছিল আলোচনায়। তারপর চাপে পড়ে অন্যান্যদেরও ডাকতে বাধ্য হয়। তাছাড়া মিটিং ডাকা হলেও তার কোনো অ্যাজেন্ডা ছিল না। আলোচনায় ডেকে সরকারের পক্ষ থেকে বোঝানো শুরু হলো এই আইন কত ভালো। তারপর বলল, আমরা প্রয়োজনীয় কিছু সংশোধন করব। আমরা স্পষ্টভাবে বলি, এই আইন সম্পূর্ণভাবে কৃষক-বিরোধী। শুধুমাত্র প্রসাধনী পরিবর্তন করে কিছু হবে না। এই আইন বাতিল করতে হবে। পঞ্চম আ‍‌লোচনায় এলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি এসে কৃষিমন্ত্রীর সুপারিশগুলিই আওড়াতে লাগল। আমরা তার প্রতিবাদ করি। সেইসঙ্গে পরের দিনের আলোচনাও বাতিল করে দিই। তারপর সরকার কিছু প্রস্তাব পাঠালে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত জারি রাখি।

দেশব্যাপী এই কৃষক আন্দোলনকে ভাঙতে বিজেপি ও সংঘপরিবার এবং বশংবদ মিডিয়া যে কুৎসা করছে, তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের নামে কুৎসা করতে বলা হলো, এটা নাকি খালিস্তানিদের আন্দোলন। আমরা তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিলাম। তারপর ওরা বলল, এই আন্দোলন নাকি রাজনৈতিক দলগুলো করছে। আমরা ওদের বুঝিয়ে দিলাম এই আন্দোলনে কৃষক ছাড়া অন্য কেউ নেই। এছাড়াও বলল কৃষকদের এই আন্দোলনে নাকি মাওবাদীরা ঢুকে গেছে, বামপন্থীরা নাকি এই আন্দোলন দখল করেছে এবং ভারতের কৃষকরা নাকি চীনের দালাল-পাকিস্তানের দালাল ইত্যাদি। আমরা এই সমস্ত কিছুরই বিরোধিতা করেছি। আমি বলি, আমাদের দেশের কৃষকরা মাটিতে নেমে ফসল ফলায়, তাঁরা কখনও দেশদ্রোহী হতে পারে না। মোদী তুমি নিজেই তো ট্রাম্পের দালাল।

তিনি আরও বলেন, এখন কিছু দালাল নামিয়ে এই আন্দোলনকে ভাঙার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন একটা সংগঠনকে ওরা নিয়েছে, যার পিছনে কতজন কৃষক আছে সন্দেহ! বলা হচ্ছে সেই সংগঠন নাকি কৃষিমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বলেছে, ওরা কেন্দ্রের আইন সমর্থন করে।

তিনি কৃষকদের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, এরাজ্যে ২১৯ জন কৃষক ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এখানেও কৃষকদের ওপর অত্যাচার-আক্রমণ চলছে। ফসলের দাম না মেলায় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে। রাজ্য সরকার যদি সত্যিই কৃষি আইনের বিরোধিতা করে, মুখ্যমন্ত্রী যদি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেন, তবে বিধানসভা ডেকে কৃষক স্বার্থে আইন পাশ করুন। শুধু মুখে বললেই হবে না - সততা থাকতে হবে।

হান্নান মোল্লা বলেছেন, শুধু সরকারের নীতির বিরোধিতা করলেই হবে না, যে কর্পোরেটদের স্বার্থে কৃষকদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। আদানি-আম্বানিদের যে শপিংমল, আউটলেট রয়েছে, সেগুলির সামনে আমরা পিকেটিং করে কৃষক-বিরোধী এই সংস্থাগুলির পণ্য না কেনার আবেদন জানাব। এছাড়াও পিকেটিং হবে রিলায়েন্স সহ ওই সমস্ত সংস্থার পেট্রোল পাম্পের সামনে। খুলে দেওয়া হবে টোল প্লাজাগুলি।

তিনি ২০ ডিসেম্বর দেশজুড়ে শহিদ দিবস পালনের পাশাপাশি কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও তীব্র করার আহ্বান জানান।

