৫৮ বর্ষ ১৮শ সংখ্যা / ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ / ২ পৌষ ১৪২৭
সীমানায় দাঁড়িয়ে
নন্দিনী মুখার্জি
সারাদিনই সমাবেশ মঞ্চে চলে বক্তব্য ও অন্যান্য অনুষ্ঠান।
সীমানার ওপারে - ভারতের সাম্প্রতিককালের সর্ববৃহৎ কৃষক আন্দোলনের সাক্ষী হতে গেলে হয় সিঙ্ঘু বর্ডার বা টিকরি বর্ডার এইরকম কোথাও যেতে হবে - শুনে আমাদের সঙ্গী বলছিলেনঃ “এতদিন জানতাম ভারতের বর্ডার মানে পাকিস্তান বর্ডার, চীন বর্ডার বা বাংলাদেশ বর্ডার। এখানে তো দেশের মধ্যেই আরও অনেকগুলো বর্ডার বানিয়ে রেখেছে।” দিল্লির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ না থাকা আমাদের সঙ্গীর এইরকম অবাক হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সিঙ্ঘু বর্ডারে পৌঁছে দেখা গেল সত্যিই বর্ডার তৈরি হয়ে গেছে। একদিকে সশস্ত্র প্রহরীর সজাগ পাহারা, দিল্লি পুলিশ আর আধাসেনা বাহিনী মেশানো। আর সীমানা পেরোলেই ভারতের আমজনতা - যেখানে ধর্মের ভেদাভেদ নেই, ধনী দরিদ্র নেই, শিক্ষিত অশিক্ষিত নেই - সব এক হয়ে গেছে। আছে শুধু একটাই পরিচয় - কৃষক - সেই কৃষক যে দিবারাত্র পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমি থেকে ফসল উৎপন্ন করে আমাদের মুখে তুলে দেয় - আমাদের অন্নদাতা।
গ্রাম এসেছে শহরে - আমরা কোনো সাংগঠনিক পরিচয় নিয়ে যাইনি। ইচ্ছে ছিল নিঃশব্দে জনতার সঙ্গে মিশে গিয়ে এই আন্দোলনের উত্তাপে নিজেদের সেঁকে নেওয়া। পৌঁছে দেখা গেল, সাংগঠনিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে একটা আন্দোলনকে এইভাবে যে পরিচালনা করা যায় তা ভাবা যায় না। ব্যারিকেড পেরিয়েই শুরু হয়ে গেছে সারি সারি ট্রাক্টর, টেম্পো, ছোটো ট্রাকের লাইন; আর এই প্রত্যেকটি গাড়ি সাজানো কৃষক সংগঠনগুলির নানা রঙের পতাকা এবং নানা রঙের পোস্টার দিয়ে। আফসোস হচ্ছিল পাঞ্জাবী লিখতে পড়তে না পারায়। তবে অভিমানী অন্নদাতার সদম্ভ ঘোষণা দেখা গেল বেশ কয়েকটি ইংরেজি পোস্টারে - “We are farmers, not terrorists”।
প্রথম দিন আমরা পৌঁছেছিলাম সন্ধ্যাকালে। সারা দিন প্রতিবাদমুখর দিন কাটানোর পর তখন সময় একটু বিশ্রামের। ট্রাকের মধ্যে পেতে রাখা শয্যাতে বয়োবৃদ্ধরা কেউ কেউ শায়িত। বিশাল একটা তাঁবু খাটিয়ে তার ভেতরে কম্বল ইত্যাদি পেতে মধ্যবয়সীরা বিশ্রাম ও আলোচনা - দুইই চালাচ্ছেন। বাকি সকলেই তাঁদের নিজেদের নিজেদের দায়িত্ব বেছে নিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করছেন। কোনো জায়গায় দু-তিন জন মিলে লম্বা ঝাড়ু দিয়ে জল ছিটিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করছেন। বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার চা এবং জলখাবার বিতরণ হচ্ছে আর বাকিরা লাইন দিয়ে সেই খাবার সংগ্রহ করছেন। কেউ ব্যস্ত রয়েছেন নৈশ আহারের জোগাড়ে। না, এখানে কোনো একার সংসার, ছোট্ট উনানে ছোট্ট আয়োজনের সুযোগ নেই। নানাস্থানে লঙ্গরখানা - সেখানেই সকলের খাওয়ার বন্দোবস্ত। পরের দিন সকালে আবার একই জায়গাতে পৌঁছে এইরকমই দৃশ্য দেখেছিলাম - বেশ কয়েকটি জায়গায় বিশাল বিশাল কড়াইতে রান্না হচ্ছে। এক জায়গাতে দেখা গেল রুটি তৈরির মেশিন। স্বয়ংচালিত ওই মেশিনে ঘণ্টায় ২০০০ রুটি তৈরি হয়। সেই রুটি তৈরিতেও