সমাবেশে অমল হালদার বলেন, যাঁরা দে‍‌শের অন্নদাতা সেই লক্ষ লক্ষ কৃষক প্রবল ঠান্ডার মধ্যে দিল্লি এবং দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান করছেন। আজ তাঁরা গোটা দিল্লিকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছেন। কৃষকদের এই আন্দোলনকে ভাঙতে নানা বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। তাদের সম্পর্কে কুৎসিত কথা বলছে মোদীর দল। অথচ ২৬ নভেম্বরের দেশব্যাপী ধর্মঘটের পর ৮ ডিসেম্বর স্তব্ধ হলো গোটা দেশ। মাত্র তিন দিনের প্রচারে স্তব্ধ হলো গোটা পশ্চিমবঙ্গ। আজ দিল্লিতে, দেশের নানা প্রান্তে যে লড়াই চলছে, সেই লড়াইয়ে জিতলে কৃষকরা বাঁচবে, আমরা বাঁচব।

তিনি এরাজ্যের কৃষকদের অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের অবস্থা ভয়ঙ্কর। তাঁরা ধানের দাম পাচ্ছেন না। রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি কৃষকদের বাঁচাতে অবিলম্বে ধান কেনার ব্যবস্থা করুন। একটা ভয়াবহ বিপদের মধ্যে আছেন বাংলার কৃষকরা। অথচ মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার অধিবেশন ডেকে কৃষকদের স্বার্থে প্রস্তাব পাশ করার সময় পাচ্ছেন না। তাই কেন্দ্রের কৃষিনীতির বিরুদ্ধে এবং রাজ্য সরকারের কৃষকবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে আরও তীব্র করতে হবে।

এআইকেএসসিসি-র সাংগঠনিক সম্পাদক ও সারা ভারত কিষান মহাসভার নেতা কার্তিক পাল বলেন, কেন্দ্রের সরকার দেশের কৃষি, উৎপাদিত ফসল, পণ্যের বাজার সব শেষ করে দিতে চক্রান্ত করছে। ওরা যে কর্পোরেট স্বার্থবাহী কৃষি আইন করেছে ২৬ নভেম্বর ও ৮ ডিসেম্বরের সর্বাত্মক ধর্মঘটের মধ্যদিয়ে তা বাতিল করে দিয়েছেন দেশের মানুষ ও কৃষকসমাজ। এখন দেশব্যাপী এই আন্দোলনকে ভাঙতে নানাভাবে কুৎসা করছে ওরা। আজ কেবল কৃষকেরা নয়, সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছেন। এই তিন কৃষি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় স‍‌মিতি আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এআইকেএসসিসি-র অন্যতম সংগঠক ও জয় কিষান-এর নেতা অভীক সাহা বলেন, আপনারা ঝান্ডা তুলে বুঝিয়ে দিন যে কৃষকেরা আজ জেগে উঠেছে। আজ দেশজুড়ে এই আন্দোলনকে ভাঙতে কেন্দ্রের সরকার সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তারা আদালতকে দিয়ে কমিটি বানানোর কথা বলছে। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আদালতের কোনো ভূমিকা এতে থাকতে পারে না। যারা এই কালা আইন এনেছে তাদেরই এই আইন বাতিল করতে হবে।

এছাড়াও এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন সুভাষ নস্কর (সংযুক্ত কিষান সভা) গোবিন্দ রায় (অগ্রগামী কিষান সভা), অজিত মুখার্জি (সারা ভারত কৃষক সভা-বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট), সমীর পূততুণ্ড (কৃষক খেতমজুর সংহতি সমিতি), প্রবীর মিত্র (জয় কিষান), সুশান্ত ঝা (এআইকেএমএস) প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে নিয়ে যাবার পাশাপাশি কৃষি আইন নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন। তাঁরা এরাজ্যেও কৃষকদের ফসলের সহায়ক মূল্য নির্ধারিত করার দাবি জানান। এই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন ডেকে প্রস্তাব পাশের দাবি জানান তাঁরা।

এদিনের সমাবেশে সংহতি জানাতে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, হাফিজ আলম সইরানি, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন নেতা পার্থ ঘোষ, খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্র, সভাপতি তুষার ঘোষ, কৃষকনেতা মদন ঘোষ সহ সিআইটিইউ’র রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখার্জি, সম্পাদক অনাদি সাহু প্রমুখ। এদিনের সমাবেশকে সংহতি জানাতে শ্রমিকদের মিছিলও আসে।

এই সমাবেশ থেকে হরিপদ বিশ্বাস, সুভাষ নস্কর, অভীক সাহা, ভক্তরাম পান, জয়তু দেশমুখ এবং মহম্মদ সেলিম রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিতে রাজভবনে যান। কিন্তু রাজ্যপাল উপস্থিত না থাকায় তাঁরা স্মারকলিপি জমা দিয়ে ফিরে আসেন।