দায়িত্ব বণ্টন করা আছে। কেউ ছোটো ছোটো আটার লেচি মেশিনে দিচ্ছেন। আর বিপরীত দিকে তিনজন বালতিতে ঘি নিয়ে বসে সেই তৈরি রুটিতে ঘি মাখাচ্ছেন। যৌথ পরিবারের অনেক কাহিনি শহরের বাক্সবন্দি ফ্ল্যাটে থাকা মানুষেরা জেনেছে। কিন্তু এইরকম লক্ষ লক্ষ মানুষের যৌথ পরিবার আমাদের পূর্বপুরুষেরাও তাঁদের স্মরণকালে দেখেছেন বলে মনে হয় না। টিকরি বর্ডারে সারা ভারত কৃষক সভার হরিয়ানার নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং যথার্থ বলছিলেনঃ “দিল্লির চারিদিক ঘিরে রাজপথে আজ যা দেখছেন সে তো আমাদের ‘গাঁও’। ‘গাঁও’ মানে কি? লোক। তো গাঁও-এর লোক যদি এখানে চলে আসে, তবে তো তা গাঁওই হলো - তাই না? তবে এই গাঁও-এর বৈশিষ্ট্য কী জানেন? এখানে জাতপাত নেই, অস্পৃশ্যতা নেই। কোনো ধর্মের ফারাক, কোনো জাতের ব্যবধান এখানে নেই। সকলে একত্রে বসে এখানে খাওয়া দাওয়া করছেন। এখানে খেতমজুর আছেন, এখানে ছাত্র আছেন, এখানে গরিব কৃষক আছেন, স্বচ্ছল কৃষক আছেন, এখানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আছেন। এমন কী এখানে ব্যবসায়ীও আছেন। সবজি মান্ডির যে ব্যাপারি তিনিও এখানে এসেছেন এবং তাঁর যা সওদা তা নিয়ে এসেছেন সকলকে খাওয়ানোর জন্য।” সত্যিই এ যেন এক “ভালোবাসার যৌথ হেঁসেল যৌথ খামার যেখানে তাঁরা ঘর বেঁধেছেন রাত্রিদিন”। দিল্লি ঘিরে রাজপথে এই যে গ্রাম রাতারাতি গজিয়ে উঠেছে তাকে ঘিরে রেখেছে পাঞ্জাব, হরিয়ানার হাজার হাজার গ্রাম। প্রতিদিনের খাদ্য ও অন্যান্য রসদের জোগান আসছে এই গ্রামগুলি থেকে। হরিয়ানার একটি গ্রাম প্রতিদিন ২৫০০ লিটার দুধের জোগান দিচ্ছে। একটি গ্রাম পাঠিয়েছে ৫১টি দেশি ঘি-এর টিন যার প্রতিটিতে ১৫ কেজি করে ঘি ধরে। এখনতো আবার এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ। অন্য রাজ্য থেকেও আসছেন কৃষকরা।
জনতার আন্দোলন - কৃষক আন্দোলন থেকে এ আন্দোলন এগিয়ে চলেছে জনআন্দোলনে উত্তীর্ণ হওয়ার পথে। কৃষি যাঁদের পেশা নয় তাঁরাও রয়েছেন বিভিন্নভাবে। সিঙ্ঘু বর্ডারে তিন যুবককে দেখা গেল খোলা আকাশের নিচে টেবিল পেতে লাইব্রেরি খুলে বসতে। তাঁদের একজন পিএইচডি, একজন সদ্য এমফিল সমাপ্ত করেছেন। আর একজন বিপিএড করছেন। এই সুবিশাল জমায়েতে আসা কৃষকরা এই লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যু করাতে পারবেন ইচ্ছামত। আবার পড়া হয়ে গেলে ফেরত দিয়ে যাবেন। না, বই বিক্রয় তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু অবস্থানরত কৃষকরা যাতে মনের খোরাক ঠিকমত পান সেটাই এই যুবকেরা দেখছেন। সিঙ্ঘু বর্ডারেই আর এক তরুণ কৃষক বলজিত সিং জানালেন, দিল্লিবাসী এবং দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে এগিয়ে আসা সাধারণ মানুষের অকুণ্ঠ সাহায্যের কথা। বলজিত সিং এসেছেন পাঞ্জাবের হোসিয়ারপুর জেলার টান্ডা গ্রাম থেকে। বলজিত বললেনঃ “আমাদের রসদ তো আমরা নিয়ে এসেছি। কিন্তু বাকি জিনিসপত্র আসছে দিল্লি থেকে, আর দিল্লিরও বাইরে ভারতের অন্য অন্য সব জায়গা থেকে। বহু মানুষ, স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা সকলে পাঠাচ্ছেন, যেমন যেমন পারছেন। কেউ দিচ্ছেন টুথপেস্ট, সাবান ইত্যাদি, আবার কেউ দিচ্ছেন কম্বল।” বলজিতরা কৃষক, তাঁরা দেশকে খাদ্য জোগান দেন, তাই খাদ্যের সমস্যা তাঁদের নেই। তবে দিল্লি এবং আরও অন্য শহরের সাধারণ মানুষ তাঁদের কাছে অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছেন। এইভাবেই সমস্ত দেশ আজ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানের কৃষকদের পাশে।
একই পঙ্ক্তিতে একসঙ্গে খাওয়া।
বলজিতের সঙ্গে কথা বলে খানিকটা এগোতেই দেখা গেল কম্বল বিলি হচ্ছে এবং যিনিই আসছেন তিনি কম্বল পাচ্ছেন - কারুর কোনো প্রশ্ন নেই, জানতে চাওয়া নেই যে এই ব্যক্তি কোথা থেকে আসছেন। ডাক্তাররা এসেছেন তাঁদের অধীত বিদ্যা, সঞ্চিত অভিজ্ঞতা ও ওষুধপত্র নিয়ে এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে। মাঝেমাঝেই ছোটো টেবিল পেতে তাঁরা রোগী দেখায় নিমগ্ন। কোথাও তৈরি হয়েছে সংগঠিত মেডিক্যাল ক্যাম্প। এইরকমই দেখা গেল অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে সারা ভারত কৃষক সভার উদ্যোগে তৈরি মেডিক্যাল ক্যাম্প। টিকরি বর্ডারেও সারা ভারত কৃষক সভার তাঁবুতে প্রতিদিন আসছেন সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার। তাঁদের সাহায্য করতে হাজির থাকছেন নার্সিং-জানা মহিলা কর্মী। এনারা কিন্তু প্রত্যেকেই স্বেচ্ছাসেবক, আন্দোলনকে সমর্থন করে এই কাজে শামিল হয়েছেন - কোনো আর্থিক সুবিধা পাওয়ার জন্য নয়।
বাতিল হোক কৃষি আইন - হ্যাঁ, প্রত্যাহৃত হোক কৃষি আইন - প্রথম থেকে এটাই সম্মিলিত দাবি সমস্ত কৃষকের। কৃষি আইনের সামান্য রদবদলে তাঁরা সন্তুষ্ট নন এ কথা পরিষ্কার জানালেন বলজিত সিং। সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে এই আইন - এটাই দাবি। বলজিতের সরাসরি প্রশ্নঃ যে আইনে কৃষক খুশী নন সেই আইন লাগু করে লাভ কার? একই কথা জানালেন বাখনা গ্রাম থেকে আসা সুখবিন্দর সিং ও তাঁর সঙ্গীরা। তাঁরা এই “কালা কানুন” খারিজ না করা পর্যন্ত রাজপথেই বসে থাকবেন। এর জন্য তাঁরা দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি। পরের দিন টিকরি বর্ডারে সারা ভারত কৃষক সভার নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং স্পষ্ট প্রশ্ন রাখলেন যে, মোদী সরকার আজ যখন আইন সংশোধনের কথা বলছেন, তার মানে তাঁরা স্বীকার করে নিচ্ছেন যে আইনে ত্রুটি রয়েছে; তাহলে সেই আইন বাতিল হবে না কেন? তিনি জানালেন, এই দাবি থেকে কোনভাবেই পিছু হঠা নেই। কৃষক নেতৃত্ব যাচ্ছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন এবং যখন ফিরে আসছেন তাঁদের পেছনে রয়েছে সুবিশাল জনতা। অতএব আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত পেছনোর কোনো প্রশ্নই নেই। এই সুবিশাল জনতার গণপ্রতিবাদের ছবি দেখা গেল সিঙ্ঘু ও টিকরি - দুই জায়গাতেই। সিঙ্ঘু বর্ডার থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত এগিয়ে দেখা গেল একটি বড়ো মঞ্চ ও অনেকগুলি ছোটো ছোটো মঞ্চ। প্রায় দশ কিলোমিটার ব্যাপী এই প্রতিবাদ অবস্থানে হয়তো আরও মঞ্চ থাকতে পারে। টিকরি বর্ডারে ব্যারিকেড পেরোতেই এইরকম বড়ো মঞ্চ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবকটি মঞ্চই থাকে প্রতিবাদে মুখরিত। বক্তৃতা, গান, স্লোগান সবসময়েই মুখরিত থাকে মঞ্চগুলি। এবং সেই বক্তব্য শোনার জন্য উপস্থিত থাকেন হাজার হাজার কৃষক। কৃষক পরিবারের মহিলারা এবং শিশুরাও এই সমস্ত সভায় উপস্থিত। গত উনিশ দিন ধরে এই মহিলা এবং শিশুরা অনেকেই এই অবস্থানে আছেন অথবা যাওয়া আসা করছেন। শুধু কৃষক নেতৃত্ব নয়, এই মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্য, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা নানা ধরনের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এইরকমই প্রথম দিন সন্ধ্যায় দেখা পাওয়া গেল পাঞ্জাব থেকে এসে পৌঁছানো একদল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর। তাঁরা মঞ্চে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের প্রতি তাঁদের সহমর্মিতা জ্ঞাপন করলেন। পরের দিন অনেকে এলেন মুম্বাই থেকে। তবে প্রতিবাদী গান, স্লোগান মঞ্চের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পথে। মঞ্চের বাইরেও কেউ হয়তো হ্যান্ডমাইক নিয়ে এসে স্লোগান দিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের অস্থায়ী আস্তানার দিকে। এগোতে এগোতে শোনা যাচ্ছে - “মোদী সরকার মুর্দাবাদ”।
খালিস্তানি যোগ - প্রশ্নটা শুনেই হা হা করে হেসে উঠলেন ইন্দ্রজিৎ সিং - “আগে বলছিল শুধু পাঞ্জাবের কৃষকরা প্রতিবাদ করছে। পরে যখন হরিয়ানার কৃষকরা চলে এল তখন বলল যে, কিছু হরিয়ানার লোকজনও চলে এসেছে। তারপর আজ তো রাজস্থানের কৃষকরাও চলে এসেছে - দিল্লি-জয়পুর রাস্তা বন্ধ। মথুরা থেকে উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা আসছিল, উত্তরপ্রদেশের পুলিশ তাদের আটকে দিয়েছে। তাহলে দিল্লি আসার সব রাস্তাই এখন বন্ধ। তাহলে একথা এখন চলছে না যে, শুধু পাঞ্জাবের কৃষক লড়াই করছে। আর খালিস্তানের সঙ্গে সংযোগ বার করছে? দুর্ভাগ্যের কথা হলো, যে প্রদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়েছে তাদেরকেই আজ এই অপবাদ শুনতে হচ্ছে। এই সন্ত্রাসবাদ তো নির্মূল করা যেত না, যদি পাঞ্জাবের মানুষ না লড়াই করত। পাঞ্জাবের মানুষই তো সবচেয়ে বেশি আত্মবলিদান দিয়েছেন। কতজন কৃষক নেতা, কতজন বামপন্থী নেতা, কংগ্রেস নেতা, আকালি নেতা মারা গেছেন। আজ তাঁদেরই বলছে খালিস্তানি। আসলে দিশা হারিয়ে ফেলেছে। বুঝতে পারছে না কী করবে।” বলজিত সিং-এর কথাগুলো মনে পড়লঃ “আসলে এই সরকার না শিখদের, না মুসলমানদের, এমনকী হিন্দুদেরও নয় তা কৃষকরা এখন বুঝতে পারছেন। এই সরকার হলো আদানি, আম্বানিদের সরকার। আমরা তিনমাস আগে থেকে তাই টোল প্লাজা বন্ধ করেছি। জিও বয়কট করেছি। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব যতক্ষণ না এই কালা কানুন বাতিল হয়।”
এই আন্দোলনের জমি থেকে ফেরার পথে তাই আমাদের প্রত্যেকেই বোধহয় উচ্চারণ করেছে সেই প্রার্থনা -
“তোমার কাছে উত্তাপ পেয়ে পেয়ে
একদিন হয়তো আমরা প্রত্যেকেই এক একটা জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডে পরিণত হব।
তারপর সেই উত্তাপে যখন পুড়বে আমাদের জড়তা,
তখন হয়তো গরম কাপড়ে ঢেকে দিতে পারব রাস্তার ধারের ঐ উলঙ্গ ছেলেটাকে
আজ কিন্তু আমরা তোমার অকৃপণ উত্তাপের প্রার্থী।।”
কৃষক আন্দোলনের এই উত্তাপ থেকেই হয়তো সারা দেশ জ্বলে উঠবে, শামিল হবে মানুষের রুজি রুটির অধিকার, শিক্ষার অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার আন্দোলনে।